কে জানত?
গোটা আকাশটা সকাল থেকে মায়ের সাথে মন ভারি করে বসবে?
টিপটিপ করে অশ্রু ঝরাবে
গাছের পাতার গণ্ড বেয়ে সেই অশ্রু মুছবে মাটির আঁচলে?
কে জানত?
কে জানত, আমার আগাম-কেনা বাসের টিকিট শেষ মুহূর্তে বাতিল হবে?
ঈদ শেষে গন্তব্য পথে বৃষ্টি সফর সঙ্গী হবে?
কে জানত?
বৃষ্টি বুঝি একটু একটু থেমে থেমে দম নেবে
ছোলাদানা-দারুনমল্লিক-বটিয়াঘাটায় মোটর ছুটে
পঞ্চাশের পচপচে গতিতেও ভয় ভয় লাগবে!
কে জানত
দাদুর দাঁতে হড়হড় ইটে শোল ধরার ভয়!
--আমার তো নেই তাড়া তবে
বৃষ্টি বাবু জোর আপ্যায়নে আসতে পারে
আরো পড়ি-মরি যাওয়া তাই সময় দাবি করে।
কে জানত?
মিনিট সাতেক বাদ টিপটিপে সেই বৃষ্টিতে
পিছলে পথে পঁচাত্তরে পিলে চমকানো দুরে থাক্
নাকে বুনো বাবলার ঘ্রান ছুঁবে?
হড়বড়ে ইটেরা সব সমস্বরে কাব্য করে
কবির সুরে সুর ধরে স্বপ্ন ঘাটে চরবে!
আর তার কারণ হবে কোন এক গেরস্ত ঘরের মাটির প্রতিমা!
যে এই মুহুর্তে ত্রস্ত হাতে গোয়াল ঘরে গরুকে খাওয়াতে ব্যস্ত!
কে জানত?
কে জানত?
ঝাঁক ধরে জুঁইয়ের থোকা পথের 'পরে উঁকি দেবে?
কপোত ডানার ঝাপটা খসা হঠাৎ আলোক
মনটা আমার ঝলকানিতে খসে নেবে!
গেরস্তের ওই গোয়াল দোরে!
কে জানত?
তারপর মুদলে চোখে টুকটুকে লাল শাড়িতে,
গোলাপ গালে রসুই ঘরের কালচে কালি
মাটির দীপের দীপ্তি আমার চোখে পড়বে?
স্রোতোস্বরে ঝলক দিয়ে ঘুম উড়াবে
"এই যাহ্, পণ্ডিতমশাই তো ঘুমায়ে পড়েছে!"
কে জানত?
তার খোলা কেশের তালে তালে
মনের ঋতু পলে পলে পাল্টে যাবে?
এই বসন্তে, তো এই শ্রাবণে
শারদ সাদা উড়ুউড়ু মেঘ কাঁপণে!
কে জানত?
কপাল 'পরে বারে-বারে-বিরক্ত করা চুলগুলোকে
গোবরমাখা-হাতের-কব্জিতে-সরানো-ছবি মুগ্ধ করে রাখবে?
গোবুরে গন্ধে সেই বুনো বাবলার ঘ্রাণ মন মাতাবে?
কে জানতে?
কে জানত, এত্তো কিছুর পরেও তার সিঁথিতে আর আমার বৃদ্ধা-শাহাদাতে সিঁদুর লেগে থাকবে?
আঁচলে পরাণ বেঁধে নাকে নথে টানবে?
ক্যা পাতাহ্, মিনিট সাতেক বাদ
শাহেদ এহি হোগা!
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মার্চ, ২০২২ রাত ১১:৪১