গোলাম আযমের পুত্র হওয়াটা ঠিক কোনও অপরাধের পর্যায়ে পড়ে না যদিও কিন্তু একজন স্বঘোষিত স্বাধীনতা বিরোধীর ছেলে হিসেবে তার ওপর তার পিতার কৃতকর্মের কালোছায়া এসে পড়বে অটোম্যাটিক...... কিন্তু সেটা সত্যিকার অর্থে আসল কথা নয়...... যেটা আসল সেটা হচ্ছে - সে কি তার পিতার কর্তব্যের কারণে লজ্জিত ? সে কি তার পিতার রাজনীতি ও আদর্শ সমর্থন করে ? সে কি একাত্তরে তার পিতার কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত ও ক্ষমাপ্রার্থী? জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি সে কি সমর্থন করে আজও না তার বিরোধিতা করে? একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধের প্রশ্নে তার অবস্থান আসলে কার পক্ষে? পাকিস্তানের পক্ষে না বাংলাদেশের পক্ষে?
আপাতত এই প্রশ্নগুলোর সদুত্তর জরুরী জাতির নিকৃষ্টতম কুলাঙ্গারের সন্তান এই আমান আজমীর কাছ থেকে।
অবশ্য এই প্রশ্নগুলোর উত্তর ঢের ভালো জানা আছে।
কিন্তু এই প্রশ্নগুলোর উত্থাপন করলাম একটাই কারণ, একাত্তরের প্রশ্নে তার অবস্থান কি সেটা পরিষ্কার করার জন্য।
যেটা স্পষ্ট করে বলার দরকার সেটা হল কারো অপরাধের জন্য তার পুত্রকে শাস্তি দেয়ার বিধান কোনও আইনে নেই। আমান আজমীর সাথে হাসিনার সরকার যা করেছে সেটা সমর্থন করা যায় না, কারণ সেটা বেআইনি।
কিন্তু সে এমন এক কুলাঙ্গারের সন্তান যে কুলাঙ্গারের অপকীর্তির নিকষ কালো ছায়ায় তাকে থাকতে হবে আজীবন। তবু কথা হচ্ছে তাকে তার অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে।
নিজের জাতির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা, স্বাধীনতার যুদ্ধে স্বজাতির বিরুদ্ধে অবস্থান এমন এক বিষয় যেখানে আপোষরফার কোনও বিষয় নেই, কোনও সুযোগ নেই। স্বাধীনতার যুদ্ধে আপনার অবস্থান কার পক্ষে ছিল সেটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। হয় আপনি আমাদের পক্ষে নয়তো তাদের পক্ষে। মাঝামাঝি কিছু নেই। এটা শুধু স্বাধীনতা যুদ্ধ কেন, দেশের যে কোনও স্বার্থের প্রশ্নে একই কথা।
এই জায়গায় আওয়ামী লীগ, বি এন পি বা জামাত সবচেয়ে বড় প্রশ্ন নয়।
কিন্তু যাই হয়ে থাকুক না কেন, একাত্তর আমাদের জন্য এমন এক প্রশ্ন যেখানে কোনও আপোষ গ্রহণযোগ্য নয়। থাকতে পারেনা।
এবং একই সাথে এটাও ম্যাটার করেনা যে ঐ সময় আপনি অস্ত্র হাতে দেশের পক্ষে যুদ্ধ করেছেন কি না। তখন দেশের অনেকেই নানা কারণে অস্ত্র হাতে দেশের পক্ষে যুদ্ধ করতে পারেনি। তাই বলে তারা স্বাধীনতা বিরোধী হয়ে যায়না।
সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হল, একাত্তরে আপনার অবস্থান কার পক্ষে ছিল? এবং তার পরে আপনার কর্মকাণ্ড কার পক্ষে ছিল?
আর আজই বা আপনার অবস্থান কার পক্ষে?
প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যেতে পারে প্রখ্যাত লেখক ডঃ হুমায়ূন আজাদের একটি কথা – “ একবার রাজাকার মানে চিরকালই রাজাকার, কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা মানে চিরকাল মুক্তিযোদ্ধা নয়।“
অতীতে আমরা জিয়াউর রহমানের উদাহরণ দেখেছি। আর হাসিনার উদাহরণ তো আজ চোখের সামনেই আছে।
দেশের স্বার্থের প্রশ্নে কারো কোনও ছাড় নেই।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৪০