আগের পর্ব
রজত ঘাড় ঘুরিয়ে বলল, কে হাসে!
সুধার মুখে যেন রক্ত ফিরে এল। সুধা বলল, আমার স্বামী।
রজত দাঁতে দাঁত পিষল। তোমার স্বামী আমি!
আমি লাফ দিয়ে নিচে নেমে এলাম, তারপর বললাম, ইয়ার্কি মারবার আর জায়গা পাওনি। স্বামী বদল হলেই হল। রিয়েল বিয়ে হলে না হয় কথা ছিল। নারায়ণ সাক্ষী কি ম্যারেজ ব্যুরোর খাতায় সই দিলে আমার বলবার কিছু ছিল না। শালা বিয়ের মামদোবাজি দেখিয়ে তুমি আমার বাড়ি, টাকাকড়ি, বউ হাতাতে চাও!
রজত একহাতে সুধাকে জাপটে ধরল। অন্য হাতে পিস্তল বাগিয়ে বলল, আমি মিলিটারি ম্যান, তোর মত একটা পেঁচি ভূতকে উড়িয়ে দিতে আমার এক মিনিটও লাগবে না।
সুধা ভয়ে থরথর করে কাঁপছিল। আমি বললাম, শালা সাতপুরুষ তোর কেউ মিলিটারিতে ঢোকেনি। তুই খিদিরপুরের ইমপোর্টেড মাল, স্মাগলড হয়ে এসেছিস।
সুধা চেঁচিয়ে উঠল, বাঁচাও!
আমি সঙ্গে সঙ্গে রজতের কাছা খুলে দিলাম। কাপড় সামলাতে গিয়ে রজত হাত সরাতেই, সুধা ছিটকে বিছানায় গিয়ে পড়ল। রজত বিছানায় ঝাঁপ দিয়ে চেঁচিয়ে উঠল, আমার মুখের গ্রাস কেউ কোনদিন ছিনিয়ে নিতে পারেনি। তোর ভূতের মত বরটাও পারবে না।
সুধা আবার চেঁচিয়ে উঠল। আমি তীরের মত এগিয়ে গিয়ে রজতের নাক কামড়ে দিলাম। রজত 'বাপস!' বলে উঠে দাঁড়াতেই, সুধা দরজার দিকে ছুটে গেল। রজত অন্ধ রাগে গুলি চালাল। দুম! দুম! দুম!
গুলির শব্দে আমি নার্ভাস হয়ে গিয়েছিলাম। আমার মাথা চিঁড়েচ্যাপ্টা করে দেবার সময় বাঘমার্কা বাসটাও এরকম একটা দুম করে শব্দ করেছিল। ভয়ে একলাফে আমার ঘুলঘুলিতে ঢুকে দেখি, লাল রঙের সুধা বসে আছে!
সুধা পা দোলাতে দোলাতে বলল, তুমি বড্ড চালাক, না? ভেবেছিলে আমাকে একলা ফেলে, তোমার মঞ্জুবালার সাথে মজা মারবে? দাঁড়াও দেখাচ্ছি মজা, এবার তোমার নাকে নল ছেঁচে দেব।
আমি বললাম, তুমিও কম যাও না। তোমার রজতশুভ্র কোথায় গেল? ফুলশয্যা হবে না?
সুধা হেসে উঠল। সেই সঙ্গে আমিও। তারপর হে পাঠক-পাঠিকা, আমি আর বলতে পারছি না। আমার লজ্জা করছে। ছিঃ! ছিঃ! আমাদের দুই ভূত-ভূতানির নিরাবরণ বায়বীয় শরীর ক্রমশ সংলগ্ন হতে হতে একেবারে এক হয়ে গেল। আমরা অনন্ত, অপার আনন্দের উল্লাসে, ভৌতিক সুরে গেয়ে উঠলাম, আজ আমাদের ফুলশয্যা অকাল বসন্তে!
(সমাপ্ত)
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই নভেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৩:৫৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



