somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কম্বল নিয়া ভোম্বল হবার কাহিনী

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ রাত ১২:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ব্যক্তিগতভাবে অতটা শুচিবায়ু না কিন্তু কম্বল নিয়া কেমন জানি অদ্ভূতরকমের কাজ কারবার করি। আমার মা-য়ের ধারণা মাথার স্ক্রু ঢিলা হলে আর পাগলা ছ্যান্দানি উঠলে (এটার মানে কেউ জিগাইয়েন না ,আমার মায়ের নিজের বানানো শব্দ মনে হয়) এসব হাবিজাবি কাজ করি।মাঝে মনে হয় এই কম্বলের চিন্তায় অবস্হা প্রায় ভোম্বল হবার দশা।

কাহিনী১:
গতবছরে ডিসেম্বরে আমার এক আত্মীয়ার বেবি হবার সময়ে আমি তার সাথে হলি ফ্যামিলি হসপিটালে ছিলাম। সেখানে রোগীদের যে কম্বল দেওয়া হয় সেটা মাঝারি টাইপের পাতলা,উপরে অনেক পশম আছে যার জন্য শীত কম লাগে। আমার কেন জানি এই কম্বলরে দেখে ভাল্লুকের কথা মনে পড়ত। হসপিটালে ৪-৫দিন থাকার সময় আমি ভুলে ও এটা গায়ে দিতাম না বাসা থেকে একটা পাতলা কম্বল নিয়ে গেছিলাম। ভয় লাগতো গায়ে দিলে মনে হবে ভাল্লুক আমারে বুঝি কড়া ঝাপ্পি দিয়া বসে আছে। বাসায় আসার পরে একদিন রাতে ঘুমানোর সময়ে শীতে শেষ ... কিন্তু লাথাইয়া কম্বল ফেলে দিচ্ছি..শীত লাগলে আবার গায়ে টেনে নেই ...আবার ফেলে দেই । আসলে স্বপ্নে দেখলাম হসপিটালে ভাল্লুকওয়ালা কম্বল কয়েকটা দিয়া কে জানি আমার গায়ে দেয় আমি সেই ভয়ে বাসার কম্বলই গায়েই রাখছি না (ভয়ে ক্যান্দনের ইমো হবে)

কাহিনী:২
জানুয়ারীতে মামারবাড়ীতে গেলাম। রাতে ঘুমাতে গিয়া লেপ বাদ দিয়া কম্বল নিলাম। আবারো সেই আজব ফিলিংস। সেই কম্বল গায়ে দিয়া মনে হলো আমাদের মুখে হঠাৎ হঠাৎ অতিথি পাখির মতন ব্রণ উঠলে একটু পর পর গালে হাত দিয়া যেভাবে আৎকে উঠি...অনেকটা তেমন ফিলিংস।মনে হলো কম্বলের সারা শরীরে ব্রণ হয়েছে। লাইট অন করে কম্বলের অবজার্ভ করে দেখলাম ভালইতো....তাহলে প্রবলেমটা কোথায়? মা-কে বললাম ....উনি যথারীতি আমার কথা পাত্তা না দিয়া ঝাড়ি দিয়া বললো ":পাগলামী কম"। মনের দু:খে তুলির ডায়লগ মনে পড়লো....ওর মা-কে ওরে বকা দিলে ও বলে "আমার মা আর আমার নাই,মনে হয় মা কম শ্বাশুড়ীর লক্ষ্মণ বেশী"। সেদিন সারারাতে মোজা,সোয়েটার আর শাল গায়ে দিয়া ঘুম দিলাম। মোজা পায়ে দিলে ও মনে হয় মোজার ভিতরে লাল-পিঁপড়া ঢুকে বসে আছে আর আমারে থেরাপীর নামে কামড় দিতাছে (কেউ বুঝে না আমারে টাইপের ইমো হবে)

কাহিনী:৩
বিগত ৪-৫ বছর ধরে শীতের শেষে আমি কম্বল নিজের বাসায় ওয়াশ করি,লন্ড্রীর উপরে ভরসা পাইনা।প্রথমবার তো ৩টা বিশাল সাইজের বালতিতে ইচ্ছামতন গুঁড়াসাবান দিয়ে ভিজানোর পর যখন পানি দিয়া পরিস্কার করতে গেলাম কম্বল থেকে তো আর সাবানফেনাভাব যায় না। পরিস্কার করতে করতে কাহিল প্রায়। এরপরের বার পরিস্কার করার পর কোথায় কম্বল থেকে পানি ঝরার জন্য রাখবো বুঝতেছি না.....যেখানেই রাখি ধপাস করে পরে যায় নীচে। পরে বাধ্য হয় ২ হাত উপরে তুলে কম্বল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলাম। নিজেরে অসহায়ত্ব আর জোকারিতে চোখের পানি আর কম্বলের পানি এক হয়ে গেল। মা অনেকক্ষণ ডাকাডাকি করে সাড়া না পেয়ে স্নানঘরে গিয়া দেখে আমি কম্বলওয়ালা স্ট্যাচু হয়ে দাঁড়িয়ে আছি। মা এই গল্প অনেকরে বলে আমারে জাতীয় ভোম্বল বানিয়ে ফেলেছে । গতবছর ভাড়াটিয়ারা কাইজ্জ্বা ফ্যাসাদ করে বলে ছাদে যেতে দেয় না বাড়ীওয়ালা। এদিকে আমি তো ভেজা কম্বল নিয়া বিপাকে পড়লাম। ফ্যানের বাতাসে শুকানোর পরে ও কম্বলের গায়ে থেকে কেমন জানি স্যাঁতস্যাঁতে গন্ধ পাই..এরপর হাফ প্যাকেট ন্যাপথোলিন গুঁড়া করে পুরা কম্বলের গায়ে পাউডারের মতন লাগানো পরেই শান্তি পাইলাম।এইবার ও বাড়ীওয়ালা মনে হয় ছাদের চাবি দিবে না.... ঠিক করেছি আমি আর ছোটো ছাদের ডুপ্লিকেট চাবি বানাবো। কম্বল শুকানোর পরে যা বলে বলুক....গন্ডার মানুষ আমি কে পাত্তা দেয় এইসব কচকচানি ( এত কষ্ট জীবন নষ্ট হবার ইমো হবে)

:(( ম্যালা সাধের কম্বল আমারে ভোম্বল বানাইলো রে :((
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ রাত ১০:১৯
৬১টি মন্তব্য ৬০টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬





মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×