somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কাজের লিস্ট কেন গুরুত্বপূর্ণ এবং কাজ করা ও ভাল আউটপুট পাওয়ার টেকনিক

০১ লা অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




তালিকা তৈরী করা:

“Lists bring order to the chaotic universe.”

Austin Kleon তার “Keep Going” বইতে উপরের বাক্যটি বলেছেন। লিস্ট বলতে তিনি কাজ, চিন্তা, পড়া, লেখা, আঁকা, আনন্দের কারণ, দুঃখের কারণ ইত্যাদি লিস্ট বুঝিয়েছেন।

লিস্ট মানুষকে স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে, পরিষ্কার চিন্তা করতে সাহায্য করে।

লিস্ট মাথা থেকে আইডিয়াগুলো বের করে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে এবং মেন্টাল স্পেস ক্লিয়ার করে।

যখন কাজের চাপে হতভম্ব হতে হয় বা কোন কারণে মন বিক্ষিপ্ত থাকে, অস্থির লাগে, মনে হয় যেন জীবনটা স্টাক হয়ে আছে তখন একটা কলম ও কাগজ হাতে নেন, আরজেন্টলি যেগুলো করা দরকার সেগুলোর তালিকা করেন। এবার সবচেয়ে যেটা আগে করা দরকার সেটা দিয়ে কাজ শুরু করেন।

লিস্ট বা তালিকা করার মহত্ত্ব হচ্ছে এটা চিন্তা ক্লিয়ার করে, অস্থিরতার কারণ ও প্রতিকার খুঁজে বের করতে সাহায্য করে। কিংকর্তব্যবিমূঢ় যে অবস্থা মাথার ভিতর বিরাজ করছিল, কাগজে তা লেখার কারণে তা মাথা থেকে সামনে এসে পড়ে। যেটাকে এট-এ-গ্লান্স দেখা যায়। মাথার ভিতর যা জট পাকিয়ে থাকে তা খাতায় লেখার পর পরিষ্কার হয়। চিন্তা করতে সুবিধা হয়। জট খুলে যায়।

লিস্ট শুধু “কাজ” এর হবে এমন কোনো কথা নেই।

To do list, To read list, To watch list, To buy list, To call list, To draw list ইত্যাদি হতে পারে।

লিওনার্দ দা ভিঞ্চির একটা লিস্ট ছিল- To Learn List.

আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ লিস্ট হতে পারে “সমস্যার লিস্ট”। অর্থাৎ আপনি বর্তমানে ব্যক্তি জীবন, পেশাগত জীবন ও সামাজিক জীবনে যেসব সমস্যা ফেস করছেন সেগুলোর লিস্ট।

সমস্যার পরিষ্কার তালিকাটা সামনে থাকলে সমাধান খুঁজে বের করা সহজ হবে। বা সমাধানের পথে এট লিস্ট যাত্রা শুরু করতে পারবেন।

Paper Prayer এর ব্যাপারে হয়ত শুনে থাকবেন। যখন কিছু করার নাই, স্টাক ও ডিপ্রেসড ফিল হচ্ছে। মেক এ লিস্ট অফ What are you thankful for, Where you need help.


POMODORO টেকনিক:

যে কোন জটিল বা বোরিং কাজ করার জন্য এই টেকনিক খুব কার্যকরী।

টেকনিকটা হলো যে কাজটা করতে চান সেটা স্থির করুন। এরপর মোবাইলে টাইমার সেট করে ২৫ মিনিট কাজটা করে যান। এরপর ব্রেক নেন ৫ বা ১০ মিনিটের। আবার ২৫ মিনিট কাজ করুন। এভাবে যে কয়টা স্লট করতে পারেন করতে থাকেন। বেশি অস্থির থাকলে বা মনোযোগ ধরে রাখতে সমস্যা হলে ২৫ মিনিটের পরিবর্তে আপনি টাইমার ১০, ১৫ বা ২০ মিনিট ইচ্ছামত সেট করতে পারেন। ২৫ মিনিটের বেশিও সেট করতে পারেন।

যারা মনোযোগ ধরে রাখতে পারেন না তাদের জন্য এই টেকনিকটা অত্যন্ত কার্যকরী।

অনেকেই আছেন কোনো বই-ই পড়তে পারেন না। কিছুক্ষণ পড়ার পর বা দুই এক পেজ পড়ার পর ভাল লাগে না। বা সব সময় হুমায়ুন আহমেদ পড়ে এসেছেন বা ফিকশন পড়ে এসেছেন, কিন্তু নন ফিকশন পড়তে পারেন না। তারা এই টেকনিক ফলো করতে পারেন।

ধরেন কার্ল মাক্স এর কমিউনিস্ট মেনিফেস্টো পড়বেন। ধরেন এটা জটিল বই। এসব বই পড়ার ক্ষেত্রে বোরিং লাগলে একটানা পড়বেন না। ২০ মিনিটে ৪ পেজ পড়েন। তারপর ১০ মিনিট ব্রেক দিয়ে আবার ২০ মিনিট পড়েন। এভাবে পাঁচটা স্লট পড়তে পারলেই দেখবেন পড়া আগাচ্ছে।

এই টেকনিকটার আরেক গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে এটা মোটিভেশন বুস্ট করে। দেখবেন অনেকের কথা শুনে বা ইউটিউবে ভিডিও দেখে আমরা খুব মোটিভেটেড হই, কিন্তু সে মোটিভেশন দুই-এক দিন পর থাকে না। মোটিভেশন ধরে রাখার কার্যকরী কৌশল হচ্ছে কাজ শুরু করা। যে কোন কাজ শুরু করলেই ঐ কাজ করার মোটিভেশন কনস্টান্ট থাকে।

তো আপনি প্রথমে যে কাজের তালিকা করেছেন তা সম্পন্ন করতে পোমোডোরো টেকনিক ফলো করতে পারেন।


পারেটো প্রিন্সিপাল বা ৮০/২০ রুল:

যে কোন কাজের ক্ষেত্রে-

৮০ পারসেন্ট আউটপুট নির্ভর করে ২০ পারসেন্ট ইনপুট এর উপর।

বাকি ২০ পারসেন্ট আউটপুট আসে ৮০ পারসেন্ট ইনপুট থেকে।

ধরেন, একটা কোম্পানির ১০০ টা প্রোডাক্ট আছে। এই কোম্পানি প্রতিমাসে প্রোডাক্ট বিক্রি করে যদি ১০০ টাকা লাভ করে তাহলে মোটামুটি ধরা যায়, ২০ টা প্রোডাক্ট বিক্রি করে তারা ৮০ টাকা লাভ করেছে। বাকি ২০ টাকা লাভ করেছে ৮০ টা প্রোডাক্ট বিক্রি করে।

আপনি যদি একদিনে ১০ ঘন্টা পড়েন তাহলে যা শিখবেন ধরা যায় তার ৮০% শিখেছেন ২ ঘন্টায় আর বাকি ২০% শিখেছেন ৮ ঘন্টায়।

তো যে কোন কাজ করার সময় পারেটো প্রিন্সিপাল মাথায় রাখা জরুরি। একটু খেয়াল করলে বের করতে পারবেন কাজের কোন অংশে বেশি মনোযোগ দিলে বা বেশি শ্রম দিলে তার ৮০% সম্পন্ন হবে।

কাজ করার সময় পোমোডোরো টেকনিক ও পারেটো প্রিন্সিপাল মাথায় রাখলে কাজ করা সহজ হবে। আউটপুট ও ভালো পাওয়া যাবে।
.

এই লেখাটিআমার নিউজলেটার থেকে নেওয়া। আমার লেখা পড়তে নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করতে পারেন।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১:২৭
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×