somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গার্মেন্টস শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি কিংবা সাংবাদিকের ম্যালনিউট্রেশন

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৭ সন্ধ্যা ৬:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২০০৬ সালের মে-জুন মাসে দেশের পোশাক শিল্প শ্রমিকরা জীবন যাত্রা ব্যয় মেটাতে না পেরে আন্দোলনে নামে। সেসব দিনের কথা নিশ্চয় সবার মনে আছে। প্রতিদিন নতুন নতুন পোশাক কারখানায় ভাঙ্গচুর-অগ্নিসংযোগ, গাড়ি ভাঙ্গচুর, জ্বালাও-পোড়াও চলছিল। তাদের আন্দোলন এই পর্যায়ে দেশে অরাজকতা তৈরি করে। গার্মেন্টস মালিকরা যদিও এর মধ্যে ষড়যন্ত্র খুঁজে পেয়েছিল, যেমন বিভিন্ন সময়ে সরকার ষড়যন্ত্র (সাবটেজ) খুজে পায়।
দেশের জাতীয় সংবাদপত্রগুলো এই আন্দোলনে ভাঙ্গচুরকে সমার্থন না দিলেও শ্রমিকদের দাবির মধ্যে যে যথার্থতা আছে তার স্বীকৃতি দেন। তারা পোশাক শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি দেওয়ার দাবিতে সম্পাদকীয় ছেপেছে। আবার প্রিন্ট ও ইলেক্টনিক মিডিয়া পোশাক শ্রমিকের নতুন মজুরি কাঠামোর জন্য গঠিত মজুরি কমিশনের বৈঠকগুলোকে ফলাও করে প্রচার-প্রকাশ করেছে।
বলা হয়, বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম অত্যন্ত শক্তিশালী। বিগত কয়েক সরকার আমলে সংবাদ মাধ্যম যে ভুমিকা রেখেছে তা বিশ্বে সবর্ত্র প্রশংসিত হয়েছে। যদিও প্রতি সরকারই সংবাদ মাধ্যমে অতিরঞ্জন নিয়ে ক্ষোভ ঝেড়েছে। তারা চেয়েছে সংবাদ মাধ্যম তাদের কাছের পক্ষে থেকে "সাফল্যের গুনগান" তুলে ধরুক। এমনকি গত কয়েকদিন আগে একই কারণে বোধহয় সাংবাদিকদের কারফিউদের মধ্যে "উর্দিওয়ালা মনের ঝাল মিটিয়ে নিয়েছেন পিটিয়ে"!
আমার যেসব বন্ধু-বান্ধবরা সংবাদ মাধ্যমে কাজ করে তারাও নিজেদের একেকজন বিরাট ক্ষমতাবান মনে করেন। আসলে তাদের কিছু ক্ষমতাতো আছে বটে। ধরেন, মন্ত্রী-এমপি, রাজনীতিবিদ, গভর্নর, সচিব, আইজি সবার কাছেই তাদের ইজি এক্সেজ থাকে। ফলে তাদেরতো ক্ষমতা কিছু হয়ই।
কিন্তু বিভিন্ন সময়ে আমাদের দেশে সাংবাদিকদের জীবন হারাতে হয়েছে সাংবাদিকতার জন্য। এ দৃষ্টিতে এটা ঝুঁকিপূর্ণ পেশা। দেশে অনেক সাংবাদিক গডফাদারদের হাতে নিহত হয়েছেন, অনেকে পঙ্গু হয়েছেন। কিন্তু সংবাদপত্রের মালিকদের টিকিটিও কেউ ছুঁতে পারেননি।
কিন্তু এই যে সাংবাদিকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেন তাদের জীবন মান কেমন, এমন প্রশ্ন করেছিলাম এক বন্ধুজনের কাছে। যা জবাব মেলে তাতে আমি খুবই হতাশ হই।
বর্তমান তদারকি (তত্তাবধায়ক শব্দটা লেখা গেল না) সরকার গত কয়েক মাস ধরে দেশের দুর্নীতিবাজদের ধরতে কত কিই না করছেন। সংবাদ মাধ্যমই কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই দুর্নীতিবাজদের তথ্য তুলে ধরেছে।
নাম না বলে একটা উদাহরণ দিই। কিছুদিন আগে আমার এক বন্ধু সাংবাদিক ঢাকার বাইরে এক বিভাগীয় শহরে গিয়ে কয়েক শত কোটি (অর্ধ হাজার কোটি টাকারও বেশি) টাকার ব্যাংক জালিয়াতির তথ্য উদঘাটন করে সংবাদ পত্রে লিড নিউজ ছাপেন। আফসোস করে সে আমায় বলছিল, ওই শহরে গিয়ে নাকি তাকে মাত্র ৫০০ টাকার হোটেল খুজে বের করতে হয়েছে। কেননা তার টিএ-ডিএ দিয়ে এই ৫০০ টাকার হোটেলে থাকাই নাকি কষ্টকর। যে সাংবাদিক হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হিসাব খোঁজে, যে সাংবাদিক প্রতিনিয়ত রাজা-উজির মারে, ব্যাংক লুটেরা-খেলাপিদের খুজে বেড়ায়, শত শত কোটি টাকার জালিয়াতি বের করে তার বেতন কত এই প্রশ্ন স্বভাবতই উঠে আসে।
আচ্ছা ব্লগেতো দেখি অনেক সাংবাদিক পোষ্ট লেখেন। সংবাদপত্রেও দুনিয়ার সমস্যা নিয়ে পোষ্ট ছাপান। নিজেদের জীবনের পোষ্ট কোথায় লেখেন? নিজেদের জীবন চলেতো? চালের কেজিতো নিদেন পক্ষে ৩০ টাকা।
ব্যারিষ্টার সাহেবতো সরকারের বড় স্পকম্যান। সাংবাদিকের নতুন ওয়েজবোর্ডের খবর কি? আর যারা পোষ্টালেন (সংবাদপত্রে উপসম্পাদকীয় লেখেন) যে ১৯৯৪ সালের পর পোশাক শ্রমিকদের মজুরি কাঠামো হয়নি, তাদের মজুরি বোর্ডের খবর কি?
সাংবাদিকদের প্রতি সম্মান রেখে আমি শিরোনামে অপুষ্টি না লিখে লিখেছি "ম্যালনিউটেশন"। যে বেতনভাতা তারা পান তাতে সাংবাদিকরাতো আসলেই অপুষ্টিতে ভুগছেন। এসব অপুষ্টিতে ভরা সাংবাদিকরা জাতির জন্য কি পুষ্টি বয়ে আনবেন?
যতটুকু জানি প্রথম আলো, স্টার, ইত্তেফাক, নিউএজ, যুগান্তর (আংশিক), সমকাল, জনকন্ঠ (আংশিক) ছাড়া (হয়ত আরো এক-দুইটা থাকতেও পারে) আর কোনো সংবাদপত্রে বর্তমান প্রচলিত ওয়েজ বোর্ডও বাস্তবায়ন হয়নি। কি সাংবাদিকতা আমরা আশা করতে পারি। ধান্ধাবাজ ছাড়া আর কোনো সাংবাদিকতো (প্রিন্ট মিডিয়ার) ভালো থাকার কথা নয়। ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে অবশ্য কিছুটা বেতন-ভাতা বেশি। কিন্তু প্রিন্ট মিডিয়াতেতো মারাত্মক অবস্থা।
আচ্ছা সাংবাদিকরা নিজেদের কথা তুলবে কবে?
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৭ সন্ধ্যা ৭:১৪
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×