somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালবাসা দিবসে আমি

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজকে ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালবাসা দিবস। আজকে সবাই জোড়ায় জোড়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমি এখন সংসদ ভবনের সামনে নীল পাঞ্জাবী পরে দাঁড়িয়ে আছি। এই সব জুটিদের মাঝে আমাকে দেখাচ্ছে ভাপা পিঠার মাঝে করলা ভত্তার মত। প্রত্যেক বছরের মত এ বছরও একটা লাল গোলাপ ফুল কিনে দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু ফুল দেয়ার কোন মানুষ নেই। ফুল দেয়ার মানুষ না থাকলেও প্রত্যেকবারই ফুল কিনে এখানে এসে দাঁড়িয়ে থাকি।
আজকে সকাল থেকে কেন জানি মনে হচ্ছে এইবার একটু অন্য রকম কিছু হতে চলেছে। রাতে স্বপ্নে দেখেছি এইবার আমি আমার প্রেমিকা খুজে পেয়েছি। আর তার হাত ধরে সংসদ ভবনের সামনে দিয়ে হাঁটছি।
আজকের বিকালটি অনেক সুন্দর। আসলে গোধূলি বিকেল বেলা হলে যা হয় আর কি।
সামনে থেকে একটি মেয়ে অনেকক্ষণ থেকেই তাকাচ্ছে। মেয়েটি দেখতে বেশ ভালই। যদি স্বর্গের অপ্সরার সাথে তুলনা করা হয় তাহলে খুব কমই বলা হবে। মেয়েটি একটি মেরুন কালারের শাড়ি পরে আছে। চুল খোলা। হালকা করে লাল লিপিস্টিক দিয়েছে। কপালে টিপ দিয়েছে। আজকালের মেয়েরা এখন আর কাজল দেয়না। কিন্তু এই মেয়েটি দিয়েছে।

মেয়েটি আমার দিয়ে এগিয়ে আসছে। হাতে একটি লাল গোলাপ রয়েছে। আমার হার্ড বিট একটু বেড়ে গেছে। বুকের মাঝে দপ দপ দপ দপ শব্দ আমি শুনতে পাচ্ছি।
মেয়েটি আমাকে বলল, হ্যালো! আমার নাম মেঘলা। আপনার নামটি জানতে পারি?
আমি বললাম, আমার নাম রাসেল।
মেঘলা বলল, আপনি একা যে? সাথে কেউ নেই?
আমি বললাম, না। আপনিও তো একা দেখছি। আপনার সাথেও কি কেউ নেই।
মেঘলা বলল, না। আসলে তেমন কাউকে খুজে পাইনি। যে আজকের দিনটি তার সাথে কাটাব।
আমি বললাম, কি করেন আপনি?
মেঘলা বলল, আমি ডাক্তারি পড়ছি। আর আপনি?
আমি বললাম, আমি সবে মাত্র ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করে একটা বেসরকারি ফার্মে জব করছি।
মেঘলা বলল, এক কাজ করলে কেমন হয়। আপনিও একা আমিও একা। চলেন আমরা দুজনে দুজনার সাথে প্রেম করি। কি হল এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন? একটা মেয়ে কি আগে কোন ছেলেকে প্রেমের প্রস্তাব দিতে পারেনা?
আমি বললাম, আসলে তা না। আমি আপনাকে ঠিক চিনিনা আর আপনিও আমাকে ঠিক চিনেন না। এভাবে প্রেম হয় নাকি।
মেঘলা বলল, কেন হবেনা। আপনি চায়লেই হবে। নাকি আপনার আমাকে পছন্দ হচ্ছে না।
আমি বললাম, আসলে তা না। এত তাড়াতাড়ি সব হচ্ছে যে কি বলব ঠিক বুঝতে পারছিনা।
মেঘলা বলল, এত ভাবা ভাবি ছাড়েন তো। এত ভেবে কোনদিন কেউ প্রেম করেনা। প্রেম এমনিতেই হয়ে যায়।
আমি বললাম, ঠিক আছে তাহলে আজ থেকে আমরা প্রেমিক প্রেমিকা।
মেঘলা বলল, এইবার ঠিক আছে। এই শোন এখন থেকে তুমি আমাকে আর আপনি আপনি করবে না। তুমি বলে ডাকবে।
আমি বললাম, ঠিক আছে। এই নাও এই গোলাপ তোমার জন্য।
মেঘলা বলল, ধন্যবাদ।
আমি বললাম, মেঘলা! ফুচকা খাবে?
মেঘলা বলল, হ্যা খাব।

ফুচকা খাওয়া শেষে আমরা সংসদ ভবনের সামনে দিয়ে হাঁটছি। আমি বললাম, মেঘলা একটা কথা বলি কিছু মনে করবে না তো?
মেঘলা বলল, হাত ধরতে চাও।
আমি বললাম, আমি হাত ধরতে চাই তুমি বুঝলা কি করে?
মেঘলা বলল, মেয়েরা এমন অনেক কিছু আছে যা আগে থেকেই বুঝতে পারে। তুমি হাত ধরতে পার আমি কিছু মনে করব না।
আমি মেঘলার হাত ধরলাম। বুকের মাঝে দপ দপ দপ দপ শব্দটি আবার শুরু হয়েছে। মনে হচ্ছে রাতের স্বপ্ন তাহলে সত্যি হল আমার।
হঠাৎ মেঘলা হাসতে শুরু করল। আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, কি হল এভাবে হাসছ কেন?
মেঘলা কোন কথা বলছে না। সে হেসেই যাচ্ছে।
আমাদের চারপাশে মুহূর্তেই কয়েকজন এসে হাজির হয়ে গেল। তাদের সবার হাতেই ক্যামেরা রয়েছে। তারাও হাসছে।
আমি মেঘলাকে বললাম, মেঘলা কি হচ্ছে এসব? আমি কিছু বুঝতে পারছিনা। তুমি এভাবে হাসছ কেন?
মেঘলা তার হাসি থামিয়ে বলল, সরি। আসলে আমি চ্যানেল B তে জব করি। আমাদের একটা Prank Show হচ্ছে “বলদ”। এই Show তে আমরা একজনকে বলদ বানাই। আর আমাদের এবারের টপিক হচ্ছে ভালবাসা নিয়ে। আর আজকে আমরা আপনাকে বলদ বানালাম। এতক্ষণ যা কিছু ঘটেছে সব কিছু দূর থেকে ক্যামেরায় Shoot করা হয়েছে।
আমি বললাম, এত মানুষ থাকতে তুমি আমাকেই পেলে। আমি কখনও ভাবতে পারিনি আমি এভাবে বলদ হব।
মেঘলা বলল, সরি। পারলে আমাকে মাফ করে দিবেন। আসলে এটা আমার জব।
একটি ছেলে বলল, Come on Dude. Forget it. আপনার এই Show আজকে রাত ১০ টায় প্রচার করা হবে। দেখবেন আপনাকে অনেক ভাল দেখাচ্ছে।
আমি বললাম, বাই।
মেঘলা বলল, বাই। ভাল থাকবেন।

আমি একাএকা হাঁটছি। আমার বিশ্বাসই হচ্ছে না। আমাকে এভাবে বলদ বানিয়ে গেল। কিন্তু এরপরেও কেন জানি মেঘলার ওপরে আমার রাগ হচ্ছে না। কিছুক্ষণের জন্যে হলেও তো তার সাথে প্রেম করেছি। তার হাত ধরে হেঁটে বেরিয়েছি। মনে হচ্ছে আমি সত্যি তার প্রেমে পরেছি।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×