somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

দেয়ালিকা বিপাশা
লেখালেখিটা পেশা নয় এক প্রকার ক্ষুদ্র নেশার মতো আমি মনে করি। ভালো লাগা থেকে কাগজে কলমে যে শব্দ আসে তার ব‍্য‍খ‍্যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। আমি সাধারণ মানুষ, তাই লেখালেখির মতো সাধারণ ভালো লাগাটাই আমার কাছে অসাধারণ মনে হয়।

দেয়ালিকা আসল নাকি মাল্টি??? :)

১৫ ই জুন, ২০২৩ রাত ১:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সামুতে আছি আজ এক বছর এগারো মাস হল। আজ মনে পড়ছে সেই প্রথম দিনের কথা। যখন সারা দেশজুড়ে মহামারী আর পেনডামিক সিচুয়েশন এর থমথমে আবহাওয়া চলছিল। সে সময় ইন্টারনেটের সুবাদে বন্ধুবান্ধবদের সাথে ভিডিও কলে বসে আড্ডা দেয়া, স্কাইপে একসাথে স্ক্রিনশেয়ার দিয়ে মুভি দেখা , অনলাইন ক্লাস করা এই ছিল জীবন, ঘুমানো-খাওয়া-দাওয়া আর ঘরের মধ্যে ঘুপটি মেরে বসে থাকা -এই ছিল জীবন!

সে সময় এক বন্ধুর সাথে লম্বা সময় গল্প করছিলাম। সে আমার এক বছরের জুনিয়র কিন্তু একই ডিপার্টমেন্টে পড়ি। ভার্সিটিও আলাদা। যাইহোক কথায় কথায় আমাকে বলছিল প্রিন্সিপাল অফ একাউন্টিং এ তার অনেক সমস্যা!! কারণ এইচএসসিতে সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা তাই বিজনেস ব্যাগগ্রাউন্ড এর কোন ধারণাই তার ছিল না। কি আর করা আমি তো জনদরদী মানুষ!! এমনিতেও সেই পেনডামিক সিচুয়েশনের কারণে ডিপ্রেশনে পড়ে নিজের পড়ালেখার ভীষণ বাজে অবস্থা ছিল। ভাবলাম এক বিপদগ্রস্ত দুখী আতমাকে পথ দেখে যদি নিজে পথ খুঁজে পাই!! শুরু করে দিলাম তখন অনলাইনে পড়ানো !! দিশে হারানো কে পথ দেখাতে গিয়ে নিজেই খুঁজে পেলাম হারানো গন্তব্য!!

একদিন অনলাইনে পড়াচ্ছি তখন সে আমাকে বলল :

: শোন বিপাশা!! তুইতো লেখালেখি ভালই পারিস এর মধ্যে তুই আমাকে বেশ কয়েকটা কবিতা গল্প পড়তে দিয়েছিস। তোর লেখার হাত ভালো সামহোয়্যার ইন ব্লগে কেন লেখালেখি করিস না??

: সামহোয়্যার ইন ব্লগ?? এইটা আবার কি??

: আরে লেখালেখি করার একটা মাধ্যম। এখানে অনেক প্রতিভাবান লেখক তাদের নিজের লেখা পোস্ট করে থাকেন। ফেসবুকে তো মাত্র ২-৪ জনই তোর লেখা বোঝে অনেকে আবার তোর লেখার অর্থ বোঝে না কিন্তু এখানে তোর প্রতিভার সঠিক মূল্যায়ন খুঁজে পাওয়া যাবে!!

: তাই নাকি!! আরেক ব্যাটা আগে বলবি না!! দে দে ব্যাটা একটা অ্যাকাউন্ট খুলে দে!!

: আচ্ছা ঠিক আছে আমি এক্ষুনি খুলে দিচ্ছি তুই স্ক্রিনশেয়ার দে।

: আচ্ছা।

শুরু হয়ে গেল আমার একাউন্ট খোলার ফরম ফিলাপ . .

: এই গাধী নিকনেম কি দিবি?

: উমমমমমমমমম.. এক কাজ কর নিকনেম লিখ বিপাশা দেয়ালিকা!

: আচ্ছা দিচ্ছি

: আআআআআআআআআ.. এই দাঁড়া দাঁড়া! কেমন জানি বেমানান মনে হচ্ছে! এক কাজ কর উল্টো করে লিখতো, দেয়ালিকা বিপাশা লিখ তো কেমন দেখায়?

: হুম. . ওকে!

: বাহ এইটা দারুন হয়েছে!! এখন যেন একটা কমপ্লিট কমপ্লিট ভাব মনে হচ্ছে!!

দেয়ালিকা নামটা দেয়ার পিছনে আবশ্যক ছোট্ট একটা ঘটনা আছে। যখন কলেজে পড়তাম তখন হোয়াইট বোর্ডের পাশে দেয়ালে প্রায়ই আমার আঁকা বিভিন্ন ছবি থাকতো। টিচাররা সে সমস্ত ছবি দেখে আমার বেশ প্রশংসা করতেন এবং জানতে চাইতেন এই ছবিটি কে এঁকেছে? তখন উঠে দাঁড়াতে হতো! সে সময় টিচার এবং সহপাঠীদের কাছে বেশ পরিচিতি লাভ করেছিলাম! অবশ্য লেখাপড়ার জন্য টিচার এবং সহপাঠীদের কাছে আগে থেকেই জনপ্রিয় ছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ ! হঠাৎ একদিন আমাদের ক্লাসে বাংলা ম্যাডাম এসে যখন আমার আঁকা ছবি দেখলেন তখন জিজ্ঞেস করলেন এই দেয়ালিকাটি কে উঠে দাঁড়াও তো দেখি?? তখন কেন জানি নিজের কাছে বেশ অদ্ভুত লাগলো ব্যাপারটা। ইটস এ বিগ কমপ্লিমেন্ট ফর মি!! তখন থেকেই নামটি যেন আমার মনের দাগ কেটে গেল!! তাই কোন কিছু লেখার শেষে দেয়ালিকা নামটা লেখা যেন আমার একটা অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেল। যাইহোক ব্লগে একটি লেখা পোস্ট করতে গিয়ে পুরনো দিনের মধুময় স্মৃতি চোখের সামনে ভেসে এলো!

এবার আসি আসল কথায়। ব্লগে যখন লেখালেখি শুরু করলাম। তখন লেখালেখি করার একটা ভূত চেপে বসল মাথায় আর কিছু ব্লগারদের অনুপ্রেরণা তো বলার মতোই না। আজ উনাদের নাম না বললেই নয় ব্লগার সাড়ে চুয়াত্তর, আহমেদ জী এস, পদাতিক চৌধুরী, শায়মা আপা, কবিতা কথ্য, সোনালি কাবিন এরা আমাকে নিজেই খুজে নিয়ে আমার লেখা পড়ে আমাকে অনুপ্রেরণা দিতে লাগলেন! আলহামদুলিল্লাহ্ এক মাসের মধ্যেই ব্লগের প্রথম পাতায় জায়গা করে নিলাম!! প্রথম পাতায় জায়গা পাবার খবরটাও আমার জানা ছিল না! সম্মানিত আহমেদ জী এস আমাকে খবরটা জানিয়ে অভিনন্দন জানালেন। এমনকি প্রথম যেদিন আমার লেখা নির্বাচিত পাতায় জায়গা করে নেন সেই খবর টাও সাচুই আমাকে প্রথম জানান!! আলহামদুলিল্লাহ্ বাস্তব জীবনের মতো এই ব্লগে এসেও বড়দের অনেক স্নেহ পেয়েছি!!

তারপর একটা সময় পড়াশোনা আর বিভিন্ন ঝামেলায় এমন ব্যস্ত হয়ে পড়ি যে ব্লগে আর আসা হত না। তবুও সামু থেকে যে ভালোবাসা পেয়েছি তা কমে যায়নি। এমনকি আমার অনুপস্থিতিতে ব্লগাররা আমার খোঁজ নিয়েছেন বারবার!! নতুন পুরোনো অনেকের কাছে থেকেই অনেক স্নেহ পেয়েছি মিরোরডডল আপু, কবিতা পড়ার প্রহর আপু, নির্বহণ নির্ঘোষ, সম্মানিত ব্লগার খায়রুল আহসান স্যার (আর কারো নাম বাদ পরে গেলে ক্ষমা চাইছি) দীর্ঘদিন আসা যাওয়া আর অনুপস্থিতির জন্য অনেকেই আমার উপর ক্ষেপেছেন বা অভিমান করে ছিলেন। আলহামদুলিল্লাহ্। এটাও এক প্রকার ভালোবাসা, যা পেয়ে নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করি!



সাম্প্রতিক আমারই সমজাতীয় পুচকে ব্লগার নির্বহণ নির্ঘোষ শায়মা আপুর লেখা "এক শিমুল ফুল ও এক রুপার দুলের গল্প" পোস্টে বলে আমি নাকি মাল্টি??? আর এইটা নাকি সবাই জানে??? তাইলে এত এত ভালোবাসা কি হলুদ মরিচের গুড়ো নাকি??? হায় হায় বললটা কি বেটায় আমারে!! ( যদিও মাশাআল্লাহ্ নির্বহণ যথেষ্ট ভালো মানুষ এবং অত্যন্ত জ্ঞানী একজন লেখক!! তার কাছে কমপ্লিমেন্ট পাওয়াও কম না! যদিও সেটা কমপ্লিমেন্ট ছিল না! ব্যাটায় আমারে হিংসা করে আর খালি ক্ষেপাতে চায়। এইটুকুতেও এই বেটা শান্ত হয় নাই আমাকে বলে সাচু নাকি আমার অসুর মার্কা শ্বশুর!! জুনিয়র ব্লগার হিসেবে আমার প্রতি বড়দের স্নেহ উনার সহ্য হয় না , বিশেষত সাচুর স্নেহে উনি বিশেষভাবে জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যান। :) ) যাই হোক প্রশংসা করা যাবে না তাইলে আবার আমি ঝাগড়া করতে পারবো না। (বি স্ট্রং বিপাশা!! তুমি যে ঝগড়া করতে পারো এইটা বুঝাইতে হবে!! :) আচ্ছা তো ঝগড়া মুড ইজ অন : আমাকে মাল্টি বলা হয়েছে তার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। সাচু আপনাকে বিচার দিলাম কিন্তু!! দেখেন একা পেয়ে আর ব্লগে আসিনি বলে কত্ত কত্ত অপবাদ আমাকে নিয়ে!! আল্লাহ্!! আকাশ থেকে দড়ি ফেল আমি তরতর করে উঠে যাই!!আর নাইলে মাটি ফাঁক করে দাও আমি মাটির ভিতরে ঢুকে যাই। এমনিতেই গত সপ্তাহে যে গরম পড়ছিল !! বাপরে বাপ!! দুই দিনের বৃষ্টিতে তাই ভরসা হচ্ছে না যে সামনে গরম পড়বে না? তার উপরে এমন গরম গরম অপবাদ? এর থেকে উঠে যাওয়া না হয় পুঁতে যাওয়াই উত্তম!!

যাইহোক এইতো গেল হাসি ঠাট্টার কথা। এইবার আসি মূল ঘটনায়। সত্যি বলতে এত ঝামেলায় আটকে পড়েছিলাম যে একটা সময় এই লেখালেখিটাই আর ভালো লাগত না। যেটা কিনা নিজেকে দেয়া আমার প্রিয় একটি সময় ছিল। কিন্তু আর নয় এখন ফিরে এসেছি!! কি লিখব জানি না। হয়তো জেনে যাবো কারণ প্রিয় জিনিস কখনো জীবন থেকে হারিয়ে যায় না!!

এইবার তাহলে নির্বহণ সাহেবের কথায় আসি। ব্লগে আমি মাল্টি এই ধারণা কার কার মনে উকি মারছে হাত তুলুন!! আমি জানি এই নির্বহণ সাহেবের ভাক্কা কথায় ওজন নেই। তবুও চ্যালেঞ্জ বলে কথা!! ;)
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জুন, ২০২৩ রাত ১:২১
৪৫টি মন্তব্য ৪৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৫৩

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

ছবি এআই জেনারেটেড।

ভিনদেশী আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সত্যের বজ্রনিনাদে সোচ্চার হওয়ার কারণেই খুন হতে হয়েছে দেশপ্রেমিক আবরার ফাহাদকে। সেদিন আবরারের রক্তে লাল হয়েছিল বুয়েটের পবিত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকারের বিয়াইন

লিখেছেন প্রামানিক, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:০৪


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

রাজাকারের বিয়াইন তিনি
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান
ওদের সাথে দুস্তি করায়
যায় না রে সম্মান?

কিন্তু যদি মুক্তিযোদ্ধাও
বিপক্ষতে যায়
রাজাকারের ধুয়া তুলে
আচ্ছা পেটন খায়।

রাজাকাররা বিয়াই হলে
নয়তো তখন দুষি
মেয়ের শ্বশুর হওয়ার ফলে
মুক্তিযোদ্ধাও খুশি।

রচনা কালঃ ১৮-০৪-২০১৪ইং... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

×