
গতকাল ১০ই নভেম্বর উপদেষ্টা হিসাবে বঙ্গভবনে শপথ পাঠ করেন জনপ্রিয় নির্মাতা মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী।শপথের পর তাকে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।এর আগে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। সাম্প্রতিক সময়ে শিল্প কলা একাডেমী তে নাটক বন্ধ করে দেয়া, নাট্যকর্মীদের উপর ডিম মারা সহ নানাবিধ বিব্রতকর পরিস্থিতির যৌক্তিক সমাধানে সংস্কৃত মন্ত্রনালয়ের কার্যক্রম বেগবান করতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
মোস্তফা সরোয়ার ফারুকীর নিয়োগ নিয়ে বড়ো কোন রাজনৈতিক দলকে আপত্তি করতে দেখা যায় নি। তবে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের এর প্রতিবাদে মিছিল করতে দেখা গিয়েছে। বাংলাদেশের সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েজা পিনাকী ভট্টাচার্য ফারকী সাহেবের উপদেষ্টার হওয়ার ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করেছেন। ইউটিউব চ্যানেলে ফারুকীর পূর্বের ফ্যাসিস্ট সরকারের সাথে সখ্যতার কিছু আলামাত জাতির উদ্দেশ্যে শেয়ার করেছেন। মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী জুলাই বিপ্লবের সময় আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুমের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। পুরষ্কার স্বরুপ তাকে উপদেষ্টা হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে গুঞ্জন রয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়াতে উপদেষ্টা ফারুকীর বিগত সরকারের সাথে সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা সমালোচনা চলছে। বিভিন্ন সময়ে শেখ হাসিনা এবং শেখ মুজিবুর রহমানের প্রশংসা করে ফেইসবুকে পোষ্ট, বিগত সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী এমপি দের সাথে স্ত্রী সহ ছবি তোলা, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যাওয়া ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়েছে। মুজিব:জাতির রূপকার নামে বিতর্কিত চলচ্চিত্রে ফারুকীর ওয়াইফ তিশার অভিনয় নিয়ে অধিকাংশ মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
মোস্তফা সরোয়ার ফারুকীর সাথে প্রথম আলোর সাংবাদিক ও লেখক আনিসুল হকের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী মূলত শহর কেন্দ্রিক নাটক নির্মাণ করতেন। বাংলাদেশে বিনোদনের প্রধান উৎস হিসাবে নাটক খুব জনপ্রিয় । মোস্তফা সরোয়ার ফারুকীর নাটকের মূল দর্শক ছিলো কিশোর থেকে সদ্য পদার্পণ করা তরুণেরা। নাটকের মধ্যে যৌন সুড়সুড়ি টাইপ কথা, রুম ডেইট কালচার প্রথম তুলে আনেন মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী। তার নাটকে বাংলাদেশের রাজনীতি, সামাজিক সমস্যা পরকীয়া, প্রতারণা সহ সমাজের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হত। মেইড ইন বাংলাদেশ, টেলিভিশন, ডুব সহ বিভিন্ন স্বনামধন্য ছবির নির্মাতা ফারুকী।
মোস্তফা সরোয়ার ফারুকীর নাটক ও সিনেমায় নারী পুরুষের প্রেম কে নতুন আঙ্গিকে দেখানো শুরু হয়। পশ্চিমা সংস্কৃতিতে প্রেমের শারীরিক বিষয়টি প্রধান্য পেলেও বাঙালি সংস্কৃতি তে প্রেম কে মানসিক হিসাবে দেখানোর প্রয়াস ছিলো সবসময়। ফারুকী সে প্রথা ভেঙে প্রেম মানেই নারী পুরুষ এক সাথে ঘুমানোর ধান্দা নাটকের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রথম প্রকাশ্যে আনেন। মানুষের ধর্মীয় গোঁড়ামি,সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস না করা ফারুকীর নাটকে বারবার উঠে এসেছে; সম্পর্কে থাকাকালীন অন্য সম্পর্কে জড়ানো, ছাত্র-শিক্ষিকা প্রেম, জাস্ট ফ্রেন্ড, অন্য ব্যক্তির প্রেমিক-প্রেমিকা ভাগিয়ে নিয়ে যাওয়া এসব বিষয়ে মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী অসংখ্য নাটক নির্মাণ করেছেন।
বাঙালি সংস্কৃতি তে পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রবেশ যার মাধ্যমে ঘটেছিল তাকে উপদেষ্টা নিয়োগ দিলে বিতর্ক সৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক। সকল বিতর্ক পেছনে ফেলে মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী বাংলাদেশের সংস্কৃতি রক্ষায় অবদান রাখবেন এই প্রত্যাশা সুধীমহলের।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



