somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাইকোথ্রিলারঃ আমি অথবা সে কিংবা অন্যকেউ [সম্পূর্ণ]

২২ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




।।এক।।
ফোনটা বেজে উঠল।
স্ক্রীনে তাকালাম।রিমি।এত সকালে?

শুক্রবার সকাল।ঘুমিয়ে ছিলাম।রিমি খুব ভাল করেই জানে শুক্রবার সকালে আমার একটাই কাজ। শুধু ঘুম আর ঘুম।তাহলে এত সকালে রিমির ফোন কেন?

এই সুযোগে আপনাদেরকে আমার রুটিনটা বলে নেই। আমি একটা ছোটখাট বেদরকারি আইমিন বেসরকারি চাকরি করি। বাকি দুই বন্ধুর সাথে মিলে মেস করে থাকি। সারাসপ্তাহ কুত্তা পরিশ্রম করার পর বৃহস্পতিবার রাতে স্বাভাবিকভাবেই একটু আমোদ ফুর্তি না করলে চলে না। আবীরের খুব তাস পেটানোর শখ, শুভ্রর আবার কার্ডের সাথে একটু গলা না ভেজালে চলে না।

বলছি না, আমি একেবারে দেবদূত। তাস আমিও পেটাই, গলা শুকিয়ে গেলেতো একটু ভেজাতেই হয়।কিন্তু এমনও না যে এসব ছাড়া আমার চলে না।চেষ্টা করে দেখেছি, এই দুটো ছাড়াই আমি একের পর এক বৃহস্পতিবার রাত পার করতে পারি, তবে শুভ্রই যেহেতু টাকাটা দেয়, তাই বন্ধুর মন রাখার জন্যই ... ... বুঝতেই পারছেন।

যাক সে কথা। প্রসঙ্গে ফিরে আসি। তাস পেটানো শেষ হলে আমরা তিন বন্ধু মিলে মুভি দেখতে বসি। তিনটি ব্যাচেলর ছেলে, সপ্তাহ শেষের রাত- সবসময় জীবনমুখি সিনেমা দেখা হয় না।

সব শেষ করে ঘুমাতে প্রায়ই ভোর হয়ে যায়।

এই রুটিনের জন্যই শুক্রবার সকালে আমি কোন কাজ রাখি না, এমনকি রিমির সাথেও দেখা করি না। রিমির জন্য আমার শুক্রবার বিকালগুলো বরাদ্দ।

রিমি আমাকে চেনে, আমার লাইফস্টাইল জানে। পরিচয় হওয়ার পর থেকে গত দুবছরে মনে হয় না এমন কোন বিকাল গেছে যেটা রিমির সাথে কাটেনি। তাহলে আজ এই সকালে ফোন কেন?

ইমার্জেন্সি?

ফুহ। রিমির ইমার্জেন্সি মানেই বান্ধবীর গায়ে হলুদ, ম্যাচিং করা লিপস্টিক পাচ্ছি না।সাথে করে মার্কেটে নিয়ে যেতে হবে।নাহয় থর পার্ট থ্রি'র টিকেটটা সকালেই কেটে রাখতে হবে, বিকালে টিকেট পাওয়া যাবে না।

কোন দরকার নেই এখন ফোন রিসিভ করার।

ফোনটা কেটে দিলাম।


।।দুই।।
ফোনটা আবার বেজে উঠল।
কলার একই। রিমি।

ঘড়ির দিকে তাকালাম। সকাল ৬.৩০।
মানে মাত্র আধঘন্টা হল শুয়েছি। এর মধ্যে মেয়েটা চারবার কল করেছে। সত্যিই কোন ইমার্জেন্সি মনে হচ্ছে। আজকের ঘুমটা তাহলে মাটি।

-হাই বেবি।
-তুমি কোথায়?
-একটু হাই হ্যালোও করবা না?
-রাখ তোমার হাই হ্যালো। সময় কম, তুমি কোথায়-সেটা বল।
-শুক্রবার সকালে আর কোথায় থাকব? বাসায়।
-আমাদের এখানে আসতে কতক্ষণ লাগবে?
-এত সকালে আসব?
-হ্যা।
-কেন? কি সমস্যা?
-এত কথা বলার সময় নেই। জলদি আস।
-আরে আজব, কি হইছে বলবা তো।
-এত কথা বলে সময় নষ্ট কর কেন? এখানে আমার জীবন মরণ সমস্যা, তোমার কি কোন বিবেক-বুদ্ধি নাই।

রিমির টোন শুনে সত্যিই অবাক হয়ে গেলাম।মেয়েটা অস্থির প্রকৃতির-সন্দেহ নেই। কিন্তু আজকের অস্থিরতা মাত্রা ছাড়ানো। সামান্যতম সময় কথা বলে নষ্ট করতে চাচ্ছে না।যাব নাকি ওর বাসার সামনে?

-কি হল?
-আধা ঘন্টা সময় দাও, আসতেছি।
-না, পনের মিনিট।
-পনের মিনিটে কিভাবে আসব?
-জানিনা। আর শুন।
-কি?
-তোমার ওই মরা-ধরা বাইকটা আনবা না। প্রচুর শব্দ করে। সিএনজি নাহয় উবারে আস। আর গাড়ি গলির মুখে রেখে ভিতরে ঢুকবা।
-আমি কিন্তু কিছুই বুঝতেছি না।
-বোঝার দরকার নাই। জলদি আস। রাখলাম।

ফোনটা কেটে গেল।


।।তিন।।
পয়তাল্লিশ মিনিট পর।
-এই বাবু, এই। মুখ এমন ভোঁতা করে রাখছ কেন?
-আমি বাঙ্গালীর ছেলে, আমার নাক-মুখ সবই ভোঁতা। চোখা কাউকে চাইলে আরব পোলাপানের সাথ প্রেম করতা।
-ওরে আমার বাবুটা রাগ করছে। শো শুইইট।
রিমি আমার গাল টানাটানি করতে লাগল।
মেজাজটা ভয়ানক খারাপ হচ্ছে।ঘড়ির দিকে তাকালাম। সোয়া সাতটা।
-ভাই, আর কতক্ষণ লাগবে?
-এইতো স্যার, প্রায় চলে আসছি। সকাল বেলাতো, রাস্তা খালি। তাড়াতাড়িই পৌছে যাব।
রিমি হঠাৎ বলে উঠল,এই, তুমি এত টেনশান কর কেন? কিচ্ছু হবে না।
আমার হঠৎ ইচ্ছা করল মেয়েটাকে একটা চড় মারি। কিচ্ছু হবে না। বললেই হল?

এই সুযোগে আপনাদেরকে তাহলে গত ৪৫ মিনিটের গল্প বলে নেই। রিমির ফোন পেয়েই উঠে বসলাম।কোনরকমে লুঙ্গিটা বদলে একটা প্যান্ট পড়েই দৌড় দিলাম নিচে। সিএনজিওয়ালারা যতই 'সঙ'-বাদ সম্মেলন করুক, মানতেই হবে এই উবার জিনিসটা খুব কাজের।এই সাত সকালেও একটা ট্যাক্সি পেয়ে গেলাম।

রিমির বাসায় পৌছাতে সময় লাগল পনের মিনিট।

গলির মুখে গাড়ি দাড় করিয়েই যতটা নিঃশব্দে ঢুকে গেলাম গলিটার ভেতর।রিমি আগে থেকেই লাগেজ নিয়ে তৈরি ছিল।
খাইছে আমারে।
মেয়েটা কি আমার সাথে পালাবার প্ল্যান করেছে?
-যাক, আসছ তুমি। আমি ভেবেছিলাম ... রিমি ওর কথা শেষ করতে পারল না।আমাকে জড়িয়ে ধরে ফোঁপাতে লাগল।
-এসবের মানে কি? আমি জানতে চাইল।
রিমিকে বিরিক্ত মনে হল। এই সামান্য জিনিস বোঝার মতও বিবেক বুদ্ধি কি নাই তোমার?
ঘটনা কি? এই মেয়ে আজ এত 'বিবেক, বিবেক' করে কেন? যাত্রাপালা দেখে আসছে নাকি?
-কি হল? রিমি আবার বলল।
-সেটাতো তুমি বলবা।
-চল।
-কোথায়?
-আমরা পালাচ্ছি।
-অ্যাঁ।
-অ্যাঁ না, বল হ্যা।
-আর ইউ সিরিয়াস?
-ডু ইউ সি মি লাফিং?
আমি তাও ঠায় দাঁড়িয়ে রইলাম।
-কি সমস্যা?
-তোমার বাসার লোকজন কোথায়?
-ওদেরকে নিয়ে তোমার ভাবতে হবে না।আমি ব্যবস্থা করেই এসেছি।
-মানে কি? খুনখারাপি করছ নাকি আবার?
-উফ, উলটাপালটা সিনেমা দেখে তোমার মাথা গেছে।সবাই বেঁচে আছে। রাতের খাবারে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দিয়েছিলাম। সবাই ঘুমে। এত তাড়াতাড়ি উঠবে না।
-আর তোমাদের দারোয়ান?
-ঐ ব্যাটা আর জীবনেও ঘুম থেকে উঠবে না।
-মানে?
-এত মানে মানে কর কেন? ট্রলিটা ধর। তাড়াতাড়ি এখান থেকে সরে পড়তে হবে।
রিমি গলির মুখের দিকে এগুতে থাকে। রক্তমাখা রডটা তখনো হাতে শক্ত করে চেপে ধরে রেখেছে।


।।চার।।
-এই বাবু, এই। মুখ এমন ভোঁতা করে রাখছ কেন?
-আমি বাঙ্গালীর ছেলে, আমার নাক-মুখ সবই ভোঁতা। চোখা কাউকে চাইলে আরব পোলাপানের সাথ প্রেম করতা।
-ওরে আমার বাবুটা রাগ করছে। শো শুইইট।
রিমি আমার গাল টানাটানি করতে লাগল।
মেজাজটা ভয়ানক খারাপ হচ্ছে।ঘড়ির দিকে তাকালাম। সোয়া সাতটা।
-ভাই, আর কতক্ষণ লাগবে?
-এইতো স্যার, প্রায় চলে আসছি। সকাল বেলাতো, রাস্তা খালি। তাড়াতাড়িই পৌছে যাব।
রিমি হঠাৎ বলে উঠল,এই, তুমি এত টেনশান কর কেন? কিচ্ছু হবে না।
আমার হঠাৎ ইচ্ছা করল মেয়েটাকে একটা চড় মারি। কিচ্ছু হবে না। বললেই হল?
আমার চোখে এখনও ভাসছে রিমির হাতে একটা ছোট্ট রড ধরা। রডের এক কোণায় লাল রঙের তরল লেগে আছে। তরলটা যে রেড ওয়াইন নয়, সেটা বোঝার জন্য রকেট সায়েনটিস্ট হতে হয় না।
-আমরা কোথায় যাচ্ছি?
-শহরের বাইরে।
-শহরের বাইরে কোথায়? জায়গার নাম কি?
-উফফ, এভাবে জেরা করছ কেন? একটু ধৈর্য ধর।
-ধৈর্য ধরব মানে কি? সব মিলিয়ে আধঘন্টা ঠিকঠাক ঘুম হল না। এর মধ্যে তোমার এই নাটক।
-নাটক মানে? রিমি হঠাৎ চিৎকার করে উঠল।
আমি কোন জবাব দিলাম না। এমন না যে গত দু বছরে কখনো আমি রিমির সাথে রাগারাগি করিনি। করেছি, অনেক কঠিন কথা বলেছি, তবে সবই শান্ত কন্ঠে। কিন্তু আজ কোন ভাবেই নিজের কন্ঠটা নীচে নামাতে পারছিলাম না।
-কি হল? কথা বলছ না কেন? নাটক মানে কি?
-নাটক মানে তুমি ভাল করেই জান।আমরা যাচ্ছি কোথায়?
-শহরের বাইরে আমি একটা বাসা ভাড়া করেছি।
-বাসা ভাড়া!! কেন?
-তো আমরা থাকব কোথায়?
-আমার বাসায় সমস্যা কি?
-আব্বু, তোমার বাসার ঠিকানা জানে।
-তোমার আব্বু আমার বাসার ঠিকানা জানল কিভাবে? তুমি দিয়েছ?
-না। অপরাধী কন্ঠে জবাব দেয় রিমি।
-তাহলে?
-আসলে আব্বু বেশ কিছুদিন থেকেই আমার পেছনে লোক লাগিয়ে রেখেছিল।ঐ লোক আমাদেরকে একসাথে দেখেছে। তোমার ছবি আর ডিটেইলস ওই লোকটাই আব্বুকে দিয়েছে।
-বল কি? তুমি কিভাবে জানলে?
-গত পরশু রাতে আব্বু আমাকে এ নিয়ে অনেকক্ষণ জেরা করেছে।
-আর?
-তার ধারণা তুমি আমার যোগ্য না।আব্বু তোমাকে মেনে নেবে না।
-জীবনটা দেখি পুরাই বাংলা সিনেমা হয়ে গেল।
-সব কিছু ফান করবা না।
-আমি মোটেও ফান করছি না। এসব বাসা ভাড়াটাড়া বাদ দাও। চল আমরা গ্রামে যাই।
-লাভ নেই। আব্বু তোমার গ্রামের ঠিকানাও জানে। পালাতে পারবে, লুকিয়ে থাকতে পারবে না।আব্বু রিটায়ার্ড পুলিশ অফিসার।তোমাকে ঠিক খুঁজে বের করবে।
ইচ্ছা করছিল নিজেকে জুতাপেটা করি। এই ভোরবেলা মেয়েটার কথা শুনে বের হওয়াটা মোটেও ঠিক হয়নি। আল্লাহ জানে কোন বিপদে পড়তে চলেছি।


।।পাঁচ।।
-স্যার, এসে পড়েছি।
বাইরে দেখলাম।বাংলো টাইপের এক তলা একটা বাড়ি। বাড়ির সামনে কিছুটা খালি জায়গা আছে। বাড়ির চারপাশে ঘিরে রেখেছে বেশকিছু ফল গাছ।
-এক্সকিউজ মি স্যার, ভাড়াটা।
-কত আসল?
-আটশ।
শালা, সকাল সকাল আটশ টাকার বাঁশ খেয়ে গেলাম।
পকেটে হাত দেয়ার পর বুঝলাম আসল কাহিনী। সবমিলিয়ে পাঁচশ টাকা খুঁজে পাওয়া গেল।
আশেপাশে তাকালাম। রিমি কোথায়?
-কোন সমস্যা স্যার?
-রিমিকে দেখেছেন?
-ম্যাডামকেতো ভেতরে যেতে দেখলাম।
দেখ নবাবজাদীর কান্ড। আমাকে এখানে রেখেই উনি ভেতরে চলে গেছেন। উনার লাগেজ টানাটানি করবে কে?
-একটু অপেক্ষা করুন। আসছি।
-স্যার, একটু তাড়াটাড়ি। আমার আবার শহরে ফিরতে হবে।
-আচ্ছা।
আমি দরজার দিকে এগোলাম।
নব ঘুরিয়েই মেজাজ আকাশে উঠে গেল। ভেতরে ঢুকেই রিমি দরজা লক করে দিয়েছে।
-রিমি, এই রিমি। আমি দরজায় দাঁড়িয়েই চিৎকার করলাম।
দরজা খুলল প্রায় পাঁচ মিনিট পর।
-কি হল? এভাবে চেঁচাচ্ছ কেন? লোক জড়ো করবা?
-কোথায় ছিলা এতক্ষণ? দরজা লক করে রেখেছিলে কেন?
-আশ্চর্য, সেই ভোর থেকে দৌড়াচ্ছি। ফ্রেশ হওয়ার সুযোগ পেয়েছি নাকি? তাই একটু বাথরুমে গিয়েছিলাম।
এই প্রথম রিমির চেহারা দিকে তাকালাম। মেয়েটা সত্যিই হাতমুখ ধুয়ে এসেছে।
-এভাবে চেচাচ্ছিলে কেন?
-এই ব্যাটার ভাড়া দিতে হবে না?
-তো দিয়ে দাও।
-আটশ টাকা ভাড়া আসছে। আমার কাছে এই পাঁচশ টাকার নোটটা ছাড়া আর কিছু নাই।
-অ্যাঁ। বল কি?
-কেন? তুমি টাকা আননি?
-অল্প কিছু আছে।
-কত?
রিমি কোন জবাব দিল না। চিন্তিত মুখে ব্যাগ থেকে তিনশ টাকা বের করে দিল।
দেরী না করে গাড়ি বিদায় করে দিলাম।

-এই ড্রাইভারটাকে বিদায় করতে তোমার পনের মিনিট লাগল?
-ড্রাইভারকে বিদায় করতে লাগছে এক মিনিট। বাকি চৌদ্দ মিনিট তোমার এই ট্রলি নিয়ে টানাটানি করছি। বাপরে বাপ, কি ভারী। লাগেজে কাপড় রাখছ না পাথর রাখছ?
-মেয়েদের অনেক কিছু লাগে। তুমি বুঝবা না।
-সে নাহয় না বুঝলাম। কিন্তু একটা জিনিস বুঝিয়ে বল।
-কি?
-হঠাৎ বাসা থেকে পালানোর মানে কি?
-তখন না বললাম। আব্বু তোমাকে মেনে নেবে না।
-মানানোর চেষ্টা করছ?
-মানে?
-মানে আমাকে নিয়ে যাইতা তোমার বাপের সামনে। আমরা কথাবার্তা বলতাম। তারপর না মানলে পালানোর ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করা যেত।
-আমার আব্বুকে তুমি চিন না। হি ইজ আ রিটায়ার্ড পুলিশ অফিসার। তার একবার না মানেই আজীবনের না।
-বুঝলাম।আমাকে আগে থেকে জানাও নাই কেন?
-জানলে তুমি পালাইতা?
-কেন? কোন সন্দেহ আছে?
রিমি জবাব দিল না। এক দৃষ্টিতে চেয়ে রইল আমার দিকে।
-আচ্ছা, বাদ দাও।এবার টাকা পয়সার ব্যাপারটা ক্লিয়ার কর।
-মানে?
-মানে ভাড়া দিতে গিয়েই বুঝছি তুমি তেমন টাকা পয়সা আন নাই। কত আছে তোমার সাথে?
-হাজার দুয়েকের মত। কেন? তোমার কাছে নাই?
-তুমি আমাকে কি ভাব? সৌদি যুবরাজ? টাকার উপর ভাসতেছি? তাও যদি আগে থেকে বলতা। এটিএম থেকে কিছু তুলে রাখলাম। এই গাও গেরামে সেই সুযোগতো নাই।
-তোমার কাছে কিছুই নাই?
-ক্যামনে থাকবে? যে পাঁচশ টাকা ছিল, সেটাতো দিয়ে দিছি ঐ ড্রাইভার ব্যাটাকে।
আমার ধমক খেয়ে একেবারে চুপ হয়ে গেল রিমি।
-গয়না আনছ?
-হোয়াট?
-আরে, গয়না। গায়ে পড়ার গয়না। সোনা আর হীরা দিয়ে যে বানায়।
-গয়না আনব কেন? রিমি অবাক।
-গয়না আনবা কেন? ব্যাংক থেকে কি আমি টাকা তুলতে পারব? না আছে কার্ড, না আছে চেক বই। তোমার ঐ দুই হাজার টাকা দিয়েতো জীবন কাটানো যাবে না। শায়েস্তা খাঁ'র আমল ভেবে বসে আছ নাকি?
-দেখ, একদম বাজে কথা বলবা না।
-বাজে কথার দেখছিস কি হারামজাদী।মারব একটা থাপ্পড়।
রিমির গায়ে হাত তুলতে গিয়েও আমি থেমে গেলাম।এর সাথে মারামারি করে লাভ নেই। তারচেয়ে শুভ্র আর আবীরকে ফোন দেই। ওদেরকে বললেই আমার কিছু কাপড় আর টাকা নিয়ে এখানে চলে আসবে।
-কি হল? কাকে ফোন কর?
-আবীর আর শুভ্রকে।
-কেন?
-কেন আবার? যাতে কিছু টাকা কাপড় চোপড় নিয়ে আসে। এই বাড়িতে যদি কিছুদিন লুকিয়ে থাকতে হয় তাহলে আরো টাকা লাগবে। আর আমারও আরো কাপড় লাগবে।
-কাউকে ফোন কর না প্লিজ।
-কেন?
-যদি পুলিশ ফোন ট্র্যাক করে?
-সারাদিন ক্রাইম পেট্রোল দেখে দেখে মাথার স্ক্র সব ঢিল হয়ে গেছে তোমার। কিছু টাকা দাও। বাজার করতে হবে।
-না।
-না মানে? দাও বলছি।
রিমি ওর পার্সটা বুকের সাথে চেপে ধরল।না।
হঠাতই মেজাজটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেল। একটা ধাক্কা দিতেই রিমি এক কোণায় ছিটকে গেল। টেবিলের সাথে বাড়ি কপাল কেটে রক্ত বের হতে দেখলাম।
পার্সটা ছিনিয়ে নিতে কোন কষ্ট হল না।
মাগী সত্যিই বলেছে। মাত্র তিনটা পাঁচশ টাকার নোট আছে। হারামজাদী পালাবিই যখন,একটু প্ল্যান করে পালাবি না।
রিমি কপাল চেপে ধরে বসে আছে। অবাক চোখে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।
-তুমি আমার গায়ে হাত তুললা?
-আর নাটক করলে পিছনের পুকুরে নিয়ে চুবায় মারব।
আমি বাড়ি থেকে বের হয়ে গেলাম।



।।ছয়।।
-হ্যালো, আবীর।
-কিরে ব্যাটা, তুই কই? তোর রুমের দরজা দেখলাম খোলা, তুই নাই। ফোন করেও পেলাম না।
-বাইরে আছি দোস্ত। এখানে নেটওয়ার্ক নাই।
-এটা কার নম্বর থেকে ফোন করেছিস?
-নতুন সিম নিয়েছি। আপাতত কয়েকটা দিন এটাই ব্যবহার করব।
-আর আগেরটা?
-ওটা এখন বন্ধ। সিমটা ফেলেও দিতে পারি।
-কেন?
পুরো সকালের ঘটনা ওকে খুলে বললাম।
-মেয়েটা পাগল নাকি?
-এতদিনতো সুস্থ স্বাভাবিক ভেবেছিলাম। সকালের কান্ড কারখানা দেখার পর থেকে তারছিড়া মনে হচ্ছে।
-এখন কি করতে চাস?
-তোকে একটা নম্বর দিচ্ছি। আপাতত এই নম্বরে কিছু টাকা বিকাশ কর।
-কার নম্বর?
-এখানকার বাজারের একটা দোকানদারের।
-আর কিছু?
-আমার অফিসে গিয়ে বলে আসতে পারবি আমি অসুস্থ, কিছুদিন ছুটি দরকার?
-ওখানে যদি রিমির বাবা আসে?
-তাও ঠিক। আচ্ছা, বাদ দে।
-আর কিছু লাগবে?
-পারলে তুই আর শুভ্র তাড়াতাড়ি গা ঢাকা দে। ওরা যেকোন মুহূর্তে মেসে চলে আসতে পারে।
-দোস্ত।
-বল।
-তোর প্ল্যান তাহলে এবার কাজ করল না?
-কাজ করেনি বললে ভুল হবে। ওকে নিয়ে পালানোর প্ল্যানতো আমার ছিলই। ওর বাবা আমাকে মেনে নেবে না-সেটা আমি আগে থেকেই জানতাম। শুধু একটু প্ল্যান করে পালাতে পারলে ব্যাংক থেকে টাকাগুলো আগেই উঠিয়ে রাখতাম। আর এই হারামজাদীটাকেও বলতাম গয়না আর টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে পালাতে। তাহলে একটা দাও মারতে পারতাম। এখনতো খালি হাতে চলে আসছে।
-দোস্ত।
-বল।
-মেয়েটা তার বাসার লোকজনকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে তোকে নিয়ে ঘর ছেড়েছে, আগে থেকে বাসা ভাড়া করে রেখেছে, তোকে আগে থেকে কিছু বলেনি যাতে ওর পালানোর প্ল্যানে "না" বলতে না পারিস।
-তো?
-মেয়েটা যথেষ্ট ব্রিলিয়ান্টলি তার প্ল্যান এক্সেকিউট করেছে। তুই ওর লাগেজ চেক কর। আমি শিওর, তুই হয় টাকা নাহয় গয়না পাবিই পাবি। দুটোও পেতে পারিস। মেয়েটা ভান করতে পারে, তবে সে বোকা নয়।


।।সাত।।
দরজা খোলাই ছিল। ভেতরে ঢুকে রিমিকে কোথাও দেখলাম না।
-রিমি। আমি চিৎকার করলাম।
কোন উত্তর এল না।
-রিমি।আবার ডাকলাম।
এবারও কোন জবাব নেই।
হারামজাদী গেল কোথায়?
রান্নাঘর আর বাথরুম দেখলাম। কেউ নেই।
শোবার ঘরও খালি।
মরে গেল নাকি?
মরে গেলেতো লাশ থাকার কথা। লাশটা কোথায় গেল?
নাহ, মরবে কেন? খালি কপালে একটু কেটে গিয়েছিল। এই আঘাতে কেউ মরে না।
আচ্ছা, ওকে পরে খোঁজা যাবে। আপাতত লাগেজে কি কি আছে দেখে নেই।
লক কম্বিনেশন আমার জানা নেই। আন্দাজে কয়েকটা ট্রাই করলাম। লাভ হল না।
কি করা যায়?
রান্নাঘরে দা আর বটি দেখেছি। ওখান থেকে দা নিয়ে এলাম।
দা'র মাথা দিয়ে লকে দুটো বাড়ি দিতেই খুলে গেল।
আমি জানি আবীর ঠিক বলেছে। আমার দুই বছরের ইনভেস্টম্যান্ট কিছুতেই বৃথা যেতে পারে না।নিশ্চয়ই দামী কিছুই আছে এই লাগেজে। গাড়িতে ওঠানামা করানোর সময় বুঝেছি এটার ওজন কত। শুধু কাপড়ের এত ওজন হতে পারে না।
কিন্তু লাগেজ খোলার পর যা দেখলাম তার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। কিসের সোনা, কিসের টাকা। কিছুই নেই। এমনকি কোন কাপড়ও নেই। ট্রলিটার মধ্যে আছে কুন্ডলী পাকানো লাশ। ইয়াসমিনের লাশ!!!
-সারপ্রাইজ।রিমির কন্ঠ।
পেছনে ফিরতেই শক্ত কিছু একটা দিয়ে মাথায় বাড়ি দিল রিমি।জ্ঞান হারানোর আগে দেখতে পেলাম সেই রক্তমাখা রডটা রিমির হাতে।


।।আট।।
-যাক বাবা, জ্ঞান ফিরল তাহলে তোমার। আমিতো আবার ভাবলাম যদি মরে টরে যাও।
মাথায় প্রচন্ড যন্ত্রণা হচ্ছে। কোনমতে চোখ খুলে দেখলাম রিমি আমার সামনে বসে আছে।
-গুডমর্নিং সানশাইন। রিমি আমার গাল টেনে দিল।
সরে যাওয়ার চেষ্টা করতেই বুঝলাম আমাকে দড়ি দিয়ে চেয়ারের সাথে বেধে ফেলেছে ও।
-এসব কি? আমি গলাটা যথাসম্ভব শান্ত রাখার চেষ্টা করলাম। কিছুতেই ওকে আমার ভয় বুঝতে দেয়া যাবে না।
-কোনসব কি? এটা? হাতে ধরা রডটা দিয়ে রিমি আমার দিকে ইঙ্গিত করল। নাকি ওটা? এবারের ইঙ্গিতটা ট্রলিতে থাকা লাশটার দিকে।
-পুরোটাই।আমার গলাটা এখনো শান্ত, নিস্তরঙ্গ।
-ওয়াও।
-কি হল?
-আমি ভেবেছিলাম সব দেখে তুমি ভয়ে পাগল হয়ে যাবে। কিন্তু তুমিতো এখনো শান্তকন্ঠে কথা বলে যাচ্ছ। ইউ রিয়েলি গট সাম নার্ভ ম্যান।
-রিমি, এটা যদি কোন প্র্যাংক বা প্র্যাক্টিকাল জোক হয়ে থাকে তাহলে বলে দিচ্ছি আমার এসব একদম পছন্দ না।
-ইউ স্টিল থিংক দিস ইজ আ জোক? কাম অন বেবি, তুমি খুব ভাল করেই বুঝতে পারছ ইউ আর ফিনিশড।
-মানে?
-বাহ, ইয়াসমিনকে খুন করলা। তার শাস্তি পাবা না?
-ই... ই... ইয়াসমিন কে? আমি কেন তাকে খুন করব?
-আহহা, অভিনয়টা ভাল হচ্ছে নাতো। কেন অযথা চেষ্টা করছ।লাভতো নেই।
-দেখ রিমি...
-আমি অনেক দেখেছি, এবার তুমি দেখ।রিমি আমার মুখ চেপে ধরে। ঐ যে লাশটা দেখছ, একটা মেয়ের লাশ। মেয়েটার নাম ইয়াসমিন।আমাদের বাসায় কাজ করত। গত পরশু রাতে, আব্বু আমাকে জেরা করছিল তোমার ব্যাপারে।আব্বু বলছিল তোমার মেয়েঘটিত রেকর্ড।আব্বুর কাছে তোমার একটা ছবি ছিল। ওটা দেখেই ইয়াসমিন তোমাকে চিনতে পারে।
আমি চুপ করে থাকি। ইয়াসমিন তাহলে ওদের বাসায় কাজ করত? কিন্তু তা কি করে সম্ভব?
-কি হল? কিছু বলবে না? আচ্ছা, আমিই বলি তাহলে। ইয়াসমিনের কাছেই জেনেছি ও তোমাদের বাসায় কাজ করত। একদিন তোমার বাবা-মা বাসায় ছিল না, তুমি আর তোমার বন্ধু মিলে মেয়েটাকে রেপ কর।ভিডিও করে হুমকি দিয়েছিলে কাউকে না বলার জন্য।এরপর তোমার বন্ধু মেয়েটাকে নিয়ে বিক্রি করে দেয় একটা ব্রোথেলে।
-হোয়াট? কখনোই না। সাদেক বলেছিল ও মেয়েটাকে গ্রামে পৌছে দেবে।
-আচ্ছা? তারমানে এতক্ষণ যা বললাম তা ঠিক।
-রিমি শোন ...
-একদম চুপ। কোন কথা বলবা না।তোমার যোগসাজশ থাক আর না-ই থাক, মেয়েটা ব্রোথেলে বিক্রি হয়ে যায়। আব্বুই ওকে উদ্ধার করে। মেয়েটার যাওয়ার জায়গা ছিল না, তাই আব্বু ওকে আমাদের বাসায় এনে রাখে।
-রিমি, আমি আসলে জানতাম না সাদেক এমন করবে।
-জানার দরকার নেইতো। শুধু জেনে রাখ তুমি ওকে ধর্ষণ করেছিল। নাকি এটাও জান না?
আমি চুপ করে থাকি।
-সেদিন রাতে তোমার ছবি দেখার পর মেয়েটা হিস্টিরিয়াগ্রস্থের মত হয়ে পড়ে। কোনরকমে কথা বলতে পারছিল না, শুধু কাঁদছিল। হয়ত জীবনের দুঃস্বপ্নময় দিনগুলোর কথা মনে পরছিল।কাল সারাদিন মেয়েটা কিছু খায়নি। শুধু কেঁদেছে।
রিমি হঠাৎ চোখ মুছল।
-আজ ভোরবেলা কিসের যেন শব্দ শুনে ঘুম ভেঙ্গে গেল। ভাবলাম পানি খেয়ে আবার শুয়ে পড়ব। কিন্তু ডাইনিং-এ এসে দেখি সিলিং এর ইয়াসমিন ঝুলে পড়েছে। মেয়েটা তার জীবনের দুঃস্বপ্ন থেকে বেরিয়ে অনেকটা সুস্থ স্বাভাবিক হয়ে এসেছিল, তোমার একটা ছবিই সব শেষ করে দিল।বিশ্বাস কর, এই তোমার সাথে দুবছর প্রেম করেছি, ভাবতেও নিজের প্রতি ঘৃণা হচ্ছিল।তখনই সিদ্ধান্ত নিলাম তোমার বিচার হবে।একটা লাগেজে ইয়াসমিনের লাশটা ভরেই বাসা থেকে বের হয়ে এলাম।বাসার সবাই ঘুমিয়ে ছিল, কেউ কিচ্ছু জানে না।
-আর তোমাদের দারোয়ান?
-ওই ব্যাটা কিছু সন্দেহ করেছিল। এটা দিয়ে ঠান্ডা করে দিয়েছি।হাতের রডটা দেখায় রিমি।
-তো এখন কি চাও?
-আমি কিছু চাই না। ইয়াসমিন ন্যায়বিচার চায়।
-দেখ রিমি, মাথা ঠান্ডা কর। আমি জানিনা ইয়াসমিনের সাথে তোমার সম্পর্ক কেমন ছিল, তুমি এখনও শকের মধ্যে আছ।দড়িটা খুলে দাও, আমি তোমাকে বাসায় পৌছে দেই।
-আশ্চর্য নির্লজ্জতো তুমি। এরপরও আশা করছ তোমার বাধন খুলে দেব। আমি অত বোকা না। শাস্তি তোমার হবেই। তবে একটা কাজ করলে প্রাণে বেঁচে যেতে পার।
-কি কাজ?
-সাদেকের ঠিকানা আর ফোন নম্বর দাও আমাকে। সাথে একটা ছবি।
আমি সাদেকের বাসার ঠিকানা আর ফোন নম্বর দিলাম। ফোনে সাদেকের সাথে আমার বেশ কিছু ছবি আছে, সেগুলোও দেখালাম।
-এবারতো খুলে দাও।
-আশ্চর্য, একবারও বলেছি নাকি বাধন খুলে দেব? শুধু বলেছি শাস্তি কমবে।
-মানে?
-মানে সিম্পল। তোমাকে ইয়াসমিনের কাছ থেকে মাফ চাওয়ার একটা সুযোগ দিচ্ছি। দেখা হলে ওকে বল, আই রিয়েলি লাইকড হার।
-দেখ ...
রিমি কোন জবাব দেয় না। রক্তমাখা রডটা উচিয়ে ধরে ... ।


===============================================================
১৯ তারিখে গল্পের প্রথম পর্ব প্রকাশ করেছিলাম। তখনই বলেছিলাম যত দ্রুত সম্ভব গল্পটা শেষ করে ব্লগে প্রকাশ করব। আজ পুরো গল্পটাই{প্রথম পর্ব সহ} একসাথে প্রকাশ করলাম। যারা ব্লগে আর ফেসবুকে গল্পটা শেষ করার জন্য উৎসাহ যুগিয়েছেন তাদের সকলকে ধন্যবাদ।

সাইকোথ্রিলারঃ আমি অথবা সে কিংবা অন্যকেউ {প্রথম পর্ব}

===============================================================
আমার লেখা আরও সাইকোথ্রিলারঃ
আমাদের নতুন পুরানো ঘর
রাতের আঁধারে
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:০৯
৩১টি মন্তব্য ৩২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×