somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কাইকর
অনেক বড় মাপের একজন মানুষ হতে চাই। কারণ- ভালোবাসার মানুষটির নাম ছোট্ট কোন মঞ্চে দাঁড়িয়ে থেকে বলতে চাইনা, ভালবাসার মানুষটির নাম বড় কোনো মঞ্চে দাঁড়িয়ে থেকে বলতে চাই।আই লাভ ইউ (মা)

স্বার্থপর অপ্সরা! (ছোটগল্প )

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


প্রতিটি প্রাণীর মন গহীনে ঈশ্বর লুকিয়ে থাকে। যে মনে ঈশ্বর নেই, সেই মনটা ভাঙ্গা জল ছাড়া নদীর মন। আমার মন নদীতেও জল ছিল, ঈশ্বর ছিল একটা সময়। এখন বুক নদীতে ঈশ্বর নেই, জল নেই আছে শুধু বিষন্ন বাতাসের তোড়জোড়। যেই বাতাসের মনটা খুব ভাল, কিন্তু ভিতরটা কালো। ঈশ্বর ছাড়া, জল ছাড়া আমার বুক নদী এখন ভরা জ্যোৎস্নায় কাঁদে। শুধুই কাঁদে! কিন্তু কেন?

আমার নাম কাইকর। আমার বুক নদীতে যখন জল ছিল, তখন অপ্সরা নামে একটা মাঝি আমার বুক নদীতে নৌকা চালাতো অবিরাম। অপ্সরার নৌকা চালানোর শব্দে আমার বুক গহীনের ঈশ্বর হাসতো খুব করে, খিলখিলে। মেয়েটা দেখতে ভোর আকাশের শেষ জ্যোৎস্নার মত! আমার বুক নদীর প্রেমিক মাছগুলো তাকে দেখতে উপচে পড়তো। অপ্সরা লজ্জায় মুখ লুকাতো কলমি ফুলের ডগার পিছনে। কিছুটা প্রসন্ন মুখ নিয়ে!

শেষ বিকেলের গোধুলি লগনে- মনের কথা, ঈশ্বরের কথা বলে দিলাম এক মনে অপ্সরাকে। সে শুনে কিছুটা ছিটগ্রস্ত পাগলের মত হাসলো। আমার বুক নদীতে তখন প্রেমের ঢেউ ও কিছুটা জলের ঢেউ! কিছুক্ষণ পর ঘোলাটে রাস্তার সবকিছু নিস্তব্ধ করে দিয়ে অপ্সরা আমায় জড়িয়ে ধরে বললো, ভালবাসি তোমাই ভালবাসি। শেষ সন্ধ্যায় নিয়ম করে হাঁটা হেপাটাইটিস রোগের মানুষগুলো আমাদের ঘাড় ঘুরিয়ে কিছুক্ষণ দেখে আবার হাটা শুরু করে চুপ করে, নিরবে।

অপ্সরার নায়িকা হবার বড্ড শখ । সে শেষ যুগের শাবানা হতে চাই। এক বিকেলে বায়না ধরল- তাকে যে করে হোক অভিনয় করার সুযোগ করে দিতে হবে। আমি খুব কষ্টে একটা প্রডিউসার ম্যানেজ করে তার সাথে পরিচয় করিয়ে দেই। এখন সে শহরের বিরাট বড় নায়িকা। শহরের ছোট ছোট বিলবোর্ডে বড় বড় অক্ষরে তার নাম লেখা।

অপ্সরার এখন ওঠা-বসা শহরের বড়-বড় নামকরা প্রডিসারদের সাথে। যারা রাত-বিরিতে সাদা চকচকে নোট ছিটিয়ে বিরাট বিরাট নায়িকা বানাই। কিন্তু আমি যে, বড় শহরের ছোট্ট মানুষ।

অপ্সরা এখন সম্ভবত প্যারিস থেকে আনা সুগন্ধ গায়ে মেখে বাহিরে বের হয়। মাঝেসাজে চার চাকার কালো ফ্রেমের গাড়ির মধ্যে থেকে আমায় টাটা দিয়ে চলে যায় বিনয়ী ভেবে। হয়তো আমাই এখন কিছুটা চেনে বা না চিনে! কে জানে!

ভোর সকালে মোরগ পাখির কুরুক কুরুক শব্দের সাথে আমার মুঠোফোনে অপ্সরার কল। সে আমায় উচ্চস্বরে মোটা কন্ঠে বলে, আমি যেন ফের তাকে ডিস্টার্ব না করি। তার সামনে গিয়ে কখনো না দাঁড়াই। তার সাথে যে একটা সময় আমার সম্পর্ক ছিল তা যেন কেউ না জানে। যদি ভুলেও কেউ জানে তাহলে, আমাকে শহরের বড় বড় মাস্তান দিয়ে সাইজ করাবে। শুনে আমার বুক নদীর খুব তল গহীনের আড়াই ফোটা পানি চোখের কোণ দিয়ে না বেড়িয়ে মাঝপথ দিয়ে বের হই। তার মতো শহরের বড় নায়িকার দু'টাকার ছেলের সাথে ভালোবাসা তো দূরে থাক বন্ধুত্বের সম্পর্কটা থাকাও নাকি পাপ! হয়তো ঈশ্বর ভালো জানে বা বলতে পারবে।

অপ্সরা আমার বুক নদীর ভরা পানি শুকিয়ে দিয়ে চলে যাবার পর মন গোহিনের ঈশ্বরটাও চলে যায় অজান্তে। খুব দূরে....... .বহুদূরে। যেই মনে ঈশ্বর নেই, সেই মন মন না। ভাঙ্গা মন, ভাঙ্গা মরুভূমি, ভাঙ্গা নদী ও ভাঙ্গা সাগর। এখন আমি ভরা জ্যোৎস্নায় খুব করে কাঁদি, খুব করে..........। যে কাঁন্নার দুঃখগুলো ব্যস্ত নগরীর স্বার্থপর মানুষগুলো বুঝবে না, বুঝবে না, কোনদিন বুঝবে না।

~আব্দুল্লাহ আল মামুন( কাইকর)
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:২৫
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×