somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

করোনা কালের খোলা চিঠি

২৮ শে মে, ২০২০ রাত ২:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

#করোনা_কালের_খোলা_চিঠি #১

ভূমিকাঃ আমরা সবাই জানি, পৃথিবীব্যাপী এক মারাত্তক ভাইরাসের সংক্রমনে আমরা নিস্তব্ধ হয়ে গেছি, ব্যাস্ত জীবন যাপন থমকে গ্যাছে অনেকেরই, এই ভাইরাসের কারণে চারিদিকে অনেক মৃত্যু, অনেক মানুষ কাতরাচ্ছে হাসপাতালের বেডে বা ঘরের কোনায়। স্থবির অর্থনীতি চারিদিকে হাহাকার। লকডাউনে ঘরে বসে আমরাও হাঁপিয়ে উঠছি। নিত্যানতুন চ্যালেঞ্জে ভরে যাচ্ছে সোশ্যাল হ্যান্ডেল গুলো। কিন্তু মানুষ ক্রমশ হাঁপিয়ে উঠছে। সবার মতন আমিও একই দলে…
চারিদিকে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ দেখে আমার মাথায়ও একটা নতুন আইডিয়া আসলো, তা হল চিঠি লেখা। লেখালেখির এই মাধ্যমটা আমার ব্যক্তিগত পছন্দের। আধুনিকতা আমাদের কাছ থেকে অনেক কিছু কেড়ে নিয়েছে, যার মধ্যে চিঠি একটা। আগে য্যামন চিঠি লেখার একটা চল ছিলো, তার সাথে জড়িয়ে থাকতো অনেক আবেগ, কান্না, হাসি, মান-অভিমান আরও কত কি। চিঠি লেখা ব্যপারটা শুধু প্রেমিক প্রেমিকার সম্পত্তি ছিল না। বাবা তার সন্তানকে, কিংবা সন্তান তার বাবা মাকে। দূর পরবাসে বসে কোন ভাই বা বোন তার সহোদরকে, বা কেউ হয়তো হারিয়ে যাওয়া কোন বন্ধুকে আরও কত শত ফরম্যাটে যে চিঠি আছে তার ইয়ত্তা নেই। কিন্তু সব ব্যাক্তিগত চিঠিতেই যা থাকতো তা হল একটা ভালোবাসা। এটা অবশ্য আমার ব্যক্তিগত ধারণা। যাক মূল রচনা থেকে ভূমিকা বড় হয়ে যাচ্ছে।
যা বলতে চাই সেটা হল, আমি আমার এই করোনা কালে কিছু মানুষকে খোলা চিঠি লিখতে চাই। আমার এই যাপিত জীবনে অনেক মানুষের সাথে নিবিড় ভাবে মেলামেশার সুযোগ হয়েছে, কেউ কেউ মনে দাগ কেটেছে আবার কাউকে মনে না করতে চাইলেও কেটেছে। তাদের মধ্যে অনেক মানুষের সাথেই হয়তো যোগাযোগ নেই আবার কিছু মানুষের সাথে আছে। অনেক কথা তাদের অনেক সময় বলা হয়নি, বা এখন চাইলেও বলা সম্ভব নয়। এমন মানুষদের আমি ঠিক করেছি খোলা চিঠি লিখবো। প্রয়োজনে নাম পরিচয় গোপন করে আবার অপ্রয়োজনে নাম পরিচয় সহকারে। কারণ কারও ব্যাক্তিগত জীবনে বাগড়া দেয়ার কোন ইচ্ছে আমার নেই। এছাড়া কিছু অভিজ্ঞতা আমার জন্য সুখকর হলেও হয়তো কারো জন্য দুঃখের আবার তেমনি কারও কারও হয়তো তার পরিচয়টা নিয়েই ঝামেলায় আছে। তাই কি দরকার বাপ এতো ঝামেলায় যাওয়ার? আর এটা আমার সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত হিসাব কিতাব। তাই এটা করার জন্য আমি কাউকে চ্যালেঞ্জও দিচ্ছি না। ভালো লাগলে পড়বেন, না ভাল লাগলে এড়িয়ে যাবেন… আর শুধু শুধু ছিদ্রান্বেষী বিপ্লবী ভাই বোন দের বলছি। ছদ্দনাম ব্যবহার করে লেখার নিশ্চয়ই কারণ আছে, তাই হুদাই ফেলুদা, শার্লক হোমস হইতে আইসেন না।
ধন্যবাদ…


কি খুব মজা না?
উপরে বসে বসে খুব হাসতাছো? ভালোই… এইতো আর বেশিদিন নাই হয়তো, আমরাও আসতেছি। তারপর বলো চলে ক্যামন তোমার? মন টন কি খারাপ টারাপ হয়? নাকি অইখানে বিন্দাস চলতাসে মজা মাস্তি? আচ্ছা তোমার মনে আছে আমরা ছোটবেলায় একটা প্রোজেক্ট হাতে নিসিলাম? ঢাকা শহরের সব ফাস্ট ফুডের দোকানে খাওয়ার? পরে অবশ্য ছোট ছিলাম দেখে এলাকাটার বাইরে দুই একবার গিয়ে ধরা টরা খেয়ে আমরা রণে ভঙ্গ দেই। মন খারাপ থাকলে আমাদের একটা সিগন্যাল ছিলো মনে আছে? যেই সিগন্যাল দিলে বুঝতে হবে যে, আমার মন খারাপ আমাকে কিছু বলা যাবেনা। তখন চুপ করে একজন আরেকজনের গল্প শুনব। আর আমাদের দুনিয়াজোড়া কত সিক্রেট, এখন মনে পড়লে হাসিই আসে। দুইজনের বাসায় ছিল অবাধ বিচরণ। গার্জিয়ানদের রক্তচক্ষু থোড়াই কেয়ার ছিলো। আহ কি দিনগুলিই না ছিল তাই না? এমনও দিন গ্যাছে তোমার বাসায় আমি সারাদিন। আর আমার বাসায় তুমি। হুদাই বসে বসে বিজ্ঞানি হওয়ার চেষ্টা, আবার কখনও তিন গোয়েন্দার ভাব ধরা। যদিও আমরা ছিলাম দুইজন তাই তৃতীয় গোয়েন্দা আমরা খুজেই পেলাম না আর। হয় তোমার পছন্দ হয়না আবার কখনো আমার হয়না আজব অবস্থা। শেষ পর্যন্ত আমাদের গোয়েন্দা আর হয়ে ওঠা হলনা। আরও কত কি? মনে আছে একদিন রাতে সারা ধানমন্ডি ঘুরেছিলাম আমরা.... তাও সবাই কে লুকিয়ে? উদ্দেশ্য খুবই হাস্যকর, রাত ২.০০ টার পর ঢাকা শহর ক্যামন লাগে দেখতে হবে। খুব সম্ভবত ক্লাশ নাইনে পড়ি তখন। পরে অবশ্য রবীন্দ্র সরোবরের সামনে আমাদের পুলিশের হাতে পড়ে সেই যাত্রার সলিল সমাধি হয়ে গ্যালো। আরও হাজার হাজার টুকরো স্মৃতি। হাতরালে মনে হয় এই তো সেদিন। এরপর কি য্যানো হল… এক ঝড়ের মত দুর্ঘটনায় তুমি বদলে গ্যালে অনেক অনেক বেশী। যেই দুর্ঘটনায় তোমার শারীরিক ও মানুষিক অনেক পরিবর্তন ঘটেছিলো। কিন্তু তারপরেও তুমি বেঁচে উঠছিলে ফিরে আসছিলে স্বাভাবিক জীবনে। ছিলে অনেক বেশি আবেগি। এই আবেগই হয়তো শেষ করলো তোমাকে, জানিনা, জানতে চাইও না। শুধু আমি জানতাম আমার বন্ধুটা ফিরে আসছে আগের মত। কিন্তু নাহ আবারও আঘাত। এবার তুমি হারিয়ে গ্যালে চিরতরে। হয়তো মর্তের পৃথিবী থেকে আকাশটাই টানছিলও তোমাকে অনেক বেশী। কিন্তু তোমার উপর অনেক রাগ হয়, ক্যানো জানো? কারণ হল এখন আমি মন খারাপ থাকলে কাকে সিগন্যাল দিবো? কার উপর রাগ ঝাড়বো বলতে পারো? পারো না কারণ তুমি স্বার্থপর, একলাই আগে ভাগলা? ঠিকনা ম্যান, কাজটা খুব খারাপ করসো। এটলিস্ট আমাকে যাওয়ার আগে একটা সিগন্যাল দিতে পারতা। হয়তো মনটা ভালোও হতে পারতো। ধুর মিয়া, কাম করলা একটা?

যাক যা করসো করসো, এইবার বেহেস্ত বা দোজখ যেইখানেই থাকো, আমার জন্য ভালো দেইখা একটা যায়গা দেইখো, অনেকদিন একলগে চিল করা হয়না। আর গ্যাসো তো গ্যাসো মাঝে মধ্যে হুদাই প্যারা ক্যান দাও ভাই? ওইখানে গিয়াও আমারে জ্বালানো লাগবো? যাউকগা অনেক ক্ষতি করসো। গত বারো বছর ধইরা একটা বেষ্ট ফ্রেন্ড পাইলাম না তোমার লাহান… যা ফুট…
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মে, ২০২০ রাত ২:৪২
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×