somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঐ পুরুষটি

১৮ ই নভেম্বর, ২০১০ সকাল ১০:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাতে প্রচণ্ড গরম ছিল বলে ঘুম ভাল হয়নি। তাই সকালে ঘুম ভাঙ্গতেও দেরী হল। চোখ খুলে থাকতেই এক পশলা সোনালী আলো এসে চোখ ধাঁধিয়ে দিল। মুখ ফিরিয়ে অন্য দিকে তাকাতেই অনুভব করলো হাসিনা, বেশ বেলা হয়ে গেছে। অন্যদিন হলে এতক্ষণে ওর একবার চা খাওয়া হয়ে যেত এবং ওর কাজের বুয়া বানু এসে ঘুম ভাঙ্গিয়ে চা দিয়েও যেত। কিন্তু আজ....? তবে কি বানু আসেনি? চিন্তিত ঘুমে বিছানা ছাড়ে হাসিনা। শোবার ঘর ছেড়ে রান্না ঘরে এসে দেখে বানু নেই। তার মনেও আসেনি। কয়েক দিন ধরে ওকে খুব মন মরা দেখেছে। তবে কি ওর কিছু হলো?
ভাববার আর অবকাশ পেল না ও কারণ রাজ্যের কাজ পড়ে আছে। সকালে নাস্তা, বাচ্চাদের স্কুলে পাঠানো, সাহেবকে অফিসে পাঠানো পর্যন্ত সবকিছু হাতরে কাছে তৈরী করে দেয়া। অল্প সময়ে এতসব কাজ এক হাতে সামলাতে হবে, এখন ভাবতেই চঞ্চল হয়ে উঠলো ও। সকলেই একে একে বেরিয়ে গেলে হাসিনার মোটামুটি একটু অবসর মেলে। হাসিনার বাড়ির পেছনের বস্তিতে থাকে বানু। সকালে আসে, রাতে ভাত নিয়ে চলে যায়। ওর স্বামী বিক্সা চালায় । সারাদিন বাসায় আসেনা। ওদের বিয়ে হয়েছে অনেকদিন, প্রায় দশ বছর। অথচ ছেলে মেয়ে হয়নি । বানু এবং ওর স্বামীদুজনেরই শরীর স্বাস্থ্য ভাল, কারণ ওর স্বামীআজ কাল সন্তান না হওয়ার জন্য ওর ওপর খুব অত্যাচার করে।
অনেক দিন ধরে বানু এই বাসায় কাজ করছে। শান্ত, সহজ-সরল মেয়েটির ওপরে কেমন মায়া পড়ে গেছে হাসিনা বেগমের, বানুর খোজ নেবার জন্য ঘরে পরা শাড়ীটা বদলে বাড়ী থেকে বেরিয়ে পড়ে হাসিনা।
এই বস্তিতে দুই/একবার এসেছে হাসিনা। বস্তির পরিবেশ খুব নোংরা বলে খুব প্রয়োজন না পড়লে ও আসে না। সব থেকে খারাপ লাগে ওর বস্তির ভেতরে একটি টিউবওয়েল, সেই টিউবওয়েলের সামনে কেউ বাসন মাজছে, কেউ পানি নিচ্ছে, পুরুষেরাও ওখানে উদোম গায়ে গোসল করছে আবার মেয়েরাও সেখানে বসে বাসন মাজছে আর হেসে হেসে গড়িয়ে পড়ছে। পাশেই সেই ড্রেনের ধারেই উদোম কোন ছেলে হয়তো পায়খানা করছে।
কোন রকমে নাকে আঁচল চেপে জায়গাটি পেরিয়ে বানুর ঘরের সামনে এসে দাঁড়ায় হাসিনা। ঘরের দরজা ভেজানো দেখে বাইরে থেকেই বানুকে ডাকে। কয়েকবার ডাকার পর বানু বেরিয়ে আসে। পরনের শাড়িটি কোন মতে জড়ানো, মাথার চুল এলো মেলো, চোখ-মুখ শুকনো ওর দিকে তাকিয়ে চমকে ওঠে হাসিনা। জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে বানু? তোর কি শরীর খারাপ?
ঘরের সামনে মাটির মেঝের ওপর ধপ করে বসে পড়ে বানু কাদঁঁতে থাকে।
হাসিনা ওকে সামলে নেবার জন্য কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে। কান্নার রেশ কমতেই প্রশ্ন করে, কী হয়েছে তোর?
আপা তো আমারে মাইরা কিছু থোয়নি আপা। আমার সারা শরীর মাইরা ফাটায় দিয়েছে শয়তান। এই দেখেন........... বলে পিঠের কাপড় সরায় বানু।
চমকে ওঠে হাসিনা। বানুর সারা শরীরে কালশিঠে মারের দাগ। বানুর কান্নারত মুখের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করে হাসিনা, কোন মেরেছে? কী করেছিস তুই?
আমার যে পোলাপান হয়না আপা। হের জন্য তো সবসময় বকাবকি, মাইর ধোর করে, এখন আবার বিয়া করাবার চায়। আমি রাজী হইনা হের লাইগা এখন মাইর ধোর শুরু করছে।
কী বলছিস? হাসিনা অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে বানুর দিকে।
বানু কাঁদতে কাঁদতে বলে, আপনে কন আপা হেয় বিয়া করলে তো আমারে ছাইড়া দিব আপা। আমি তখন কই যামু আপা। আমি তো হের ছাড়া থাকবার পারুম না । হেই যদি এহন বিয়া করে তো আমার কী হইবো? আবারো কাঁদেেত থাকে বানু।
হাসিনা ওকে সান্ত্বনা দেবার ভাষা হারিয়ে ফেলে। কিছুক্ষণ চুপ চাপ বানুর কান্না দেখে তারপর দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে আচ্ছা শোন, তুই দুই একদিন বাসায় থেকে সুস্থ হয়ে নে তারপর বাসায় আসিস কেমন। কথাটা বলে আনমনে বস্তি ছাড়ার জন্য পা বাড়ায় হাসিনা।
কয়েকদিন পর যথারীতি কাজে আসে বানু। কিন্তু সবসময় মনমরা হয়ে থাকে। দম দেয়া পুতুলের মত কাজ করে যায়। কথা বললে ভাল করে জবাবও দেয়না। ওকে অমন নিসপ্রাণ দেখে হাসিনা জিজ্ঞেস করে কী রে কি হয়েছে তোর? সব সময় এমন মনমরা হয়ে থাকিস কেন?
নিষপ্রাণ কন্ঠে জবাব দেয় বানু, ভাল লাগেনা আপা। দিন দিন ঘরের মানুষটা কেমন যেন বদলাইয়া যাইতাছে। ওহন রাইতেও ঠিকমত বাড়ী ফিরেনা। আমার লগেও কথাবার্তা ভাল কইরা কয়না। কিছু জিগাইলে দারড়ানি দেয়। আর কথায়, কথায় গায়ে হাত দেয়। বিয়া করবার জন্য পাগল হইয়া গেছে। শেষ মেষ বিয়া করবোই বোধ হয়?
চমকে ওঠে হাসিনা, বানুর কথায়। বলে, তুই তাহলে কি করবি?
হেইডাই তো ভাবি। ঐ তো একটা ঘর। সতিনের সঙ্গে এক ঘরে তো থাকবার ও পারুমনা আবার ওরে ছাইড়া যাইতেও পারুম না। তেণারে কউছি যেন বিয়া কররবার পরে আমারে তালাক না।
সে কি? মত দিয়ে ফেলেছিস?
কী করুম কন। মত না দিলেও আমারে তালাক দিত। তাইতো বিয়ার মত দিলাম পরশু বিয়া। আঁচলে চোখ মুছে সামনে থেকে উঠে চলে যায় বানু।
এরপর বানুর মুখেই শুনেছে হাসিনা, ওর স্বামীএকটি অল্প বয়সী মেয়েকে বিয়ে করেছে। বানু হাসতে হাসতে ওর স্বামীআর অল্প বয়সী বউটির আমোদ-আহল্লাদের গল্প করেছে। ওদের এক সঙ্গে সিনেমা যাওয়ার গল্প করেছে। ওর হাসির মধ্যে গভীর বিষাদের ছায়া দেখেছে হাসিনা। কথার মধ্যে ঈর্ষা নয়, সব হারানোর আর্তি লক্ষ্য করেছে। কিন্তু তার মাঝেও স্বামীধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চোখ এড়ায়নি হাসিনার। বানুকে জিজ্ঞেস করেছে হাসিনা, হ্যাঁরে তুই থাকিস কোথায়? তোদের তো ঐ একটি ঘর?
কই থাকুম আপা বারান্দায় থাকি। রাতে চট ঝুলাইয়া ঘেরা দিই।
সেকি! চমকে উঠে হাসিনা। তুই একটা সোমত্ত্ব মেয়ে বাইরে একা থাকিস? কেন কারো ঘরে তো থাকতে পারিস? সকলে তো স্বামী ছেলে পেলে নিয়ে থাকে, কার লগে থাকুম কন? মুখ নীচু করে বলে বানু, রাইতে খুব খারাপ লাগে আপা। ঘুমাইতে পারিনা। নতুন বউরে লইয়া স্বামীসারা রাত আমোদ-আহলাদের কথা কয় ফিস্ ফিস্ কইরা। দুজনের হাসি শুনি, রঙ্গ রসের কথা শুনি। সইবার পারিনা কইলাজাডা পুইড়া ছারখার হইয়া যায়। চোখের পানিতে সারাটা রাতও ভাসি। ছোট বেলার প্রথম স্বামীওরে আমি কেমনে ভুলি কন? আমারে কত আদর স্নেহ দিয়া বড় কইরা তুলছে। যখন স্বামীকী জিনিষ বুঝিনি তখন সে আমারে ভালবাসতে শিখাইছে আর এখন ভালবাসতে শিখছি এখন সে আমারে ফেলাইয়া দিল। পুরুষ মানুষ কেমনে পারে সব ভুলতে, কন তো আপা। পোলাপান হয়না এইটা কি আমার দোষ?
বানুর কথায় হাসিনার চোখ ভিজে যায়। কি জবাব দেবে ও বানুর কথার।
পৃথিবীতে সব সংসারে, সব সমাজে পুরুষেরা এমনি অত্যাচারি, আর নারীদের অবস্থান এমনি নড়বড়ে। পুরুষ তান্ত্রিক সমাজে এর প্রতিকার করা কি আদৌ কোনদিন সম্ভব? বানুর কথায় জবাব দিতে পারেনা চোখ মুছে বানুর সামনে থেকে উঠে যায় হাসিনা।
কয়েক দিন পর, সন্ধ্যার সব কাজ শেষ করে মলিন মুখে হাসিনার সামনে এসে দাঁড়ায় বানু।
--ওর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে হাসিনা, কিরে তোর কাজ শেষ? বাড়ী যাবি?
- আপা আপনারে একটা কথা কইতে চাইছিলাম, নত মুখে বলে বানু।
--কি বলবি বল না?
-- আপা আমি রাইতে বাড়ীতে যাইবার চাইনা। আপনে যদি এই বাড়ীতেই আমারে রাইতেও থাকতে দিতেন?
---সেকিরে? হাসি মুখে বলে হাসিনা। রাতে বাড়ী যাবিনা তোর স্বামী রাগ করবে না।
--রাগ করবো কেন? আমার লগে ওর কী? আমি থাকলেই বা কি আর না থাকলেই বা কি। আমি তো ওর শত্রু বরং না থাকলেই ও খুশি।
একথায় বলছিস কেন? তুই ওকে বিয়ে দিলি, নিজের ঘর ছেড়ে দিলি, তুই কি ওর শত্রু হতে পারিস? একজন বউ এটা পারে বলতো?
হসিনার কথায় ঝরঝর করে কেদে ফেলে বানু। কাঁদতে কাঁদতে বলে, হেইডাই তো কাল হইছে আপা। ভাল মানুষি কইরা বিয়া দিছি বইলাই তো আজ আমারে দেখবার পারে না। আমার মুখ নাকি হের দেখবার ইচ্ছা করেনা। আমার দিকে তাকাইতেও নাকি ওর ঘেন্না লাগে। আমারে বাইর হইয়া যাইতে কয়।
বানুর মুখেল দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে বলে হাসিনা, তোর স্বামীবলেছে একথা।
তোর দিকে তাকাতে ঘেন্না লাগে।
হ আপা, মথা নীচু করে বলে বানু। কাইল রাইতে ভাত খাওনের পর ছোট বউ কলের পড়ে গেলে আমি চুপ করে ঘরে যাই। আমার স্বামীতখন বিছানায় পান খাইতেছিল আর কেসেটে গান শুনছিল। আমাকে দেইখা চোখ বড় বড় করে জিগাইল, হেই তোর এখানে কি? কেন আইছস ঘরে?
আমি কইলাম হুন, অনেক দিন তো হইল তুমি আমার কাছে যাওনা। আইজ রাইত আমার কাছে থাক না কেন? কি কি কইলি? লাফ মেরে চকি থাইকা নাইমা অমারে মারতে আসে। বলে তোর কাছে থাকুম আমি। যা ঘর থাইকা। বইল ঘাড় ধইরা আমাকে বাইর কইরা দেয়। চিল্লনি শুইনা ছোট ছোট বউ আমার ঘর সামনে আইসা দাঁড়ায়। আমার চোখের সামনে আমার স্বামীওর হাত ধরে ঘরে ঢুকাইয়া দরজা লাগাইয়া দেয়। সারা রাইত আমি বরান্দয় হীমের মইধ্যে বইয়া থাকি। ঘুমাইতে পারিনা। বুকের মইধ্যে আগুন জ্বলে আর চোখের পানিতে বুক ভাইসা যায়। আমি তো মাইয়া মানুষ আপা, আমার শরীরটা তো বুঝবার চায়না যে এতদিন যার আদর সোহাগ সে পাইছিল আজ আর হেইডা পাওয়া ওর অধিকার নাই। এই শরীলটা দেইখা এখন ওর ঘেন্না লাগে। কিন্তু আমি এখন কি করুম কন দেখি আপা? কই যামু? কার কাছে যামু। আমি যে আর কারো কাছে যাইবার কথা ভাববার ও পারিনা।
বানুর কান্না দেখে আর ওর কথা শুনে মনটা খারাপ হয়ে যায় হাসিনার। সত্যি তো পুরুষরা আনায়াসে সব ভুলে যেতে পারে নতুন দেহ, মন ভালবাসা পেলে ওরা আনায়াসে পুরানো অস্তিত্বকে ঝেড়ে ফেলতে পারে কিন্তু নারীরা কি পারে? এতদিনের লালন করা ভালবাসা আর একজনকে দেয়া এই শরীর আনায়াসে আরেকজনের হাতে তুলে দিতে? কক্ষনো পারে না।
বানুকে সান্তনা দিয়ে বলে হাসিনা, শোন হুট করে কোন সিদ্ধান্ত নিসনা। তোর স্বামী, তোর সংসার এত সহজে ছাড়বি কেন? ঐ বাড়িতে তোরও তো অধিকার আছে। বানুকে বুঝিয়ে ওর বাড়িতে পাঠায় হাসিনা।
পরের দিন সকালে বানু কাজে আসে না। অনেকক্ষণ বানুর জন্যে অপেক্ষা করে কাজে হাত লাগায় হাসিনা। কাজের ফাঁকে ফাঁকে অনমনা হয় ও। বানু আজ এলো না কেন? যদিও আজকাল সবসময় মনমরা হয়ে থাকে ও কিন্তু কাজে কখনো ফাঁকি দেয় না। কাল রাতে যাবার সময়ও খুব কাঁদছিল স্বামীদুর্ব্যাহারের জন্য। রাতে আবার মার ধোর কিছু করলোনা তো? বানুর আমঙ্গল আশংকায় মনটা অস্থির হয় হাসিনার।
সব কাজ গুছিয়ে নিয়ে বস্তির উদ্দেশ্য বেরিয়ে পড়ে হাসিনা। বস্তির ভেতরে আসতেই গোলামাল কানে আসে ওর। ছড়িয়ে ছিটিয়ে মানুষ জনের জটলা চলছে। ওকে দেখে সকলে কেমন মুখ চাওয়া-চাওয়ি করে সরে যায়। কিছু বুঝতে পারেনা ও। কেউ কিছুই বলে না তবুও বুকটা কেঁপে ওঠে ওর অমঙ্গল আশংকায়। বানুর ঘরের সামনে এসে দাঁড়াতেই ভয়বাহ দৃশ্যেটি চোখে পড়ে হাসিনার। বারান্দায় উঁচু একটি বাঁশের সঙ্গে রশি বেধে গেলায় ফাঁস দিয়েছে বানু। মাটি থেকে সামান্য একটু উঁচুতে বানুর পা দু’টো ঝুলছে। পাশে ওর অল্প বয়সি বৌটা মুখে আঁচল চেপে দাঁড়িয়ে আছে।
হাসিনা মুখ ফিরিয়ে আবার তাকায় বানুর ঝুলন্ত শরীরটির দিকে। নিজের অজান্তে চোখ দু’টো জ্বালা করে ওঠে। মনে মনে বলে হায় হতভাগী এইভাবে তোর শরীরের আর মনের জ্বালা জুড়ুালি। বাঙ্গালী মেয়েদের বোধহয় সব সমস্যার সমাধান এই একটি পথই জানা। নিজের কাছেই নিজেকে বড় অপরাধি মনে হয় হাসিনার।
কাল বানু ওর বাড়িতে আসতে চায়নি। হাসিনার কাছে থাকতে চেয়েছিল। হাসিনা যদি থাকতে দিত তা হলে বোধ এমনি করে ও জীবন দিত না। কিন্তু হাসিনা চেয়েছিল বানু তার ঘর-সংসার স্বামীএদরে মাঝে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করুক। এত সহজে সে সবকিছু ছাড়বে কেন? কিন্তু বানু রাতের আঁধারে স্বামীর সঙ্গে অন্য রমনীর ভোগ বিলাসের মুহূর্তগুলোকে মেনে নিতে পারেনি, বোধ হয়। ওর শরীর আর মনে হয়তো জ্বালা ধরিয়ে দিয়েছিল তাই সব কষ্ট, সব যন্ত্রণা ভুলতে এই পথই বেছে নিয়েছিল।
দু’চোখের জলের ধারাকে কিছুতেই থামাতে পারে না হাসিনা। বানুর ঐ ঝুলন্ত শরীরটির দিকে তাকিয়ে থাকতে, ওর ভেজা চোখে অগুন জ্বলে উঠে। আর ঐ পুরুষটি! মুখ ফিরিয়ে বানুর স্বামীর দিকে তাকায় হাসিনা। যে পুরুষটির সুখের জন্য শুধুমাত্র একটি সন্তান দেবার জন্য নিজের গড়া এই ঘর, এই সংসার ভালবাসার মানুষটিকে পর্যন্ত আর একজনের হাত তুলে দিয়েছিল। সেই পুরুষটি কি পারতোনা ঐ নারীর এতবড় ত্যাগের মুল্য দিতে। কিন্তু অকৃতজ্ঞ ঐ পুরুষটি তা না করে বরং আবহেলা আর উপেক্ষার বিষে ওর জীবনকে জর্জরিত করে তুলেছিল। বস্তি ছেড়ে যাওযার জন্য পা বাড়ায় হাসিনা। বানুর স্বামীসামনে গিয়ে একটু দাঁড়ায়। ভেজা চোখে আগুন ছড়িয়ে তাকায় ঐ পুরুষটির দিকে। নিজের অজান্তে মুখ থেকে এক দলা থু থু পুরুষটির সামনে তারপর দ্রুত পায়ে বস্তি ছেড়ে।
সমাপ্ত
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৬

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট



পানি জীবনের মূল উৎস। এটি ছাড়া কোনো প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন:

وَجَعَلۡنَا... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×