বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে বি এন সি সি থেকে ভারতে শিক্ষাসফরে খুব ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও অনির্বাচিত হবার কারনে যেতে পারি নাই দুঃখ যতটা শিক্ষাসফরে যেতে না পেরে হয়েছিল তার চাইতে বেশী হয়েছিল প্রিয়বন্ধুদের সাথে থাকতে পারলাম না বলে ...
বন্ধুরা অনেক অনেক উপহার দারুন সব ছবি চমৎকার ভ্রমন অভিজ্ঞতা আর দুর্দান্ত সব গল্পকথা নিয়ে ফিরেছিল ।
এক রৌদ্র উজ্জ্বল অপরাহ্ণ তে বন্ধু মানিক এর বাসায় গিয়েছিলাম আমরা তিন জন হাজারো সব ছবির আর পোস্ট কার্ড এর ভিড়ে একটা স্থাপনা আমাকে ব্যাকারন ছাড়া অকারণ আকর্ষণ করে , জানতে চাইলাম এটা কোন যায়গা উত্তর " লোটাস টেম্পল "
সত্যি বিভিন্ন আঙ্গিকে আলোক উজ্জ্বল লোটাস টেম্পল শেষ পর্যন্ত সর্ব বিবেচনায় আমার কাছে সবচাইতে কাঙ্ক্ষিত ই রইল ।
ওদের সবার সংগ্রহ থেকে বাড়তি সব ছবি আমার ঝুলি তে দিতে বাধ্য হোল সবাই মনের মাঝে এক আশা রইল " দেখিস একদিন আমিও " আমার ভাবনায় ছিল শুভ্র এক কমল সদৃশ ভবনে , মন্দির এর সেই চির চেনা দৃশ ,ফুল কাসার ঘন্টা সিঁদুর ফল প্রসাদ ...।।
প্রবাস জীবনে এসে দেখিস একদিন আমিও র অভিমান কবেই আমার মন থেকে প্রবাসী হয়েছে জানি না... এবারের ছেলে মেয়ের স্কুল ছুটি তে ভাব্লাম দিল্লী দর্শন করি ক্যাটালগ এ ছবি দেখে নিজেই অবাক ,একসময় এর আরাধ্য কে এতটা কাছে এভাবে ৫ বছর থেকে ফেলে রেখেছি ...।
ড্রাইভার কে বললাম আজকে লোটাস টেম্পল চল , আমাকে পালটা জিজ্ঞেস করল মেম কোনা সা টেম্পল ? আমি নিজেই টাশকি , এইরাম এক জিনিসের জন্য বন্ধুদের কাছে হিটলার হয়েছিলাম , জোর করে বেশীর ভাগ ছবি আমিই নিয়েছিলাম
কিছুটা বর্ণনা দেবার পর বলল ও ম্যাডাম ই তো বাহাই টেম্পল , কমল মন্দির " আরেক খটকা " বাহাই " ??????
যাই হোক ৪৫ মিনিট চলার পর দূর থেকেই দেখতে পেলাম শ্বেত শুভ্র ডানা মেলে দাড়িয়ে থাকা লোটাস ট্যাম্পল , কমল মান্দির বা বাহাই ট্যাম্পল ।
উইকি তে দেখলাম বাহাই একটা ধর্ম ,
বাহাই ধর্ম বা বাহাই বিশ্বাস হচ্ছে বাহাউল্লাহ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত একেশ্বরবাদী একটি ধর্ম বা বিশ্বাস। ঊনবিংশ শতাব্দীতে পারস্যে (বর্তমানে ইরান) এই ধর্মের উৎপত্তি। মূলত মানবজাতির আত্মিক ঐক্য হচ্ছে এই ধর্মের মূল ভিত্তি।[১] বিশ্বে বর্তমানে ২০০-এর বেশি দেশ ও অঞ্চলে এই ধর্মের আনুমানিক প্রায় ৬০ লক্ষ অনুসারী রয়েছে।
বাহাই বিশ্বাস অনুসারে ধর্মীয় ইতিহাস স্বর্গীয় দূতদের ধারাবাহিক আগমণের মাধ্যমে ধাপে ধাপে সম্পন্ন হয়েছে। এইসব দূতদের প্রত্যেকে তাঁদের সময়কার মানুষদের সামর্থ্য ও সময় অনুসারে একটি ধর্ম প্রতিষ্ঠা করেছেন। এই সকল স্বর্গীয় দূতদের মাঝে আছেন ইব্রাহিম, গৌতম বুদ্ধ, যীশু, মুহাম্মাদ ও অন্যান্যরা। সেই সাথে খুব সাম্প্রতিককালে বাব ও বাহাউল্লাহ। বাহাই ধর্ম মতে এসকল দূতগণ প্রত্যেকেই তাঁদের পরবর্তী দূত আসার ব্যাপারে, ও তাঁদেরকে অনুসরণ করতে বলে গেছেন। এবং বাহাউল্লার জীবন ও শিক্ষার মাধ্যমে দূতগণের এই ধারা ও পূববর্তী ধর্মগ্রন্থগুলোর অঙ্গীকার সম্পূর্ণ হয়েছে। মানবতা সমষ্টিগত বিবর্তনের একটি প্রক্রিয়া হিসেবে ধরা হয়েছে, এবং বৈশ্বিক মাপকাঠিতে সার্বিকভাবে শান্তি, সুবিচার ও ঐক্য প্রতিষ্ঠাই হচ্ছে বর্তমান সময়ের প্রয়োজনীয়তা।[৪]
‘বাহাই’ শব্দটি একটি বিশেষণ হিসেবে বাহাই বিশ্বাস বা ধর্মকে নির্দেশ করতে বা বাহাউল্লার অনুসারীদের বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। এটি উদ্ভূত হয়েছে আরবি বাহা’ থেকে, যার অর্থ ‘মহিমা’ বা ‘উজ্জলদীপ্তি’ধর্মটিকে নির্দেশ করতে পূর্বে বাহাইজম বা বাহাইবাদ পরিভাষাটি ব্যবহৃত হলেও বর্তমানে ধর্মটির সঠিক নাম বাহাই বিশ্বাস।
রাত এর আলোক কে কমল মন্দির , গুগুল মামা র অবদান ।
প্রতি দিন এখানে নাকি গড়ে ৮০০০থেকে ১০.০০০ দর্শনার্থী এখানে আসেন । আমার সাথের দর্শনার্থী রা
চমৎকার উদার প্রকৃতি যেন এই শুভ্র স্থাপনা টিকে আরও অপরূপ করেছে ।
মূল চত্বরে প্রবেশ এর সময় খালি পায়ে প্রবেশ করতে হয় ,চার পাশে ৪ দরজা রয়েছে প্রাথনা স্থলে প্রবেশ এর জন্য ।
আভ্যন্তরীণ কারুকার্য
আমি যখন কমল মন্দির এ সে দিন সাপ্তাহিক প্রাথনার দিন না থাকায় ,পুরু টা ফাকা ছিল । ভিতরে ছিল পিন পতন নীরবতা , ছবি তোলা নিষেধ ।।
কুরআন শরিফ , বাইবেল গীতা মোটামুটি সব ধর্মের ধর্মগ্রন্থ রাখা ছিল ।
দিল্লির গরম যে দেখেছে সে যেমন পস্তিত ,যে দেখে নাই সে আরও পস্তাবে , আমরা পস্তিত জনগণ ,সৌন্দর্য মোহিত বেশীক্ষণ থাকতে না পেরে , ফিরে চল ঘড়ের টানে । থুক্কু আপাতত গাড়ির দিকে ।
ফেরার সময় যারা আমার পায়ে ভালবাসার বেড়ী পরাচ্ছিল ।
বিদায়ী কিল্ক ।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৭