somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিছক শব্দহীন ভাবনা কিংবা কল্পনার মত বাস্তব (যখন পিছু ফিরে তাকান তখন আপনাদেরও কি এমন মনে হয়েছে কখনোও?)

২৬ শে আগস্ট, ২০১২ দুপুর ১:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তখন ছোট ছিলাম অনেক। বড়জোর ক্লাস ফোর কিংবা ফাইভে পড়তাম। আমাদের একজন অংক টিচার ছিলেন। তিনি ক্লাসে এসেই আমাদের মারধোর করতেন কোন কারণ ছাড়াই, পড়া পারলেও, না পারলেও। আর বলতেন, "অংক সাবজেক্টটা কোন অবহেলার জিনিস নয়, সমগ্র জগতটাই চলে অংকের নিয়ম মেনে, এজন্যই প্রকৃ্তির কোথাও কোন বিশৃংখলা নেই। আর অংক বোঝার সাথে অংকের উত্তর মেলানোর কোন সম্পর্কও নেই। তোরা কি বুঝতে পারছিস? তোদের বোঝার কথাও না। সারাদিন শয়তানি নিয়ে থাকলে অংকের কি বুঝবি?"। বলার সময় তিনি কপালটা কুচকে রাখতেন। আমরা তার কথা কিছুই বুঝতাম না।



আমার কাছে কেন যেন বার বার মনে হত, এই লোকটা বোধহয় কোনদিন দুটাকা দিয়ে গ্যাস ভর্তি বেলুন কিনে মুক্ত আকাশে ওড়ায় নি। তাই সে জানেও না আনন্দ জিনিসটা কি। এক টাকা দিয়ে যে লাল-সবুজ রং মিশ্রিত বিষাক্ত আইসক্রিম পাওয়া যায় সেটাও বোধহয় সে খায় নি কোনদিন। তাই তার জানাও হয়নি তুচ্ছ জিনিসের মধ্যেও কতটা অনুভুতি লুকিয়ে থাকে।



স্কুল,কলেজ শেষ করে এখন আমি ভার্সিটি লাইফেরও প্রায় শেষপ্রান্তে দাড়িয়ে। ঠিক এখানে দাড়িয়ে স্যারের কিছু যান্ত্রিকতা আজ আমার মধ্যেও উপলব্দি করছি। অথচ, আমি ছোটবেলায় গ্যাস ভর্তি বেলুন অনেক উড়িয়েছি। ওড়াতে ওড়াতে স্কুলে যাবার কথা ভুলে গেছি প্রায়ই। বেলুনটা যখন ফুটে যেত তখন মন খারাপ করে বসে বসে ভাবতাম, যদি কেউ আমাকে আরো দুটো টাকা দিত তাহলে আমি আরেকটা বেলুন কিনে ওড়াতাম। কিন্তু সেই টাকাটা যখন কেউ দিত না তখন প্রচন্ড অভিমান হত। মনে মনে ভাবতাম, বড় হয়ে আমি অনেকগুলো বেলুন কিনব একসাথে,সারাদিন ওড়াব, কেউ আমাকে তখন বাধা দিতে পারবেনা। শহীদ মিনার আর দোয়েলের ছবি দেয়া দুটাকার নোট হাতে পেলে প্রায়ই রুদ্ধশ্বাসে ছুটে যেতাম সেই রং মিশ্রিত বিষাক্ত আইসক্রিম কিনতে। কেনার পর মনে হত পৃথিবীর সবচেয়ে মজার খাবার এখন আমার হাতে। খাওয়ার পর মনে হত, এমন আরেকটা আইসক্রিম কিনতে পারলে সত্যিই দারুন হত।

এখন আমি বড় হয়েছি, আজ বেলুন ওড়ানোর ইচ্ছেটা আর নেই। রং মিশ্রিত সেই আইসক্রিমগুলো হয়তো এখনো পাওয়া যায় তবে খাওয়ার ইচ্ছেটা শেষ।

এখন মনে হচ্ছে, এই আনন্দগুলো স্যারের জীবনেও ছিল একদিন। সময় তার সব কেড়ে নিয়ে তাকে একটা জলজ্যান্ত অংকে পরিণত করেছিল। এই জীবন্ত অংকগুলোর কোন সমাধান নেই, জীবন যতদিন চলে অংকগুলোও ততদিন চলে। হঠাৎ জীবনটা থেমে যায়, অসম্ভব কঠিন সেই অংকটা সেদিন আপনা আপনি মিলে যায়।

সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে আগস্ট, ২০১২ দুপুর ১:১৯
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×