©কাজী ফাতেমা ছবি
বিতৃষ্ণার প্রহরে চোখের কোণে ঘাম বিন্দু বিন্দু অথবা অশ্রুর ফোঁটাও হতে পারে। চারিদিকে তাকালেই ধুঁধু বিরানভূমি। অবশ্য করণীয় কর্মগুলো পড়ে থাকে আলস্যের খাঁচায় বন্দি। চোখগুলো ভারী মেঘলা আকাশের মত। শুয়ে বসেও আরামের লেশ নেই! দীর্ঘশ্বাসের কড়া পাহারায় বুকের খাঁচা। এমন আলুথালু ক্ষণে কবিতারাও হারিয়ে যায়, হয়ে যায় মরিচিকা। কিছু মুগ্ধতার শব্দ হাত বাড়ালেই হয় অলীক, কিছু সুখ শব্দ মন বাড়ালেই হয় নীল মেঘ, কিছু স্নিগ্ধ শব্দ ছুঁয়ে দিতেই বৃষ্টি হয়ে গলে পড়ে ধূলায়। কুঁড়োতে যাবো-একি!শব্দরা মিশে যায় মাটিতে।
দিন মুখ ভারী করে বসে আছে চোখের সম্মুখ অথচ আজ আমি রোদ্দুর চাই, হাসিমাখা সূর্য চাই, চাই এক চিলতে দুপুর আলো। আশায় তাকালেই চোখে কুয়াশা ঝরে, ধুয়াশা আলোয় পথ পাই না খুঁজে । দিন আমার মনের কক্ষটিও আঁধারে দিয়েছে ঢেকে। বন্ধ চোখে দেখি বুকের জমিনে কাঁটা ঝুপঝাঁড়। পা বাড়ালেই ব্যথার ক্ষত, রক্তক্ষরণ। এতসব অশুভ আলো যদি ঘিরে রাখে আমায় তবে কী করে স্বস্তি টেনে নেই নাকে। নিউরনে ব্যথার আস্ফালন। অস্বস্তির দাপট বেড়েই চলে।
উপর তলায় ড্রিল মেশিনের দেয়াল ছিদ্র যেনো মনের দেয়ালে কেউ হাতুড়ি পেটাচ্ছে, কী বিকট শব্দ কানে এসে মন্দ থাকার ধ্যান করে দেয় নষ্ট। এই যে এখনি নামবে বৃষ্টি কিন্তু রোদ্দুর চেয়েছিলাম। হুটহাট ঝরে পড়া বৃষ্টিরা আমায় দেখে তাচ্ছিল্যেতায়।
তাই বলে বেজার বসে থাকার পাত্রী আমি নই। যতই বৃষ্টিরা আমার মনের উঠোন ভিজিয়ে দিক, যতই দিনের আলো নিভে যাক, যতই মরিচিকা হোক সুখ। হোক না আমার বিষণ্ণ ক্ষণ, ছুঁয়ে থাকুক মন বিষাদ। অস্বস্তিরা বুকে মাথাচারা দিয়ে উঠুক। আমি বাবা দমে যাওয়ার পাত্রী নই। কোনো কুক্ষণ এলেই আমি কিনে আনি রঙবাহারি কাঁচের চুড়ি, নাকের নথ, চুলের ক্লিপ আর আধ ডজন এক বেনীআসহকলা শাড়ী। উফ সকল সুখ হুমড়ি খেয়ে পড়ে মনের দেয়ালে, সামাল দিতেই নাকানিচুবানি খেয়ে যাই।
অতঃপর আমি এক থালা ঝাল মুড়ি সরষে তেলে মাখিয়ে কাঁচামরিচ আদা ধনে পাতা চানাচুর মিশিয়ে দাঁতে পিষে পিষে মেরে ফেলি যত ছিল ব্যথা বিষাদ বিষণ্ণতা ক্লান্তি একঘেয়েমী কারও তিতে কথা, আহা শান্তি আর শান্তি।
(২৮-০৯-২০২১)
ছবিটি 24 Live Bangla News অনলাই পেইজ থেকে নিয়েছি ছবির সূত্র