somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেঘের কাছে রোদ্দুরের চিঠি-০৩

১২ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৩:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



#মেঘের_কাছে_রোদ্দুরের_চিঠি_৩
#দুঃখ_নিবে?
ক্যায়সে হু তুম, মেঘ?
মে আচ্ছি নেহি, মন বহুত খারাব হে... তুমি জানো, খুব বিষণ্ণ দিন যাচ্ছে আমার, আজ শুধু বিষণ্ণতা ঘিরে ধরেছে আমায়.. তাই তোমাকেও বিষণ্ণতায় ছুঁয়ে দিবো, নিবে থুড়াসা বিষণ্ণতা। না, তুমিও ওদের দলে, যারা শুধু নিজেদের স্বার্থ আদায়ের জন্য আমার কাছে আসে ভালোবাসার অভিনয় করে, মেকিপনা আর মুখোশে ঢেকে আসে মিঠে বোল দিয়ে অন্যরকম ভালোবাসা আদায় করতে... অবশেষে...

মেঘ দুঃখ নিবে, দুঃখ! আমি ভালোবাসা দিতে পারবো না কয়ে দিলুম, যদি দুঃখ নিয়ে পাশে থাকো তবেই এসো। আমি স্বার্থপর ভালোবাসার অনুশোচনায় পুড়তে চাই না! অনুশোচনা কতটা কষ্টকর সে তোমাকে বুঝাতে পারবো না....

মানুষ বলে আমি নাকি দুঃখ বিলাসী। হ্যাঁ আমি তাই! সুখের সন্ধান না পেলে কিভাবে সুখি হবো । কিন্তু তবু্ও আমি মুগ্ধতা খুঁজি আর ভালোবাসা খুঁজি। আসলে জানো তো, সত্যিকারভাবে কেউ কাউকে ভালোবাসতে পারে না। স্বার্থের গায়ে আঘাত লাগলেই মানুষ ঝটপট দূরে সরে যায় নিমেষেই। এমনকি একান্ত আপনজনেরাও..... তুমি কি জানো মেঘ শুধু নিজের মা বাবা আর সন্তানেরাই একটু বেশী আপন হয়। এছাড়া কেউ আপন হয় না তবে সন্তানরাও কখনো কখনো পর হয়ে যায় সময় পরিস্থিতিতে।

মেঘ,আমি আসলে বেশী কিছু চাই না জীবনের কাছে। বৃষ্টির মাঝে মুগ্ধতা খুঁজেছি, বৃষ্টির ফোঁটায় সিক্ত হয়ে একটু সুখ কুঁড়িয়েছি। বৃষ্টির ধারায় জমানো কষ্টগুলো ধুয়ে দিয়েছি বারবার। মন অরণ্যের মাঝে শুধুই নির্লিপ্ততাই পেয়েছি। আমি চেয়েছিলাম হ্যাঁ চেয়েছিলাম অল্পই, খুব অল্প কিছু।

বুকের ভিতর পাথরচাপা
কত শত দুঃখ
জমা হচ্ছে নিরবধি
কষ্ট হাজার লক্ষ।

কেউ জানে না মনের খবর
দেখে সুখি মুখটাই
হাসির ঝাপি খুলে দিয়ে
কুঁড়াই মেকি সুখটাই।

চোখের মাঝে খরা নামে
বুকের ভিতর নদী
উথাল পাথাল দুঃখের ঊর্মি
দেখতো কেউ বা যদি।

দুঃখের জলে ভাসি আমি
কেউ জানে না তা যে
দুঃখের কথা শুনলেই মানুষ
বুকে লাগায় ঘা যে!

আমি সমুদ্র দেখিনি ঠিকই কিন্তু চোখ হয় আমার সমুদ্র সেখানে লোনা জলেরা খেলা করে জোয়ার-ভাটায়। দুঃখের চোরাবালিতে ডুবি... কেউ আসে না সহসা টেনে তুলতে। হাত বাড়িয়ে আছে দেখি যত স্বার্থের হাত। আচ্ছা তুমিই বলো এর চেয়ে চোরাবালিতে ডুবে যা্ওয়াইতো ভালো তাই না!

মেঘ তুমিও কি এমন করবে আমার সাথে। যদি আমার দুঃখের সঙ্গি হও হতে পারো। বাপু আমি ভালোবাসতে পারবো নে । আমি তোমাকে দুঃখ ধার দিবো... ভালোবাসা নয় কিন্তু । জানি জানি ভয় পেয়ে যাবে.....তোমরা সবাই এক । শুধু নিতেই জানো দিতে নয়...তবে শুনো আমি চাইবো না তুমি আমার জন্য চাঁদ পেড়ে দাও কিংবা ঐ নীল আকাশটা এনে মাথার ছাদ বানিয়ে দাও অথবা হিমালয় পাহাড়ের ঝর্ণা থেকে এনে দাও এক গ্লাস জল যাতে আমি পারি ভালোবাসা তৃষ্ণা নিবারণ করতে। অথবা আমি চাইবো না তোমার কাছে আমার জন্য হীরা মানিক, চাকচিক্যতা উপহার দাও।

আমি চাইবো শুধু তুমি আমাকে ভালোবাস। আমার অনুভূতিগুলো তুমি অনুভব করো। আমার জন্য একটু হাসো অথবা মুখোমুখি বসে এককাপ কফি অথবা চা পান করো । কিংবা পার্কের ফাঁকা বেঞ্চে বসে দুটো আইসক্রিম কিনে আমার সঙ্গে বসে খাও। এর চেয়ে দামী খাবারও আমি চাইনে কিন্তু। আর চাইবো তুমি আমার পাশাপাশি হাঁটো কোন এক অজানা মেঠোপথ ধরে।

শুনো, রোজ রোজও এসব চাইবো না.... তোমার যখন সময় হবে তখনই একটু সময় নিয়ে নিবো আমার করে। কি পারবে না তুমি? এর মাঝে অশুদ্ধতার স্থান নেই কিন্তু। আমি ভালোবাসা চাই শুধু; অন্য কিছু নয়। যে আমাকে তার মতো করে বুঝবে আমার অনুভূতির মূল্য দিবে এবং আমাকে যে ভালোবাসার সম্মানে সম্মানিত করবে আমি এমন ভালোবাসাই চাই। স্বার্থের ভালবাসা চাইনা কখনো। অহহো আরেকটা জিনিস চাইবো দিবে মেঘ........

মুখোমুখি বসে দুজন
চুমুক কফির কাপে
ধোঁয়া উড়বে মনের মাঝে
ভালোবাসার তাপে।
হাঁটবে নাকি আমার সাথে
অচিন মেঠোপথে
পাশাপাশি ঘেঁষাঘেঁষি
হাঁটবো পায়ের রথে।

আইসক্রিম খাবো খাওয়াবে?
আরতো কিছু চাই নে
দামী খাবার কিংবা ফাস্টফুডে
আমি কভু যাই নে।

শুধু ভালোবাসা বাসি
নয়তো অন্য কিছু
ধরতে চাইলে হাতটি আমার
তাকাও ফিরে পিছু।

ও মেঘ তুমি মন দেবে কি
দাওনা মনের দখল
ভালবাসা খাঁটি আমার
মন সেতো নয় নকল।

রাজী থাকলে আসতে পারো
আমার মনের কাছে
ভয় পেয়োনা চাই না কিছু
মনটাই মন যে যাচে।

ঈদের দিন অথচ মনে আনন্দ লাগছে না জানো তুমি! কেনো এমন হয়। কাছের মানুষগুলো একটু মনখোলা হলে কিইবা হতো শুনি! কেমন পাথর সময় আমাকে ঝেঁকে ধরেছে চারপাশ থেকে যেনো। একটু কাঁদতেও পারি নে... আমার দুই সৈন্য এসে চোখ মুছিয়ে দিয়ে শাসায়ে যায় আর যদি কান্না দেখছি তবে অনেক খারাপ হবে কিন্তু, তুমিই বল, তবে আর কাঁদি কিভাবে।

তবু্ও মন বলে তো কথা তাই না। মনের কত কষ্ট ইচ্ছে হয় চিৎকার করে কেঁদে চোখের জলের সাথে ভাসিয়ে দেই। কিন্তু তা আর হয়ে উঠে না। আমার কোথাও কোনো জায়গা নেই নিরবে কাঁদার।অশ্রু বিসর্জন দেয়া সেও অন্যের দখলে । আমার ইচ্ছে মাফিক কিছুই করতে পারি না। মেঘ তুমি আমার দুঃখের সাথী হবে। শুধু আমাকে একটু কাঁদতে দিবে। একটা নিরব জায়গা আমার নামে রেজিস্ট্রি করে দিবে। সেটা শুধু আমার একাকিত্বের অশ্রু বিসর্জনের জন্য। কি দিবে না? বলো না প্লিজ।

ঈদের দিন এত্তসব দুঃখের কথা লিখে তোমার সময়টা বরবাদ করে দিলাম ছিঃ ছিঃ ক্ষমা করো মেঘ। ক্ষমা করো আমায়। অহহো আবার ভুলে গেছি.. একটা জিনিস চাইবো তোমার কাছে দিবে.....

পিংক খামে করে একটা চিঠি লিখবে আমায়। ঠিকানা কিন্তু দিবো না তুমি আমাকে খুঁজে নিবে।অথবা ঠিকানার জায়গায় শুধু লিখবে হাই রোদ্দুর..... তোমার চিঠি হবে আমার জন্য বিষ্ময়....... নীল আকাশের সীমানায় স্বাধীন উড়ন্ত একঘুড়ি। আকাশছোঁয়া রঙিন স্বপ্ন..মেয়েবেলার দুরন্তপনা। তোমার চিঠি হবে আমার জন্য কলাগাছের ভেলায় ভাসা অথৈ জল।।

তোমার চিঠি হবে আমার জন্য মেয়েবেলার বৃষ্টির ভেজা প্রহর। তোমার চিঠি আমার জন্য হবে সেই কৈশোরের বউছি কানামাছি খেলা। তোমার চিঠি শুধু আমার জন্য সুখ হবে। তোমার চিঠি হবে আমার জন্য শিউলী ফোটা একটি স্নিগ্ধ ভোর। তোমার চিঠি হবে আমার জন্য শরতের কাশফুল। তোমার চিঠি হবে আমার জন্য হেমন্তের ভোরের ঘাসের ডগায় ঝুলে থাকা শিশিরের মুক্তোর দানা। তোমার চিঠি হবে আমার জন্য শীতের ভোরের মিষ্টি রোদ্দুর। তোমার চিঠি হবে আমার জন্য বসন্তের শিমুল অশোক কৃষ্ণচূড়া। তোমার চিঠি হবে আমার জন্য গ্রীষ্মের খরতাপের নিদাঘ প্রহরের চরম উষ্ণতা। তোমার চিঠি হবে আমার জন্য চৈত্রের খরায় মনজমিন ফেটে যাওয়ার একফোঁটা জল। তোমার চিঠি হবে আমার জন্য বর্ষার অঝোর ধারার বৃষ্টি। সরি এতকিছু লিখে তোমার সময় বরবাদ করে দিছি ক্ষমা চাচ্ছি। শেষ টানছি... রোদ্দুর

পুনশ্চঃ ঈদের দিন ভাল কাটুক আনন্দে কাটুক এই কামনাই করছি। চিঠির উত্তর দিতে ভুলো না কিন্তু। অকে মেঘ আসি আল্লাহ হাফেজ-ফিআমানিল্লাহ।
(১৩-৯-২০১৬)

(তখন কী দুঃখ ছিলো আসলেই মনে নাই। দুঃখ আর সুখ মানুষের জীবনে ওঁৎপ্রোতভাবে জড়িতে। একটা ছাড়া আরেকটা নিরস, বিতৃষ্ণা। আসলে আল্লাহ আমাকে অনেক সুন্দর জীবন দিয়েছেন আলহামদুলিল্লাহ। আমার আশেপাশের মানুষগুলা আমাকে অনেক ভালোবাসে আমিও ভালোবাসি)

সর্বশেষ এডিট : ১২ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৩:০৫
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×