কিছুই বাঁচানো গেল না
ফকির ইলিয়াস
.............................................
কিছুই বাঁচানো গেল না
সন্তান,সম্ভ্রম,স্বাধীনতা
বাঁচানো গেল না সময়,শরত ও শবদেহ
বাঁচানো গেল না সূর্যের প্রথর আলো,শিয়র,শয্যা
কিংবা বাঁচানো গেল না সন্ধ্যাও।সমুদ্রও হয়ে গেল দখল।
.
বাঁচানো গেল না কিছুই।রক্তের দাগ,রিক্ত শিশুর আর্তনাদ
বাঁচানো গেল না, পিতার শোকার্ত পুরোনো কোর্তা
অথবা বোনের সংকুচিত ভ্যানিটি ব্যাগ।
.
বাঁচানো গেল না পাতের একটুকরো পান্তা-ইলিশ
শস্যদানা,সর্ষেক্ষেত,সবুজ ছাউনি-
কিছুই বাঁচানো গেল না।
লুট হয়ে গেল ব্যাংক। গার্মেন্টস শ্রমিকরা ঘাম বুকে নিয়েই
পুড়ে মরলো বদ্ধ-কোটরে।
.
বাঁচানো গেল না ট্রাফিক লাইট,ফুটপাত,পুলিশের লাল সিগন্যাল
কিছুই বাঁচানো গেল না। মায়ের লাশবাহী এম্ব্যুল্যান্স আটকে
দিয়ে উল্লাস করলো খুনীরা। বাঁচানো গেল না মায়ের আঁচল।
.
বাঁচানো গেল না কিছুই। হ্যাঁ- কিছুই!
'সেইফমার্ক'-মার্কা ঘুড়ি উড়িয়ে আমরা সবাই সুতো ছাড়লাম
আকাশে। উড়ুক- উড়তে থাকুক ঘুড়ি, যাক- উড়ে যাক!
.
বাঁচানো গেল না নাটাই,নাটক,নৃত্য কিংবা নৃতত্ত্ব
নাক,নখ,নরুন- কিছুই বাঁচানো গেল না।
বাঁচানো গেল না দ্রোহ,দন্ত,দৃষ্টি-
.
প্রায়ান্ধ জীবন নিয়ে যে পাখিটি আমার পেছনের বারান্দায়
আশ্রয় নিয়েছিল, তাকেও হত্যা করা হলো।
আত্মহত্যাই আমরা পরিণতি নয়-
চিৎকার দিতে দিতে আমি পালাতে থাকলাম
কেবলই পালাতে থাকলাম .....
# নিউইয়র্ক/ ১১ এপ্রিল ২০১৯
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১০:৩৭