জাতীয়তাবাদ জিনিষটা ভালোই … দেশের আপামর আবাল ছাবাল থেকে শুরু করে বালক বৃদ্ধ সবাইকে বেশ চাঙ্গা রাখা যায় … ঋষি সুনাকের ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হওয়াকে কেন্দ্র করে ভারতীয়দের ব্রিটেন শাসনের আত্মশ্লাঘা দেখে সেটা বেশ ভালোভাবেই ঠার পাওয়া যায় … দুনিয়ার হাওয়া বদলে গেছে… “যে ব্রিটিশ ভারতকে ২০০ বছর শাসন করে গেলো আজ সেই ব্রিটেনকে শাসন করছে এক ভারতীয় “, ভারতীয়দের মনোভাব অনেকটাই এরকম … তাই নিয়ে কি আনন্দ আর গর্ব তাদের … দেখতে বেশ মজা লাগছে… ভুলেও এরা হয়তো জানবে না বা স্বীকার করতে চাইবে না যে এই ঋষি সুনাক আদপে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ হলেও আসলে সে স্বার্থরক্ষা করবে ব্রিটেনের, ভারতীয়দের নয়… এর দ্বারা অন্ধ জাতীয়তাবাদের মাদকতায় আচ্ছন্ন ভারতের কোনও কিছুই প্রাপ্তি ঘটবে না দিনশেষে … ঋষি একটা বিশেষ রাজনৈতিক অবস্থার সুযোগে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীত্ব পেয়ে গেছে… ব্যাপারটা কোনোদিন এমন নয় যে ব্রিটিশরা আজ ভারতের অধীনত্ব স্বীকার করে তাকে বরণ করে নিল বা আজ থেকে সে ব্রিটেনের রাজা হয়ে গেলো… নৃতাত্ত্বিকভাবে সে ভারতীয় বংশোদ্ভূত হলেও তার সমস্ত দায় দায়িত্ব ব্রিটেনকে ঘিরে, ভারতকে ঘিরে নয়, এবং তার প্রতিনিধিত্বও হবে ব্রিটেনের বা ব্রিটিশদের, ভারতের নয়.. সে যদি পরবর্তীতে ব্রিটেনের স্বার্থ ঠিকমতো দেখভাল না করতে পারে তাহলে তাকেও অন্যান্যদের মতো সরে যেতে হবে… এবং সে সরে যাওয়াটা অসম্মানজনকও হতে পারে… এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার রাষ্ট্রপতি হওয়া নিয়ে এদেশের অনেক মুসলিমদের আত্মশ্লাঘা আনন্দ দেখেছিলাম সেসময়, যেন মুসলমান শাসন করতে চলেছে আমেরিকা, বা অন্যদিকে কেনিয়ানদেরও কি আনন্দ যেন তারাই আজ আমেরিকা শাসন করছে… ওবামা আদ্যোপান্ত স্বার্থরক্ষা করে গেছেন মার্কিনদেরই, মুসলমানদেরও নয় বা ঐ কেনিয়ানদেরও নয়… আর এইসব ভারতীয়দের ঠুনকো আত্মভিমানের বেলুন এসব বাস্তবতাকে স্বীকার করবে না সেটা তো ভালো করে জানিই, আমার এই লেখা দেখে এদেশেরও অনেক ভারতপ্রেমীর মনে যে দারুণ চুলকানি হবে সেটাও জানি।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে অক্টোবর, ২০২২ রাত ১১:৪৬