somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সঞ্চিত অভিজ্ঞতার নোট -০৪

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ৭:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বন্ধুর কৃতজ্ঞতা ও থ্রি ডাব্লিউ।
--------------------------------------
শিক্ষা একটি পণ্য নাকি সেবা (Product or Service) নাকি উভয়ই (Both) হিসাবে অভিহিত করা যায় ? সেটা নিয়ে দ্বিমত থাকতে পারে। পক্ষে বিপক্ষে যুক্তি থাকতে পারে। আবার মেধা পাচার (Brain drain) নাকি মেধা অর্জন (Brain gain) সে নিয়ে তর্ক থাকতে পারে। তবে মোদ্দাকথা বর্তমানে মুক্ত অর্থনীতির (Open Economy) যুগে শিক্ষা যে কেবল বানিজ্যের (Profit Businesses) একটি লাভজনক শাখা সেটা নিঃসন্দেহে বলা যায়।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায় ২০০৯ সালে পুরো বিট্রেন জুড়ে অর্থনৈতিক মন্দ (Recession) শুরু হয়, আর মন্দা কাটাতে তৎকালীন লেবার সরকার বিভিন্ন দেশ থেকে স্টুডেন্ট নিয়ে আসার রাস্তা সহজতর করে।
ভাবতে পারেন মন্দা কি? বৃটেনে পর পর দু'টি অর্থ বছরে বিরূপ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির বা নিম্নমুখী প্রবৃদ্ধির হারকে অর্থনৈতিক মন্দা বুঝায়। যার ফলে মানুষের ক্রয়- ক্ষমতা,জিডিপির হার,সঞ্চয়,গৃহস্থালি আয়,ব্যবসায়ার মুনাফা হ্রাসের প্রভাবে ব্যাংকি খাতে দেউলিয়াত্ব ও কর্মহীনতার রেইট বেড়ে যায়।
মন্দার সাথে ইমিগ্রান্ট স্টুডেন্ট নিয়ে আসার সম্পর্ক বা কি? সরকারের আভ্যন্তরীণ পদক্ষেপ হিসাবে অর্থের যোগান ও ক্রয় ক্ষমতা বাড়াতে বিদেশি স্টুডেন্টের ব্যবহার করা হয়। স্টুডেন্টরা এদেশের কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফি, ভিসার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন খাতে অনেক অর্থের যোগান দেয় সেই সাথে বাসাভাড়া, জিনিসপত্র ক্রয়ের মাধ্যম ব্যাবসায়িক কার্যক্রমে গতি সঞ্চার করে মন্দা দূর করতে সাহায্য করে। তাই বলি, শিক্ষাকে ব্যবসার লাভজনক শাখা হিসাবেে অভিহিত করা মোটেই অযৌক্তিক নয়।

সরকারের মন্দ দূর করার সেই পলিসির সুযোগে বাংলাদেশ থেকে মেডিকেল,বুয়েট,পাবলিক,বেসরকারি বিশ্বাবিদ্যালয় থেকে শুরু করে সাটিফিকেট সংগ্রহধারী (Collected) অনেকেই ব্রিটেনে পাড়ি জমায়। যাদের একাংশ মেধাবী শিক্ষার্থী আরেক অংশ সুযোগ সন্ধানী।
তাদের মধ্যে মেধাবী দলের একজন আমার এক বন্ধু সালেহ। যে কিনা সরকারি ব্যাংকের সিনিয়র অফিসারের কাজ ছেড়ে চলে আসে লন্ডন। ২০০৯ সালের কোন এক মাসে তাকে হিথরো বিমানবন্দর থেকে নিয়ে আসার জন্য যাই। ব্যাংক অফিসারের মতো শার্ট- পেন্ট পরিহিত অবস্থায় সাথে একটি ব্যাগ নিয়ে সে বিমানবন্দর অবতরণ করে। তার শরীরের কাঁপুনি দেখে নিজের জ্যাকেটি পরিয়ে দিয়ে উপদেশ বাণী দিলাম,এই লন্ডনে সবাই বলে, নেভার বিলিব ইন থ্রি ডাব্লিউ,(Never believe in three W) W- weather, W- work, W- Wife, যে কোনো সময় ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। যেকোন সময় আবহাওয়া পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে তাই সবসময় শীতের কাপড় সাথে রাখবি।
এরমধ্যে অনেকদিন অতিবাহিত হলো, সালেহ'র সাথে বন্ধু হিসাবে সুসম্পর্ক অটুট থাকলো। যেকোন প্রয়োজনে কিংবা অপ্রয়োজনে একে অন্যে সুখ দুঃখ ভাগাভাগি করতাম।
কিছুদিন আগে সালেহ আমাকে ফোন করে বলে আমার অফিসে আসতেছে। কিছুক্ষণ পরে দেখি সে আমার সামনে উপস্থিত।একটি ব্রাউন খাম আমার হাতে তুলে দিয়ে বলে এটা খুলতে হবে। আমি বললাম কি এমন গুরুত্বপূর্ণ চিঠি বন্ধু ! (এদেশে গুরুত্বপূর্ণ সরকারী অফিস থেকে ব্রাউন খামে চিঠি আসে)। সে বললো এটা তুই ছাড়া আমি খুলি নাই যদিও সলিসিটর থেকে আমি জানি এটা কি। আমি খুলে দেখি তার ইনডিফিনেট লিভ টু রিমেইন ইন দ্য ইউ,কে'র পারমিট (ILR)। সালেহ বেশ অনুনয় করে বললো,লন্ডনের আসার সেই প্রথম দিন তুই যে তোর জ্যাকেট আমাকে খুলে দিয়েছিলে তা আমি ভুলি নাই। এই রেসিডেন্সি পাওয়ার মূলে তোর অনেক অবদান। অনেকদিন আগের ছোট্ট কর্মটি বন্ধুর মনে রেখাপাত করার দরুণ কৃতজ্ঞতার দায় স্বীকার করার জন্য আমার দ্বারে ছুটে আসাতে আমি 'ভালোবাসার সুখে' সুখ সাগরে ভাসতে থাকি।

"ইউরোপ,আমেরিকা, কানাডা সহ উন্নত দেশগুলোতে দীর্ঘদিন থাকলে সে দেশের সরকার ভিনদেশীদের নাগরিকত্ব প্রদান করে, কিন্তু আরব দেশগুলোতে সারাজীবন থাকলে নাগরিকত্ব দূরে থাক মিসকিন অপবাদ দূর হয় না। এটা কেমন মানবাধিকারের ধারণা আজও বুঝতে পারি না"!!!

নোট -
১) দিনে দিনে আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্হা দুর্বৃত্তদের কুক্ষিগত সম্পত্তিতে পরিণত হয়ে যাচ্ছে।
২) নিজের কোন কর্ম সাধন কার মনে কখন কিভাবে রেখাপাত করে তা অনেকসময় অজানাই থেকে যায়।
৩) ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে 'ফাইভ ডাব্লিউতে' বিশ্বাস করা যায় না-
W- Work, W- Workers,W- Wealthy,W- Weather,W- Women,

আরো পড়ুন -
গড ইজ স্মাইলিংং টু'ডে, নোট -০১
ইউ আর এ পাকি বয় নোট -০২
একজন বিদেশীনীর বঙ্গ দর্শন -নোট - ৩
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মে, ২০১৯ ভোর ৬:১৬
১৭টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×