somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাইন্ড অফ গড- স্টিফেন হকিং যা জানতে পারেননি!

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



স্টিফেন হকিং  আজীবন একটি মহা তত্ত্ব আবিষ্কারের অপেক্ষায় ছিলেন, যার নাম তিনি দিয়েছেন Grand unified theory বা Theory of everything, যে তত্ত্ব কোটি কোটি গ্যালাক্সি আর অতি ক্ষুদ্র কোয়ার্ককে একই সূত্রে বেঁধে দেবে। আ ব্রিফ হিস্ট্রি অফ টাইম বইতে স্টিফেন হকিং আলোচনা করেছেন মহাবিশ্বের সূচনা, মহাবিশ্বের ধরণ ও এর ভবিষ্যৎ নিয়ে, ব্ল্যাক হোল নিয়ে, এবং  ধারণা দিয়েছেন স্থান-কাল নিয়ে গঠিত চতুর্থ মাত্রা সম্পর্কে। বইটি শেষ করেছেন এই বলে, 'If we find the answer to that, it would be the ultimate triumph of human reason- for then we would know the mind of God.'

১৯৯৩ সালে বইটি প্রথমবার পড়া শেষ করে মনে হয়েছিল স্টিফেন হকিং যদি মাত্র একবার কোরআন শরীফ পড়তেন, তাহলেই অনেক প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যেতেন, আর জানতে পারতেন- the mind of God.

এই বইতে তিনি মহাকাশ বিজ্ঞানের এমন অনেক আবিষ্কারের কথা বলেছেন, যা কেবল বিংশ শতাব্দীতে আবিষ্কৃত হয়েছে। তিনি কখনো জানেননি, দেড় হাজার বছর আগে অবতীর্ণ পবিত্র কোরআন শরীফে তার উল্লেখ আছে।

এই পোস্টে ইংরেজিতে লিখিত বাক্যগুলো আমি 'আ ব্রিফ হিস্ট্রি অফ টাইম' বইয়ের ১৯৮৮র সংস্করণ থেকে হূবহু উদ্ধৃত করেছি। কোরআন শরীফের আয়াত উদ্ধৃত করেছি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কুরআনুল করিম থেকে।

 শুরু করি মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ নিয়ে। হকিং বলছেন, "It is an interesting reflection on the general climate of thought before the 20th century that no one had suggested that the universe was expanding or contracting." ( পৃষ্ঠা-৬). "The discovery that the universe is expanding was one of the great intellectual revolution of the 20th century." পৃষ্ঠা- ৪২

 যে জ্ঞানকে হকিং বলছেন বিংশ শতাব্দীর বিশাল বুদ্ধিবৃত্তিক বিপ্লব( great intellectual revolution), অর্থাৎ মহাবিশ্ব যে সম্প্রসারিত হচ্ছে- তা আল্লাহ জানাচ্ছেন  এখানে,

'আমি আকাশ নির্মাণ করিয়াছি আমার ক্ষমতাবলে এবং আমি অবশ্যই মহা সম্প্রসারণকারী' (সূরা যারিয়াত, আয়াত ৪৭)

মহাবিশ্ব ( universe) সম্পর্কে আধুনিক ধারণার সূচনা করেন এডউইন হাবল। ১৯২৪ সালে তিনি প্রথম আবিষ্কার করেন যে আমাদের ছায়াপথ ছাড়াও মহাকাশে আরো লক্ষ কোটি ছায়াপথ আছে ( পৃষ্ঠা ৩৮)। ১৯২৯ সালে তিনি আবিষ্কার করেন, ছায়াপথ গুলো চলমান, আমাদের ছায়াপথ থেকে দূরে অবস্থিত ছায়াপথগুলোর তাদের দূরত্বের সমানুপাতিক হারে আমাদের থেকে সরে যাচ্ছে।( পৃষ্ঠা ৪২)  অর্থাৎ ছায়াপথগুলো, যার প্রতিটিতে অবস্থিত লক্ষ কোটি তা স্থির নয়, চলমান- সরে যেতে যেতে এক সময় বহু দূরে চলে যায়।
 হকিং বলছেন  "it was quite a surprise, therefore, to find that most galaxies appeared red- shifted; nearly all were moving away from us! The farther a galaxy is, the faster it is moving away!"(পৃষ্ঠা ৪১-৪২) ।
হকিং যদি জানতেন, নক্ষত্রের সরে যাওয়ার কথা কোরআন শরীফে বলা আছে, এভাবে-
"আমি শপথ করি সেসব নক্ষত্রগুলোর, যারা পশ্চাতে সরে যায়, চলমান হয় ও অদৃশ্য হয়"
সূরা তাকভীর আয়াত ১৫-১৬:

৩৬ পৃষ্ঠায় হকিং বলছেন, "In the theory of relativity there is no unique absolute time, but instead each individual has his own personal measure of time that depends on where he is and how he is moving." সময়ের যে কোন অনন্য, পরম মান নেই বরং তা পর্যবেক্ষকের অবস্থান ও গতির উপর নির্ভর করে এটা আইনস্টাইন  আবিষ্কার করেছিলেন বিংশ শতাব্দীতে।  সময়ের মান যে একেকজনের কাছে একেক রকম হতে পারে এটা কোরআন শরীফে বলা আছে । যেমন:
তিনি আকাশ থেকে পৃথিবী পর্যন্ত সমুদয় বিষয় পরিচালনা করেন অতঃপর একদিন সমস্ত কিছুই তাহার সমীপে সমুত্থিত হইবে যে দিনের পরিমাপ হইবে তোমাদের হিসাবে হাজার বছর সূরা সাজদা আয়াত ৫
ফেরেশতা এবং রূহ আল্লাহর দিকে উর্ধ্বগামী হয় এমন একদিনে যার পরিমাণ পৃথিবীর হাজার বৎসর সূরা মাআরিজ আয়াত ৪

The arrow of time অধ্যায়ে হকিং প্রশ্ন করছেন, "Why do we remember the past but not the future?" (পৃষ্ঠা ১৫২)।  ভবিষ্যতকে স্মরণ করা- এটা আমাদের ধারণার অতীত একটা বিষয়। অথচ পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলছেন ভবিষ্যতকে স্মরণ করা সম্ভব!
"স্মরণ কর, আমার বান্দা ইব্রাহীম ইসহাক ও ইয়াকুবের কথা, উহারা ছিল শক্তিশালী ও সূক্ষদর্শী আমি তাহাদিগকে অধিকারী করিয়াছিলাম এক বিশেষ গুণের, উহা ছিল পরলোকের স্মরণ।"
সূরা সাদ: আয়াত ৪৫-৪৬

মহাবিশ্ব সম্পর্কে আধুনিক ধারণার সূত্রপাত করেন নিকোলাস কোপারনিকাস। তিনি ১৫১৪ সালে প্রথম ধারণা দেন যে সূর্যের চারপাশে পৃথিবী আর অন‍্য গ্রহ-নক্ষত্রেরা ঘুরছে।(পৃষ্ঠা ৪) এর আগে পর্যন্ত ধারণা করা হতো যে, পৃথিবী স্থির আর সূর্য আর অন্য গ্রহ-নক্ষত্রেরা পৃথিবীকে ঘিরে ঘুরছে। এরপর কেপলার, গ্যালিলিও এবং সবশেষে নিউটন সপ্তদশ শতাব্দীতে মহাবিশ্ব সম্পর্কে এই ধারণার সূত্রপাত করেন যে, সূর্য নিজ কক্ষ পথে আবর্তন করে চলমান, একইভাবে পৃথিবী এবং  চাঁদ নিজ  কক্ষপথে চলমান- পৃষ্ঠা ৬। অথচ দেড় হাজার বছর আগেই পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে: 

"সূর্য ও চন্দ্র আবর্তন করে নিজ কক্ষপথে" - সুরা আর রাহমান, আয়াত ৫
"সূর্য ভ্রমণ করে করে তার নির্দিষ্ট গন্তব্যের দিকে, ইহা পরাক্রমশালী  সর্বজ্ঞের নিয়ন্ত্রণাধীন"- সূরা ইয়াসিন, আয়াত ৩৮।

মহাবিশ্বের কি কোন শুরু আছে নাকি  মহাবিশ্ব চিরকালীন- এই প্রশ্ন বিজ্ঞানীদের তাড়িত করেছে, দুই পক্ষেই মতের পাল্লা ভারী হয়েছে কিন্তু বিংশ শতাব্দীর আগে এর  মীমাংসা হয় নি। ১৯২৯ সালে এডউইন হাবলের সম্প্রসারণশীল মহাবিশ্ব আবিষ্কারের পর এই প্রশ্নের মীমাংসা হল- জানা গেল যে এই মহাবিশ্বের শুরু আছে।

"This Discovery finally brought the question of the beginning of the universe into the realm of science."- পৃষ্ঠা ৯

অথচ সৃষ্টির সূচনার কথা আল্লাহ বলছেন দেড় হাজার বছর আগে, কোরআন শরীফের বহু আয়াতে।

"বল, তোমরা যাহাদের শরীক কর তাহাদের মধ্যে কি এমন কি কেহ আছে, যে সৃষ্টিকে অস্তিত্বে আনয়ন করে ও পরে উহার পুনরাবর্তন ঘটায়? বল, আল্লাহই সৃষ্টিকে অস্তিত্বে আনয়ন করেন ও পরে উহার পুনরাবর্তন ঘটান, সুতরাং তোমরা কেমন করিয়া সত্য বিচ্যুত হইতেছ?"- সুরা ইউনুস, আয়াত ৩৪।
"উহারা কি লক্ষ্য করে না, কিভাবে আল্লাহ সৃষ্টিকে অস্তিত্ব দান করেন, অতঃপর উহা পুনরায় সৃষ্টি করেন? ইহা তো আল্লাহর জন্য সহজ"- সূরা আনকাবুত, আয়াত ১৯

সৃষ্টির যে শুরু আছে, একথা আরো আছে সুরা বাকারার ১১৭ আয়াতে, সূরা ইউনুস এর ৪ আয়াতে, সূরা নমলের ৬৪ আয়াতে,  সুরা রুমের ১১ আয়াতে, সূরা বুরুজের ১৩ আয়াতে। এই সবকটি আয়াতে ব্যবহৃত শব্দটি "বাদা'আ"-
এর অর্থ কোন কিছুকে অনস্তিত্ব থেকে অস্তিত্বে আনা। সাধারণ সৃষ্টি করা বোঝাতে  খালাকা (সূরা আরাফ আয়াত ৫৪) বা বানাআ(সূরা শামস আয়াত ৫) ব্যবহার করা হয়েছে। বাদা'আ বলতে বোঝায় এমন সৃষ্টি যার কোন অস্তিত্ব ছিল না- যেমন, মহাবিশ্বের সৃষ্টি।

ব্ল্যাকহোলের  প্রভাবের উল্লেখও আছে পবিত্র কোরআনে। ব্ল্যাকহোল হল কোন তারার অন্তিম পরিণতি। সূর্যের চেয়ে অন্তত দেড় গুণ বড় কোন তারার জ্বালানি যখন শেষ হয়ে যায়, তখন সেই তারা ক্রমশ ঠান্ডা হয়ে আসে আর প্রচন্ড অভিকর্ষের  কারণে পরিণত হয়  ব্ল্যাকহোলে। এই ব্ল্যাকহোল দেখা যায়না, কারণ ব্ল্যাকহোলের সীমানা, ইভেন্ট হরাইজন ব্ল্যাকহোলকে ঢেকে রাখে। হকিং বলছেন,

"The singularities produced by gravitational collapse occur only in places, like black holes, where they are decently hidden from outside view buy an event horizon."-পৃষ্ঠা ৯৩
Event horizon কি কাজ করে, তা হকিং এর ভাষায়:
"The event horizon, the boundary of the region of spacetime from which it is not possible to escape, acts rather like a one-way membrane around the black hole."  (পৃষ্ঠা ৯৪)। one-way membrane মানে কেবল ঢোকা যায় এমন আবরণ বা দরজা। ব্ল্যাকহোলের মধ্যে কোন মানুষ পড়ে গেলে অভিকর্ষের প্রচন্ড টানে তার শরীর হয়ে যাবে সুতার মতো সরু, হকিং বলছেন স্প্যাগেটির মত হয়ে যাবে। (পৃষ্ঠা-৯১)। ব্ল্যাকহোলের এই  প্রভাবগুলোর বর্ণনা আছে সূরা আরাফের ৪০ নাম্বার আয়াতে।

"যাহারা আমার নিদর্শনকে অস্বীকার এবং সে সম্বন্ধে অহংকার করে তাহাদের জন্য আকাশের দ্বার উম্মুক্ত করা হইবে না, এবং তারা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, যতক্ষণ না সূচের ছিদ্র পথে উট প্রবেশ করে। এইরূপে আমি অপরাধীদেরকে প্রতিফল দিব।" 

 হকিং বলছেন, অবশ্য  কখনো astronaut (কোন মানুষ)-এর পক্ষেও আবরণহীন সিঙ্গুলারিটি (naked singularity) দেখা সম্ভব হতে পারে। সেক্ষেত্রে, "He may be able to avoid hitting the singularity and instead fall through a "wormhole" and come out in another region of the universe."-পৃষ্ঠা ৯৩। অর্থাৎ মহাকাশের কোন অংশের আবরণ ভেদ করে আবরণের ওধারে, মহাবিশ্বের অন‍্য অংশে, জান্নাতে, বা জাহান্নামে চলে যাওয়া যাবে।  আকাশের আবরণ সরিয়ে নেওয়া, আকাশে পথের (wormhole) কথা বলা আছে এভাবে-
" যখন আকাশের আবরণ অপসারিত হইবে" সূরা তাকভীর, আয়াত ১১
"আকাশ উন্মুক্ত করা হইবে,  ফলে উহা হইবে বহু  দ্বারবিশিষ্ট।" সূরা নাবা, আয়াত ১৯
'শপথ বহুপথ বিশিষ্ট আকাশের" সূরা যারিয়াত আয়াত ৭

বিগ ব্যাঙের সময় মহাবিশ্ব ছিল অসীম ক্ষুদ্রায়তনের, অসীম ঘনত্ব এবং অসীম তাপমাত্রা
বিশিষ্ট। বিগ ব্যাঙের পর মহাবিশ্ব সম্প্রসারিত হতে থাকে আর এর তাপমাত্রা কমতে থাকে। বিগব্যাং-এর ১ সেকেন্ড পর তাপমাত্রা কমে হাজার কোটি ডিগ্রীতে নেমে আসে। এই প্রচণ্ড তাপমাত্রায় পদার্থকণার সংঘর্ষের ফলে উৎপন্ন হয়  ইলেকট্রন/এন্টি- ইলেকট্রন যুগল এবং নিউট্রিনো এবং এন্টি- নিউট্রিনো যুগল।ইলেকট্রন/এন্টি- ইলেকট্রন যুগল পরস্পরকে বিনাশ করে, তৈরি হয় ফোটন নামের আলোক- কনিকা। মহাবিশ্বের তাপমাত্রা কমে যাবার সাথে সাথে ইলেকট্রন/এন্টি- ইলেকট্রন যুগল উৎপন্নের হার, পরস্পরকে বিনাশের হারের চাইতে কমে যেতে থাকে। ফলে ফোটন উৎপন্ন হবার হার বেড়ে যায়। নিউট্রিনো/এন্টি-নিউট্রিনো যুগল কিন্তু এভাব পরষ্পরকে ধ্বংস করতে পারে না, তাই হয়তোবা আদি মহাবিশ্বের নিউট্রিনো/এন্টি-নিউট্রিনো আজো রয়ে গেছে! এদের দেখবার সরাসরি কোন উপায় নেই- কিন্তু সম্ভবত এ সেই অজানা বস্তু যার উপস্থিতির কারণে মহাবিশ্ব সম্প্রসারণের হার নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় থাকছে, এরই নাম বিজ্ঞানীরা দিয়েছেন ডার্ক ম্যাটার বা অন্ধকার বস্তু- পৃষ্ঠা- ৪৯ ও ১২৩।

নিউট্রিনো/এন্টি-নিউট্রিনোর  ডার্ক ম্যাটার হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে হকিং বলছেন;
We might be able to detect them indirectly; they could be a form of "dark matter." পৃষ্ঠা ১২৩

এভাবে আদি মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ ও তাপমাত্রা কমার ফলে উৎপন্ন ইলেকট্রন/এন্টি- ইলেকট্রন যুগল থেকে এসেছে আলো আর নিউট্রিনো/এন্টি-নিউট্রিনো আজো রয়ে গেছে অন্ধকার বস্তু হিসেবে। মহাবিশ্বের সৃষ্টির সময় আলো ও অন্ধকার সৃষ্টির কথা সূরা আনআমের প্রথম আয়াতে আল্লাহ বলছেন,

"সকল প্রশংসা আল্লাহরই যিনি আসমান ও জমিন সৃষ্টি করিয়াছেন আর সৃষ্টি করিয়াছেন অন্ধকার ও আলো। এতৎসত্ত্বেও কাফিরগণ তাদের প্রতিপালকের সমকক্ষ দাঁড় করায়।"

মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের হার প্রতি একশ কোটি বছরে শতকরা পাঁচ থেকে দশ ভাগের মধ্যে থাকে। (পৃষ্ঠা-৪৯)। সম্প্রসারণের এই হার মহাবিশ্বের সূচনা থেকে শুরু করে দশ বিলিয়ন বছর পরও কেন প্রায় অপরিবর্তিত রয়ে গেছে এই প্রশ্নের জবাব হকিং কেবল খুঁজেই গেছেন, কিন্তু কোনো উত্তর পাননি ( পৃষ্ঠা-১২৮)। দেখা গেছে, বিগব্যাং-এর এক সেকেন্ড পর যদি সম্প্রসারণের  হার এক হাজার কোটি কোটি ভাগের এক ভাগ কম হতো, তাহলে মহাবিশ্ব আর আজকের অবস্থায় পৌঁছাতে পারতো না। হকিং বলছেন,
"If the rate of expansion one second after the Big Bang had been smaller by even one part in a hundred thousand million million, the universe would have re collapsed before it reached its present size."

 এতটাই  সূক্ষ্ম এই পরিমাপের হিসাব, একে কি বলা যায় ? কাকতালীয় নাকি অসীম জ্ঞানী কোন সৃষ্টিকর্তার পরিকল্পনা?
অবশ্য  মহাবিশ্ব সৃষ্টির সময় আরো অনেক কিছু খুবই সূক্ষ্ম হিসাব করে করা হয়েছে, যে হিসেব যদি এদিক-ওদিক হত এক চুল পরিমাণ নয়, বরং চুল পরিমাণের কোটি ভাগের এক ভাগ, তাহলে আর কোন প্রাণের বিকাশ ঘটত না। কিছু মৌলিক সংখ্যা ব্যবহার করে সমস্ত বৈজ্ঞানিক সূত্র তৈরি হয়। এমন মৌলিক সংখ্যার উদাহরণ হচ্ছে  ইলেকট্রনের বৈদ্যুতিক চার্জ এর মান, বা প্রোটন ও  ইলেকট্রনের ভরের অনুপাত ইত্যাদি (পৃষ্ঠা-  ১৩১)। হকিং বলছেন,

"The remarkable fact is that the values of these numbers seem to have been very finely adjusted to make possible the development of life. For example if the electric charge of the electron had been only slightly different, stars either would have been unable to burn hydrogen and helium, or else they would  not have exploded." (পৃষ্ঠা-  ১৩২)
আল্লাহ বলছেন, "তিনি পৃথিবীকে স্থাপন করিয়াছেন সৃষ্ট জীবের জন্যে" সুরা আর রাহমান, আয়াত ১০

দেখা যাচ্ছে, পৃথিবীতে মানুষের আগমন কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং মহাবিশ্বের সূচনা থেকে (বিগ ব্যাং) আজকের দৃশ্যমান মহাবিশ্বর (যার দৈর্ঘ্য একের পর চব্বিশটা শূণ্য বসিয়ে যে সংখ্যা পাওয়া যাবে তত মাইল- পৃষ্ঠা ১৩) সম্প্রসারণ থেকে শুরু করে অতিক্ষুদ্র ইলেকট্রন প্রোটনের ভর পর্যন্ত সমস্ত কিছুই পরিমাপ কৃত। পবিত্র কোরআনে আছে,

"আমি প্রত্যেক কিছু সৃষ্টি করিয়াছি নির্ধারিত পরিমাপে"- সূরা কামার আয়াত ৪৯

"-----তিনি সমস্ত কিছু সৃষ্টি করিয়াছেন এবং প্রত্যেককে পরিমিত করিয়াছেন যথাযথ অনুপাতে।" সূরা আল-ফুরকান, আয়াত ২

"One can take this either as  evidence of a divine purpose in Creation." পৃষ্ঠা-  ১৩২। এই প্রমাণ পাবার পরও হকিং মাইন্ড অফ গড বুঝতে পারলেন না!

জানিনা, পবিত্র কোরআন পড়লে হকিং তার নাস্তিক‍্য মতবাদ থেকে সরে আসতেন কিনা, নাকি তার হৃদয় মোহরকৃত হয়ে গেছিল! পোস্টের আয়তন বেড়ে যাচ্ছে দেখে অনেক কিছু জিনিস না লিখে এখানেই ইতি টানলাম।

এই পোস্টে মহাবিশ্ব সম্পর্কে বিংশ শতাব্দীতে  অর্জিত অনেক জ্ঞান পবিত্র কোরআনের কোথায় কোথায় আছে আমি তার উল্লেখ করেছি। পোস্টে উল্লেখিত বিষয়ে কারো কোন জিজ্ঞাসা থাকলে  তার উত্তর দেবার চেষ্টা করব, কিন্তু কোনো অপ্রাসঙ্গিক মন্তব্যের উত্তর আমি দেব না।

সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪২
৩৪টি মন্তব্য ৩৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×