সোনায় মোড়ানো শড্যাগন স্তুপা
শড্যাগন স্তুপা যাকে বলা হয়ে থাকে মিয়ানমারর গর্ব, এক সময়ের ইতিহাস বিখ্যাত রাজধানী শহর ইয়াঙ্গনের সিঙ্গুত্তারা পাহাড় চুড়ায় সোনায় মোড়ানো শড্যাগন ২৬০০ বছর ধরে দাঁড়িয়ে আছে এক গর্বিত ভংগিমায়, যার স্বর্নালী সুচালো অগ্রভাগ যেন হাত বাড়িয়ে ছুতে চাইছে নীল আকাশকে। বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন আর সেই সাথে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে পবিত্রতম এই মঠটিতে রাজসিক আভিজাত্য আর সৌন্দর্য্য মিলেমিশে যেন একাকার হয়ে আছে। যাকে এক নজর দেখার জন্য এবং যেখানে প্রার্থনার জন্য সারা বিশ্ব থেকে বছর জুড়ে প্রচুর ট্যুরিষ্ট আর তীর্থ যাত্রীদের ভীড় লেগেই থাকে।
মিয়ানমারে একটি কথা প্রচলিত আছে যে ইয়াঙ্গুন শহরের যেখানেই আপনি দাড়ান না কেন শড্যাগন প্যাগোডার চোখ ঝলসানো রূপ, তার স্বর্নালী আলোর বিচ্ছুরন আপনার চোখে পরবেই পরবে। কথাটি আসলেও সত্য, আমরা এই শহরের যেখানেই গিয়েছি সেখান থেকেই তাকে দেখেছি। স্বর্নালী রঙ এর এই স্তুপা যে সত্যি অনেকটাই স্বর্নমন্ডিত তার জন্যই হয়তো এই ঝলকানি। অফিসিয়ালি একে শড্যাগন জেদী বলা হলেও এই মঠটি গ্রেট ড্যাগন প্যাগোডা বা গোল্ডেন প্যাগোডা বলেই বেশি পরিচিত ।
শডেগন চত্বরে শ্বেত-শভ্র শ্বেত পাথরের গুম্ফা বা গুহা যেখানে ভিক্ষুরা ধ্যানে মগ্ন হন
গৌতম বুদ্ধ সহ মোট চার জন বুদ্ধর মুর্তি
গৌতম বুদ্ধ সহ মোট চার জন বুদ্ধের পবিত্র স্মৃতি চিনহ বুকে নিয়ে গড়ে উঠা শড্যাগন স্তুপাটি ৫১ মিটার অর্থাৎ` ১৬৭ ফিট উচু পাহাড় চুড়ায় ৪৬.৩ হেক্টর জায়গা জুড়ে নির্মিত যা সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ১৭০ মিটার উচুতে অবস্থান। আর তার জন্যই সে ইয়াঙ্গনের আকাশ সীমায় সর্বদাই দৃশ্যমান। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গাইডের সাথে ইয়াঙ্গন শহর চষে বেড়ানোর পর দুপুরের খাবারের পর আমাদের গন্তব্য ছিল সেখানকার বিখ্যাত এই প্যাগোডা্কে কাছ থেকে দেখা।
শড্যাগন তার সকল আভিজাত্য নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সিঙ্গুত্তারা পাহাড়ের শীর্ষে
শড্যাগনে প্রবেশের চারটি দরজা রয়েছে। স্থানীয়রা ফ্রি হলেও বিদেশীদের জন্য বর্তমানে টিকিট মাথাপিছু ১০০০ চেস, তবে আমাদের সময় ৮০০ চেস ছিল। ক্যামেরার জন্য আলাদা চার্জ নেই।টিকিট কেটে জামায় স্টিকার লাগিয়ে রওনা হোলাম সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ১৭০ মিটার উচু সডেগনের মুল চত্বরে উঠার লিফটের দিকে।
লিফট দিয়ে উঠে মুল চত্বরে প্রবেশের করিডোর
ঝক ঝকে তক তকে করিডোর যার চারদিকে সোনালী রংগের ঝলকানি। ভেতরের প্রবেশের দরজার দুদিকে দুই বিশাল দেহী পৌরানিক কাহিনীর কল্পিত সিংহ যেন এই পবিত্র স্থানটিকে পাহারা দিচ্ছে। ভেতরে গিয়ে দেখি মাঝখানে মুল স্তুপা ছাড়াও চারিদিকের বিশাল চত্বর জুড়ে অসাধারন কারুকার্য্যময় এক একটি স্থাপনা যা অনেক দেশের ট্যুরিস্টদের মত আমাদেরকেও বিস্মিত করছিল।
এটাও স্বর্নালী গুম্ফা বা গুহা যা সুর্যস্তের আভায় লাল বর্ন ধারন করেছে। ভালো করে খেয়াল করলে দেখতে পাবেন ধ্যানমগ্ন বুদ্ধর মুর্তি
প্রার্থনা শেষে চত্বরে দর্শনার্থীদের ঘোরাফেরা
মুল স্তুপাকে ঘিরে বিভিন্ন ধর্মীয় স্থাপনা ছাড়াও ওই চত্বরেই আছে একটি ফটো গ্যালারী যাতে আছে গৌতম বুদ্ধের জীবনের সাথে জড়িত বেশ কিছু ছবি, আছে গৌতম বুদ্ধ ছাড়াও তার আগের তিনজন বুদ্ধ যথাক্রমে Kakusandha, Koṇāgamana, Kassapa, র মুর্তি। এছাড়াও আছে শড্যাগন নির্মানের প্রাচীন ইতিহাস। আরো রয়েছে অনেক ছবি যাতে আছে এই স্তুপার সাজসজ্জ্বার জন্য ব্যবহার করা দামী রত্নরাজি খচিত অলংকার। অলংকারের ছবি দেখেই মন ভরাতে হবে কারন এসব আমার আপনার দৃষ্টির বাইরে অর্থাৎ আপনি খালি চোখে কখনোই দেখতে পাবেন না। ৩৬৭ ফিট উচু শড্যাগনের শিখরের কাছে যেখানে পবিত্র ছাতা রয়েছে তার কারুকাজে ব্যবহার করা হয়েছে এইসব চোখ ধাধানো অমুল্য রত্নরাজি যা রাজা ও রাজপরিবারের সদস্যদের দেয়া উপহার।
শড্যাগন চত্বরের ফটো গ্যালারী ।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে চোখ ধাধানো দামী রত্ন হীরা, রুবি, নীলা, ইয়েলো স্যাফায়ার, পান্না ছাড়াও আরো অনেক কিছু
এখানেও সোনার তৈরি গৌতম আর আশেপাশে মানিক্য আর নীলা খচিত ফুল লতাপাতার কারুকাজ
গৌতম বুদ্ধের পায়ের ছাপ
পৃথিবীর সবচেয়ে পুরনো এই স্তুপা শড্যাগন নির্মান কাজ শুরু হয়েছিল হয়েছিল তৎকালীন ড্যাগন রাজ্যের মন জাতির রাজা ওক্কালাপার হাত ধরে। বিভিন্ন কাহিনী ও সুত্র থেকে জানা যায় যে গৌতম বুদ্ধের বোধি লাভের প্রথম দিকে তপস্যা ও ভাল্লিকা নামে দুজন মন ব্যাবসায়ী ব্যাবসার উদ্দেশ্যে গিয়ে তাঁঁর সাথে দেখা করেন। গৌতম বুদ্ধ তাদের দুজনকে তার নিজ মাথার ৮ গাছি পবিত্র কেশ স্মৃতি চিনহ হিসেবে দিয়েছিলেন। ব্যাবসায়ী দুজন ফিরে রাজার হাতে তুলে দেন বুদ্ধের সেই পবিত্র চিনহ। মন রাজা ওক্কালাপা তার জনগনকে সাথে নিয়ে গৌতমের সেই পবিত্র কেশ রাশিসহ তার পুর্ববর্তী আরো তিনজন বুদ্ধের ব্যাবহৃত একটি করে স্বারক চিনহ নিয়ে সিঙ্গুত্তারা পাহাড়ের উপরে প্রতিষ্ঠা করেন পবিত্র স্তুপা শড্যাগন যা মিয়ানমারের পবিত্রতম ধর্মীয় স্থাপনা। এখানে বিভিন্ন দেশ বিশেষ করে বৌদ্ধধর্মাবল্মবী দেশ যেমন চীন, কোরিয়া, থাইল্যান্ড এবং জাপানের প্রচুর তীর্থযাত্রী আসেন। থাই এয়ারওয়েজের বিশাল এয়ার বাস A380-8০০ (৮০০) কে দেখেছি যাত্রী বোঝাই হয়ে ইয়াঙ্গন এয়ারপোর্টে নামতে। এটা ছিল পেনডেমিকের আগে থাই এর ডেইলি ফ্লাইট।
এখনো চলছে এর সংস্কার কাজ, বিদেশি ট্যুরিস্টরা বর্মী লুংগি পরে আছে। জানি না ভাড়া করেছে কি না! তবে সাদারা খুব হিসেবী। অযথা পয়সা খরচ করে না আমাদের মত
শড্যাগন চত্বরে এক কাঠের কারুকাজ করা মঠ
বহুবার শড্যাগনের সংস্কার হয়েছে, বেড়েছে উচ্চতা। এমনকি ১৪৫৪ সনে মন রাজা ধাম্মাজেদির শাশুড়ি পর্যন্ত এর সংস্কারে বিশাল অবদান রেখেছেন। নির্মানের পর থেকে একের পর এক ভুমিকম্প এই স্তুপার অনেক ক্ষতি করেছে তবে সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছিল ১৬৬৮ সনে যা স্তুপার শিখরকে ভেঙ্গে চুরমার করেছিল। ১৭৭৫ সনে রাজা শিনবাইউশিন (Hsinbyushin) এর সংস্কার করেন যার মাঝে প্রাধান্য পেয়েছিল এর উচ্চতা। তিনি শডেগনের বর্তমান উচ্চতা ৩২৫ ফিট উচু শিখর নির্মান করেছিলেন।
শড্যাগনের ভিত্তি নির্মিত হয়েছে ইট দিয়ে তবে পুরো স্তুপাটাই সত্যিকারের স্বর্নালী পাতে মোড়ানো। এই স্তুপায় মোট ৫০০ টন স্বর্ন ব্যবহার করা হয়েছে। ১৫ শতকে রানী শিন সবু তার শরীরের ওজনের সমপরিমান স্বর্ন দানের পর থেকে এটা রেওয়াজে পরিনত হয় । যার ফলে পরে অনেকেই শড্যাগনের তৈরি বা সংস্কার কাজে স্বর্ন দান করেছেন।
ছাদের সিলিং এ কি অপরূপ কারুকাজ মুগ্ধ আমি ।
এই মঠেরই পিলার
স্বর্ন শুনে কেউ অবাক হবেন না কারন এই দেশে বিভিন্ন দামী পাথরের খনি ছাড়াও সোনার খনি রয়েছে। মিয়ানমারের কাচিন প্রদেশে শতাধিক স্বর্ন খনি আছে যা খনন করার ফলে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলে স্থানীয়রা প্রতিবাদ জানাচ্ছে। আমি ঢাকার নিউমার্কেটের মত এক বাজার যা বজো বা স্কট মার্কেট নামে বিখ্যাত যা ছিল আমাদের হোটেল থামাডার পাশে সেখানে আমাদের দেশের এলুমিনিয়ার হাড়ি পাতিলের মত দাড়িপাল্লায় মেপে সোনার গহনা বেচতে দেখেছি। উচু একটা চত্বরে লুংগি পরে মুখে পান য়য়ে বসে আছে বিক্রেতা আর তার চারপাশে কাচের শোকেস যার মাঝে গহনা পত্র ঠুসে ভরা, সে ক্রেতাদের দাড়িপাল্লায় (ছোট আকারের না কিন্ত)মেপে বিক্রি করছে।আমাকে বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে থাকতে দেখে গাইড জিজ্ঞেশ করলো আমি কিনবো নাকি ? যখন বলেছি আমাদের দেশের অলংকার ছিনতাই এর কথা তখন সে হা করে আমার দিকে খানিকক্ষন চেয়েছিল। সোনার গয়নাও যে ছিনতাই হতে পারে তা যেন তার মাথাতেই ঢুকছিল না।
দেয়ালে সোনার অক্ষরে লেখা গৌতম বুদ্ধের বানী
যাই হোক স্বর্নের গল্প এবার শুনুন মনি মানিক্যের কথা।এই শড্যাগনের শিখরে থাকা যে মুকুট যাকে তারা ছাতা বলে তাতে রয়েছে ৫৪৪৮টি হীরা, ২৩১৭টি রুবি আর এর চুড়োয় আছে ১৫ গ্রামের ৭৬ ক্যারেটের হীরকখন্ড। রয়েছে অজস্র ব্লু স্যাফায়ার যা বাংলায় নীলা নামে পরিচিত, ইয়েলো স্যাফায়ার, সবুজ পান্না, আর স্বল্পদামী পাথরের তো কথাই নেই আর সবই তাদের খনি থেকে উত্তোলন করা।
আমার প্রিয় তাল গাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে
মন্দিরের গোড়ায় অর্থাৎ সমতলে যেখানে রয়েছে পুর্ব আর দক্ষিনের প্রবেশ মুখ তাঁর সামনে ফেরীওয়ালারা ধর্মীয় বই, সৌভাগ্যের জন্য নানা রকম জিনিস পত্র, বুদ্ধের ছবি, মোমবাতি, সোনার পাত,ফুল, স্বর্নালী ছাতা অনেক জিনিস সাজিয়ে বসে আছে । আমি স্যুভেনীর হিসেবে কিছু জিনিস কিনলাম। উপরে মন্দির চত্বরে ওঠার পর বুদ্ধ রীতি অনুযায়ী ঘড়ির কাটার মত ডান দিক দিয়ে যাত্রা হলো শুরু। আমরা তো এসব রীতি নীতির কিছুই জানি না তাই গাইডের নির্দেশ মত আমরা দুজন পিছু পিছু চলতে লাগলাম।যা দেখলাম তাতে বুঝলাম বেশিরভাগ মন বুদ্ধিষ্টরা থেরাভেদা অনুসারী আর তারা জ্যোতিষ বিদ্যার ক্ষেত্রে হিন্দু জ্যোতিস শাস্ত্রের উপর নির্ভরশীল। সেই রাহু কেতু সেই তুঙ্গে থাকা বৃহস্পতি, শনির দৃষ্টি ইত্যাদি।
এই বিশাল আকারের ঘন্টাটি এক রাজার দেয়া উপহার
সুদৃশ্য ঝালরের অপরূপ কারুকাজ করা ছোট এই ঘরটিতে আরেকটি ঘন্টা । এও শড্যাগনকে দেয়া কোন এক রাজার উপহার
এরা বৌদ্ধ ধর্মে বর্নিত দুষ্ট আত্মা
আরেকটি দুস্ট আত্মা । বৌদ্ধরা মনে হয় এইসব খুব বেশি বিশ্বাস করে যা আমি থাইল্যান্ডেও দেখেছি। তাদের সামনে খাবার আর পানি দিয়ে শান্ত রাখে
তাদের এস্ট্রলজিতে সপ্তাহকে আট দিনে ভাগ করেছে। কেমনে হলো এটা ! আট দিন বানানোর জন্য তারা বুধবারের দিন রাত্রিকে এ-এম, পি-এমে ভাগ করেছে। অর্থাৎ সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বুধবার তারপর আবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত রাহুর দিন। বৌদ্ধধর্মাবলম্বীরা কোনদিন জন্ম গ্রহন করেছে তা বৌদ্ধদের জানা অত্যন্ত জরুরী। এই আট দিনকে তারা এক একটি প্রানীর নাম দিয়েছে যেমন রবিবারের জন্মগ্রহনকারীর প্রতীক পৌরানিক পাখী গরুড়, সোমবারে সিংহ, মঙ্গলবারে ইদুর, শুক্রবারে গিনিপিগ আর শনিবারে জন্মগ্রহন কারীর পশু সাপ। আর বুধবার সকাল পর্বে দাত সহ হাতী আর বিকেলের পর্বে দাত ছাড়া হাতী । এই আটটি প্রানী নিয়ে শডেগনকে ঘিরে আটটি অত্যন্ত কারুকার্য্যময় স্থাপনা রয়েছে যাতে আছে বুদ্ধের মুর্তি সহ পানির পাত্র। যার যার রাশির প্রানীর সামনে দাঁড়িয়ে লোকজন ফুল নিয়ে প্রার্থনা করছিল আর মনস্কামনা পুরনের আশায় সেই প্রানীর মাথাতে পানি ঢেলে দিচ্ছিল। উইকিপিডিয়ার ছবিতে দেখলাম বারাক ওবামাও সিংহের মাঠায় পানি ঢালছে।
আমার জন্মদিনের প্রানী দাতওয়ালা হাতী
ঘুরে ফিরে দেখছি অপুর্ব কারুকাজ করা স্বর্নালী শড্যাগনকে। এত মানুষ তারপরও কি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন, এতটুকু ধুলাবালি নেই কোথাও, অনেকে ছোট বাচ্চাদেরও নিয়ে এসেছে। সবাই চুপচাপ কোন কথা নেই, কোন সাড়া শব্দ নেই, মন কেমন করা এক শান্ত শিষ্ট সেই সাথে এক ভাবগম্ভীর পরিবেশ। অনেকে বসে ধ্যান করছে,কেউ কাউকে বিরক্ত করছে না। আমাদের গাইড ধ্যানে বসলো আমিও পাশে বসা । ধ্যান শেষে আমার দিকে হাসি মুখে তাকালো মিজ ওয়া। জিজ্ঞেশ করলাম কি প্রার্থনা করলে উত্তর ‘আই প্রে ফর ইউর হেলথ এন্ড ওয়েলথ জুন”। জড়িয়ে ধরে তাকে ধন্যবাদ জানালাম । তার সাথে আমার আজও যোগাযোগ আছে সে আমাকে সিস্টার বলে ডাকে, আমার ইয়াঙ্গন ট্যুরে সে আমার অনেক বায়নাক্কা সামলিয়েছে।অনেক অনেক ভালোমানুষ। আমিও তার হেলথ আর ওয়েলথের জন্য প্রার্থনা করি সবসময়।
ইশ্বরের কাছে প্রার্থনায় রত লোকজন , এত সম্পদ এত কিছু তারপরেও সাধারন লোকজনের দুর্দশা পীড়াদায়ক
এখানে ঢুকতে হলে আপনাকে ড্রেস কোড মেনে ঢুকতে হবে । ছেলেদের শর্টস আর মেয়েদের স্কার্ট পরিত্যাজ্য। যদি আপনার কাছে না থাকে তো ভাড়ায় লুঙ্গি পাওয়া যায় তাই পরুন উভয়েই। আমাদের দরকার হয় নি। শড্যাগনকে চত্বরে কোন প্রকার জুতা স্যান্ডেল পরা নিষেধ ।
সন্ধ্যা হয়ে আসছে
একে একে জলবে দেউটি আর তারই প্রস্ততিতে প্রস্তত মাটির প্রদীপ
মনোস্কামনা পুরণের লক্ষ্যে প্রদীপ জালাচ্ছে মেয়েটি
অনেক বিখ্যাত কবি সাহিত্যিক শড্যাগনকে নিয়ে লিখে গেছে তার মাঝে আমাদের অতি পরিচিত রুডিয়ার্ড কিপ্লিং উল্লেখযোগ্য। উনি লিখেছিলেন "সবুজ ঘাসে আচ্ছাদিত এক পাহাড়ের চুড়োয় সুর্য্যের আলোয় ঝকমকিয়ে ওঠা এই স্বর্নালী স্থাপনাটি কি? কোন মসজিদের গম্বুজ নয়, কোন মন্দিরের চুড়া নয় এই হলো শড্যাগন" যাকে দেখার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল।
যুদ্ধ বিগ্রহে অনেক ক্ষতির মুখে পরেছিল। চুরি হয়েছে তার মহার্ঘ্য অলংকার কিন্ত আজও তার সৌন্দর্য্য নিয়ে স্বমহিমায় ইয়াঙ্গনের আকাশ সীমায় দাঁড়িয়ে আছে শড্যাগন যাকে আপনি ঐ শহরের যে কোন জায়গা থেকে দেখতে পাবেন।
.
সব ছবি আমাদের ক্যামেরায় তোলা।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মার্চ, ২০২১ রাত ৯:২৮