মনটা আসলেই খারাপ হয়ে যায়। কাকে বলি মনের কথাগুলো, কাকে জানাই মনকে শুদ্ধ রাখার আবদার! বই পড়ার যুগটাই ভালো ছিলো। অন্তত নিরিবিলি বসে বই পড়তাম আর শিহরিত হতাম। নেট আসার পর থেকে মানুষগুলো যেনো আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে দিনকে দিন। একদিকে যেমন বিশ্ব হাতের মুঠোয়, ইচ্ছে করলেই যে কোনো জিনিস সম্পর্কে জানতে পারছি অনায়াসে যেকোনো সময় ঘরে বাইরে যেকোনো জায়গায় বসে। স্বজনদের সাথে যোগাযোগের বিষয়টাও সহজ হয়েছে। নেট উপকারী, নেট ছাড়া চলে না কিন্তু এর অপকারীতাও কিন্তু কম নয়। উপকারের চেয়ে অপকারটাই বেশী দেখতে পাচ্ছি। সামাজিক যোগাযোগ ওয়েবগুলো মানুষের মত প্রকাশের দোর উন্মুক্ত করাতে বুঝা যাচ্ছে খারাপ মানুষের সংখ্যা কত লক্ষ কোটি।
খোলামেলা মত প্রকাশের সাথে মানুষ নিজেকে বেলাল্লাপনায় নিয়ে গেছে। লজ্জাহীন মানুষগুলো বুঝতেই পারছে না। কি করে তারা একটু একটু পাপের সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে। কেউ কেউ এঁকে ছেড়ে দিচ্ছে নিজের লজ্জা উড়ন্ত যোগাযোগে। অথচ একজন মেয়ে হয়ে একজন মাকে উপস্থাপন করছে উলঙ্গ করে পেন্সিল আর্টের মাধ্যমে। একজন মা কখনোই এমন খোলামেলা কাপড়ে কারো সামনে এমনকি নিজের স্বামীর সামনেও বাচ্চাকে দুধ খাওয়াবে না। আমাদের মা চাচিকে দেখেছি, আমি মা হয়েছি নিজের অনুভূতি নিজেই জানি।
বাংলাদেশের কোথাও দেখি না একজন মা জনসম্মুখে বুকের কাপড় সরিয়ে বাচ্চাকে দুধ খাওয়াচ্ছেন। এসব সৃজনশীল কাজকে মানুষগুলো সাহসী পদক্ষেপ ঘোষনায় একজন শিল্পীকে কুৎসিত শিল্পে আরো মনোনিবেশ করতে সাহায্য করছে। হ্যাঁ মত ভিন্ন থাকতেই পারে। আমি একজন মুসলিম মা। সব দিক ইসলামীকভাবে পালন করতে পারি না এটা আমার ব্যর্থতা। তাই বলে আমি কাউকে অনৈসলামি কর্মকান্ডে উৎসাহিত কোনোভাবেই করতে পারি ন। আমারও মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে এবং যা ইসলামের দৃষ্টিতে খারাপ তা আমি অকপটে বলতে চাই কিন্তু তাতেও দেখা যায় মানুষগুলো আমার কথার উপরে হামলে পড়েছে বিভিন্ন ত্রুটি ধরিয়ে দিচ্ছে অনায়াসে।
যেখানে একজন মুসলিম নারীর পর্দার বিধান আছে ইসলামে। পালন না করলে কঠিন আযাবে নিমজ্জিত হবো পরকালে। ধর্মীয় বইগুলোতে কোথাও কী লেখা আছে নারী দুধ খাওয়াচ্ছে এমন ছবি আঁকা পাপ নয়। মা সন্তানকে দুধ খাওয়াবে এটা স্বাভাবিক এবং নেক কর্ম। কিন্তু তাকে জনসম্মুখে কাপড় খোলা অবস্থায় এনে ফেলে দেয়া মোটেও কী উচিত ? না এটা খুব প্রশংসার দাবী রাখে? নাকি এটা অনেক সওয়াবের কাজ? যদি বলি প্রিয় শিল্পী আপনি আপনার নিজের ছবিটা এমন আঁকতে পারবেন? আপনার মা চাচীকে এমন আঁকতে পারবেন? আপনার বোনকে আঁকতে পারবেন এবং এঁকে জনসম্মুখে ছেড়ে দিতে পারবেন? না কক্ষনো পারবেন না।
রাস্তাঘাটে মেয়েদের এমন বেলাল্লাপনা বেহায়াপনা বেড়েছে যে মেয়ে হয়ে আমি নিজেই লজ্জা পাই এবং ধিক্কার জানাই। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি আল্লাহ তুমি হেদায়েত দাও, নয় এমন শাস্তি দাও যেনো সে তার ভুল বুঝতে পারে।
আবার এমন কতক কবি আছেন যারা নিজেদের লেখায়, একেবারে বাসর ঘরে কী হয় না হয় সবই কবিতায় ঢেলে সাজান। মেয়েদের অন্তর্বাস স্তন গুহা (আসতাগফিরুল্লাহ) উহ কিসের সাথে কী তুলনা করে করে মানুষগুলো কবিতা রচনা করে আর মানুষ সেখানে মন্তব্য করে সাহসী লেখা, সাহসী কবিতা। সুন্দর আরো লিখুন। আবেগগুলো প্রকাশ পাক। আল্লাহ তুমি কোন দুনিয়াতে পাঠাইছো মাবুদ যেখানে মানুষের লজ্জা ধীরে ধীরে শূন্যের কোটায় যাচ্ছে।
আমি নাকি সাপ ব্যাঙ প্রজাপতি ফড়িং নিয়া লিখি খালি, এসব কেনো লিখি না। আসিফ ইকবাল আমাকে এই কথাটি বলেছেন মন্তব্যের প্রতিউত্তরে। আল্লাহ তুমি আমাকে মাফ করো এমনিতেই কত গুনাহ করে যাচ্ছি অবলীলায়। আমি জানি আমারও অনেক পাপ হচ্ছে। আল্লাহর কাছে তাই বার বার হেদায়েত চাই। আসিফ ভাইকে বলি, ভাইরে আমি যদি মরে যাই আমার লেখাগুলো থেকে যাবে পুরো বিশ্ব জুড়ে। কী জবাব দেবো আমি পরম করূনাময়ের কাছে? আচ্ছা আমি না হয় এসব নাই লিখলাম! কী হবে তাতে। আমি না হয় সাপ ব্যাঙ নিয়েই থাকি। যে যেমন করে লিখতে চায় লিখুক। কেউ আবেগরে নিয়া যাক অশালীন শব্দে আর কারো শব্দ হোক প্রজাপতি ফড়িঙ, গাছ ফুল পাখি। আমি এমনই লিখবো কেউ পড়ুক বা না পড়ুক। আমার লেখা কবিতা নাই বা হলো। কী হবে কবিতা হয়েই বা। সঙ্গে তো নিয়ে যেতে পারবো না। আমি কবি না লেখক না। আমি কাজী ফাতেমা ছবি, যেমন লিখি তেমনই লিখবো। কারো কথায় আমি পথ আগাই না। আমার বিবেক আর বুদ্ধি যতটুকু ততটুকুই হোক আমার পথ চলার পাথেয়।
বড় লেখা জানি কেউ পড়বে না। নাই বা পড়ুক। মনের আক্ষেপগুলো থাকুক বন্দি হয়ে ওয়ার্ডের পাতায় আর সামাজিক যোগাযোগের পাতায়। ভালো থাকুন সবাই। যত কম পাপ হয় পরকালে জবাব দিতে ততই সুবিধা হবে। আপনারাই বেছে নেন আপনাদের নিজেদের জন্য এখনের সুখ অথবা পরকালের সুখ। সুন্দর হয়ে উঠুক সবার জীবন। সুন্দর থাকুন সবাই । ভালোবাসা নিন। যারা আমার লেখা পড়ে একটুও আনন্দ পান, অথবা যদি মাত্র একজন আমার একটা লেখা পড়ে বলেন মারহাবা মাশাআল্লাহ আমার আর কিছু লাগবে না। আমার কলিগ ভাই বলেছেন ফাতেমা আপা আপনার লেখা যদি অন্তত একটা মানুষও পড়ে আনন্দ পায় তাতেই আপনার সারা জীবনের লেখার স্বার্থকতা। এ নিয়ে কখনো আক্ষেপ করবেন না। আমি করিও না তাই। আপনারা আমার ফেবুর ওয়াল ঘেটে তার প্রমাণ পাবেন।
March 18, 2019
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:১৮