শৈশবে মাস্টার মশাই পড়িয়েছেন, দেখার ইচ্ছা হলো দৃদৃক্ষা। বকুলের ঝরা পড়া চোখের সামনেই দেখতে পাচ্ছি। বাড়িটাও। খিলানগুলোর উপর ফুলের কারুকাজ। কোন কোন দেয়াল নোনা। পলেস্তারা খসে মাঝে মাঝে। সবকিছুর মধ্যেই একটা দেমাগি ভাব। বকুল গুলো পুকুরে ভাসে। কোন একটা অংশ কেবল বকুলময়। এতো পেলব যে বকুল ভিজে ভিজে একেবারে খুলে খুলে যায়। কিছু কিছু বকুল বিপুলভাবে ঝরতো। নেচে নেচে ঘুরে ঘুরে…। আমরা কী নেচে নেচে ঘুরে ঘুরে ঝরি। ফুলের ঝরে পড়া দেখার অপূর্ব দৃশ্য পশ্চিমে অদৃশ্যপূর্ব। স্মৃতিকাতর মন বলছে, আহারে, আরো বেশী করে যদি দেখে নিতাম।
সে গেছে আড়ালে, মেঘের চাতালে বসে ভাবে, মাধবী
নিরলে মাধবি, নীল নিরজনে, ভ্রমর বিজন ক্ষণে
সে যে ফুলের সাথী,প্রাণের অতিথি, গোপন নিগুম আমার
ও মাধবী, লেলিহান রোদে,সে যে আগুন ফুটাল
ও মাধবী, শৈশব থেকে আমার আছে লুকোচুরির অহংকার
আমারই খেলা, আমারে খেলায়, তুমি কি মাধবী সে
তোমার ভেতরেই খুঁজে ফিরি তাকে অবশেষে ।।
ও মাধবী, চল না খুঁজি, কোন ফুলে তার গোপন বাস
ও মাধবী, চল না লো সই, ভাঙবো তার-ই অধিবাস
কোন গোপনে কার ঘরে তার হাওয়ার পড়ে রুদ্র শ্বাস
সে যে শান্ত ছিলো, আমার পরাণ, চলে যাওয়ার অবিশ্বাস
আমার চোখে লেগে আছে, গোপন যখন নিজের কাছে
তখন পাওয়া যায় কি তাকে চোখের মণির দীপাভাসে
চোখে চোখে রাখি যখন দু’জন হারাই দুই নয়নে
খুঁজবো কখন, দিন চলে যায় কাল বয়নে
সাদাসিধা চাঁদের পহর মুক্ত হয়ে মাধবী হয়
এমন সময় নিজের ভেতর নিজের বিলয়
টের পেয়ে যাই, ও মাধবী, তোমার বাতাস কারাগারে
সুবাস নিয়ে কাড়াকাড়ি, লাগছে তোমায় কেমন ভালো সঙ্ঘ হারে।।
স্বাদসিদ্ধ জিহ্বা
বন্ধু বলেছে, অখন্ড স্বাদের কথা। আস্বাদন স্পৃহার কথা। মনে পড়ে যায় তোমার অধীর উতালা ভাব। ফুটে উঠার আকাঙ্ক্ষা ফুটফুটে। চাঁদ চঞ্চল জল। আরশিতে চাঁদ মুখ দেখে। তুমি আনন অনন্যসুন্দর। এই মুখ একটাই। কুমারটুলির শ্রীধাম বানিয়েছিলো তোমাকে। আমি শুধু চোখ। তোমার সাথে ভাব বিনিময়ে চোখাচোখি নাই। আমিই তো চোখ।
এতো সজীব লাঊয়ের লক লকে ডগা আগে তো দেখি নাই। যেন সবুজ আগুন লকলকিয়ে চলছে। চালে গেলে হয় চালকুমড়া। আহা! রোমশ চালকুমড়া আর মাচানে অতি পরিপক্ক মিষ্টি কুমড়া আমাদের স্বাদসত্যের কী অপূর্ব নিদর্শন!!
আমি চাই চলচকে সবুজ ছোবল। আমি চাই ক্লোরোফিল সজীবতা। আমি চাই বাঁশীর সুরে বৃক্ষের নাচন। আমি চাই চাল কূমড়ার মোরব্বা। আমাকে খেঁজুর কাটা দিয়ে মোরব্বা করো। আমি হয়ে উঠি স্বাদ। কুমড়ার প্রোটোপ্লাজম আমার শৃঙ্গারে, চুমকুড়ি ও মৈথুন মিতালি জড়াজড়ি দেখে ফুল, বিকাশমান কুঁই ও কুমড়ার মাঝে এক অন্যমনস্কতায় ডুব দেয়। তখনো শ্রীধাম তোমাকে কাঠামো দেয় নাই। আমি বুঝেছি, এটা তুমি। আমার তুমি হয়ে উঠার জন্য যা যা দরকার সব নিয়ে তোমার সামনে নতজানু হই। আমার হাতে সাদা লাউফুল, সোনালি লালে মিশানো কুমড়া ফুল। তোমার খোঁপার উদ্ভাসন ঘটেনি তখনো। আদলে, আদলের আলপনা, তোমার নকশা ছিলো আমার কাছে। জানে না শ্রীধাম।
তোমার হয়ে ওঠা দেখছি। ডানপিঠে বাতাস একটা মিষ্টি গন্ধের অহংকারে স্নায়ু অবশ করা। আমি আড়চোখে তোমাকে দেখি। চিহ্নে ও ইংগিতে তুমি আমারই। হয়ে ওঠার মুহুর্তগুলো এলোমেলো; বিন্যাস বিনুনী হয়ে, সমস্ত ছত্রখান সত্য একসাথে করে তুমি হয়ে উঠছো। আমি অসহায়। ভাষা ছাড়া আর কিছু নাই। অনুভূতিপুঞ্জ প্রকাশের আকুতি আছে। তুমি তো এখনো হয়ে ওঠোনি। হয়ে ওঠার প্রক্রিয়ায় কোন কিছু ছারখার হউক, আমি চাই না। তুমি এখনও প্রাণপাগল। আমি প্রাণ হয়ে তোমার কাছে নতজানু। দেখো, আমি ঝাড়েবংশে নির্মূল করে কোন স্বাদ নয়। আস্বাদনের আকুতি শুধু দাঁত বসানো নয়। সহস্র কুমড়া চাল আর মাচানে মায়াবি সবুজ হয়ে ঊর্ধ্বমুখী। আমি কুমড়া ফুল দেখেই নিজের লক্ষণ বুঝেছি। আমি জানি না, এই ফুল আমার প্রিয়। বিকাশমান পুষ্প আমার ভালো লাগে। সুবাস নিষিদ্ধ ফুলে কুমড়ার জন্ম। গোলাপ গোলাপেই শেষ। আমি গোলাপ দশা থেকে কুমড়াফুলের গর্ভবতী হওয়ার দিকে যাচ্ছি। বিকাশের পরিতৃপ্তি ফলে। গোলাপ কুমড়া হয়ে উঠছে, কিন্ত কুমড়া ফুল গোলাপ ফুল। সম্প্রদানে ফুলের জাত নয়, নিবেদনই প্রধান। তোমাকে দেখলেই সবুজ আভা ছড়িয়ে পড়ে। আমি সাদা কান্নায় সবুজ আগুন।
যেদিনে ইস্পাহানে গোলাপ গর্ভবতী হলো সেদিন এই বঙ্গীয় কুমড়া আরো পরিপুষ্ট হয়ে উঠলো। এক সন্ধ্যায় খবর এলো কুমড়া ফুলে গোলাপ খুশবু । যে ফুল সুবাস হয়ে বাতাস মন্থর করে, নিঃশ্বাসের নিভানো আগুন আবার জাগ্রত করে, শরীরের বাঁকে বাঁকে সে-ই ফুলের বাগান।
“মাধবীলতা গো, ও মাধবী লতা
তোমাকে দেখি তুমিও দেখো আমাকে
আমরা কেন দেখিনা তাকে…।“
সে গেছে আড়ালে, মেঘের চাতালে বসে ভাবে, মাধবী
নিরলে মাধবি, নীল নিরজনে, ভ্রমর বিজন ক্ষণে
সে যে ফুলের সাথী,প্রাণের অতিথি, গোপন নিগুম আমার
ও মাধবী, লেলিহান রোদে,সে যে আগুন ফুটাল
ও মাধবী, শৈশব থেকে আমার আছে লুকোচুরির অহংকার
আমারই খেলা, আমারে খেলায়, তুমি কি মাধবী সে
তোমার ভেতরেই খুঁজে ফিরি তাকে অবশেষে ।।
ও মাধবী, চল না খুঁজি, কোন ফুলে তার গোপন বাস
ও মাধবী, চল না লো সই, ভাঙবো তার-ই অধিবাস
কোন গোপনে কার ঘরে তার হাওয়ার পড়ে রুদ্র শ্বাস
সে যে শান্ত ছিলো, আমার পরাণ, চলে যাওয়ার অবিশ্বাস
আমার চোখে লেগে আছে, গোপন যখন নিজের কাছে
তখন পাওয়া যায় কি তাকে চোখের মণির দীপাভাসে
চোখে চোখে রাখি যখন দু’জন হারাই দুই নয়নে
খুঁজবো কখন, দিন চলে যায় কাল বয়নে
সাদাসিধা চাঁদের পহর মুক্ত হয়ে মাধবী হয়
এমন সময় নিজের ভেতর নিজের বিলয়
টের পেয়ে যাই, ও মাধবী, তোমার বাতাস কারাগারে
সুবাস নিয়ে কাড়াকাড়ি, লাগছে তোমায় কেমন ভালো সঙ্ঘ হারে।।
চারিদিকে যা ঘটছে তাতে নিজের প্রাণের খবর নিতে ইচ্ছা করে। প্রাণ বিসর্জন দেয়া যায় না, ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় প্রাণদান হয়ে যায়।
প্রাণ প্রকৃতি
প্রজাপতি আপনাকে সেলাম; পরীদের পাখার সাথে আপনার মিল দেখে আমি অভিভূত। আমি আরো জানি, আমরা আমাদের অবয়ব ও আকারের আরাধনা করতে করতেই দিন গুজরান। হে মহামহিম, প্রজাপতি, আমি আমার বিহঙ্গ ভঙ্গিমায় উড়ে যাবার সময় আপনাকে দেখেছি। আপনার ডানার কাঁপন আমার ডানায়। পৃথিবীর সকল ডানাই স্বগোত্রীয়। শুধু আপনার ডানায় অনেক রঙ। আমার ডানা সারস সাদা। আমি কিন্তু সারস নই। আমি শকুন। সাদা শকুনের আমি সর্বশেষ বংশধর।
হাওয়ায় হাওয়ায় আপনার ডানার স্পন্দন ভেসে বেড়ায়। ঠিক রেডিও সিগন্যালের মতো। দীর্ঘ তরঙ্গের দিকে ধাবমান ছোট তরঙ্গ আপনার পাখার সুক্ষ্ম ঊর্মিঊচ্ছ্বাস আমাকে নিয়ে যায় সেই মায়াবি একাকী প্রাণ হয়ে উঠার বিস্ময়পর্বের দিকে। সেখানে হে প্রজাপতি! আমার আম্মা ও আপনার আম্মা একই প্রাণমাতৃবীজ থেকে আলাদা হচ্ছে। আমি তখনো আদি ভ্রুণ আকারে সৃজন গর্ভে। আমার প্রাণ টুক টুক।
আমি তোমাকে দেখি; আভাখচিত সরিষার ক্ষেতে। যতো বড়ো হচ্ছো শনালু ফুলের মতো। তোমার পাখা ছাপাই শাড়ির মতো। সে-ই মহাবিস্ময়কর আত্মীয়তার আদি পর্বে আমাদের কথা হয়েছিলো, দেখা হবে। দেখা হলো। প্রাণচক্রের মধ্যে জানি প্রাণ প্রচুর, প্রাণের পরিসমাপ্তি নাই। আমরা ফিরে আসি বার বার। সে-ই আদি নাথনাদের মধ্যে আমরা উড়ে উড়ে প্রথম ফুল দেখি। ফুল তখনো চিনি না। তারপর দুনিয়ায় এলো মুকুলমথিত ক্ষণ। ফুলে মুকুলে এখন আমরা আমাদের আশ্রম আরাধ্য চোখাচোখি। তোমারই নান্দনিকতা আমারই। আমি না থাকলে জানতে কী করে যে প্রাণের রঙ্ম প্রাণচক্রের ক্ষণ তোমার ঘড়ির ডায়ালে টিক টিক করতো কী করে।
আমাকে দেখে তুমি বলেছিলে, প্রতি প্রাণ অন্য প্রাণের সুবাস্তু, কুটুম। আরো বলেছিলে, আমিই তোমার নন্দনতাত্ত্বিক আশ্রয়। বলেছিলে, আমি আছি বলেই তুমি আছো। আমি হেলে দুলে কিছুটা বৈমানিক নাক ডুবিয়ে এই মাত্র দেখা ফুলে, বলেছিলাম, রুটিন মাফিক প্রেম নয়। চরাচরের শূন্যতার মধ্যে ডুবে যেয়ো না। প্রজাপতি আছে, থাকবে।
তোমার দ্যুতিময় ডানার ঢকে আমি দিশাহারা। জানি,প্রজাপতি নিয়ে কাব্য হয় না। বিস্ময়ে ডানার তরঙ্গ নামক রাগ ও ছন্দই সাধন করি। নিজ নিমজ্জন ক্ষণে কোন কাব্য নয়। শুধু দেখা। এই ডানার নিহিত গতি আমি তো দেখেছি। প্রাণপ্রাঞ্জল সে-ই উড়াঊড়ি। আমি তো সে-ই উড্ডয়ন উন্মুখ মানুষ,যার মিনতি তুমি রাখো নি। আমাকে তুমি তুমি হয়ে উঠতে দাওনি।
সেদিন কাঁঠাল পাকা গরম পড়েছিলা। মৌরা আহরণ রুটিন করেছিলো । কোন মৌ দেখা হলো। আহরণমূলক সম্পর্কের ন্যয্যতার কথা ভাবছিলাম। প্রসূন নিরপেক্ষভাবে সবার কাছেই যায়। তবে নিয়ম মাফিক, কোন ফুলে কবে হুলারোহণ! সেদিন মাঠ ছিলো ঝা ঝা ঝাপসা। আলো আর নিরল মিলে কুন্ডলি পাকিয়ে আছে অই দূর মাঠে। আমি ইস্কুলের খাতায় এই দৃশ্য আঁকতে চাই। লগন মুহুর্তে অংগীভূত দৃশ্য আঁকা যায় না। স্বয়ম্ভু দৃশ্য একমাত্র পরমের পাঠশালায় পাঠের দৃশ্য। হে মহামহিম, জীবচক্রে শুধু জীববিজ্ঞানের বিষয় নয়, কাব্যের। পদে পদে পংক্তিময় হয়ে ওঠে ডানার তরঙ্গ, অবিনাশী রঙ। ছায়াচুপচাপ একটা বৃক্ষের ডালে মনে পড়ে কী! আমরা দুজনে। মুকুলের দরবারে নিজের বিকাশ ও উদ্ভিন্ন কালে, হয়ে উঠবার কালে, ফলস্বরুপে আবির্ভূত হবার কালে আমি আর তুমি দু’জনেই খুশবু মাতাল।
সাদাসিধা সাম্য
দস্তরখান বিছিয়ে খাওয়া দাওয়া চলছে। কেউ হাত ধুয়ে এসেছে, কারো হাত চিলুমচিতে ধোয়ানো হচ্ছে। কারা কার পাশে বসবে সেটা আপনাআপনি নির্ধারিত হয়ে যায়। খাদ্যের আভিজাত্য মানি না। আমি বর্তনে খাবো। কারো জন্যই চীনা মাটির বাসন নয়। খাদিমদার সবাইকে সম পরিমাণ খাবার দেবে। নিয়ামতের খাদিমদার হয়ে উঠতে হবে মানুষকেই। আমাদেরকে প্রকৃতির খাদেম হয়ে উঠতে হবে। প্রকৃতির মাঝে নিয়ামতের বিতরণ সম্পত্তি সম্পর্কের কারণে মানুষের নাগালের বাইরে চলে যায়। কিছু লোক ভোগ করে; বেশীরভাগই কল্পনায় আকাঙ্ক্ষার জিহ্বা চাটে। পেটের ক্ষুধায় সুস্বাদু খাবারের কল্পনায় হয়ে উঠে কবি।
ফুলের সুবাস আমার নসিবে ছিলো। নাসারন্ধ্র সুগব্ধির সুখে চুলকে চুলকে উঠছে। একটি পরাগ আমারই গর্ভথলিতে অবতরণ করে। গেরস্থ কামনার উত্তাপে আমি তখন দিশাহারা। মাঠে মাঠে পুড়িয়েছি আমারই সোনার অঙ্গ। আমার শরীর আত্মস্থ করেছে প্রকৃতি। প্রকৃতি থেকে আস্বাদন, আত্মস্থকরণ ও আহরণ প্রক্রিয়ার মধ্যে মানুষের ভোগে বিনয় দরকার। মগিনীর মতো সব খেয়ে ফেলার নীতি পরিত্যজ্য।
কৃষি মানুষ ও প্রকৃতির সাথে সপ্রাণ সম্পর্কের মৌলিক প্রাথমিক আলামত। এই সম্পর্কের মৌল ভিত্তি ক্ষেত্রক্ষেতি; জমিন প্রাণের জাগরণ ও অবস্থান ক্ষেত্র। সপ্রাণতার সত্য হলো ঘাম জবজবে শরীরে পিঠে লবণ কারখানা। গাছের ছায়ায় নিরলে বয় হাওয়া। খেঁজুর কাটা দিয়ে পাতার মোটর ঘুরাচ্ছে একদল শিশু। কৃষকের শরীর জুড়ায়। পিঠে সাদা রেখা। লবণের দাগ। পাতার মোটর ঘুরছে। পাতা আচক্র ঘূর্ণিতে আচমকা থেমে যায়। হাওয়ার হুকুমত চলছে। প্রাণ, প্রকৃতি, পরিবেশ আত্মস্থ করেই মানুষ হয়ে উঠে। বাংলার কৃষকের জ্ঞান অক্ষরের পরিধি অতিক্রম করেই বেঁচে থাকে। ফসল পরীক্ষায় বার বার উত্তীর্ণ এই কৃষক। প্রতি গুচ্ছ ফসল কৃষকের সাম্য সরল বোধে অভিন্ন। সাম্য সরল তবে সহজ নয়।
জানো, জিনমগুলো তোমারই ল্যাবরেটরিতে প্রাণমূল থেকে আলাদা হয়ে অনুবীক্ষণের কাঁচে তির তির করে কাঁপছে। কোষ কোষে প্রাণ। আমি প্রাণ দেখেছি রাজশপুরের শালবাগানে। শালের গোড়া থেকে প্রতি মৌসুমে প্রাণ জাগে। শুষ্ক গোড়ায় প্রাণ লুকিয়ে থাকে। আমি প্রাণের সাথে লুকোচুরি খেলবো। ও প্রাণ, দিব্য করে বলি, এই খেলায় কোন হারজিত নাই। একদিকে ক্ষেত্রক্ষেতি, অন্যদিকে সব প্রাণ হৈ হৈ করে একসাথে প্রাণে প্রাণে বুক মিলিয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে জেগে উঠে। এই প্রভাত প্রাণের, এই দুপুর প্রাণের, এই রাত প্রাণের।
আমি পাতার মোটর দেখেছি হাওয়া উতাল দিনে। প্রতি পত্রে চিঠি। প্রতি মৌসুমের চিঠি কবি পান। কবি কাব্যে শুধু এই সব চিঠির উত্তর দেন। কাব্য মানুষ ও প্রকৃতির লিপিকা, চিঠির জবাব। এই তো সেদিন চিঠির জবাব দিচ্ছিলাম ভাষায়, কিছুতেই ভাষা খুঁজে পাই না। আমার মা তখন চিরুণি চঞ্চল হাতে আমার চুল আঁছড়ে দিচ্ছিলেন। স্মরণে ত্বরণ,স্পর্শেই মুক্তি। হারে শুড় উঠেছে প্রকৃতি, ব্যাঙের ছাতার নীচে আমি বসে আছি। ছাতা ও শূড় আমার শরীরে জন্ম নিচ্ছে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




