ছবির এই জামাই-বউ চানাচুর আমার খুবই প্রিয়। দেশে যখনই যাই, এই চানাচুরের গাড়ী খুজে বের করি। সাধারনতঃ গাড়ীটাকে বেশীরভাগ সময় মোহাম্মদপুর শিয়া মসজিদের আশে-পাশেই পাওয়া যায়, আবার মাঝে-মধ্যে হাওয়া হয়ে যায়, তখন মন খুবই খারাপ হয়। দেশে কেউ গেলে আমার একটাই আব্দার থাকে, এই চানাচুরের অন্ততঃ একটা প্যাকেট আমার জন্য যেন নিয়ে আসে!
যাইহোক, এবার চানাচুর-কথনের আসল উদ্দেশ্য বলি। অনেকদিন থেকেই ইচ্ছা; আমাদের রাজীব গান্ধী... .. ..থুক্কু রাজীব নুরের মতো একটা চানাচুর মার্কা পোষ্ট দেয়া। আজ দিবো...কাল দিবো করছি অনেকদিন থেকে, দেয়া হচ্ছে না। গত সপ্তাহে এক ছোটভাই দেশ থেকে ফিরেছে। আমার জন্য চানাচুর এনেছে তিন প্যাকেট। খুশীর চোটে ভাবলাম, এবার এই পোষ্ট দেয়া থেকে কেউ আমাকে বিরত রাখতে পারবে না। তাছাড়া এই এক জীবনে তো অনেক ইচ্ছাই অপূর্ণ থেকে যায়, ছোটখাটো ইচ্ছাগুলো দ্রুত পূরন করে ফেলা উচিত, তাই না! যেই কথা, সেই কাজ.. .. ..দিলাম পোষ্ট। দেখেন তো? ঠিকঠাক মতো নকল করতে পারলাম কিনা?
১। চুরি নিয়ে অনেক অনেক বিখ্যাত উক্তি বা প্রবাদবাক্য আছে। একটা ইংলিশ প্রবাদ বাক্য এমন, ''যদি তুমি অল্প টাকা চুরি করো, তাহলে তুমি চোর। কিন্ত যদি তুমি কোটি টাকা চুরি করো, তাহলে তুমি সমাজের একজন গন্যমান্য ব্যাক্তি।'' সম্ভবতঃ এটা বৃটিশ কলোনিয়াল যুগের লর্ড ক্লাইভের মতো ব্যক্তিদেরকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে। বৃটিশরা যে কতো বড় চোর এটা লন্ডনের বৃটিশ মিউজিয়ামে গেলে কিছুটা বোঝা যায়! হেন জিনিস নাই যা এরা দুনিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে আনে নাই।
২। গতকাল আমাদের শহরের টাউন সেন্টারে কিছু একটা চিন্তা করতে করতে হাটছিলাম। আনমনে পকেট থেকে প্যাকেট বের করে একটা সিগারেট ধরালাম। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই একটা আনুমানিক ১৫/১৬ বছরের অপূর্ব সুন্দরী মেয়ে এসে বললো, তোমার কাছে কি কোন স্পেয়ার সিগারেট আছে? বুঝলাম সে আমার প্যাকেট দেখে ফেলেছে। বললাম, আছে। কিন্তু তোমাকে দেখে মোটেও ১৮ বছরের উপরের মনে হচ্ছে না। কাজেই তোমাকে সিগারেট দিয়ে আমি বিপদে পরতে চাই না।
মেয়েটা মন খারাপ করে চলে গেল। দেখে একটু খারাপই লাগলো, কিন্তু উপায় নাই। এদের জ্বালায় আমি প্যাকেট বের করি না। কায়দা করে পকেটের ভিতর থেকেই প্যাকেট থেকে একটা স্টিক বের করি! আনমনা থাকায় প্যাকেট বের করে ফেলেছিলাম!!
৩। আমার বই পড়ার জগতের একটা বিশাল অংশ দখল করে ছিল সেবা প্রকাশনীর বইগুলো। কুয়াশা দিয়ে শুরু। তারপর একে একে মাসুদ রানা, ওয়েস্টার্ন, কিশোর ক্লাসিক, অনুবাদ, রহস্য পত্রিকা.. ..কিছুই বাদ রাখিনি। দেশ ছাড়ার পর বিভিন্ন কারনে আর সেবার বই পড়া হয় না। কিছুদিন আগে একজনের কাছ থেকে একটা রহস্য পত্রিকা এনেছিলাম। বেশ কয়েকদিন ধরে আস্তে আস্তে রসিয়ে রসিয়ে পড়লাম, আর নস্টালজিক হলাম।
আহা.. ..আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম, কেন যে শুধু শুধু বড় হইলাম!
৪। রাণী মুখার্জির 'হিচকি' মুভিটা কে কে দেখেছেন? ভাবছি এটা নিয়ে একটা পোষ্ট দিব।
৫। ধর্ম আর রাজনীতি, এই দুই বিষয় নিয়ে তর্ক করতে যাওয়া আমার কাছে সময়ের নিদারুন অপচয়ের নামান্তর। কারন, কোন পক্ষই আদতে তার বিশ্বাস থেকে পিছু হটে না, তর্ক চলতেই থাকে। তবে সমস্যা সেখানে না, সমস্যা হলো, এই তর্ক আস্তে আস্তে যুক্তি বাদ দিয়ে খিস্তি-খেউরির দিকে অগ্রসর হয়!
৬। পৃথিবীর বর্তমান রাজা-রানীদের সেই আগের দিন আর নাই। তবে বৃটেনের রানী, ২য় এলিজাবেথের ব্যাপারটা একটু আলাদা। পৃথিবীর কোন দেশে যেতে উনার কোন পাসপোর্ট লাগে না, তাই উনার কোন পাসপোর্ট নাই। বাকিংহাম প্রাসাদে উনার নিজস্ব ক্যাশ মেশিন (এটিএম) আছে। গ্রেট বৃটেন ছাড়াও বিশ্বের আরো ১৫টি সার্বভৌম রাষ্ট্রের রানী ও রাষ্ট্রপ্রধান তিনি।
৭। যারা উইল স্মিথের The Pursuit of Happyness মুভিটা দেখেন নাই, তারা একবার হলেও দেখবেন, প্লিজ। আমি কয়েকবার দেখেছি। তবুও প্রায়ই দেখতে ইচ্ছা করে।
৮। জীবনে আমি দেশে-বিদেশে অনেক বিচিত্র মানুষ দেখেছি। আমার এই ক্ষুদ্র জীবনে দেখা বিচিত্রতম মানুষ ছিলেন হুমায়ুন আহমেদ। আমার কাছে হুমায়ুন ভাই। উনি একাধারে ছিলেন আমার এক সময়ের প্রতিবেশী, পরবর্তীতে পারিবারিক কিছু যোগাযোগ ছিল। আরো পরে কর্মসূত্রেও উনার সাথে আমার দেখা-সাক্ষাৎ হতো। একবার এক মিটিং থেকে বের হয়ে বাইরে এক গাছতলায় দাড়িয়ে সিগারেট ফুকছি। উনি ড্রাইভারকে ডেকে বিদায় করে দিলেন। আমি বললাম, ঘটনা কি? ড্রাইভারকে বিদায় করলেন যে? হুমায়ুন ভাই বললেন, এই রোদের মধ্যে ক্ষুধাপেটে রাস্তায় রাস্তায় হাটো, অনেক ইন্টারেস্টিং জিনিস দেখতে পাবে। তারপর আমাকে হতবাক অবস্থায় রেখে উনি দুপুর ২টার সময় এপ্রিল মাসের পিচগলা রাস্তায় নেমে পরলেন। মিটিং শেষে লান্চের জন্য উনাকে অনেক জোড়াজুড়ি করা হয়েছিল। তখন কিছুই না খাওয়ার মাজেজা বুঝলাম।
এই ছিলেন ওয়ান এন্ড ওনলি হুমায়ুন আহমেদ। আমার মনে হয়না, বাকী জীবনেও আমি এতো বিচিত্র কোন মানুষের সান্নিধ্য পাবো। উনার প্রতিটা বই আমার কালেকশানে আছে। আজও যখনই উনার কোন বই পড়ি, হুমায়ুন ভাইকে যেন চোখের সামনে দেখি।
৯। বিয়ের আগে প্রেমিক-প্রেমিকার কথোপকথনঃ
প্রেমিকঃ যাক, অবশেষে তুমি রাজি হলে। আমি আর অপেক্ষা করতে পারছিলাম না।
প্রেমিকাঃ তুমি কি আমাকে ছেড়ে চলে যাবে?
প্রেমিকঃ অবশ্যই না। এ নিয়ে ভুলেও চিন্তা করবে না তুমি!
প্রেমিকাঃ তুমি কি আমাকে সত্যিই ভালোবাসো?
প্রেমিকঃ অবশ্যই.. .. ..সারা জীবন
প্রেমিকাঃ আমাকে কখনও ধোকা দেবে?
প্রেমিকঃ প্রশ্নই আসে না, এ ধরনের কথা তোমার মাথায় আসছে কোথা থেকে?
প্রেমিকাঃ তুমি কি আমার চুল নিয়ে খেলবে?
প্রেমিকঃ নিশ্চয়ই.. .. যতোবার সুযোগ পাবো।
প্রেমিকাঃ তুমি কি আমাকে কখনও আঘাত করবে?
প্রেমিকঃ তুমি কি পাগল? আমি মোটেই সে ধরনের মানুষ নই।
প্রেমিকাঃ আমি কি তোমাকে পুরাপুরি বিশ্বাস করতে পারি?
প্রেমিকঃ হ্যা।
প্রেমিকাঃ প্রিয়তম!
আর বিয়ের পরে?
উপরের লেখাটা নিচ থেকে উপরের দিকে পড়ে যান।
৬ নং, ৯ নং এবং ছবিটা নেট থেকে নেয়া।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:১২