সুফিয়া গোমেজ নামী দামী চিত্রশিল্পী। সুফি নামে যাকে এখন সবাই চিনেন। নন্দিত এ তারকা চিত্রশিল্পীর কিছু ছবি ইদানিং সমালোচনার মুখে পড়েছে। পুরুষদের নগ্নভাবে উপস্থাপন করে চলেছেন তার নগ্ন বিলাস সিরিজ পেইন্টিং-এ। একের পর এক নগ্ন পুরুষদেহ যেন ঝলসে উঠেছে তুলিতে। এ নিয়ে তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি দৃঢ়তার সাথে বলেছেন-এত কালতো নারীর ছবিতেই পুরুষ তথা দর্শক বুদ হয়েছিল এবার না হয় পুরুষের ছবিতে নারীরা বুদ হয়ে থাকুক, খুজে নিক কিছু আনন্দের গোপন বৃষ্টিবিন্দু।
সুফি বেশ ক’জন সুদর্ষণ তরুণকে তার ছবির মডেল হওয়ার জন্য অফার করেন। তারা সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে সুফির সামনে দাড়িয়ে থাকবে আর সে মনের মাধুরি মিশিয়ে সেই নগ্ন পুরুষদেহ আঁকবেন। মডেলরা হয়ে যাবে কেউ আরব্য রজনীর গোলাম, কেউবা ডানাওয়ালা পুরুষ পরী আবার কেউবা ঘোড়সওয়ার কিংবা আততায়ী।
তার কথা শুনে লজ্জা ও বিষ্ময়ে সবাই কেটে পড়লেও একজন ঠিকই রাজি হেয় যায়। বসন্তের পড়ন্ত বিকেলে সেই তরুণকে ডেকে নিয়ে নিজের নির্জণ বাংলোতে বসে জেনে নিয়েছিলেন কেন ছেলেটি নগ্ন মডেল হতে রাজি হয়েছে।
ছেলেটির কথায় বেশ আরাম পেলেন সুফি। যাক শুধু অর্থের বিনিময়ে নিজেকে বিক্রি করতে আসেনি যুবক। সুফির চাওয়াকে সম্মান দেখিয়েই সে একাজ করতে চায়। যাতে একজন নারী চিত্রশিল্পীর বাসনা পূরণ করতে পারে।
রাত দিন যখনই সুফি ডেকেটে এডাম এসেছে। ঘন্টার পর ঘন্টা বিবস্ত্র হয়ে দাড়িয়ে থেকেছে। কিন্তু সুফি আর এডাম কখনও নোংরামিতে জড়িয়ে পড়েনি। শিল্পের প্রয়োজনে যেন দুজন উদার মানুষ কাজ করে চলেছেন নিবেদিত প্রাণে।
আবারও সুফিকে নিয়ে আলোচনা/সমালোনা হচ্ছে। এবার গুজব ছড়িয়েছে সুফি নাকি তরুণ ছেলেদের নষ্ট করছে। তাদের নগ্ন করে ছবিতো আঁকেই এবং তাদের সাথে বিকৃত যৌনাচারে লিপ্ত। এডামকে নিয়ে সে এবার একেছিল- আরব্য রজনীর এক নগ্ন পুরুষ যে তার ঘোড়ার পাশে দাড়িয়ে আর পিছনে রহস্যময় রাত নেমেছে।
ছবিটি যত সুনাম অর্জন করেছে শিল্পী তার চেয়ে দুর্নামে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। সুফি এসবের পরোয়া করে না। সে প্রতিশোধ চায় চরম প্রতিশোধ। আজকের সুফি যখন কিশোরী। অভাব যখন আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরেছে অসুস্থ মা আর ছোট ভাইকে বাচাতে সে বাধ্য হয়ে বেছে নিয়েছিল নগ্ন মডেলের জীবন। সেই লম্পট আঁকিয়ে তার সর্বনাশ করে ছেড়েছিল। কিন্তু ততদিনে সুফি আর্টের জগৎটা ভালভাবেই চিনে গিয়েছিল আর শিখে গিয়েছিল ক্যানভাসে কি করে ছবি ফুটিয়ে তুলতে হয়।
এডামকে বলেছিল তার জীবনের এই গোপন অধ্যায়। এডাম বলেছিল-েআপনি ইচ্ছে করলেই আমার মত অনেক তরুণকে মডেল হিসেবে এনে শয্যায় নিতে পারেন। কিন্তু আপনি শিল্পী তাই শিল্পের অপমান করেন নি। তাইতো আজ দেশময় আপনার এত নাম, সুনাম, খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে।
সুফি বলেছিল-এডাম তুমি আমাকে ভালবাস বলেই আমার সব দিক পজেটিভ ভাবো। আমি শুধু সেদিনের প্রতিশোধ নিতেই আঁকি পুরুষের দেহ। মনের আগুন নিভাতেই এটা করি। আমার কোন নগ্ন বিলাস নেই।
জীবনের নগ্নতা আর লজ্জাকে কেড়ে নিয়েছে যে ক্যানভাস। সেই ক্যানভাসই আমার প্রতিশোধের হাতিয়ার। আমি চিরকাল উজান মাঝি হয়ে দাড় টানবো ব্যাথার গাঙ্গে। নাইবা হলো কেউ আমার সঙ্গী। আর আমি কখনো অন্যায়ভাবে কোন পুরুষকে ভোগ করবো না।
এরপর এডাম প্রচলিত সমাজের পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি পদাঘাত করে হাত বাড়িয়েছে সুফির প্রতি কিন্তু সুফি ভাবনার কুয়াশায় হারিয়ে যাচ্ছে এই হাত ধরবে কি ধরবে না।
সেতো এতকাল একাই লড়াই করে গেল। তবে কি সে এবার নতুন স্বপ্নের জাল বুনবে। দু’জনকে মুখোমুখি দাড় করিয়ে সময় যেন থমকে আছে।
ছবি-গুগল থেকে নেয়া।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:৪৭