somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অন্তবর্তীকালীন সরকার কি দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে?

১২ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জুলাই বিপ্লবের পর বাংলাদেশের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ইন্ট্রাম সরকার নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে নতুন প্রাণের সংঞ্চার হলেও তিন মাস পর তা অনেক টাই কমে গিয়েছে। ইন্ট্রাম সরকার সমর্থিত ছাত্র সংগঠন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য দের প্রতি সমাজে বিরক্তি কাজ করছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফিরে আসার পাঁয়তারা করছে। দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। প্রতিদিন বিভিন্ন আজাইরা আন্দোলনে সচিবালয় ঘেরাও হচ্ছে। বিভিন্ন দাবী দাওয়া নিয়ে পেশাজীবী সংগঠন রাস্তায় হাঙ্গামা করছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত আনার কথা বলে হিন্দু-মুসলিম পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে;মারামারি করছে। বিএনপি সহ অন্যান্য দল গুলো সরকার কে দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার করে নির্বাচন দেয়ার জন্য চাপ বাড়াচ্ছে।

ইন্ট্রাম সরকার দেশের পরিস্থিতি নিয়ে তেমন বিচলিত নয় বলে মনে হচ্ছে। ইন্ট্রাম সরকারের সদস্য গঠন হতে শুরু করে কোন উপদেষ্টা কোথায় নিয়োগ পাবেন সে সিদ্ধান্ত কারা নিচ্ছেন তা নিয়ে জনমনে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। এই সরকার একদিকে প্রেসিডেন্ট ও সংবিধান বাদ দিতে চায় অন্যদিকে সেই সংবিধানের আলোকে সব কাজ পরিচালনা করছে। সরকারের উপদেষ্টা গণ নির্বাচনের চেয়ে সংস্কার বেশি জরুরি বারবার এই কথা বলে আসছেন। নিজেদের ক্ষমতায় পাকাপোক্ত ভাবে বসার জন্য বর্তমান সরকার নতুন অধ্যাদেশ জারী করতে যাচ্ছে। এই অধ্যাদেশ অনুযায়ী সরকারের কোনো কর্মকান্ড নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারবে না, সরকার যা যা করবে সব বৈধ ও প্রেসিডেন্ট প্রধান উপদেষ্টার পরামর্শ ছাড়া বড়ো কোন ডিসিশন নিতে পারবেন না। সরকারের মেয়াদ অনিদিষ্ট এবং নির্বাচিত সরকার আসার আগ পর্যন্ত ইন্ট্রাম সরকার দায়িত্ব পালন করবে বলে অধ্যাদেশে উল্লেখ রয়েছে।

রাজনৈতিক দল বিএনপি, আইনজীবী, সাংবাদিক, সোশ্যাল মিডিয়া সহ রাজনৈতিক সচেতন মানুষের মধ্যে নতুম অধ্যাদেশ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিএনপির সিনিয়র নেতারা ইন্ট্রাম সরকার ১০/২০ বছর ক্ষমতায় থাকার ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করছেন।বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন ও ব্যক্তিরা সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দিহান। সরকারের সব কাজ কে দায়মুক্তি দেয়ার কারণ তাদের কাছে পরিষ্কার নয়।

ইন্ট্রাম সরকারের তিন মাসে সংস্কার কার্যক্রম তেমন দৃশ্যমান নয়। সরকারের ভিতর বিএনপি ও জামাত সমর্থিত আমলা দের মধ্যে চলছে গুরুত্বপূর্ণ পদ দখলের লড়াই ; ইন্ট্রাম সরকারের দায়িত্বে থাকা উপদেষ্টা গণ দেশ পরিচালনায় অভিজ্ঞতা নেই বিধায় আমলাদের উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল । ফলে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে যা মূলত আমলাদের সিদ্ধান্ত ।

ইন্ট্রাম সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পাওয়ার হাউস বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন সংগঠনের সাথে সরকারের দূরত্ব বাড়ছে। ফলে সরকারের মাসল পাওয়ার দিন দিন কমে যাচ্ছে।বড়ো রাজনৈতিক দল বিএনপি সরকারের উপর থেকে তাদের সমর্থন উঠিয়ে নিয়েছে। অন্যদিকে জামাত সরকারের পাশে থাকলেও তা যথেষ্ট নয়।

ইন্ট্রাম সরকার দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকলে সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাবে সদ্য ক্ষমতাচ্যুত দল আওয়ামী লীগ;এরপর জামাত। বিএনপি ক্ষতিগ্রস্থ হবে।পরিস্থিতি দ্রুত অনুধাবন করে বিএনপি সহ কয়েকটি দল সরকার কে প্রয়োজনীয় সংস্কার দ্রুত করার তাগিদ দিচ্ছে। অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরা সংস্কারের আগে কোন নির্বাচন নয় এমন দাবী জানিয়ে আসছে। ইন্ট্রাম সরকার কে ক্ষমতায় বসানো বিভিন্ন শক্তির মধ্যে অনৈক্য সৃষ্টি হয়েছে যা এই সরকারের দূর্বল সিদ্ধান্তের জন্য দায়ী।এই ভাবে চলতে থাকলে অচিরেই ইন্ট্রাম সরকার কে সাপোর্ট দেয়ার জন্য কোনো শক্তি কাজ করবে না বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪০
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×