আগে জানতাম মার্কেটিং, এখন দেখি নেগেটিভ মার্কেটিং। কি এক অদ্ভুত কান্ড। মানুষের জন্য বিরক্তিকর, মেজাজ খারাপ হওয়া বিষয় এবং সমাজের তলানির কিছু অপাংতেয় মানুষগুলো এখন ব্যবহৃত হচ্ছে মার্কেটিং এর জন্য। কয়েকদিন আগে দেখলাম মেহেজাবিন শিশুতোষ বদনে তার অনাগত সন্তানতুল্য সিনেমার পোস্টার মারছে ক্যান্টনমেন্টের ভাল্লুকে খাওয়া তনুর পোস্টারের ওপর। পরে অবশ্য মিডিয়ার সামনে নির্লজ্যের মতো পূর্ব পরিকল্পিত ক্ষমার অনুষ্ঠান প্রচার হয়েছে।
ইদানিং দেখা যায়, যে বিষয়গুলো সমাজের রক্ষণশীলতার জন্য পরিহার্য সেগুলোই ব্যাঙ্গাত্মক ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে কোনো একটা বিষয়ের প্রচার প্রসারের জন্য। সুপরিচিত হওয়ার জন্য মানুষ কুখ্যাত সব পন্থা অবলম্বন করছে, হঠাৎ করেই আবির্ভুত হচ্ছে কিম্ভুতকিমাকার সব বেশ ভুষায়। নতুন প্রজন্মের সাথে সাথে পুরোনো প্রজন্মের কিছু মানুষও চেষ্টা করছেন নিজেকে পরিচিত করতে। অধিকাংশই ভুলে যাচ্ছেন কোন বিষয়টা তার বয়সের সাথে বেমানান বা সমাজে তার সাথে যায় না। অনেকে যুক্তি দিচ্ছেন মনের বয়স নাকি ১৬ তাই একটু আধটু এসব ঝিলিমিলি টাইপের কর্মকান্ড করে বেড়ান।
অনেকে শুরু করেছেন কাপল ভ্লগিং। নেটিজেনরা বলছেন এরা বৌ ব্যবসায়ী। শুধু বাকি আছে নিজের বৌকে অন্যের ঘরে দিয়ে আসা। কোন পরিবেশে কোথায় নিজের বৌকে চুমি খেতে হবে আর নিজের বৌয়ের স্পর্শকাতর অঙ্গে হাতাহাতি করতে হবে এরা সেটার কোনো তোয়াক্কা করছে না। ডলার আসছে সেটাই বড় কথা।
দেশের পরিচিত একটা টিভি চ্যানেলে কমেডি শো হচ্ছে, তার কিছু কাটা কাটা অংশ আবার তাদের ফেসবুক পেজে ছেড়ে দেয় মানুষকে হাসানোর জন্য। স্ক্রিন স্ক্রল করতে করতে সামনে আসে, হা শো লেখা দেখে ভাবলাম দেখি একটু হাসি। জোকস শুনে মনে হলো শোয়ের নাম ''হা শো'' না দিয়ে ''চটি শো'' করলে মানানসই হতো বেশি। বিচারক হিসেবে যেসব অপদার্থগুলো বসছে এরা দেখি জোর করে হাসছে সম্মানী ভাতার জন্য।
গতকাল অবাক হয়ে গেলাম একটা বিষয় দেখে। এক শিশু(টিকটকার) হারিয়ে গিয়েছিলো মায়ের চিকিৎসা করাতে ঢাকায় এসে। ফেসবুকে তার বাবার আবেগঘন হারিয়ে যাওয়ার পোস্ট দেখে সমস্ত জাতি ব্যাকুল হয়ে গিয়েছিল হারিয়ে যাওয়ার খবরে। স্বাভাবিকভাবে যা হওয়ার কথা তাই হলো ,আমরা আবেগ দিয়ে জীবন চালাই। এর মধ্যে কিছু বখাটে লোকজন তার বাবার পোস্টে কমেন্ট করলো তার মেয়েকে দেখে সুবিধার মনে হচ্ছে না। কোনো ছেলের সাথে পালাইছে। এরপরেই কাম সারছে, বিবেকবান লোকজনতো ওই বখাটে মন্তব্যকারীদের একদম স্ক্রিনশটসহ তুলে ধরে বললো এরা কি মানুষ না অসুস্থ? একজন হারিয়ে যাওয়া মেয়ের বাবার দুঃখ না বুঝে এসব কষ্টদায়ক মন্তব্য করছে কেনো? আমরা কবে মানুষ হবো বা সুস্থ্য হবো ?
আমিও সমর্থন দিলাম যে না এরাই সমাজের ভালো মানুষ। পরে যখন দেখলাম শিশুটি সত্যি সত্যি তার প্রেমিকের সাথে পালাইছে তখন নিজেকে কোন লাইনে দাঁড় করবো বুঝতে পারছিলাম না। শিশুটি সহাস্য উদ্ধারের পরে দেখি হেসে হেসে বলছে সে ভালো আছে। এক কাপ চা খেয়ে ভাবলাম ধুর বা,,,,,,। নিজের চরকায় তেল মারি।
আবার শুনলাম আপা নাকি ভাষণ দিবে। কই যে যাই আর কি যে করি মাথায় ধরে না।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


