somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্বাধীনতা কি ঝুলন্ত ফেলানী? পিপাশিত নগরী? নাকি মায়ের বুকফাটা ক্রন্দন?

১৯ শে এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৪:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দূর জঙ্গলে একটি পাখি অনবরত ডেকেই চলেছে। মায়ের কোলে ঘুমন্ত বালক হঠাৎ জেগে উঠে চোখ দুটো দু হাতের বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে কচলাতে কচলাতে মাকে জিজ্ঞাসা করল পাখিটি কি বলেছ মা? মা উত্তর দিয়েছিলেন, তার পিপাসা লেগেছে। তাই তো সে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছে ফোঁটা ফোঁটা জলের জন্য। বালকটি তখন তার মাকে বলেছিল, মা আমার ও পিপাসা লেগেছে যে। মা সেদিন তাকে পানি দিয়েছেলন।

অনেক বছর পর…। বালকটি এখন বাবা। রিজিকের সন্ধানে শহরে অবস্থান। অতঃপর সংসার। স্বামী-স্ত্রী আর সন্তান। মা থাকেন গ্রামের সেই ছোট্ট বাড়ীতে। লাফিয়ে লাফিয়ে বৃদ্ধি পাওয়া দ্রব্যমূল্যের কারণে মা নিজেই এ বনবাস নিয়েছেন। মা সেদিন খুব কেঁদেছিলেন। কারণ তার সেই ফটিকজল পাখিটির কথা মনে পরেছিল। সেদিন দূপুর থেকেই পানিতে ময়লা আর দুগর্ন্ধ ছিল। তারপর বার বার লোডশেডিং। ওয়াশার মেশিন নষ্ট। মাসের শেষাংশ। বেতনের টাকা অনেক আগেই শেষ। মায়ের জমানো টাকা দিয়ে কিছু পানি কেনা হলো। গ্রীষ্মের এই নিঝুম রাতে বিদ্যুৎ গেল। অত্যাধিক গরমের কারেণ রাত্র ১১টা বাজতেই পানি শেষ হেয় গেল। সামান্য ১০টি টাকাও অবশিষ্ট নেই যে পানি কেনা যায়। রাতে নিবুনিবু গ্যাসে কোন মতে রান্না করা হয়েছিল। মা হাতপাখা দিযে বাতাস করে কোন মতে তার নাতিকে ঘূম পারিয়েছিলেন।

আজ আর ফটিকজল পাখর ডাক শোনা যায়নি। কারণ, শহেরর বৃক্ষ হীন মরুপ্রায় বাস্তবতায় ফটিকজলেরা আজ নিরুদ্দেশ। তবুও মা আজ অরো একটি বালকের ঘুমে থেক জেগে উঠা দেখলেন। তিনি সেদিন মাটির কলস থেকে এক গ্লাশ পানি দিয়েছিলেন তার সন্তানেক। কিন্তু আজ তিনিই আবার দেখলেন শহরের নিষ্টুর সভ্যতায় অনন্য এক বাস্তব হাহাকার। তার সন্তানের সন্তান আজ তারই কাছে পানির জন্য আহাজারী করেছ, কিন্তু তিন আজ নিরুপায়।

আজ ফারাক্কা বাধ, তিস্তা ড্যাম দিয়ে ভারত আমার দেশের স্বাধীনতা রূদ্ধ করে। আমার সন্তান আজ পিপাসিত রাত কাটায়। আমার মায়ের বুক আজ চোখের জলে ভিজে বুকফাটা বেদনায়। সন্তানের মায়ের বুকের দুধ শুকিয়ে যায় দুর্বিসহ পিপাসায়। আমার দেশের গ্যাসে আজ বিদেশী কোম্পানি চলে। আমার দেশের সরল ফেলানী আজ কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলে। আমার দেশের কৃষকের শস্য আজ ভারতের লুটেরা নিয়ে যায়। আমার দেশের কলকারখানা আজ বিদ্যুতের অভাবে বন্ধ হয়ে যায়। আমার দেশের বেকার আজ চাকরী পায়না। আমার দেশের ফসলের ক্ষেত আজ ফেটে চৌচির হয়ে যায়। আমার সন্তানেরা কেন আজ ক্ষুধার্ত থাকে? আমার সন্তানেরা কেন আজ রাজপথ আর শিক্ষাঙ্গন থেকে গুম হয়ে যায়? কেন? কেন? কেন…?

আমরা কি স্বাধীন? আমাদের সন্তানেরা কি আজ মুক্ত? আমাদের সন্তানদের স্বাধীনতার পিপাসা কি মিটেবনা?

কেন আজ শত শহশ্র মা তার সন্তানের পথ চেয়ে বিনিদ্র রাতের ভয়াল প্রহর গুনছে? তবে কি আবার সেই কবিতা ফিরে এসেছে.. মায়েদের জন্য? … ” …খোকা তুই কবে আসবি…”

কেন পাকিস্তান হানাদার বাহিনি আমার দেশের মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানীর নিকট অস্ত্র জমা না দিয়ে ভারতের কমান্ডারের নিকট জমা দিল? সে অস্ত্র কোথায়? যারা মুক্তিযুদ্ধ করল সে সকল বীর সৈনিকদের কেন দেশ পরিচালনায় অংশ নিতে দেয়া হলো না? কেন ১৯৭৫ এর জন্ম হলো? কেন বাংলাদেশের জনক বললেন “আমি পেয়েছি চোরের খনি”? কেন তিনি চিৎকার দিয়ে বললেন “আমার কম্বলটি কই”? কেন জনগনের কষ্টার্জিত টাকা মন্ত্রীদের গাড়ীতে পাওয়া যায়? আজ এ প্রশ্ন প্রত্যেক বিবেকবান বাংলাদেশী নাগরিকের কাছে।
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×