১/ সার্কিট হাউস থেকে মাইল চারেক দূরে চট্রগ্রাম সেনানিবাসে জিওসির সরকারী বাসভবনে ফজরের নামাজ আদায় করলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল কমান্ডিং অফিসার ও চট্রগ্রাম অঞ্চলের অধিনায়ক মেজর জেনারেল আবুল মঞ্জুর পিএসসি,বীর উত্তম।
প্রতিদিনের মত নামাজ শেষে তিনি আবার শুয়ে পড়লেন এবং প্রায় সঙ্গে সঙ্গে তাঁর চোখে ঘুম চলে এল।হঠাৎ টেলিফোন বেজে উঠলে তাঁর পাতলা ঘুম ভেঙ্গে যায়।টেলিফোনে জেনারেল মনজুর শুনতে পেলেন একটা ক্লান্ত-নার্ভাস কন্ঠ- ‘স্যার, প্রেসিডেন্ট হ্যাজ বিন কিল্ড।‘
-“ও মাই গড বলে জেনারেল মনজুর স্তব্ধ হয়ে গেলেন।“
- “তুমি কে?”
-“স্যার আমি মোজাফফর” ওপাশ থেকে বললেন রক্ষীবাহিনী থেকে সেনাবাহিনীতে আত্তীকৃত মুক্তিযোদ্ধা অফিসার মেজর মোজাফফর।
“এখন স্যার সবাই আপনার ইন্সট্রাকশনের জন্য অপেক্ষা করছে।“
জেনারেল চুপ করে রইলেন।তার বুকের ভিতর বাজছে-“ও মাই গড,ও মাই গড।“
“তুমি সার্কিট হাউসে গিয়েছিলে?” তিনি কঠোর কন্ঠে জিজ্ঞেস করেন।
“জ্বী স্যার।” মেজর মোজাফফরের কন্ঠ দ্বিধাহীন।
“মোট ক’জন গিয়েছিলে?”
“ষোল জন স্যার।“
“মাহবুব ছিল?”
“জ্বী স্যার, মাহবুব স্যার,মতি স্যার---“
“হু ডিড ইট?”
“সরি স্যার?”
“হু শর্ট জিয়া?”
“একচুয়ালি স্যার আই ডিড নট সি ইট।“ মেজর মোজাফফরের কন্ঠ এবার দ্বিধান্বিত শোনায়।
“আমি দোতলায় উঠার আগেই স্যার ঘটনা ঘটে গেছে।“
“বাট ডিড নট ইউ হিয়ার হু ডিড ইট?”
“স্যার,দ্যাটস ইররেলেভেন্ট নাউ,স্যার! ফ্যাক্ট ইজ,প্রেসিডেন্ট ইজ ডেড!”
“স্টপ লেকচারিং! টেল মি হু ডিড ইট। ইস ইট মাহবুব?”
আপন ভাগনে লেফট্যানেন্ট কর্নেল বীর উত্তম মাহবুবুর রহমানকে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ পায় জেনারেল মনজুরের কন্ঠে।
মেজর মোজাফফর মরিয়া হয়ে বলেন, “নো স্যার! নো স্যার!”
“দেন হু? মতি?”
“ইয়েস স্যার! নো স্যার!আয়াম নট শিওর স্যার!আমিতো নিজের চোখে দেখিনি,স্যার,আমি শুধু শুনেছি।“ মেজর মোজাফফরের কথাগুলো এলোমেলো হয়ে জায়,তিনি খেই হারিয়ে ফেলেন।টেলিফোনে মনজুর তাঁর হাফানোর শব্দ শুনতে পায়।
“ওয়াজ মতি ড্রাঙ্ক?”
“সরি স্যার?”
“মতি কি সার্কিট হাউসে গিয়েছিল ড্রাঙ্ক হয়ে?”
“আমি জানিনা স্যার?”
জেনারেল মঞ্জুরের মনে হল এখন এই জিজ্ঞাসা অর্থহীন। কিন্তু মতি এটা কেন করল? নিজেকেই জিজ্ঞেস করেন জেনারেল মঞ্জুর।তার মনে পড়ল এরশাদকে। জেনারেল মঞ্জুর যেন স্পষ্ট চোখে দেখতে পেলেন জেনারেল এরশাদের ধুর্ত চোখে পৈশাচিক আগুন।লেফট্যানেন্ট কর্নেল মতি কদিন আগে ঢাকায় গিয়ে এরশাদের সাথে দেখা করে এসেছেন এই গোপন খবর মঞ্জুর পেয়েছেন। তাঁর পর মাত্র চারদিন আগেই এরশাদ চট্ট্রগ্রামে এসেছিলেন,তখন মতির সঙ্গে তিনি একান্তে আলাপ করেছিলেন, এ খবরও তাঁর কানে এসেছে।
তাহলে কি এটা দাড়াল? এরশাদ জিয়াকে শেষ করে দিলেন?তার পর আর ভাবতে পারলেন না মঞ্জুর।
“স্যার আমরা এখন কি করব?” মেজর মোজাফফরের কন্ঠ শুনে প্রমাদ গুনলেন জেনারেল মঞ্জুর। তাইতো আমরা এখন কি করব? ওদের জেওসি হিসেবে সব দোষতো এখন আমার ঘাড়ে পড়বে, আমি এখন কি করব?
জেনারেল মঞ্জুর সিগারেট ধরালেন। নাকে হাত দিলেন উনার স্ত্রী রানা মঞ্জুর। টেলিফোনের শব্দে যিনি জেগে উঠেছিলেন, সব কথা শুনেছেন, বুঝেছেন জিয়া আর নেই।মঞ্জুর শোবার ঘরে সিগারেট খান না, বাচ্ছারা থাকলেতো প্রশ্নই ঊঠেনা।রানা ভুরু কুচকে তাকালেন স্বামীর দিকে, অন্য সময় হলে তিনি রেগে যেতেন,কিন্তু এখন কিছু বললেন না;শুধু করুন চোখে নিরবে চেয়ে রইলেন স্বামীর মুখের দিকে।
একটি সিগারেট শেষ করে আরেকটি ধরালেন জেনারেল,ধোয়া ছাড়লেন মুখ ভর্তি করে।রানার চোখ জ্বালা করতে শুরু করল,তিনি ঘুমন্ত বাচ্ছাদের দিকে তাকালেন, হাত নেড়ে ধোয়া তাড়ানোর বৃথা চেষ্টা করতে করতে স্বামীর মুখের দিকে চেয়ে বললেন, “তুমি জানতে?”
“কী?”
“ওরা জিয়াকে মেরে ফেলবে, এটা তুমি জানতে?”
“প্রশ্নই আসেনা।“
“সত্যিই জানতে না?”
“তুমি আমাকে অবিশ্বাস কর?”
“কী যে বলনা তুমি! এখানে বিশ্বাস অবিশ্বাসের প্রশ্ন আসছে কেন?তুমি কি একটুও টের পাওনি যে, ওরা জিয়াকে মেরে ফেলার প্লান করছিল?”
“টের পেলে আমি কি এটা ঘটতে দিতাম? আমি কি এতই স্টুপিড? দেখতেই তো পাচ্ছ এখন সব দোষ আমার উপর চাপানোর চেষ্টা হবে।“
“তাহলে কিভাবে ঘটল এটা?”
“এরশাদ! এরশাদ! নরকের কিট এরশাদ! বিরাট এক সুযোগ নিল কাল্প্রিটটা। শেষ করে দিল জিয়াকে। এখন সে মার্শাল’ল জারী করে ক্ষমতা দখলের চেস্টা করবে।“
“মানে? তোমার অফিসারদের মাঝে এরশাদের লোক এল কিভাবে?”
“থাক তোমার এসব নিয়ে না ভাবলেও চলবে।“
“না ভাবলেও চলবে মানে?পরিস্কার করে বলতো,এখানে এরশাদের হাতটা কোথায়?”
জেনারেল মঞ্জুরের ক্লান্তি বোধ হয়, সেই সাথে একটু বিরক্তিও। তিনি কী করে এই মহিলাকে বোঝাবেন যে সেনাবাহিনীর ভিতরে জটিল,কুটিল নানা হিসাব নিকাশ কাজ করে,সব সময় চলে ছোট বড় নানা ষড়যন্ত্র।
তিনি নিজেই বা সেসবের কতটুকু ঠিকঠাক বুঝেন,তাও তিনি জানেন না।নইলে যে তিনি পঁচাত্তর সাল থেকে জেনারেল জিয়ার পাশে থেকেছেন সব চেয়ে বিশ্বস্ত,সব চেয়ে স্নেহভাজন অফিসার হিসাবে। সবার থেকে বেশি যোগ্যতা থাকা সত্বেও সেই তাকেই বাদ দিয়ে রাস্টপতি জিয়া সেনা প্রধান বানিয়েছেন এরশদকে? যে এরশাদের সাথে তাঁর কোন ঘনিষ্ঠতাই ছিল না। এটা জিয়ার কোন হিসাব? কী চেয়েছেন জিয়া এরশাদকে সেনা প্রধান বানানোর মাধ্যমে? আর এরশাদ কি ধুর্ত,কি ধুরন্ধর! বেচে বেচে মুক্তিযোদ্ধা অফিসারদের ঢাকা থেকে তাড়িয়েছেন, বেশির ভাগ মুক্তিযোদ্ধা অফিসারকে জড়ো করেছেন চট্রগ্রামে।জড়ো করেছেন এক জায়গায়, যেন তারা জেনারেল জিয়ার বিরুদ্ধে তাঁদের সম্মিলিত ক্ষোভ সংগঠিত করতে পারে।
“এখানে তুমি থাকতে এরশাদ কাদেরকে দিয়ে জিয়াকে মেরে ফেলল?”
“সব তোমাকে পরে বলব।এখন আমাকে যেতে হবে।সব অফিসার আমার জন্য ওয়েট করছে। এখন সব কিছু নির্ভর করছে আমার উপর।“
“কিন্তু আমাদের কি হবে?” স্বামীর বাহু আঁকড়ে ধরে বললেন রানা মঞ্জুর।
“আমরা কি বাঁচতে পারব?”
ঘুমন্ত বাচ্ছাদের দিকে তাকালেন জেনারেল, তারপর স্ত্রীর মুখের দিকে চেয়ে বললেন,
“কেন ভাওয় পাচ্ছ রানা? ডিড আই ডু এনিথিং রং? আমার কি হবে কিচ্ছু হবেনা।“
খাট থেকে নামলেন জেনারেল। বাথ্রুমে ঢুকে চোখে মুখে পানির ঝাপ্টা দিয়ে বেরিয়ে এসে ব্যাস্ত ভাবে ঘুমের পোশাক ছেড়ে প্যান্ট ও একটা হাফ হাতা শার্ট পরে নিলেন।শার্টের কলারটি উলটে রইল, তিনি তা দেখতে পেলেন না। রানা দেখলেন কিন্তু কিছু বললেন না। তিনি চেয়ে রইলেন স্বামীর দিকে।
জেনারেল মঞ্জুর আলমারী থেকে একটা পিস্তল বের করে প্যান্টের পকেটে ঢোকালেন।রানা তাঁর একটা হাত চেপে ধরলেন, মঞ্জুর তাকালেন তাঁর চোখের দিকে।
জেনারেল আস্তে করে স্ত্রীর হাতের বাঁধন থেকে নিজেকে মুক্ত করে সরে এলেন। তাঁর পর আর পেছনে না তাকিয়ে দ্রুত পায়ে বেরিয়ে এলেন বাসা থেকে।কিন্তু গেটের বাইরে বেরিয়ে তাঁর পা দুটি হঠাত থেমে গেল। তিনি পেছনে ফিরে তাকালেন; তাঁর আবার বাসায় ঢোকার ইচ্ছা হল; সাধ জাগল ঘুমন্ত বাচ্ছা গুলিকে দেখার,তাঁদের গালে টোকা মারার,মাথায় হাত বোলানোর,চুমু খাওয়ার।
হঠাত নিজেকে ভীষণ দুর্বল মনে হল তাঁর এবং তিনি যে এত দুর্বল তা আবিস্কার করে বিস্মিত হলেন।
দাঁড়িয়ে রইলেন কিছুক্ষণ, তারপর ঠোট শক্ত করে গট গট করে হেঁটে গাড়ীতে উঠলেন।
২/ এরপর তিন দিনে জেনারেল মঞ্জুরের জীবনে ঘটে অনেক ঘটনা, বিস্তারিতয় না গিয়ে আমি জেনারেলের জীবনের শেষ কিছু সময় এখানে উদৃত করছি।
৩/ সামরিক বাহিনীর তিনটি যান, সেগুলোর সামনে পেছনে ও মাঝে পুলিশের পাচটি ভ্যান সহ একটি গাড়ি বহর হাঠহাজারী থানা থেকে বেরিয়ে এগিয়ে চলল চট্রগ্রাম সেনানিবাসের দিকে। সেনানিবাসের সিগন্যাল ব্যাটালিয়ানের কাছে এমপি চেকপোস্ট পর্যন্ত গিয়ে পুলিশের গাড়ীগুলি ফিরে গেল।সেনাবাহিনির তিনটি ঢুকে পড়ল সেনানিবাসের ভিতরে।একটু পরেই তিনটি গাড়ী চলে গেল তিনটি আলাদা পথে।
জেনারেল মঞ্জুরকে নিয়ে মেজর এমদাদের জিপ সেনানিবাসের ভিতর ভিবিন্ন রাস্তায় চক্কর খায়।চোখ বাঁধা হাত বাঁধা মেজর জেনারেল অনর্গল কথা বলে যেতে থাকেন;
“সৈনিকদের জন্য,ফ্রিডম ফাইটারদের জন্য,সেনাবাহিনির জন্য, দেশের জন্য কত কিছুই না করেছি।আমার অপরাধ আমি মুক্তিযুদ্ধে প্রানবাজী রেখে যুদ্ধ করেছিলাম।পচাত্তরের পর থেকে জেনারেল জিয়ার পাশে ছিলাম,কত সহযোগিতা করেছি তাকে--- ভোর পর্যন্ত আমি জানতামই না জিয়াকে মেরে ফেলা হবে বা অল্রেডি মেরে ফেলা হয়েছে-- ,ওরা আমাকে ধোঁকা দিয়েছে, মতি,মাহবুব,দেলোয়ার,মোজাফফর আমার সঙ্গে প্রতারনা করেছে।আমি জাতির সামনে সব বলে যেতে চেয়েছিলাম---।“
বিপরিত দিক থেকে একটা জিপ এগিয়ে আসছে।ক্যাপ্টেন এমদাদ তা দেখেই বুঝতে পারলেন এটা ইবিআরসির জিপ।তিনি নিজের জিপের ড্রাইভারকে থামতে বলে নেমে গিয়ে দেখতে পেলেন সেখানে বসে আছেন মেজর কামাল উদ্দিন ভুঁইয়া।কামালের পাশে বসে আছেন লেফট্যানেন্ট জেনারেল শামস।
“এত দেরী হল কেন?” এমদাদকে বললেন শামস, “তোমার সাথে এত লোক কেন? যাও তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করে আসো।“
ক্যাপ্টেন এমদাদ তাঁর স্যারদের স্যালুট দিতে ভুলে গেলেন।তিনি ঘুরে ছুটে গিয়ে আবার উঠলেন সেই জিপে,ড্রাইভারকে আস্তে করে বললেন “রেঞ্জের দিকে যাও।“
চোখ বাঁধা হাত বাঁধা জেনারেল ‘রেঞ্জ’ কথাটা শুনেই বুঝে ফেললেন গাড়ী এখন ফায়ারিং রেঞ্জের দিকে যাচ্ছে। তিনি বিড় বিড় করে কোরআনের আয়াত পাঠ করতে শুরু করলেন।
ফায়ারিং রেঞ্জের কাছে জিপ থামল। প্রথমে নেমে পড়লেন ক্যাপ্টেন এমদাদ। তারপর পেছেনে বসা সৈনিকরা জেনারেল মনজুরকে ধরে নিচে নামাল,তাঁর দুই বাহু ধরে দুই সৈনিক তাঁকে হাটিয়ে নিয়ে চলল উত্তরের একটি পাহাড়ের দিকে। হেঁটে যেতে যেতে জেনারেল মনজুরের কন্ঠে কোরআনের আয়াত আরো উঁচু স্বরে এবং দ্রুততর গতিতে উচ্চারিত হতে লাগল। পাহাড়ের কাছে গিয়েই সবাই থেমে দাঁড়াল। দুই সৈনিক ছেড়ে দিল জেনারেলের দুই বাহু।
এমদাদ এবার জেনারেলকে উদ্দেশ্য করে বল্লেন,”স্যার আমাদের মাপ করে দিয়েন,উপরের নির্দেশে আমাদেরকে এই কাজ করতে হচ্ছে স্যার।“
চোখ বাঁধা জেনারেল দাঁড়িয়ে আছেন অন্ধের মত।তিনি বল্লেন,”জানি।ইউ আর গোয়িং টু এলিমিনেট নাঊ।অল রাইট। আমার ওয়াইফকে বলে, আমাকে যেন মাফ করে দেয়। তাঁর জন্য ,সন্তান্দের জন্য আমি কিছু রেখে যেতে পারলাম না। যারা আমার উদ্দেশ্য জানে,তাদেরকে বলো,দয়া করে তারা যেন সেটা সবাইকে জানায়।আমার পকেটে ছোট একটা কোরআন শরিফ আছে,ওটা বের করে নাও। একটা ফরমেসন সাইন আছে,সেটা বের করে রেখে দাও।“
সৈনিকেরা নিরবে জেনারেলের শেষ দুটি নির্দেশ পালন করল।কেউ কেউ বিড় বিড় করে দোয়া দরুদ পড়তে লাগল। তাঁর পর এমদাদ সৈনিকদের উদ্দেশ্যে বল্ল,”কে শুট করবে?”
সবাই নিরব।জেনারেল মঞ্জুরে কন্ঠে জোরে জোরে কোরআনের আয়াত উচ্চারিত হতে লাগল।তিনি টের পাচ্ছেন সবাই তাঁর কাছ থেকে দূরে সরে গেছে। তিনি আবার শুনলেন এমদাদের কন্ঠ, যেন ভেসে এল অনেক দূর থেকে, “কে?”
কিন্তু তাঁর কোন উত্তর শুনতে পেলেন না জেনারেল।
আবার এমদাদের কন্ঠ,”আপনে?”
চোখ বাঁধা জেনারেলের চোখে হঠাত ঝলমল করে উঠল তাঁর সন্তানদের মুখ,বড় মেয়েটির অনাবিল হাসি,সবচেয়ে ছোট্টটির ছোট্ট মায়াভরা মুখ।
তারপর হঠাৎ তিব্র আলোর ঝলক। তারপর আর কিছু নেই।মধ্যরাতের গভীর অন্ধকারে একটি গুলির শব্দ পাহাড়ের গায়ে প্রতিধ্বনি তুলল। খুলির একপাশ উড়ে যাওয়া জেনারেলের দেহটি সশব্দে পড়ে গেল মাটিতে।সঙ্গে সঙ্গে কি যে হল, ক্যাপ্টেন ও তাঁর সৈনিকেরা ঝট করে চোখ সরিয়ে নিল,তারপর ভুত তাড়িতের মত দৌড়ে পেরুতে লাগল ফায়ারিং রেঞ্জের চওড়া মাঠ।
নির্জন পাহাড়ের কোলে পড়ে রইল বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল কমান্ডিং অফিসার ও চট্ট্রগ্রাম অঞ্চলের অধিনায়ক মেজর জেনারেল আবুল মঞ্জুর পিএসসি বীর উত্তমের খুলি উড়ে যাওয়া দেহ।
তারিখটি ছিল ১৯৮১ সালের ২রা জুন (আজকের এই দিন)।
(লকডাউন সময়ে মশিউল আলমের লিখা “দ্বিতীয় খুনের কাহিনী” বইটি পড়লাম।উপরের লেখাটি উক্ত বই থেকে সংগৃহীত ও সম্পাদিত।)
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৯