সারা রাত পার হয়ে গেলো রফিকুল পড়ার টেবিল থেকে উঠলো না। ওই যে এক ধ্যানে চেয়ারে বসে মাথা নিচু করে পড়ছে তো পড়ছেই। রফিকুল ভালো ছেলে। বাবা মায়ের বড় ছেলে। সদ্য মাস্টার্স শেষ করেছে। পরবর্তী টার্গেট একটা ভালো সরকারি পেয়ে বাকি জীবন সাচ্ছন্দে কাটিয়ে দেওয়া। টুকটুকে সুন্দরী একটা বৌ ঘরে এনে সংসার করা। সুন্দর প্ল্যান।
রফিকুলের রুমমেট প্রণয়। জীবন নিয়ে অতটা সিরিয়াস নয়। সারাদিন পড়াশুনা বাদ দিয়ে এক ল্যাপটপ আছে তার মধ্যেই ঘুতাঘুতি। এই যে রফিকুল এতো বুঝায় যে বই পড়, প্রকৃত জ্ঞান মানুষ বই থেকেই পায়। প্রণয় হাসে, আর বলে সবার পছন্দ অপছন্দ এক নয়।
-রফিক ভাই কি পড় আজকে ?
-আজকে বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক মুদ্রার নাম গুলো একটু ঝালাই দিয়ে নিচ্ছি রে প্রণয় ,
-তাই নাকি ? তো বলতো হরিদাশপুরের মুদ্রার নাম কি ?
-তুই কি আমার সাথে মজা নিস ? (একটু তাচ্ছিল্লের সাথে)
-তুমি যদি মজা নিতে পারো, তো আমি আবার কি দোষ করলাম ?
-আমি তোর সাথে কোনো মজাই নেই নি, বরং তোকে সবসময় পড়াশুনার প্রতি মনোযোগী হতে বলি।।
-আচ্ছা রফিক ভাই বলতো এই যুগে এসে তুমি মুদ্রার নাম মুখস্থ করে সেইটা কোন জায়গায় ব্যবহারিক ভাবে কাজে লাগাতে পারবে ?
- আমার লাগবে সরকারি চাকরি তাই পড়তেছি।
- আচ্ছা পড়ো, আমি যাই।
প্রণয় যেতে নিয়ে আবার ঘুরে এলো। পরনের লুঙ্গির গিট ভালোভাবে বেঁধে নিয়ে বললো,
- আচ্ছা রফিক ভাই তুমি জানো ডাটা সাইন্স, অটোমেশন, রোবোটিক্স, ইনফরমেশন কালেকশন সিস্টেম এগুলো কি ?
- আপাতত চাকরির পরীক্ষায় ভালো করার জন্য এসবের দরকার নাই।
-একবার চাকরি হলে পরে সরকারিভাবে এসবের ওপর ট্রেনিং করায়, তখন বিদেশটাও ঘুরে আসা যাবে ট্রেনিংও করা হবে।
- হুম তাও অবশ্য ঠিকই বলছো।
- সবগুলো দেশের নাম আর তাদের রাজধানী,মুদ্রার নাম মুখস্থ করে এসে তারপর আমার সাথে আজাইরা পেঁচাল পারিস এখন পড়তে দে ভাই।
-আচ্ছা পড়ো।
বছর খানেক পরে রফিকের একটা সরকারি চাকরি হয়েছে । আর প্রণয় এখনো সেই ল্যাপটপে ঘুতাঘুতি করে। এখন রফিক কে সবাই ''রফিক সাহেব '' বলে ডাকে কিন্তু রফিক জানেনা কম্পিউটার এ Ctr+D চাপলে কি হয়। রফিক এটাও জানে না প্রণয় বিদেশে একটা সফটওয়্যার কোম্পানিতে প্রোগামার হিসেবে জয়েন করার অফার পেয়েছে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


