গুরুত্বপুর্ন একটি নথিতে আমাদের দুজনারই নাম ধাম সব ভুল। তাদের কাছে আমাদের জাতীয় পরিচয় পত্র ,পাসপোর্ট এর ফটোকপি, দলিল দস্তাবেজ থাকার পরও এই মারাত্মক ভুল কি আমাদের দোষ ? এর খেসারত দিতে দিতে আমাদের জান কয়লা । প্রায় দিনই যাচ্ছি আর শুনছি 'হয় নাই, কাল আসেন'। এই কাল আসেন, কাল আসেন করতে করতে মাসের পর মাস পেরিয়ে যাচ্ছে । সেদিন দায়িত্বপুর্ন এক ব্যাক্তি সব কিছু শুনে টুনে আমাদের গাধামীতে হতবাক। বল্লো 'করছেন কি ! ওইখানে আপনারা যাচ্ছেন ক্যানো'!
"আমরা না গেলে কিভাবে হবে" ! আমাদের মত নাদানদের এই প্রশ্নে তার উত্তর ছিল, 'শুনেন, এদের জায়গায় জায়গায় লোক আছে, তাদের ধরতে হয় আর তাদের মাধ্যমে আপোষে সব কাজ দুদিনেই হয়ে যায়'। আমরা আবারও বোকার মত প্রশ্ন করলাম " সেই লোকগুলো কোন কোন জায়গায় থাকে" ? ভদ্রলোক চরম বিরক্তি নিয়ে আমাদের দিক থেকে চোখ সরিয়ে ঝাঝালো গলায় বলে উঠলো, 'এটা ওরাই বলে দিবে যে কোন পান দোকান বা চায়ের দোকানে খামটি রেখে আসতে হবে'। মাথাটা কেমন যেন চক্কর দিয়ে উঠলো। বিকেলে উভয়ে ডাক্তারের কাছে গেলাম। ডাক্তার অনেকক্ষন দেখে টেখে ডায়োগনোসিস করলো ভার্টিগো !!!
আমার ছোট জা আমার অনেক প্রিয় করোনার প্রথম ধাক্কাতেই মারা গিয়েছে। ঢাকার নামী হসপিটালে ভর্তি হয়েও আয়া আর নার্সের চিকিৎসায় ছিল ১৪ দিন । কারন ডাক্তাররা কাছেই আসতো না ভয়ে, আয়ারাই অক্সিজেন কমাতো বাড়াতো । সেই বেচারীর মৃতদেহ বের করে আনতে বিল করেছে ৯ লক্ষ টাকা, পরে অনেক বলে কয়ে ৭ লক্ষ টাকায় রফা হলো।এদিকে সম্প্রতি আমার দেবরের অফিসিয়াল কাজের জন্য তার স্ত্রীর ডেথ সার্টিফিকেটটা খুবই জরুরী হয়ে পরে । ছয় সাত মাস অনবরত সংশ্লিষ্ট সরকারী অফিসে দৌড়াদৌড়ি করে জুতার সোল খসিয়ে অবশেষে বের করতে পারে প্রিয়তম স্ত্রীর মৃত্যুর সনদ, আর তার সাথে ছিল তার নিজের ডেথ সার্টিফিকেটও। তারা হয়তো ভেবেছে বেচারা এতদিন ধরে দৌড়াদৌরি করছে, মনে হয় এও শীঘ্রই ইহধাম ত্যাগ করবে। আমাদের করিৎকর্মা জ্যোতিষী অফিসারদের এই কাজে আমাদের ধন্যবাদ দেয়া উচিত তাই নয় কি ? বেচারা দেবর এখন দৌড়াচ্ছে সে যে জীবিত আছে সেই সার্টিফিকেট বের করার জন্য ।
আমরা কোন দেশে আছি ?
ছবি নেট
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই আগস্ট, ২০২২ সকাল ৯:১১