
ভুলে ফেলে রেখে যাওয়া মূল্যবান জিনিসপত্র মালিকের কাছে ফেরত দিয়ে শেরপুরে বাহাদুর বনে গেছেন বাহাদুর (১৯) নামের অটোরিক্সা চালক।
ওই সৎ অটোরিক্সা চালক বাহাদুরের বাড়ি শেরপুর জেলা শহরের দুর্গা নারায়ণপুর নাকপাড়া মহল্লায়। তার বাবার নাম মজনু মিয়া। ৬ ভাই-বোনের অভাবী সংসার হলেও সে অভাব তাকে গিলতে পারেনি।
বাহাদুরের ৪ ভাইয়ের মধ্যে সবাই দিন মজুর এবং ট্রলি চালক। তার বাবা গ্রামের জমিজমা দেখাশোনা করেন। ৯ মাস আগে বিয়েও করেছেন বাহাদুর। বিয়ের আগে ট্রলি চালালেও তার বাবা বিভিন্নজনের কাছ থেকে ধারদেনা করে একটি ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা কিনে দেয়।
সেই অটোরিক্সার আয় দিয়ে চলতো তার নতুন জীবন। নতুন সংসার এবং বাহাদুরের স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় তাদের সংসারে টাকার চাহিদা স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে যায়। কিন্তু চাহিদা লোভকে সামাল দিয়েছে ঠিকই।
বাহাদুরের অটোরিক্সায় শহরের খরমপুর মহল্লার মুঞ্জিল মিয়ার কন্যা পিংকির ভুলক্রমে ফেলে রেখে যাওয়া ভ্যানিটি ব্যাগের ভিতর প্রায় ৪০ হাজার টাকা মূল্যের ডিজিটাল ক্যামেরা ও নগদ ৪ হাজার টাকাসহ বিভিন্ন মূল্যবান গহনা ও কসমেটিক সামগ্রী হাতের নাগালে পেয়েও ওইসব মূল্যবান জিনিসপত্র শহরে মাইকং করে ফেরত দিয়েছে সে।
জানা গেছে, গত বুধবার বেলা ২টার দিকে শহরের নিউমার্কেট বেবি বিউটি পার্লার থেকে খরমপুর মহল্লার মুঞ্জিল মিয়ার মেয়ে পিংকি ওই অটোরিক্সা চালক বাহাদুরের অটোরিক্সা করে খরমপুরস্থ তাদের বাসার কাছে একটি মোটর সাইকেলের দোকানের সামনে নেমে যায়।
এ সময় পিংকি ভুলক্রমে তার ভ্যানিটি ব্যাগটি ফেলে রেখে যায়। বাহাদুর সেখান থেকে তার অটোরিক্সা নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে ওই ব্যাগটি দেখতে পেয়ে সাথে সাথেই খরমপুর মহল্লার ওই মোটর সাইকেলের দোকানের আশপাশে অনেক খোঁজাখুঁজি করে সেদিন বাড়ি ফিরে যায়।
পরে ব্যাগটি খুলে টাকা-পয়সাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র দেখে পরের দিন বৃহস্পতিবার আবারো সে সারা দিন ওই যাত্রীকে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে অবশেষে রাত ৮টার দিকে শহরে মাইকিং করে প্রচার করতে থাকে।
এ সময় তার মাইকিং শুনে পিংকি বাহাদুরের দেয়া ঠিকানায় গিয়ে তার মালামালগুলো যথাযথভাবে ফেরত পায়।
পিংকি খুশি হয়ে বাহাদুরকে পুরস্কৃত করতে চাইলে সে কোন কিছু না নিয়ে শুধু মাত্র দোয়া চায়।
এদিকে, শহরের খরমপুর মহল্লায় বিষয়টি জানাজানি হলে শ’ শ’ লোক এসে বাহাদুরকে দেখতে ভিড় করে। Link:

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



