(বাবা নায়ক রাজ রাজ্জাকের সঙ্গে সম্রাট। ছবি কালের কণ্ঠ থেকে নেয়া)
প্রায় দু’মাসের পরিচয়। দুজন এক সঙ্গে দৌড়াই। তিনি মূলত হাঁটেন। দৌড়ান সামান্য। আমি উল্টো। অল্প ওয়ার্মআপ স্ট্রেচিং করে শুধু দৌড়াই। এভাবে এখন সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার গড় পেসে পনেরো কিলোমিটারের কাছাকাছি দৌড়াই। ঘন্টা দেড়েক লেগে যায়। ইদানিং গতি বাড়ানোতে জোর দিয়েছি। ছয় বছর পর ট্র্যাকে নেমে অনেক ভালো করছি। লিমিটেড প্র্যাকটিসেই আশানুরূপ বা তারচে’ও বেশি উন্নতি হয়েছে। যাই হোক, ভদ্রলোকের সঙ্গে দেখা হলে কথা হয়, শুভেচ্ছা বিনিময় হয়। দৌড় ফিটনেস নিয়েই মূলত কথা হয়। প্রথম থেকেই কেমন যেন চেনাচেনা লাগতো তাকে। তা লাগতেই পারে। মানুষে মানুষে চেহারার এমন মিল থাকা তো অস্বাভাবিক কিছু নয়। নিশ্চয়ই পরিচিত কেউ ছিলো বা আছে তার মতো। তবুও তাকেই কেন যেন বিশেষভাবে পরিচিত মনে হয়। ঠিক কোথাও দেখেছি। গত পরশুও বেঞ্চে বসে থাকতে দেখে দাঁড়িয়ে কথা বললো। জানালাম, আগের দিন উনিশ কিলোমিটার এক ঘন্টা পঞ্চাশ মিনিটে দৌড়নোর পর আজ আর কোনওরকমেই শক্তি পাচ্ছি না দৌড়নোর। আগামীকালও হয়তো পারবো না। ঢেড় হয়েছে ভাই। কাছাকাছি সময় আর দেড় ঘন্টার বেশি এক সেকেন্ডও দৌড়চ্ছি না। এর মাঝে পেস বাড়ানোতে জোর দিবো। তিনি সমর্থন করলেন আমার কথাকে। সময় নিয়ে দূরত্ব বাড়াবার পরামর্শ দিলেন। বললো এভাবে বাড়াবাড়ি না করতে। বন্ধুবাৎসল অমায়িক একজন মানুষ। এরকম হাসিখুশি বিনয়ী ভালো মানুষের সঙ্গে খুব কম সাক্ষাৎ হয়েছে আমার। দেখা হলেই আদাবসালাম শুভেচ্ছা বিনিময় হালকা আলাপ হবেই। কাছাকাছি বয়সেরই হবো। পরষ্পরের নামধাম এটাসেটা কখনও জিজ্ঞেস করা হয়ে ওঠেনি। দৌড় ফিটনেস নিয়েই শুধু কথা হয়। আজ সকালে এসব নিয়ে ভাবতে ভাবতে এক পর্যায়ে আবিষ্কার করলাম যে, ভদ্রলোক আসলে নায়করাজ রাজ্জাকের ছোটো ছেলে সম্রাট। বিভিন্ন সময় পত্রপত্রিকা টেলিভিশনে দেখেছি। হালের সিনেমা নাটক সঙ্গীত নৃত্যকলা এসবের সঙ্গে কোনওরকমের কোনও সংস্রব নেই। তাই এতোদিন ঠিক শনাক্ত করে উঠতে পারিনি। বিভিন্ন সময় ম্যাগাজিন শো সাক্ষাৎকার ঈদ আয়োজন ইত্যাদি অনুষ্ঠানে টিভিতে পত্রিকায় বিক্ষিপ্তভাবে দেখেছিলাম। তার বাড়ি সেখানেই। অবশেষে রহস্যের সমাধান হলো। আর বোকা বনে গেলাম।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে অক্টোবর, ২০২২ রাত ৮:১৫