somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিদায় করোনাময় ২০২০, আগমন শুভ হোক ২০২১ সালের!!!

০২ রা জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বিগত দু'টা বছরই সারা বছরের ঘটনাবহুল বিষয়গুলি নিয়ে বছর শেষে পর্যালোচনামূলক পোষ্ট দিয়েছি। ট্রেন্ড বজায় রাখতে হলে এবারও একটা দেয়া উচিত। তবে ২০২০ নিয়ে লেখা একদিকে যেমন সহজ পুরোটা বছর কোভিডময় হওয়ার কারনে; আরেকদিকে তেমনি কঠিন, কারন করোনা ভাইরাসের বছরজুড়ে সরব উপস্থিতির দাপটে অন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়ই চাপা পড়ে গিয়েছে যেগুলো করোনার প্রাদূর্ভাব না হলে আলোচনায় বিশাল স্থান দখল করে থাকতো। এদিকে কাজের প্রচন্ড চাপে ব্যস্ত থাকার কারনে লিখার সময়ই বের করতে পারছিলাম না =p~ । যাইহোক, জোড়াতালি দিয়ে একটা দাড় করালাম। কারন কোন এক গুণীব্যক্তি কোন একসময়ে বলেছিলেন, নাই মামার চেয়ে নাকি কানা মামা সবসময়েই অগ্রাধিকার প্রাপ্তির যোগ্যতা রাখে!

বছরের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলো তুলে ধরার আগে কয়েকটা বিষয় নিয়ে একটু বিস্তারিত বাতচিৎ করতে মন চাইছে। সবকটাই বিশ্বের এক নাম্বার পরাশক্তি আমেরিকাকে নিয়ে। বলা বাহুল্য বিষয়গুলি আমেরিকাকে শুধু লন্ডভন্ড না, একেবারে নাঙ্গা করে দিয়েছে বাকী বিশ্বের সামনে!!!

বলা হয়ে থাকে, আমেরিকাই হলো বর্তমান বিশ্বের হর্তা কর্তা। শৌর্য-বীর্য-ডলার, কি নাই তাদের! তাদের সাথে পাল্লা দেয়ার মতো দুঃসাহস কার আছে? আছে……..সেই দুঃসাহস দেখিয়েছে কোন দেশ বা জাতি না, এক ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ভাইরাস, যা কিনা সাদা চোখে দেখাই যায় না। যেই আমেরিকার দাপটে সমস্ত পৃথিবী ব্যতিব্যস্ত থাকে, তারাই কিনা অসহায় হয়ে পড়লো এক নাদান ভাইরাসের কাছে! বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করে এতো এতো মারনাস্ত্র তৈরী করে তারা, সারা বিশ্বে প্রতিনিয়ত দাঙ্গা-ফ্যাসাদ বাধিয়ে রাখে; কিন্তু নিজেদের জনগনের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে অপারগ দেশটা। দুঃখের বিষয় হলো, গোটা বিশ্বে করোনাক্রান্ত মৃত্যুর ২০ শতাংশই আমেরিকার। আর আক্রান্তের হার ২৫ শতাংশ!! কেন এই ভয়াবহ অবস্থা? আশ্চর্য হলেও সত্য, এই দেশটার স্বাস্থ্যসেবা অসমতার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত। আরও আশ্চর্যের বিষয় হলো, বাক-স্বাধীনতার ধ্বজাধারী এই দেশটাতে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা রাজনৈতিক কারনে গোটা বছর জুড়েই খোলাখুলি কথা বলতে অস্বস্তি বোধ করেছেন। মূলতঃ এই দুই কারনেই দেশটা তার নাগরিকদেরকে যথাযথ সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছে; এমনটাই বিশেষজ্ঞদের মতামত!

মানবাধিকারের প্রবক্তা আর দেশে দেশে মানবাধিকারের জ্ঞান বিতরনকারী মহান আমেরিকার জন্য ২০২০ সালটা এক অর্থে ছিল সারা বিশ্বের কাছে আমেরিকার বর্ণবাদী রুপ প্রকাশিত হওয়ার বছর। এক শেতাঙ্গ পুলিশ অফিসার এক কালা আদমীর গলায় হাটু চেপে ধরে দিনে-দুপুরে খোলা ময়দানে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেললো। এই বর্ণবাদীতার প্রতিবাদ হয়েছে সারা বিশ্বসহ খোদ আমেরিকাতেই। কিন্তু কাজের কাজ কি কিছু হয়েছে? কিছুদিন পরেই ফ্লয়েডের মতোই আরেক কালা আদমী নিরস্ত্র জ্যাকব ব্লেককে গুলি করে পুলিশ। এক বা দুইটা না, কমপক্ষে সাতটা! সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায় জ্যাকব ব্লেক তাঁর পার্ক করা গাড়ির দিকে যাচ্ছে। তাঁর পিছনে রিভলভার হাতে দুই পুলিশ অফিসার। জ্যাকব গাড়ির দরজা খুলে ঢুকতে যেতেই একজন তার শার্ট ধরে টানলো। তারপরই কথা নাই, বার্তা নাই গুলি চলতে শুরু করল। মোট সাতটি গুলির আওয়াজ ভিডিওতে শোনা গেছে। এমন আরো বহু ঘটনা আছে, বলতে গেলে পোষ্ট বেহুদা বড় হয়ে যাবে। আমি শুধু সবাইকে অনুরোধ করবো এই ভিডিও পুরোটা দেখেন (বিশেষ করে, পুলিশ আর মহিলার কথোপকথন পুরোটা অবশ্য অবশ্যই দেখবেন), যেখানে পুলিশ অফিসার এক শেতাঙ্গ মহিলা গাড়িচালককে বলছে, we only kill black people, right!! ''মানব অধিকার'' কথাটাকে শ্রেফ কৌতুক বানিয়ে দিয়েছে এরা!

মানবাধিকারের প্রসঙ্গ যখন আসলোই, তখন আরেকটা বড় ঘটনার বয়ান করি। ফোর্ট হুড। আমেরিকার অন্যতম বৃহদাকার সেনানিবাস। এখানেই ভেনেসা গিলেনের ধর্ষণ আর হত্যাকান্ড ঘটে। ভেনেসার এটর্নী বলেছেন, সেনানিবাসের মতো সুরক্ষিত জায়গায় একজন নারী সৈন্য যদি নিরাপত্তা না পায়, তাহলে সারা আমেরিকাতে অসংখ্য নারী কিভাবে সুরক্ষিত থাকবে? তিনি আরো বলেছেন, enough is enough! আর কিছু কি বলার দরকার আছে? এর পরপরই আরো অসংখ্য নারী সৈনিকের হিউমিলিয়েশানের ঘটনা সামনে চলে এসেছে। আমেরিকার মতো দেশেও নারীরা নির্যাতিত হয় আর ভয়ে ঘটনা চেপে যায়। আমাদের দরিদ্র আর পশ্চাৎপদ দেশটার সাথে পার্থক্য থাকলো কই? আর কিছু বলতে চাই না, বাকীটা আপনারাই বুঝে নেন!!!

এমনিতে আমি স্ট্যান্ডআপ কমেডিয়ান ট্রেভর নোয়া'র একজন ডাইহার্ড ভক্ত। তবে ২০২০ সালে তার চেয়েও বড় ভক্ত হয়েছি ডোনাল্ড ট্রাম্পের। What a comedian!! আমরা তৃতীয় বিশ্বের ক্ষমতালোভী রাজনীতিবিদদের সাথে সমধিক পরিচিত। কিন্তু খোদ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট যদি সেরকমটা হয়, তাহলে কেমন দেখায় ব্যাপারটা? আপনাদের কি মনে হয় জানিনা; তবে আমার প্রায়শঃই মনে হয়, ট্রাম্পের খোলসে তৃতীয় বিশ্বের কোন রাস্ট্রনায়ককে আমেরিকার গদিতে বসিয়ে দেয়া হয়েছে। আর এই কাজটা করেছে খোদ আমেরিকারই জনগন! হোয়াট অ্য শেইম!! ট্রাম্প আভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে সবচেয়ে বড় যে ক্ষতিটা করেছে তা হলো, আমেরিকার সাধারন জনগনের মনে দেশের ভোট তথা গনতান্ত্রিক ব্যবস্থার ব্যাপারে সন্দেহ ঢুকিয়ে দিয়েছে। সে বাংলা বলতে পারলে ভোট নিয়ে পুকুরচুরি / সূক্ষচুরি ইত্যোকার টার্মগুলো যে ব্যবহার করতো, এতে কোনই সন্দেহ নাই। খবর বেরিয়েছে, হেরে যাওয়া নিশ্চিত হওয়ার পর ট্রাম্প এমনকি মার্শাল ল জারির ব্যাপারেও চিন্তা-ভাবনা করেছিল।

ডোনাল্ড ট্রাম্পঃ আমার চোখে বছরের সেরা কমেডিয়ান!!!



চলেন, তাহলে এবার গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলোতে একটু নজর বুলাই!!

জানুয়ারীঃ
৩ তারিখে বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মার্কিন ড্রোন হামলায় ইরানী শীর্ষস্থানীয় জেনারেল কাশেম সোলায়মানি আর ইরাকী আধা-সামরিক বাহিনীর নেতা আবু মাহদী আল-মুহান্দিস মৃত্যুবরন করেন। ইরান প্রতিক্রিয়ায় বলেছিল, তারা কঠোর প্রতিশোধ নিবে। ৮ তারিখে তারা ইরাকে দু‘টা আমেরিকান সেনাঘাটিতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপনাস্ত্রের হামলা চালায়। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত ইরান মোটামুটিভাবে হুমকি-ধামকির মধ্যেই নিজেদেরকে আবদ্ধ রেখেছে। গোটা বিশ্ব এখনও তেমনভাবে 'কঠোর প্রতিশোধ' এর দেখা পায় নাই। দেখা যাক।

৩০ তারিখে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বিশ্বব্যাপী ভাইরাসজনিত একটা অসুখ প্রাদুর্ভাবের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়।

৩১ তারিখে যুক্তরাজ্য এবং জিব্রাল্টার আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরোপিয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে যায়। এর সাথে সাথেই শুরু হয় এগারো মাস-ব্যাপী ট্রানিজিশান পিরিওড যেটার সমাপ্তি হলো ৩১শে ডিসেম্বর। ব্রেক্সিট নিয়ে একসময় আলাদাভাবে লেখার ইচ্ছা আছে।

ফেব্রুয়ারীঃ
১১ তারিখে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া অসুখটার আনুষ্ঠানিক নামকরন করে, কোভিড-১৯।

মার্চঃ
১১ তারিখে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বিশ্বময় কোভিড-১৯ মহামারীর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়। সাথে সাথেই এটা আল্লাহর গজব নাকি একটা সাধারন মহামারী এই নিয়ে আস্তিক-নাস্তিক বাকযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। আমাদের ব্লগও এর বাইরে ছিল না।

১২ তারিখে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মহামারী ঘোষণার প্রেক্ষিতে গ্লোবাল স্টক মার্কেটগুলি ক্র্যাশ করে।

এপ্রিলঃ
৮ তারিখে চীনের যেই উহান থেকে কোভিড ১৯ মহামারীর সূচনা, সেখানে লকডাউনের অবসান ঘোষণা করা হয়।

১৪ তারিখে ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় অনুদান বন্ধের ঘোষণা দেয়। ট্রাম্পের কথা শোনে না, কত্তোবড় বেয়াদপ!!

মেঃ
৬ তারিখে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা প্রথম খালি চোখে দেখতে পাওয়া একটা ব্ল্যাকহোল আবিস্কারের ঘোষণা দেয়।

৯ তারিখে ভারত-চীন সীমান্তের নাথু লা ক্রসিংয়ে প্রায় ১৫০ জন ভারতীয় এবং চীনা সেনা প্রাচীণ পন্থায় হাতাহাতি আর পাথর ছোড়ার যুদ্ধে লিপ্ত হয়।

১৫ তারিখে গবেষকরা ২.৫ সেমি এর একটা মিলিপেড ফসিলকে পরীক্ষা করে ঘোষণা দেয় যে, এরাই ছিল পৃথিবীর ভুমিতে বিচরণ করা প্রথম প্রাণী। এরা ৪২৫ মিলিয়ন বছর আগে ভু-পৃষ্ঠে বিচরণ করতো। তবে এদের হাটাহাটির কারন তথা মূল উদ্দেশ্য নিয়ে কোন আলোকপাত করা হয় নাই!

২১ তারিখে ঘুর্ণিঝড় আমফান ভারত আর বাংলাদেশের উপকুলে আঘাত হানে। এটা রেকর্ড ১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশী ক্ষয়ক্ষতি সাধন করে। আগের রেকর্ডটি করেছিল ঘুর্ণিঝড় নার্গিস।

২৫ তারিখে অনেক যুগান্তকারী উদ্ভাবনের দেশ আমেরিকা হাটুতে চেপে শ্বাসরোধ করে মৃত্যুদন্ড কার্যকরের একটা পদ্ধতি আবিস্কার করে। এই দিনে পুলিশ অফিসার ডেরেক চাউভিন এক কালো নাগরিক জর্জ ফ্লয়েডের উপর এর সফল প্রয়োগ ঘটান। এর ফলে ''ব্ল্যাক লাইভ ম্যাটার্স'' নামে একটা আন্দোলনের সূত্রপাত হয়।

ইতিহাসে নাম লেখানো পুলিশ অফিসার ডেরেক চাউভিন



জুনঃ
১৫ তারিখে চীন-ভারত সীমান্তের গালোয়ান উপত্যকায় এক পালোয়ানী লড়াইতে ভারত ও চীনের বহু সৈন্য হতাহত হয়।

জুলাইঃ
১ তারিখে রাশান সুপ্রিম ভ্লাদিমির পুতিন ২০৩৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থেকে আমেরিকার মাথাব্যাথা আরো বাড়ানোর ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করেন।

১০ তারিখে তুর্কী প্রেসিডেন্ট এরদোগান ১৯৩৪ সালের প্রেসিডেন্সিয়াল ডিক্রি বাতিল করে আয়া সোফিয়াকে আবার মসজিদে রুপান্তর করেন। এটা নিয়েও ব্লগের লিলিপুটিয়ানরা অনেক হাউকাউ করে ব্লগের পরিবেশ নষ্ট করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হন।

৩০ তারিখে নাসা সফলভাবে ''মার্স ২০২০'' রোভার মিশন লন্চ করে।

অগাষ্টঃ
১ তারিখে আরব আমিরাতে আরব বিশ্বের প্রথম বানিজ্যিক নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট, বারাকাহ চালু হয়।

৪ তারিখে লেবাননের বৈরুতে যেনতেন করে স্টোর করে রাখা এমোনিয়াম নাইট্রেটের বিশাল বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ২২০ এর অধিক প্রাণহানি আর ১০ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়। এই ঘটনা থেকে কেউ কি শিক্ষা নিবে?

১১ তারিখে রাশান প্রেসিডেন্ট পুতিন রাশিয়ায় তৈরী কোভিড ১৯ ভ্যাক্সিনের অনুমোদনের ঘোষণা দেন।

সেপ্টেম্বরঃ
৩ তারিখে মেক্সিকোতে তুষার যুগের ২০০টা ম্যামথ আর ৩০টা অন্যান্য জীবজন্তুর কংকাল পাওয়া যায়। উল্লেখ্য, রাজধানীর একটা এয়ারপোর্টের উন্নয়নের জন্য খননকালে এই যুগান্তকারী ঘটনা ঘটে। এদিকে আমাদের ''ফাটা কপাল'' এর কারনে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের উন্নয়নমূলক খননকার্যে শুধু বোমা পাওয়া যাচ্ছে! কোন কথা হলো?

১৪ তারিখে রাশিয়ার সাইবেরিয়ায় প্রায় চল্লিশ হাজার বছর পূর্বের এক গুহা ভালুকের প্রথমবারের মতো অবিকৃত দেহ পাওয়া যায়।

২৭ তারিখে নগোর্ন-কারাবাখ নিয়ে আর্মেনিয়া আর আজারবাইজানের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়।

অক্টোবরঃ
১০ তারিখে আর্মেনিয়া আর আজারবাইজানের মধ্যে যুদ্ধ বিরতি সমঝোতা হয়।

১৫ তারিখে থাইল্যান্ডে সরকার-বিরোধী আন্দোলনের কারনে জরুরী অবস্থা জারী করা হয় এবং মিডিয়ার উপর সেন্সরশীপ আরোপ করা হয়। এ‘ব্যাপারে আমাদের ব্লগের থাই মুখপাত্র কিছু বলেন নাই দেখে আশ্চর্য হয়েছি।

১৭ তারিখে আমার অত্যন্ত পছন্দের একজন মানুষ, নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডের্ন দ্বিতীয়বারের মতো জয়লাভ করেন।

নভেম্বরঃ
৪ তারিখে আমেরিকা আনুষ্ঠানিকভাবে জলবায়ু বিষয়ক প্যারিস চুক্তি থেকে বের হয়ে আসে। এটা ছিল ট্রাম্পের ছাগলামীর আরেকটা উদাহরন।

৯ তারিখে রাশিয়ার মধ্যস্থতায় আর্মেনিয়া আর আজারবাইজানের মধ্যে যুদ্ধাবসানের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। যুদ্ধে আর্মেনিয়া পরাজয়ের স্বাদ গ্রহন করে!

১৮ তারিখে ফাইজার বায়োএনটেকের কোভিড ১৯ ভ্যাক্সিনের ট্রায়াল সমাপ্ত হয় এবং ৯৫ শতাংশ কার্যকারিতা ঘোষিত হয়।

২৩ তারিখে এ্যস্ট্রাজেনেকা-অক্সফোর্ড ভ্যাক্সিন ৭০ শতাংশ কার্যকর বলে ঘোষণা করা হয়। তবে প্রথমে হাফ ডোজ এবং এক মাস পরে ফুল ডোজ দেয়া হলে এটার কার্যকারিতা বেড়ে ৯০ শতাংশ হওয়ার কথা বলা হয়।

২৬ তারিখে ভারতে কৃষকদের আন্দোলন শুরু হয়।

২৭ তারিখে ইরানের পারমানবিক কর্মসূচীর শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞানী মোহসেন ফখরিজাদেহকে দূর-নিয়ন্ত্রিত প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যা করা হয়।

৩০ তারিখে আলফাফোল্ড নামে একটা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এলগোরিদম ''প্রোটিন ফেল্ডিং'' নামে জীববিজ্ঞানের অন্যতম বৃহৎ রহস্যের সমাধান করে। উল্লেখ্য, এই এলগোরিদমের উদ্ভাবক ডীপ-মাইন্ড নামে একটা বৃটিশ কোম্পানী।
এই দিনেই মডের্না তাদের ভ্যাক্সিন ৯৪.১ শতাংশ কার্যকর বলে ঘোষণা করে।

ডিসেম্বরঃ

১ তারিখে যুক্তরাজ্য ফাইজার বায়োএনটেকের টীকার অনুমোদন দেয়।

৮ তারিখে ৯১ বছর বয়সী মার্গারেট কিনান বিশ্বের প্রথম হিসাবে ফাইজার বায়োএনটেকের টীকার প্রথম ডোজ নেন।
১৪ তারিখে ইলেক্টোরাল কলেজের সদস্যরা আনুষ্ঠানিকভাবে জো বাইডেনকে বিজয়ী ঘোষণা করে

২৪ তারিখে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন আর যুক্তরাজ্যের মধ্যে বহুল প্রতীক্ষিত মুক্ত বানিজ্য চুক্তি'র ব্যাপারে সমঝোতা হয়। ফলে, 'নো ডিল' এর দুঃস্বপ্ন থেকে বেড়িয়ে আসে উভয় পক্ষ।

২৮ তারিখে বাংলাদেশের ঢাকাই মসলিনের ভৌগলিক নিদর্শক পন্যের স্বীকৃতি (জি আই স্বীকৃতি) মিলে। ছয় বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে এই অর্জন সম্ভব হয়। এই দিনে এ'সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করে ওয়ার্ড ইন্টেলেকচ্যুয়াল প্রপার্টি অর্গানাইজেশান। উল্লেখ্য, এটি ছিনতাই করার জোড় প্রচেষ্টা চালাচ্ছে ভারত তথা পশ্চিম বঙ্গ।

৩০ তারিখে যুক্তরাজ্য এ্যস্ট্রাজেনেকা-অক্সফোর্ড ভ্যাক্সিনের অনুমোদন দেয়। একই দিনে মার্গারেট কিনান ফাইজার বায়োএনটেকের টীকার দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার মাধ্যমে কোর্স পূর্ণ করেন। দাদীমা পুরাপুরি সতেজ আছেন।


পোষ্ট আরো বড় করে আপনাদের ধৈর্য্যের পরীক্ষা বরং আর না নেই! বিশ্বের সব শান্তিকামী মানুষের মতো আমিও কামনা করি, নতুন বছরটা আমাদেরকে এমন একটা আবাসযোগ্য পৃথিবী উপহার দিবে যেখান মহামারী, হিংসা কিংবা হানাহানি থাকবে না। আস্তিক-নাস্তিক, নারী-পুরুষ, গণতন্ত্র-সমাজতন্ত্র আর বড়লোক-ছোটলোক সবাই মিলেমিশে থাকবে!!! :P

আপনাদের সবাইকে নতুন বছর ২০২১ এর একরাশ শুভেচ্ছা। হ্যাপি নিউ ইয়ার টু অল!!!

তথ্য ও ছবিঃ গুগল।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১০:১৩
৩৫টি মন্তব্য ৩৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×