somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

Robert The Doll

১২ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ৯:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


অ্যানাবেল এবং কনজিউরিং মুভি সম্পর্কে ধারণা আমাদের অনেকেরই আছে। পুতুলের ভিতরে আত্মার উপস্থিতি নিয়ে অগণিত মুভি তৈরী করেছে পৃথিবীর সেরা সব মুভি ইন্ডাস্ট্রি। সব মুভির থিমকে যদি এক কাতারে নিয়ে আসি তাহলে বলা যায় পুতুলের মধ্যে পিশাচ অথবা এভিল স্পিরিটের উপস্থিতি থাকতে পারে। অর্থাৎ পুতুল একটা মিডিয়াম হিসেবে কাজ করে। পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর এবং আকর্ষণীয় বস্তুটা তখন হয়ে যায় জঘন্য সব কাজের মূল হোতা। ভুত, প্রেত, জিন, পিশাচ যাই বলি না কেন সেটার উপস্থিতি সম্পূর্ণ নির্ভর করে মানুষের বিশ্বাসের উপর। অনেক তো হল বড় পর্দার পুতুল সম্পর্কে কথা, এবার সত্যিকারের ভয়ংকর পুতুল নিয়ে কথা বলা যাক।

Robert The Doll
১৯০০ থেকে ১৯০৯ সাল, ইউজিন রবার্ট অটো (তাকে সবাই জিন নামে ডাকতেন) একটা পুতুল গিফট পেলেন। অনেকের মতে পুতুলটি তার দাদা কিনেছিলেন জার্মানি থেকে, আবার কেও কেও বলে পুতুলটা তাকে উপহার দিয়েছিলেন তাদের বাসার কাজের লোক। ইউজিন রবার্ট অটো নিজের নামের সাথে মিল রেখে পুতুলের নাম রাখলেন “রবার্ট”। একদিন রাতে হঠাৎ রবার্টের ঘুম ভেঙে যায়। তিনি দেখেন পুতুলটা তার পায়ের কাছে বসে আছে তার দিকে তাকিয়ে। তিনি চিৎকার দিলে তার মা এসে দেখেন জিন ভয়ে বসে আছেন, আর পুতুলটা তার দিকে তাকিয়ে আছে। এসময় জিন একটা কথাই বলেছিলেন- “Robert did it” এবং এই কথাটা তিনি ছোটবেলায় অনেকবারই বলেছেন যখনই অস্বাভাবিক কিছু বাসায় ঘটেছিল।

প্রথম পর্যায়ে কেও জিনিসটা বিশ্বাস করেনি। পুতুল কিভাবে অস্বাভাবিক কিছু করতে পারে! কিন্তু রবার্টের বাবা-মা তখনই বিশ্বাস করা শুরু করেন যখন জিনকে পুতুলের সাথে কথা বলতে দেখেন। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে জিনেরর প্রশ্নগুলোর উত্তর পুতুলটা দিত অন্য একটা ভয়েসে। সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে পুতুলটা কথা বলার সময় এক্সপ্রেশন দিতে পারত একদম মানুষের মত।

জিনের বাবা-মা মারা গেলে তিনি তার স্ত্রী, অ্যানের সাথে তাদের বাড়িতে থাকা শুরু করেন। অ্যান চেয়েছিলেন জিন যেন রবার্টকে অ্যাটিকে তালাবদ্ধ অবস্থায় রাখেন। জিন স্ত্রীর কথামত পুতুলটিকে অ্যাটিকে বন্ধ করে রাখেন। কিন্তু রবার্ট বদ্ধ ঘরে সুখী ছিল না। তাই জিনদের বাসায় কেও ঘুরতে আসলে অ্যাটিকে হাঁটাহাঁটি আর শয়তানি হাসির শব্দ শোনা যেত। উপরতলার বেডরুমের জানালা দিয়ে রবার্ট তাকিয়ে থাকত রাস্তার দিকে যা দেখে ভয় পেয়ে যেত আশেপাশের ছোট্ট শিশুরা। এসব কথা জিনের কানে আসলে তিনি অ্যাটিকের দরজা খুলে অ্যাটিকের ভিতরে প্রবেশ করেন রবার্ট আছে কিনা সেটা দেখতে। তিনি দেখেন রবার্ট রকিং চেয়ারে বসে আছে। এভাবে অনেকবার রবার্টকে অ্যাটিকে আটকে রাখলেও সে কিভাবে যেন বেডরুমের জানালায় এসে উঁকি দিত রাস্তার দিকে। অবাক করার মত বিষয় হচ্ছে আমৃত্যু পর্যন্ত জিনের সঙ্গী হিসেবে রবার্ট ছিল তার সাথে।

১৯৭৪ সালে জিন মারা যান। তারপর বাড়ির মালিকানা পরিবর্তন হলে নতুন মালিকের মেয়ে (তার বয়স ১০ বছর) অ্যাটিকে রবার্টকে বন্দী অবস্থায় পায়। পুতুলটিকে সে তার সঙ্গী করে নিলেও বেশিদিন সেটাকে কাছে নিয়ে থাকতে পারেনি। সে তার বাবা-মা কে বলে যে পুতুলটির মধ্যে অশরীরী কিছু আছে যার কারণে গভীর রাতে সে রুমের ভিতরে হাঁটাহাঁটি করে। তারপর রবার্টকে অন্য জায়গায় হস্তান্তর করা হয়।

রবার্টের বর্তমান অবস্থান ইস্ট মার্টিল মিউজিয়ামে (East Martello Museum)। মজার ব্যাপার হচ্ছে রবার্টকে যারা দেখতে আসেন তাদেরকে সে এখনও ভয় দেখায়, বিশেষ করে যারা ছবি তোলার চেষ্টা করেন। অনেকের মতে, রবার্টের ছবি যখন কেও তুলতে যান তাদের ক্যামেরা নষ্ট হয়ে যায় এবং মিউজিয়াম থেকে বের হলে আবার সেই ক্যামেরা কাজ করা শুরু করে। রবার্টের ছবি তুলতে গিয়ে ব্যর্থতার হারই বেশি। তাই দর্শনার্থীদের সাবধানতার সাথে রবার্টকে দেখার এবং ছবি তোলার জন্য উৎসাহিত করা হয়।

রবার্ট হাসছে আপনার দিকে তাকিয়ে, আর আপনি???

বিঃদ্রঃ ছবিটি ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১২:০৭
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের শাহেদ জামাল- ৮১

লিখেছেন রাজীব নুর, ১৫ ই জুলাই, ২০২৫ সকাল ৯:৫৭



শাহেদ। শাহেদ জামাল। আমার বন্ধু।
বড় ভালো ছেলে শাহেদ। অথচ তার চাকরিবাকরি নেই। চাকরিবাকরি তার দরকারও নেই। যার ঘরসংসার নেই সে চাকরি দিয়ে কি করিবে? অবশ্য টাকা এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি ভিক্ষা দিচ্ছেন মানে আপনি জাতিকে পঙ্গু করছেন

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই জুলাই, ২০২৫ দুপুর ১:০৫


ভিক্ষা হলো একটি সংস্কৃত শব্দ এর অর্থ হলো চাওয়া বা প্রার্থনা করা যা ভারতীয় ধর্ম যেমন জৈনধর্ম, বৌদ্ধধর্ম ও হিন্দুধর্মে ভিক্ষাকরা বা চাওয়ার কাজকে বোঝাতে ব্যবহৃত হতো। প্রাচীনকালে ভিক্ষা... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ভাল্লাগে না কোনো কিছু=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৫ ই জুলাই, ২০২৫ বিকাল ৫:২৩


ভাল্লেগা না কোনো কিছু
মন বসে না কাজে,
কোন সে দুঃখ জমা হলো
বুকের ভাঁজে ভাঁজে।

ভাল্লাগে না আজকে আমার
মন যে উদাস হলো,
দু'চোখ আমার নীল বেদনায়
জলে টলোমলো।

বৃষ্টি এলো বৃষ্টি গেলো,
আনমনা হই আরও,
মন জমিনে কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। পদ্মার ইলিশ বিখ্যাত গোটা পৃথিবীতে , কেন ??[/sb

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৫ ই জুলাই, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:১২









Padma Hilsa- বিশেষজ্ঞদের একাংশ দাবি করেন, পদ্মার জলে পুষ্টিগুণ ভাল। সেখানে কাঁকড়া, ঝিনুক, শৈবাল ইলিশের খাবার। আর তা থেকে পর্যাপ্ত পুষ্টি পায় ইলিশ। ফলে মাছের স্বাদও হয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

“তুই তো দুই আনার মালিক, রাস্তায় গিয়ে থাক।”- বৃদ্ধ মাকে ছেলে।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৫ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ৮:১৩




খবরের লিংক

দেখুন। সম্পত্তির লোভে মাকে বাসায় ঢুকতে দেয় না। হয়তো বউ শিখিয়ে দিছে। “আর সহ্য করতে পারছি না। তুমার মাকে এবার বৃদ্ধাশ্রমে পাঠাও।” এমন কথা হয়তো বউয়েরা হর হামেশাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×