মুসলমানদের জন্য নিজস্ব বর্ষপঞ্জি (ভাগ-১) এ হিজরী সাল গণনা শুরু বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয় যে, আমরা অধিকাংশ মুসলিমগণ আমাদের এ নিজস্ব পুঞ্জিকার বিষয়ে উদাসীন থাকি। চলতি বৎসরটি কোন হিজরী সাল তাও আমরা অনেকেই জানিনা।
আমাদের সমাজে প্রচলিত রয়েছে যে, নতুন বছর নতুন কল্যাণ বয়ে আনে, দূরীভূত হয় পুরোনো কষ্ট ও ব্যর্থতার গ্লানি। এধরণের কোন তত্ত্ব ইসলাম সমর্থন করে না। কেউ যদি এই ধারণা পোষণ করেন যে, নতুন বছরের প্রারম্ভের সাথে কল্যাণের কোন সম্পর্ক রয়েছে, তবে সে শিরকে লিপ্ত হল। আর কেউ যদি মনে করে যে, নতুন বছরের আগমনের এই ক্ষণটি নিজে থেকেই কোন কল্যাণের অধিকারী, তবে সে বড় শিরকে লিপ্ত হল, যা তাকে ইসলামের গন্ডীর বাহিরে নিয়ে গেল। এই ধারণার উপরে কোন ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতকে চিরতরে হারাম করে দিবেন। মহাগ্রন্থ আল কুরআন’র ৫নং সূরা মায়েদাহ এর ৭২ নম্বর আয়াতাংশে মহান আল্লাহ এভাবে বলছেন, নিশ্চয় যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অংশীদার স্থির করে, আল্লাহ তার জন্যে জান্নাত হারাম করে দেন এবং তার বাসস্থান হয় জাহান্নাম।
নতুন বছরের শুরুতে আমরা অনেকই নতুন কিছু করা, কর্ম বা কমপদ্ধতি পরিবর্তন করা, জীবনধারা পরিবর্তন করার পরিকল্পনা করি এটা খারাপ নয়। তবে আমাদের বুঝতে হবে যে, মানুষের জীবনে প্রতিটি দিনই নবজীবন। মহান আল্লাহ তায়া’লা ৬নং সুরার আল্ আন’আম এর ৬০ নম্বর আয়াতে এভাবে বলছেন- তিনিই রাত্রিকালে তোমাদের মৃত্যু ঘটান এবং দিনে তোমরা যা কর তিনি তা জানেন। অতঃপর তিনি তোমাদেরকে দিনে পুনরায় জাগিয়ে তোলেন যাতে নিদিষ্ট মেয়াদ পূণ হয়।
এজন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি সাল্লাম আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন যে, প্রতিদিন ভোরে ঘুম থেকে জাগ্রত হয়ে আল-’হামদু লিল্লা-হিল্লাযী আ’হইয়া-না- বা’দা মা- আমা-তানা ওয়া ইলাইহিল নূশূর। “সকল প্রশংশা আল্লাহর, যিনি আমাদেরকে জীবিত করেছেন মৃত্যুর (ঘুমের) পরে, আর তাঁর কাছেই আমাদের ফিরে যেতে হবে।” এই দোয়া পাঠ করে আল্লাহর দরবারে হৃদয় নিংড়ানো কৃতজ্ঞতা ও শুকরিয়া জানিয়ে, পরিবর্তনের আকুতি ও সফলতা ও বরকতের প্রাথনা করে নতুন জীবন শুরু করার।
হিজরী সনের শুরুতেই আমরা দেখেছি নারীর উপর বরবর নির্যাতন। যা কখনই কাম্য নয়। এগুলো আইয়ামে যাহেলীয়াতের কর্ম। আসুন আমরা যাহেলীয়াতের কর্ম ত্যাগ করে মহান আল্লাহর নির্দেশমত তার ইবাদত ও তার আনুগত্যের মাধ্যমে, মানুষের অধিকার আদায় ও ক্ষতি করা থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে নতুন বছরের সূচনা করি। মহান আল্লাহ আমাদের তাওফীক দিন।
মুসলমানদের জন্য নিজস্ব বর্ষপঞ্জি (ভাগ-১)
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৮:৩৩