somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিডিআর বিদ্রোহের সময় ভারতের সাহায্য চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা : উইকিলিকস

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১১ দুপুর ২:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারির পিলখানার বিডিআর বিদ্রোহের সময় ভারতের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রণব মুখার্জীর কাছে সাহায্যের জন্য ফোন করেছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।


২০০৯ সালের ২ মার্চ নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স স্টিভেন হোয়াইট ও ভারতের পররাষ্ট্রসচিব শিবশংকর মেননের বৈঠক সম্পর্কিত কূটনৈতিক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গত রোববার ভারতের দ্য হিন্দু’র অনলাইন সংষ্করণে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। উইকিলিকস থেকে সংগৃহীত কয়েকটি কূটনৈতিক বার্তা থেকে ওই প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
বার্তায় জানানো হয়, শেখ হাসিনা প্রণব মূখার্জীর কাছে সহায়তা চেয়েছেন। তবে কী ধরনের সাহায্য প্রয়োজন তা সুনির্দিষ্ট করে বলেননি তিনি। তবে ‘যদি প্রয়োজন হয় তাহলে তারা সক্রিয় হবেন’- শেখ হাসিনাকে এমনই আশ্বাস দেন প্রণব মূখার্জী।
পররাষ্ট্র সচিব শিবশংকর মেনন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সকে জানান, ভারতীয় সরকারের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে চীন, জাপান ও যুক্তরাজ্যের কাছে সহায়তা চাওয়া হয়।
বিডিআর বিদ্রোহে ভারতের উদ্বেগের কারণ ছিল দুটি। ভারতের ভয় ছিল, বিডিআর বিদ্রোহ থেকে সৃষ্ট অস্থিরতাকে ‘ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের’ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করবে জামায়াতে ইসলামী। মেনন স্টিভেনকে জানান, বিডিআর বিদ্রোহ দীর্ঘদিনের পরিকল্পনার অংশ ছাড়া আর কিছুই নয়। জামায়াতে ইসলামীকে এক্ষেত্রে সরাসরি দোষ দেননি তিনি। তবে তিনি জানান, ২০০৮ সালের নির্বাচনের ফলাফল এবং মহাজোট সরকারের জঙ্গিবাদবিরোধী অভিযানের পর থেকে হতাশার মধ্যে আছে দলটি।
ভারতের ভয়ের আরেকটি কারণ ছিল, এই ঘটনা সেনাবহিনীর সঙ্গে নতুন নির্বাচিত বেসামরিক সরকারের মধ্যকার সম্পর্কের অবনতি ঘটাবে।
বিদ্রোহে সেনাবাহিনীর অনেক কর্মকর্তা নিহতের ঘটনা এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মেনন। এই ঘটনায় শেখ হাসিনার সঙ্গে সেনাবাহিনীর একটা ঝামেলা তৈরি হবে বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি।
বিদ্রোহের পর যুক্তরাষ্ট্র যে বিবৃতি দেয়, সেটির প্রশংসা করেন মেনন। এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতকে আলোচনা ও সমন্বয়ের মাধ্যমে একসঙ্গে কাজ করার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।
স্টিভেন জানান, সংঘর্ষের প্রতিক্রিয়া কী হবে এবং ভবিষ্যতে আরো কোনো সহিংসতা হবে কি না তা বোঝা যাবে প্রাথমিক পর্যায় কেটে যাওয়ার পর।
২০০৯ সালের ৯ মার্চ ভারতে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে আরেকটি কূটনৈতিক বার্তায় ভারতের উদ্বেগের কথা জানানো হয় আবারো। শেখ হাসিনার সরকারকে অস্থিতিশীল করার বিষয়টিই ভারতের উদ্বেগের প্রধান কারণ।
ওই বার্তায় বলা হয়, মার্কিন দূতাবাসকে বিডিআর বিদ্রোহে ‘মৌলবাদী শক্তিগুলোর’ জড়িত থাকার সম্ভাবনার কথা জানান ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব। তিনি জানান, বিডিআর বিদ্রোহে জড়িত পরিচিত অনেক অপরাধী রয়েছে যারা বিএনপি-জামাত জোট সরকারের সময় বিডিআরে ঢুকেছিল।
২০০৯ সালের ১৩ এবং ১৪ এপ্রিল বাংলাদেশ সফরে আসেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব। বিডিআর বিদ্রোহের বিষয়টি ছায়া ফেলে অনেকটা। এর একদিন পরেই তিনি দেশে গিয়ে ভারতে নিযুক্ত যুক্তরাষ্টের রাষ্ট্রদূত পিটার বারলেইর সঙ্গে বিষয়টি তিনি আলোচনা করেন। বিডিআর বিদ্রোহের পর থেকে বাংলাদেশের অবস্থা খুব নাজুক বলেও জানান পররাষ্ট্রসচিব।
২০০৯ সালের ১৬ এপ্রিল নয়াদিল্লি থেকে পাঠানো কূটনৈতিক বার্তায় ওয়াশিংটনকে ভারতের দুশ্চিন্তার জানানো হয়। শিবশংকর মেননের বরাত দিয়ে জানানো হয়, বাংলাদেশের বর্তমান অস্থিতিশীল অবস্থায় ভারত অনেক চিন্তিত। ভারত মনে করে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারকে উৎখাত করতে মৌলবাদীরা এরকম পরিবেশকে ব্যবহার করবে। এছাড়া এই পরিবেশের সুবিধা নিয়ে তারা ভারতের ওপর আক্রমণও করতে পারে বলেও ওই কূটনৈতিক বার্তায় আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।
কোন চরমপন্থী গ্রুপগুলোর ব্যাপারে ভারত উদ্বিগ্ন তা জানতে চান যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্টদূত। তার চাপাচাপির পর ভারতের পররাষ্ট্রসচিব তাকে জানান, রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামী থেকে শুরু করে চরমপন্থি গ্রুপ হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামীকে পর্যন্ত তাদের ভয়।
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে ভারতীয় কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশে খুব সামান্য ইস্যু নিয়েই রাজনীতি উত্তপ্ত হয়। তারা খুবই আশ্চর্য হন এই দেখে যে, সেখানে বিডিআর বিদ্রোহের মতো ইস্যু থাকার পরও রাজনীতিবিদরা বিরোধীদলীয় নেতার বাড়ির মতো সামান্য বিষয় নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
বার্তায় জানানো হয়, পররাষ্ট্রসচিব বলেন, বাংলাদেশের সরকারের মধ্যে স্রোতে গা ভাসিয়ে দেয়ার মতো একটা ব্যাপার দেখা যাচ্ছে। তিনি জানান, এই সরকার ঠিকঠাকভাবে কাজ করছে না।

৮টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাম গাছ (জামুন কা পেড়)

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

মূল: কৃষণ চন্দর
অনুবাদ: কাজী সায়েমুজ্জামান

গত রাতে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে। সেই ঝড়ে সচিবালয়ের লনে একটি জাম গাছ পড়ে গেছে। সকালে মালী দেখলো এক লোক গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামহীন দুটি গল্প

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৫

গল্প ১।
এখন আর দুপুরে দামী হোটেলে খাই না, দাম এবং খাদ্যমানের জন্য। মোটামুটি এক/দেড়শ টাকা প্লাস বয়দের কিছু টিপস (এটা আমার জন্য ফিক্সড হয়েছে ১০টাকা, ঈদ চাদে বেশি হয়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×