সিলেটের সংবাদজগতের প্রাণচঞ্চল, কর্মঠ তারুন্যদীপ্ত ফটো জার্নালিস্ট সি এম মারুফ আর নেই। গতকাল রোববার দিবাগত ২টা ১৫ মিনিটে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ... রাজেউন)। সি এম মারুফ অন্যান্য দিনের মতোই রোববার রাত দেড়টার দিকে তার কর্মস্থল দৈনিক জালালাবাদ থেকে বাসায় ফেরেন। রাতের খাবার খেয়েই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। অচেতন অবস্থায় তাকে সাথে সাথে ওসমানী কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। সি এম মারুফ যেমন একটি সংবাদচিত্রের জন্য রাত-বিরেত মানতেন না, তেমনি তার সহকর্মীরা আকস্মিক এই খবর পেয়েই মধ্যরাতে দুর-দুরান্ত থেকে ছুটে আসেন হাসপাতালে। কেউ বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না সদা চঞ্চল এই সাংবাদিকের মৃত্যু। হাসপাতালের আঙিনায় সি এম মারুফের নিথর দেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তারা। হাসপাতালে উপস্থিত আত্মীয়স্বজন ও সহকর্মীরা তার লাশ চৌহাট্টাস্থ বাসায় নিয়ে আসেন। এসময় সৃষ্টি হয় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের। সহকর্মীরা ডুকরে ডুকরে কাঁদছিলেন, আর পাশের ঘরেই বৃদ্ধা মা চিৎকার করে কাঁদছিলেন-‘আল্লাহ এই দৃশ্য দেখার লাগি তুমি আমারে রাখছনি.......।’ তার একমাত্র শিশুকন্যা নুসরাত ফ্যালফ্যাল করে দেখছিল মধ্যরাতে বাসায় আসা লোকদের। সে ভাবতেও পারছিল না তার প্রিয় বাবা আর নেই। যে বাবা প্রতিদিন ফেইসবুকে তার একটি ছবি আপলোড করতেন, যে মেয়ের জন্মদিন পালনের জন্য মাসখানেক আগে থেকেই নানারকম পরিকল্পনা করতেন, সেই প্রিয় বাবা আর ফিরে আসবে না...। সিলেট প্রেসক্লাবের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক, দৈনিক জালালাবাদের চীফ ফটোগ্রাফার সি এম মারুফের মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৪৩ বছর। তার অকাল প্রয়ানের খবর শুনে সিলেটের সাংবাদিক সমাজে শোকের ছায়া নেমে আসে। সি এম মারুফ ভোরের কাগজ পাঠক ফোরাম, রোটারী ক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনে একজন দক্ষ সংগঠক হিসেবে সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি ভোরের কাগজসহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক এবং স্থানীয় দৈনিক জালালাবাদ পত্রিকায় ফটোসাংবাদিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। আজ সোমবার বাদ আসর নয়াসড়ক জামে মসজিদ প্রাঙ্গনে নামাজে জানাযা শেষে মানিকপীর গোরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হবে। বেলা আড়াইটায় সিলেট প্রেসক্লাবে কিছুক্ষনের জন্য তার মরদেহ রাখা হবে।
মারুফ ভাইকে আমি কোনদিন সরাসরি দেখিনি কিন্তু সেই ১৯৯৮ থেকে উনার ফটোর সাথে আমার পরিচিতি। কারণ তখন আমার আব্বা জালালাবাদ ছাড়া আর কোন পত্রিকা ঘরে আনতেন না। তাই আমিই জানি মারুফ ভাইয়ের ছবির মূল্য। মাত্র তেতাল্লিশে উনাকে হারিয়ে ফেলব কোনদিন স্বপনেও ভাবটে পারিনি।
মারুফ ভাই আপনি ওপারে যেন সুখে থাকেন সেই দোয়া করি।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



