somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মন খারাপ বনাম ডিপ্রেশন

২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমাদের সবার মধ্যে একধরণের ভ্রান্ত ধারণার জন্ম নেয়। সেটা হচ্ছে মন খারাপ মানেই ডিপ্রেশন। জন্মের পর থেকেই তো আর এই ধারণার শুরু হয় না। এই ধারণাটার সৃষ্টি হয় চারপাশের ভুল মানুষদের সাথে মেশার ফলে; বিশেষ করে বয়ঃসন্ধিকালে। আসলে মন খারাপ হলেই আমরা এমন সব মানুষের কাছে দৌড়াই যারা কাউন্সিলিং শুরু করে। আসলে তারাও জানে না আমাদের মন খারাপ নাকি আমরা ডিপ্রেশনে ভুগছি।
আসলে সাইকোলজিতে মন খারাপ আর ডিপ্রেশন আলাদা দুইটা টার্ম। এদের মধ্যে সবচেয়ে বড় পার্থক্য হচ্ছে এদের একটার জন্য কাউন্সিলিং আছে আরেকটার জন্য নেই। শুনে হাসি লাগলেও এটাই বাস্তব। মন খারাপের কোনো কাউন্সিলিং লাগে না, এর কোনো ট্রিটমেন্ট নেই। এটা আপনা আপনি আসে আর চলে যায়। তাহলে ডিপ্রেশন কখন হয়!
ডিপ্রেশন কখন হয় তা বলার আগে আসতে হবে মন খারাপ কেন হয় এই কথায়। সহজ বাংলায় বললে আপনি কিছু চাচ্ছেন কিন্তু পাচ্ছেন না, এটাই মন খারাপের কারণ। মন খারাপ কোনো রোগ না, এটা মনের স্বাভাবিক একটা প্রক্রিয়া যা জন্মের পর থেকেই প্রত্যেকটা মানুষের সাথেই হয়ে আসছে। সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ কোনটা জানেন? মন খারাপ কে প্রশ্রয় না দেওয়া। তার মানে আপনার কোনো কারণে মন খারাপ হবার সাথে সাথেই আপনি নিজের মন কে ডাইভার্ট করে নিয়ে অন্যদিকে মনোযোগ দিন। কেন কথাটা বললাম জানেন? কারণ আপনি মন খারাপকে প্রশ্রয় দিলেন তো ডিপ্রেশনের একটা সিঁড়ি অতিক্রম করলেন। কারণ দীর্ঘদিন ধরে মন খারাপ থাকলে ডিপ্রেশন আসবেই। তখন আর সেটি আপনাআপনি যাবে না, আপনাকে কাউন্সিলিং এর হেল্প নিতেই হবে। এখন প্রশ্ন করতে পারেন আমি কি করে বুঝব আমি ডিপ্রেশনে নাকি আমার মন খারাপ?
উত্তরটা খুব সহজ- আপনি ডিপ্রেশনে গেলে দেখবেন আপনার কাজের প্রতি অনীহা জাগছে, আপনার ক্ষুধা লাগছে না, ঘুম আসছে না। আবার মাঝে মাঝে শরীরের হাত পা অথবা সারা শরীর ব্যাথাও থাকতে পারে। কিন্তু মন খারাপ থাকলে এসব কিছুই ফেস করবেন না আপনি। হ্যাঁ, আপনার কাজে অনীহা, ঘুমে অসুবিধা এসব হতে পারে। কিন্তু মন খারাপ থাকলে দেখবেন আপনি অনীচ্ছা স্বত্বেও ঠিকই কাজগুলো করে ফেলছেন যা আপনি ডিপ্রেশনে গেলে একদমই পারবেন না।সবচেয়ে বড় সমস্যাটা কখন হয় জানেন? যখন কেও এসময় নিজেকে চারপাশ থেকে গুঁটিয়ে ফেলে।এভাবে একা কাউন্সিলিং এর অভাবে থাকতে থাকতে একসময় তার মধ্যে মৃত্যুর চিন্তা প্রবেশ করে এবং সবশেষে অত্মহত্যার মত ভয়ংকর কাজের দিকে সে এগিয়ে যায়।
সব কথার মূল কথা হচ্ছে মন খারাপকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। বর্তমানে একটা লাইন খুব প্রচলিত-“প্যারা নাই, চিল। আসলেই তাই। ছোটখাট জিনিসে মন খারাপ হলে তা নিয়ে বসে না থাকে মনকে ডাইভার্ট করুন অন্যদিকে। এর জন্য আপনি- গল্পের বই পড়েন, ছবি আঁকাতে পারেন, গল্প করতে পারেন, ফেসবুক চালান, চ্যাট করেন, ফ্যামিলিকে সময় দেন; মূলকথা আপনি আপনার যেটা ভাল লাগে সেটাই করেন যতক্ষণ না আপনার মন ভাল হচ্ছে।
সবকিছুই সাময়িক। যেখানে আপনার জীবনটাই সাময়িক সেখানে মন খারাপ বা ডিপ্রেশনের পিছনে আপনি কত সময়ই বা দিবেন বলেন। তবে আপনার যদি মনে হয় আপনি ডিপ্রেশড তাহলে অবশ্যই ডাকারের পরামর্শ নিবেন। অযথা কারো কাছে গিয়ে কাউন্সিলিং না নিয়ে ডাকারের কাছে কাউন্সিলিং নিবেন, দেখবেন এক-দুই মাসের মধ্যে আপনি অনেকটা সুস্থ হয়ে যাবেন যা আপনি নিজেই টের পাবেন।
মনের চেয়ে বড় কিছু নেই। মনকে সুস্থ রাখুন দেখবেন আপনি সবদিক থেকেই নিজেকে ফিট রাখতে পারছেন। স্যার উইলিয়াম হ্যামিলনের মতে-
“দুনিয়াতে মানুষের চেয়ে বড় আর কিছু নেই
আর মানুষের মাঝে মনের চেয়ে বড় কিছু নেই।”
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:৩৭
৩টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×