somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভারতীয় নিষিদ্ধ দ্বীপ

১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পৃথিবীর বুকে এখনো এমন জনগোষ্ঠী আছে যারা পুরো পৃথিবী থেকে আলাদা।তাদের সাথে পুরো পৃথিবীর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন,যেন এক আদিম যুগের মনুষ্যগোষ্ঠী।

এমনই এক রহস্যেঘেরা দ্বীপ সেন্টিনেল দ্বীপ।বঙ্গোপসাগরের আন্দামান দ্বীপপুঞ্জে এর অবস্থান। এখানে যারা বাস করে তাদের সেন্টিনেলী জনগোষ্ঠী বলা হয়। এদের মূল পেশা শিকার করা। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে তারা এখনও আগুন জ্বালাতে শিখেনি।এ অদ্ভুত জনগোষ্ঠীর অস্তিত্ব পাওয়া যায় ১৮৮০ সালের দিকে।



আন্দামান দ্বীপের পাশের এই দ্বীপটাতে প্রায় ২৫০ জন মানুষ বসবাস করে।এরা কোন ভাষায় কথা বলে এখন পর্যন্ত জানা যায় নি।তাদের ভাষার সাথে পূর্ববর্তী কোনো ভাষারও মিল পাওয়া যায় নি।এমনকি এরা কোনো ধর্ম পালন করে কিনা এ ধরণের কোনো তথ্যও পাও্য়া যায়নি।

১৯৮১ সালে বাংলাদেশ থেকে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার পথে ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে একটি জাহাজ। দুর্ঘটনাবশত জাহাজটি থামে বঙ্গোপসাগরের সেন্টিনেল দ্বীপটীর পাশেই। জাহাজটি দেখতে পেয়েই এই দ্বীপের আদিবাসীরা তীর ধনুক ছুড়তে শুরু করে।পুরোপুরি বিপর্যস্ত জাহাজের যাত্রীরা পরবর্তীতে হেলিকপ্টারের সহায়তায় কোনো ভাবে এই আদিম জন গোষ্ঠীদের থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে পলায়ন করতে সমর্থ হয়।



বহিরাগতদের ওপর আক্রমণাত্মক মনোভাবের জন্য সেন্টিনেলী জনগোষ্ঠী বিশেষভাবে পরিচিত।এর পিছনে একটি ঘটনা রয়েছে।

বহুকাল আগে থেকেই এদের সাথে অনেকেই যোগাযোগ করতে চেয়েছিল। ১৮৮০ সালের ঘটনা। এক ব্রিটিশ এক্সপ্লোরার ভিদাল পোর্টম্যান সর্ব প্রথম সেন্টিনেলীদের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করে।তিনি আন্দামান আইল্যান্ড থেকে কিছু আদিবাসীকে সাথে নিয়ে এই দ্বীপ টিতে যান। রিসার্চ এর উদ্দেশ্যে সেখান থেকে গোপনে এক বৃদ্ধ দম্পতি এবং কিছু বাচ্চাকে অপহরণ করে পালিয়ে যান। কিন্তু কিছু দূর আগাতে না আগাতে দম্পতি মারা যায়। কিছু না ভেবেই তাড়াহুড়া করে তিনি বাচ্চা গুলোকে রেখে আসেন দ্বীপের কাছে।



অনেকের ধারণা ঠিক এই কারণেই সেন্টিলেনীরা বহিরাগতদের গ্রহণ করতে পারছে না।এই দ্বীপের অধিবাসীরা সামান্য জর,কাশির প্রভাবেও মারা যেতে পারে এমন টি ধারণা করা হয়। কারণ এখন পর্যন্ত এ ধরণের কোনো রোগ ই এদের মধ্যে দেখা যায়নি।




১৯৯১ সালে ভারতের একজন এন্থ্রোপলজিস্ট থিলোকান পান্ডিত সফলভাবে সর্ব প্রথম এদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারেন।তিনি নারিকেল দিয়ে এদেরকে অভিবাদন জানান।

এরপর অনেক মানুষই এদের সাথে যোগাযোগ করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়।কোনো মানুষ দ্বীপের কাছে গেলেই তাদেরকে তীর ধনুক মারা হয়।সাগরে ভেসে আসা বিভিন্ন মেটাল দিয়ে এরা তীর ধনুক বানিয়ে থাকে।



২০০৪ সালের ভয়ঙ্কর সুনামির পরে সবাই ভেবেছিল এরা বিলীন হয়ে যাবে। কিন্তু তারপরেও এরা টিকে আছে।

সম্প্রতি ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে এক মার্কিন নাগরিক এ আইল্যান্ডে যান। তার উদ্দেশ্য ছিল খ্রিস্টান ধর্ম প্রচার করা।আদিবাসীদের ধর্মের পথে আনা। কিন্তু তিনি দ্বীপ টিতে পা দিতে না দিতেই তাকে উপরে পাঠিয়ে দেয়া হয়।তীর ধনুক মেরে তাকে হত্যা করা হয়।




ইতিমধ্যে ভারত সরকার এই দ্বীপ টিকে ব্যান করে দিয়েছে।এই দ্বীপ টির আশে পাশে কাওকে ঘেঁষতে মানা করে দেয়া হয়েছে।তারপরেও সারা বিশ্বের অনেক মানুষ এই দ্বীপ টির প্রতি এখনো আকর্ষণ বোধ করছে। নিষিদ্ধ দ্বীপ টি নিষিদ্ধ করার পর যেন আরও রহস্যময়ী হয়ে উঠছে মানুষের কাছে!
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৩৪
৭টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৬

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট



পানি জীবনের মূল উৎস। এটি ছাড়া কোনো প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন:

وَجَعَلۡنَا... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×