somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যে কারনে সৌদি আরবে নারীরা নির্যাতিত হচ্ছে বলে আমার মনে হয়

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বাংলাদেশের অর্থনীতির একটা বড় অংশ আসে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স থেকে। বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স আহরণ করে সৌদিআরব থেকে। সৌদিআরবে পাঠানো শ্রমিকদের বড় একটা অংশ নারী। প্রতিদিন শতশত নারী গৃহকর্মী হিসেবে সে দেশে যাচ্ছে। তার বিপরীতে সৌদিআরব থেকে অনেক নারী লাশ হয়ে আসছে। তারপরও সে দেশে নারীদের গৃহকর্মী হিসেবে পাঠানো বন্ধ নেই। অনেক নারী ফিরে এসে তাদের উপর নির্যাতনের ভয়াবহ বর্ণনা দিচ্ছে। কেন এমন হচ্ছে? এর কি কোনই সমাধান নেই?

প্রথমেই আসা যাক কেন নারীরা লাশ হয়ে আসছে বা তাদের উপর কেন নির্যাতন চালানো হচ্ছে সে বিষয়ে!

এর কারণ হিসেবে আমার যা মনে হয়:

১) যারা নারীদেরকে গৃহকর্মী হিসেবে নিচ্ছে তারা আসলে একেবারে কিনে নিচ্ছে। সে দেশে লোক পাঠানেরা জন্য যে সকল এজেন্টরা দায়িত্ব নিয়েছে তারা হয়তো কথিত গৃহকর্মী হিসেবে আসলে দাসী সাপ্লাই দেবার দায়িত্ব নিয়েছে। ঐ সমস্ত এজেন্টরা, যে সকল নারী বিদেশে যাবার জন্য আসছে তাদের থেকেও টাকা নিচ্ছে আবার সৌদি আরব থেকেও মোটা অংকের টাকা পাচ্ছে। ফলশ্রুতিতে টাকার বিনিময়ে কিনে নেয়া দাসীদের সাথে যাচ্ছে তাই ব্যবহার করা হচ্ছে।

২) গৃহকর্মী হিসেবে যাওয়া ঐ সমস্ত নারীদের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করছে বাবা-ছেলে উভয়েই। যে সমস্ত নারীরা রাজী হচ্ছে তারা বেশ ভালোই আছে। কিন্তু যারা রাজী হচ্ছে না তাদের উপরই নেমে আসছে মহা অত্যাচার।

৩) যারা গৃহকর্মী হিসেবে (আসলে দাসী) নারীদেরকে ব্যবহার করছে ঐ সমস্ত সৌদিয়ানরা হয়তো কোরআন-হাদীসের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে এটাকে হালাল করে নিচ্ছে। কারণ দাস-দাসী প্রথা ইসলাম রহিত করেনি এই ফতোয়ায়।

একটা কথা মনে রাখতে হবে, সৌদি আরবে ইসলামের মূল কেন্দ্রবিন্দু হলেও সে দেশে যেমন আবুবকর-ওমর (রা.) এর মতো সাহাবী ছিলেন তেমন আবু জেহেলের মতো বদ লোকও ছিলো।

এর থেকে উত্তরণের উপায় কি?

১) উপায় হিসেবে একটা কথা বলা যেতে পারে তা হচ্ছে, যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে শ্রমিক পাঠানো।
২) নামে-বেনামে এজেন্টদের মাধ্যমে বিদেশে না যাওয়া।
৩) সরকারের হস্তক্ষেপ এবং দ্রুতাবাসগুলোর দায়িত্বশীল ভূমিকা।

সৌদিআরব থেকে কতজন নারীর লাশ এসেছে, কতজন নির্যাতিত হয়ে ফিরে এসেছে সে হিসাব সবার কাছে আছে। কিন্তু গত দুইদিনে একজন নারীকে উদ্ধার করে যে পরিমান প্রচারণা চালানো হচ্ছে তা দেখে নিজেরই লজ্জা হচ্ছে। এক ফেলানিকে যখন মেরে কাঁটাতারে ঝুলানো হলো দেশজুড়ে তোলপার শুরু হলো। সীমান্তে দু-একজন মানুষকে হত্যা করা হলে আমরা ভারতকে গালি-গালাজ করে একবোরে ধুঁইয়ে দেই। এটা বলছি না যে, ভারত যে সীমান্তে মানুষ মারছে সেটা ঠিক কিন্তু সৌদিআরবে যা হচ্ছে তা দেখে মানবাধিকারের বুলি আওড়ানো লোকগুলি কোথায় এখন? এক ফেলানীর জন্য ফেসবুক ইউটিউব গরম হলে হাজারো নারী গৃহকর্মী যারা সৌদিআরব থেকে লাশ হয়ে আসছে তাদের জন্য মুখে কুলুপ কেন? রেমিটেন্স বন্ধ হওয়ার ভয়ে? মুসলিম রাষ্ট্র বলে? তারা আমাদের কেমন বন্ধু এখনও টের পায়নি মনে হয় আমরা!

একটা কাজ করলে কেমন হয়? নারীদেরকে আর গৃহকর্মী হিসেবে আমরা পাঠাবো না। তাতে করে কি হবে! কিছু রেমিটেন্স হয়তো হারাবো, হয়তো পেঁয়াজের কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা হবে, হয়তো গ্যাসের দাম ১৫০০ হবে, হয়তো বিদ্যুতের দাম আরো ৫ টাকা প্রতি ইউনিটে বেড়ে যাবে কিন্তু তরুণ-তাজা মা বোনদের লাশ, চিৎকার-হাহাকার আর সইতে পারছি না। ১৯৭১ সালে মা-বোনদের ইজ্জত খেয়েছে পাকসেনারা যুদ্ধের ময়দানে। আর ২০১৯ সালে এসে খাচ্ছে আরো একটি মুসলমান দেশ। পার্থক্য কোথায়? একদেশ খেয়েছে বাড়িবাড়ি গিয়ে আরেক দেশ খাচ্ছে নিজেদের দেশে দাওয়াত করে নিয়ে গিয়ে।

আপনারা আপনাদের মতামত জানাতে পারেন। আমি ভুল কিছু বললে শোধরে দেবার অনুরোধ রইলো।

সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:১৬
১৬টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×