জীবনের হালখাতার হিসেব নিকেশ,
হালনাগাদ করা হয়নি যে কখনো।
ক্লেশে অক্লেশে কখন যে কেটে গেছে
বহতা সময়,বিস্মরণের অন্তরালে।
সেই কবে শুরু হয়েছিলো এ নিরন্তর পথচলা
নিজের অজান্তে,কর্মময় জীবনের অমসৃণ
পিচ্ছিল পথে,কী এক অমোঘ টানে,
কিসের নেশায়,কাদের সুখের তরে
স্বাচ্ছন্দ্য মিটাতে,ভাবিনি কখনো।
প্রাপ্তি,অপ্রাপ্তির সমুদয় হিসেব নিকেশ
কেন যে হয়নি নেওয়া মনের বিভ্রমে।
তকলিফে পড়ে গেছি জীবন সায়াহ্নে,
নীলিমার শেষ প্রান্তে এসে,
জুটেছে শুধু বড়োই অবজ্ঞা,
অনাদর আর অতিশয় অবহেলা।
বিকীর্ণ হৃদয়ে খুঁজি শান্তির আকাশ,
কালো মেঘে ঢাকা দেখি অমেয় নিয়তি।
নিভে গেছে সব জ্যোতি, নক্ষত্রের আলো,
ন্যুজ ছবি চোখে পড়ে বিষন্ন পৃথিবীর।
হাড়ভাঙা খাটুনি, অতিশয় নিরলস শ্রমের,
এ-ই কি প্রাপ্যমূল্য পড়ন্ত বেলায়, অন্তিম
সময়ে ? তবে কি সবই ছিলো ভ্রান্তির প্রয়াস ?
খেয়ালী চিত্তের অন্তঃশীলা অন্ত্যজ বাসনা ?
শুধুই কি ভূমিহীন বর্গাচাষীর মতো
ফলিয়েছি ফসল কেবল পিবর জমিতে
প্রবঞ্চনা আর মনোযাতনার বিনিময়ে
সারাটি জনম ?হয়তো বা তা-ই।
এ জগৎ বড়োই নিষ্ঠুর,রুঢ় বাস্তবে,
স্বজন নির্জন হয় স্বার্থের কারণে।
প্রয়োজন মিটে গেলে কেউ কারো নয়,
ষোলোআনা পেয়ে গেলে সবাই পালায়।
বহতা সময় কেবল বয়েই চলে নিরবধি,
পিছনে থাকিয়ে সে কখনো দেখে না
কার বুকে নিরন্তর হাহাকার বাজে,
কার বুকে জমে আছে ব্যথার পাহাড়,
কে কাঁদে একাকী বসে গভীর শোচনায়।