তুখোড় কোন লেখকের জন্য নাকি কঁচি হাতে নাদুস নুদুস গল্প/কবিতা লিখে ব্লগের পাতা ভরিয়ে ফেলা উঠতি কোন লেখকের জন্য! ব্লগটা কি ৬০ বছরের সুস্থির পরিনত মস্তিকের অধিকারীর জন্য নাকি ২০ বছরের টগবগে রক্তের যুবকের জন্য??ব্লগটা আসলে কার জন্য রবীন্দ্রনাথের জন্য নাকি আমাদের মতো অকবির জন্য??
আমার মনে হয় ব্লগটা যারা লিখতে চান তাদের সবার জন্য।
সামুতে যারা লেখালেখি করছেন বা করতে আগ্রহী তাদের মধ্যে একটা নিজস্ব বিশ্বাস আছে। বিশ্বাসটা মোটামুটি সবার জন্যই একই রকম; আর দশজন লেখকের মতো আপনার ভিতর স্বতন্ত্র ও বিশেষ কিছু রয়েছে।যে গুলো আপনি ব্লগে দেখাতে চান। যারা টুকটাক লেখালেখি করেন তাদের প্রত্যেকের মনেই অল্প বেশি এই বিশ্বাসটা যে আছে যে তার ভিতর একটা সুপ্ত ট্যালেন্ট বহমান।
অনেক সময়ই আমাদের বিশ্বাসটা আমাদের ভুল বার্তা দেয়। আইমিন আমরা হয়তো আমাদের মানের চেয়ে খারাপই লিখি। আর আমাদের এই দুর্বলতাটুকুনকে কাজে লাগিয়ে কেউ কেউ আমাদের রবীন্দ্রনাথের সাথে তুলনা করে ফেলেন এবং বেশ সোজাসাপ্টা ভাবে সমালোচনা করে যান।( সমালোচনা হতে পারে একটা শিল্প কিন্তু প্রতি দশ জন সমালোচকের প্রায় দশ জনেরই সেই শিল্প জ্ঞান নেই)
আপনি পরিনত লেখক হলে হয়তো সে সমালোচনা হ্যান্ডেলিং করতে পারবেন। আর যদি হন নব্য লেখক তবে হয়তো আপনি ভেঙে পড়বেন কিংবা লেখালেখি ছেড়ে দেবেন নয়তো সমালোচনার বদলে সমালোচনা শুরু করবেন!!
আপনি হয়তো জানেন লেখক হতে যাওয়ার ক্ষেত্রে অন্যতম একটা কঠিন ধাপ হচ্ছে সমালোচনার সাথে নিজেকে মানিয়ে নেয়া । তবু স্থির করতে পারছেন না কি করবেন!!ওকে আই এম উইথ ইউ!
ক্রিটিসিজমকে পারসোনাল অ্যাটাক হিসেবে নেবেন না
সমালোচনাকে পারসোনাল এটাক হিসেবে বিবেচনা করবেন না। এতে করে আপনার উত্তেজিত হয়ে সমালেঅচকেই পারসোনাললি এটাক করার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। যা আপনার অস্থিরতার ও চিন্তা চেতনার অগভিরতার প্রমান দেবে।
ক্রিটিসিজমের ভিতর ভালো কিছু খোজার চেস্টা করুন
সমালোচনাকে পজিটিভলি নেন। আপনি বরং চিন্তা করুন আপনার লেখালেখি অন্তত একজনকে মুখ খোলাতে ব্যাধ্য করেছে। হোক না সেটি নেগেটিভ কমেন্ট!
সমালোচকদের গোলাবারুদ সরবরাহ বন্ধ করা থেকে সচেষ্ট থাকুন
নিজের লেখালেখিতে দুর্বল দিক গুলো প্রতিনিয়তই খুঁজতে থাকুন।অল্প বিস্তর নিজেই নিজেকে সমালোচনা করুন। লেখার মানোন্নায়নের চেষ্টাটা কখনোই বন্ধ করবেন না। এতে করে আপনার সমালোচকদের আপনাকে আক্রমন করার জন্য গোলাবারুদ সরবরাহ অটোমেটিকই বন্ধ হয়ে যাবে।
নিজেকে শুনুন লেখালেখিটা করুন কেবল আপনার জন্য
অপরের সমালোচনার দিকে কান না দিয়ে নিজেকে শুনুন। আপনার লেখার মান আপনার কাছে যতটুকু আপনি সেই মানেরই লেখক।
সমালোচনাকে সমালোচনা দিয়ে মোকাবেলা করবেন না
কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা প্রবাদটা সমালোচনা দিযে সমালোচনার জবাব দেয়ার ক্ষেত্রেও খাটে না। এত সমস্যা বাড়ে বৈ কমে না। মনে রাখবেন সমালোচনার প্রতি উত্তর সমালোচনা নয়।
কিছু মানুষের নাচারই হলো অ্যাটাক করা
কিছু মানুষ আছে যাদের সমালোচনা না করলে রাতে ঘুম হয়না। তাদের দৃষ্টিতে অনুপ্রেরণার জন্য অল্প বিস্তর প্রশংসাও তৈল মর্দন। এদের স্কিপ করাটাই বেটার!
কখনোই নিজের লেখা বন্ধ করবেন না
আপনার লেখা যতই সমালোচিত হোক না কেন। যত ব্যক্তিগত এটাকই আপনাকে করা হোক না কেন নিজের লেখালেখি ছেড়ে দেবেন না! এরকম হলে বরং ক্ষতিটা আপনারই হবে।
কিছু সমালোচক ভালোর জন্যই সমালোচনা করেন
কিছু সমালোচক আছেন যারা আপনার ভালোর জন্যই সমালোচনা করেন ( আপনি এখটু খেয়াল করলেই এটা বুঝতে পারবেন)। তাদের সখ্যাং যদিও অতি নগন্য। তবুও তাদের কথায় গুরুত্ব দিন। এরাই হয়তো আপনাকে আরো উপরে তুলে দিতে সাহায্য করবেন।
পরিশেষ: নিজেকে বিশ্বাস করুন। আত্মবিশ্বাসী হোন। ভালো লেখকরা সবাই মাথা দিয়ে চিন্তা/কল্পনা করেই লেখেন আর আপনার চিন্তা করার মতো একটা মাথা রয়েছে। নিজেকে আজ আপনি সেরা ভাবুন কাল বিশ্ব আপনাকে সেরা ভাববে।
হ্যাপি ব্লগিং!
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ১০:১৯