somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিরাপদ ও বিশুদ্ধ পানির জন্য কার্যকরী প্রশাসনিক নজড়দারী হবে কি? ও সংশ্লিষ্ট কিছু প্রযুক্তিগত সহায়ক চিন্তাভাবনা!

৩০ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :







এক যূগ আগে দেশে থাকতে বিভিন্ন বেসরকারী কোম্পানী কতৃক জারের ফিল্টার বা মিনারেল ওয়াটার তথা পানিকে অনেকটাই নিরাপদ ভাবতাম। তবে এই ধারণায় কিছুটা হলেও ধাক্কা খাই। এক ফার্মেসীর দোকানে গেলে সেই দোকানীর সাথে আলাপ করতেছিল সুইজারল্যান্ড ভিত্তিক Novartis ফার্মার একজন মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ! সেই রিপ্রেজেন্টেটিভের থেকে জানলাম যে বাংলাদেশে এক লিটার সাধারণ পানিকে কথিত পিউর মিনারেল ওয়াটার বা ষ্ট্যান্ডার্ড করতে গেলে খরচ পড়বে ৮০ টাকা/লিটার। সে বলল যে তারচেয়ে বরং বাসাবাড়ীর সাপ্লাইয়ের পানি বেশী ময়লা না হলে তা ছেকে হাড়িতে সিদ্ধ করে পানি পানই অনেক নিরাপদ। তাই তার সাথে আমি ও দোকানী একমত হলাম যে বিভিন্ন কোম্পানীর সাপ্লাইকৃত পানি (বিএসটিআই অনুমোদিত) পরিস্কার ও ক্ষতিকর ব্যাক্টিরিয়া কম তথা নিরাপদ হইলেও সেটা পুরোপুরি মিনারেল ওয়াটার না। আর অনেক কোম্পানী আছে যাদের আদৌ BSTIর অনুমোদনতো নাই বরং এর ধারও ধারে না। পানি একটু পরিস্কার এবং র্দূগন্ধ না থাকলেই সরাসরি ওয়াসার সাপ্লাইয়ের পানি জার বা বোতলজাত করে। এখানে পানিতে কি পরিমাণ ক্ষতিকারক ব্যাক্টিরিয়া বা জীবাণু আছে তার কোনও পরীক্ষাই এই সকল অনুমোদনহীন কোম্পান গুলি করে না। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা জারের পানি নিয়ে গত বছরের ডিসেম্বরে(২০১৭) বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) গবেষণা করে;

"সেখানে দেখা যায়, ঢাকার বাসাবাড়ি, অফিস-আদালতে সরবরাহ করা শতকরা ৯৭ ভাগ জারের পানিতে ক্ষতিকর মাত্রায় মানুষ ও প্রাণীর মলের জীবাণু ‘কলিফর্ম’ আছে। সংগ্রহ করা নমুনাগুলোয় মোট কলিফর্মের ক্ষেত্রে প্রতি ১০০ মিলিলিটার পানিতে সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মাত্রা পাওয়া গেছে যথাক্রমে ১৭ ও ১৬০০ এমপিএন (মোস্ট প্রবাবল নম্বর) এবং ফিকাল কলিফর্মের (মলের জীবাণু) ক্ষেত্রে প্রতি ১০০ মিলিলিটার পানিতে সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মাত্রা ছিল যথাক্রমে ১১ ও ২৪০ এমপিএন।"


জারের পানির কতটা জানি?

http://www.prothomalo.com/bangladesh/article/1454721

পরে র‍্যাব ও BSTIর অভিযানে মোট ৪৮টি কোম্পানীর বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়া হয় যাদের বোতলজাতকৃত পানিতে মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকারক জীবাণুর পরিমাণ বেশী। এর মধ্যে ৪৪টির কোন অনুমোদন ছিল না আর বাকী ৪টা নিবন্ধিত ছিল।

বিভিন্ন হোটেল, রেস্তোরা, রাস্তার টঙ, অস্থায়ী , ভ্রাম্যমাণ দোকান গুলোতে যেন ফিল্টার পানি বিক্রির নামে BSTIর অনুমোদনহীন কোন কোম্পানীর জার বা বোতল না রাখে তার জন্য আইন করা ও দোকানদারদের জানিয়ে দেওয়া। ভবিষ্যতে কোন অনুমোদন পানির জার পাওয়া গেলে দোকানীকে জেল ও অর্থদন্ডের মুখোমুখি হতে হবে। আর বাদবাকী বেসরকারী অফিস ও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, ষ্টাফরা আশা করি সতর্ক থাকবেন। এটা প্রাথমিক উপায় যে যতটা সম্ভব নিরাপদ ও বিশুদ্ধ পানি কিনে ঠকে বিপদে পড়তে না হয়।

দ্বিতীয় এবং আরো ভাল উপায় হল সংশ্লিষ্ট বেসরকারী কোম্পানী গুলিকে BSTIর সরবারাহকৃত মানদন্ডতো মানতেই হবে সেই সাথে বোতলের গায়ে একটা কাগজ বা ষ্টীকার জুড়ে দিতে হবে। সেখানে BSTIর মানদন্ড উল্লেখ সহ Optical mark recognition (OMR) বা Barcode সিরিয়াল নাম্বার থাকবে। এই বারকোডেই সংশ্লিষ্ট কোম্পানীকে পানির উপাদান, বিশুদ্ধ-নিরাপদ হওয়ার নিশ্চয়তা সহ, উৎপাদন ও বোতলজাতের তারিখ, কতদিনের মেয়াদ তা রেকর্ড করতে হবে। যদি BSTIর কম্পিউটার বা সার্ভারে সংশ্লিষ্ট কোম্পানী গুলি তথ্য সরবারাহ করে তাইলে সবচেয়ে ভাল ও কার্যকর ব্যাবস্থা থাকবে। তখন শুধু পুলিশ, র‍্যাব, BSTI ও ভ্রাম্যমাণ ম্যাজিষ্ট্রেরাই নন বরং সাধারণ মানুষ যারা পানি পানকারী তারাও স্মার্ট মোবাইল ফোন সেট ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে (BSTIর সার্ভারের থেকে) এই বারকোড স্ক্যান করে জারের মধ্যকার পানির বিষয়ে সঠিক তথ্য পেতে পারে। এই বিষয়ে সরকারের ইচ্ছা থাকলে BSTI ও সেই সাথে BUETর যৌথভাবে উদ্যোগ নিলে সার্ভার ও একটি এপ্লিকেশন ভিত্তিক সফটওয়্যারের মাধ্যমে শুধু পানিই না বিভিন্ন খাদ্য দ্রব্য ও অন্যান্য ব্যাবহার্য পণ্য সমন্ধেও মানুষ অনেকটাই অবগত থাকতে পারে। এতে করে ফিল্টার পানি সরবারাহ সহ তেল, মসলা, দুধ সহ বিভিন্ন পণ্যের কোম্পানী গুলা আরো সততায় বাধ্য হবে যদিও সময়ে গোপনে বা অভিযানে টেষ্ট করে কোম্পানী গুলোর পণ্যের মানের নিরাপদ ও বিশুদ্ধতা সমন্ধে নিশ্চিত হতে হবে BSTI ও সরকারকে।

এই প্রযুক্তিগত বিষয়ে সরকারী পদক্ষেপ নিলে আর কোন অনিবন্ধিত বা ভুইফোড় কোম্পানীর পক্ষে অনিরাপদ ও খারাপ পানি কিংবা অন্য নিম্নমানের, ভেজাল ও নিম্নমানের পণ্য সরবারাহও বন্ধ হয়ে যাবে। বিষয়টা অনেকটা কঠিন ও রাতারাতি প্রবর্তন না করা গেলেও মোটেও অসম্ভব না!

অফটপিক: বৃটিশ ফার্মাসিউটিকাল কোম্পানী GSK তারা অতি সম্প্রতি সুইজারল্যান্ডের Novartis ফার্মাকে কিনে নিছে;


GSK buys out Novartis in $13 billion consumer healthcare shake-up

https://www.reuters.com/article/us-novartis-gsk/gsk-buys-out-novartis-in-13-billion-consumer-healthcare-shake-up-idUSKBN1H30FK
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:০২
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×