আল্লামা শাহ আহমদ সফি (দাঃ বাঃ) একজন মুসলমান, তিনি মুসলমানের মধ্যে একজন বিজ্ঞ আলেম, আলেমের মধ্যে তিনি একজন শীর্ষ স্থানীয় আলেম, শীর্ষ স্থানীয় আলেমের মধ্যে তিনি বিশ্ব আলেম সমাজের কাছে সর্ব শ্রদ্ধেয়। হযরতের এক ইশারায় ৭০/৮০ লক্ষাদিক মুসলমানের সমাবেশ ঘটে যাহা ডক্টর কালাল সাহেব স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেন না। আমি শুধু হযরতের মৌলিক পরিচয় তোলে ধরলাম, এর বাহিরে হযরতের হাজারও গুনবলি পরিচয় রয়েছে যাহা ডক্টর কামাল সাহেবের কাছে সময় সুযোগ বয়স নাই আছে শুধু আফসোস। যাই হউক, মূল কথায় আসি; ইনি ঐ ডক্টর কামাল সাহেব যিনি মুসলমান পরিচয় দানকারী "কাফের কাদিয়ানির" পক্ষে উচ্চতর স্বদল বলে আদালতে ইসলামী ঝাঁন্ডার বিরোদ্ধে আইনি লড়াই করেছিলেন সূতরাং তিনি বিশ্ব নন্দিত আলেমে দ্বীন আল্লামা সফির বিরোদ্ধে কিছু বলাটা অস্বভাবীক কিছুই নয়। আল্লামা সফি স্পষ্ট ভাবেই বলেছেন মেয়েদেরকে চতুর্থ/পঞ্চম শ্রেনী পর্যন্ত পড়াও, এই বক্তটি আপাত দৃষ্টিতে নারী বিদ্ধেষী মনে হচ্ছে তবে আসলে কি নারী বিদ্ধেষী???? আসুন হযরতের এই বক্তটি একটু বিশ্লেষণ করে দেখি! শিক্ষা সকলের জন্য, পুরুষেরা জ্ঞান অর্জন করবে আর নারী সমাজ অজ্ঞ মূর্খ হয়ে থাকবে এটি কোনো সমাজ তো দূরের কথা কোনো ধর্মই অনুমোদন করেনা তাহলে হযরত মেয়েদেরকে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দূরে থাকর পরামর্শ দিলেন কেন? (১) নারী পুরুষ থেকে এবং পুরুষ নারী থেকে পর্দা করা আল্লাহর হকুম, শীর্ষ আলেম, আলেম সমাজ এবং সাধারণ মুসলমান সকলেই আল্লাহর এই হকুমের কথা অন্যকে জানাইয়া দেয়া ঈমানী দায়ীত্ব, এই দায়ীত্ব পালন থেকে মুসলমান হিসাবে ডক্টর কামাল সাহেবও বাদ পড়ে নাই। তাহলে স্পষ্ট হলো যে, হযরত আল্লামা শাহ আহমদ সফি (দাঃ বাঃ) একজন শীর্ষ আলেম হিসাবে তার ঈমানী দায়ীত্ব পালন করেছেন অন্যতায় যেহেতু তিনি কোরান হাদিসের ইলম অর্জনকারী আলেম সেহেতু হাশরের ময়দানে তাকে এই বিষয়ে জবাবদিহি করতে হবে, হযরতের এই ডাকে কেউ সারা দিক বা না দিন সেটি হযরতের বিষয় নয়, ডক্টর কামাল মত প্রকাশের স্বাধীনতায় হস্থক্ষেপ করতে পারেন না, তিনি সংবিধানের কথা বলছেন; সংবিধান রচিয়তার মধ্যে তিনিও একজন, সংবিধানে নারীর স্বাধীনতা সহ অনেক কিছু বলা হয়েছে, তার কাছে বিনিত জিজ্ঞাসা হইল; আজ সারাদেশে অস্বাভাবীক ভাবে সর্বস্তরে নারী নির্যাতিত হচ্ছে, শিক্ষাঙ্গনে লিভটুগেদার সহ অবাধ যৌনাচার চলছে, সর্বক্ষেত্রে আমাদের মেয়েদের ইজ্জত আব্রু রক্ষায় সংবিধানে তিনি কি সংযোজন করেছেন? যদি সংবিধানে এই বিষয়ে কিছু থেকেই থাকে তাহলে সারাদেশে অবাধ যৌনাচার, নির্যাতনের মাধ্যমে সংবিধান লঙ্গিত হচ্ছেনা? (২) হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা পরামর্শের মধ্যে এক দফায় শিক্ষালয় এবং কর্মস্থলে নারীর ইজ্জত আব্রুর নিরাপত্তার দেয়ার কথা স্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রীয় আইন বিধান এবং শাসক নারীর ইজ্জত আব্রু রক্ষায় কোনো পদক্ষেপ নেয় নাই উল্টা প্রেম ভালবাসার নামে অবাধ যৌনাচার, চলার পথে উত্যাক্ত করা, অপহরণ, ধ্বর্ষণ গনধ্বর্ষণ ইত্যাদি অপ্রত্যশিত ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, সকল অভীবাবক তার উপযুক্ত মেয়েকে নিয়ে শঁঙ্কায় থাকেন যে, তার মেয়ে শিক্ষাঙ্গন কিংবা কর্মস্থল থেকে নিরাপদে ফিরে আসছে কিনা, কর্মস্থলের তুলনায় শিক্ষাঙ্গন বেশী ভয়াবহ। যেহেতু রাষ্ট্র এবং শাসক নারীর উজ্জত আব্রু রক্ষায় কোনো পদক্ষেপ নেন নাই এবং নিচ্ছেন না সেহেতু হযরত আল্লামা শাহ আহমদ সফি (দাঃ বাঃ) সহ প্রত্যেক ভদ্র পরিবারের অভীবিাকেরা ইজ্জত আব্রু রক্ষার্থে মেয়েকে উচ্চতর শিক্ষা থেকে দূরে রাখা ছাড়া দ্বিতীয় কোনো পথ পন্থা নাই, ডক্টর কামাল সাহেব যেই পরিবার পরিবেশেরই হউন না কেন, হযরত জনসমাবেশে ভদ্র পরিবারের দ্বীলের কথাটিই বলেছেন। (৩) দৈনিক পত্র পত্রিকা এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে যেইসব অবাধ যৌনাচারে সংবাদ প্রকাশ হয় তাহা হাজার ভাগের এক ভাগও নয় বাস্তব চিত্র দেখলে মনে হবে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় গুলি যৌনাচার প্রশিক্ষন কেন্দ্র তথা উম্মুক্ত পতিতালয়। দুনিয়ার কোনো ভদ্র পরিবার চাইবেন না যে, তার উপযুক্ত মেয়ে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে জ্ঞান অর্জন করতে গিয়ে তার সম্ভ্রম নিলাম করে দুনিয়াবী জ্ঞান অর্জন করুক। এখানে বার বার "ভদ্র পরিবার" উল্লেখ করছি তাই লেখাটি পড়ে অনেকে রাগান্নিতও হতে পারেন, বড় নেতা হাওয়া, সূন্দর সুচারু ভাষায় কথা বলা কিংবা কোটিপতি হাওয়া ভদ্রতার মাপকাঠি নয় বরং যেই পরিবার বা যারা সকল প্রকার অপকর্ম থেকে বিরত থাকেন এবং কোনো প্রকার অপকর্মকারীকে আশ্রয় পশ্রয় দেয়া থেকে বিরত থাকেন তারাই মূলত সমাজের অত্যান্ত সুনামধণ্য ব্যক্তি, পরিবার বা সমাজ। (৪) অনেকের লেখায় পড়েছি ডক্টর কামাল সাহেবের মেয়ে একজন খ্রীষ্টান ধর্মাবলম্বীকে বিয়ে করেছেন (কতটুকু সত্য মিথ্যা জানিনা) কথাটি যদি সত্য হয় তাহলে বুঝা যায় ডক্টর কামাল সাহেব মেয়ের ইচ্ছা আকাঁঙ্খার খেয়ালী স্বাধীনতায় বিশ্বাসী, তার মৌলিক পরিচয় (তিনি মুসলমান, তার সামাজিক ও ধর্মীয় বিধি বিধান রয়েছে) এখানে একবারেই তুচ্ছ। ইসলাম মানুষকে স্বাধীনতা দিয়েছে, মুসলমানের কোনো সন্তান যদি ধর্ম ত্যাগ করে তাকে হাত পা বেঁধে মুসলমানের সমাজে ধরে রাখার বিধান ইসলামে নাই একই ভাবে কোনো বেদ্বীনের হাত পা বেঁধে মুসলমান বানানোও ইসলাম অনুমোদন করে না, ধর্ম হচ্ছে দ্বীলের বিশ্বাস, যাহা চর্চা এবং জীবনাচারের মাধ্যমেই প্রকাশ পায়। বেদ্বীনেরাও তাদের ধর্মীয় বিধি বিধান মোতাবেক বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়, এটি বৈধ বন্ধন কিন্তু কোনো মুসলমানের সন্তান কোনো বেদ্বীনকে যদি বিবাহ করতে চায় তখন ঐ বেদ্বীনকে অবশ্যই মুসলমান হতে হবে অথবা মুসলমন সন্তান যদি ঐ বেদ্বীনের ধর্ম গ্রহন করে তবেই সেই বিবাহ বন্ধন অন্তত সামাজিক ভাবে হলেও বৈধ বলা যাইতে পারে অন্যতায় ধর্ম এবং সমাজ ব্যবস্থ্যায় ব্যভীচার, অবাধ যৌনাচার তথা "জেনা" হিসাবে পরিগনিত হবে। ডক্টর কামাল সাহেবের মেয়ের ব্যপারে যাহা পড়েছি তাহা যদি সত্য হয় তাহলে জানার বিষয় রয়েছে যে, ডক্টর কামাল সাহেবের মেয়ে স্বামীকে ধর্মান্তরীত করেছেন? নাকি নিজে ধর্মান্তরীত হয়েছেন। তৃতীয় অংশ(৫) মিডিয়ার কিছু লোক হযরতের এই বাক্য নিয়ে তোলপার করছেন, আমরা নিশ্চ্যিৎ ভাবে জানি যে, যারা মিডিয়ায় কাজ করেন তারা কেউ অশিক্ষিত নন, দেশ জাতির সব বিষয়ে প্রশাসনের চাইতে মিডিয়ার লোকেরাই বেশী খবরা খবর রাখেন এবং প্রকাশ করেন তাই মিডিয়াকে ধন্যবাদ জানাই যে, তারা ছিটে ফোটা হলেও কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অবাধ যৌনাচারের বাস্তব চিত্র জনগনের সামনে তোলে ধরেন, জনগনকে সতর্ক করেন। আল্লামা শাহ আহমদ সফি (দাঃ বাঃ) কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করতে যান নাই, স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং কর্মস্থল সহ স্বাভাবীক চলা চলে নারীরা কি অবস্থায় আছেন তাহা তদন্ত করার জন্য কমিটিও করেন নাই বরং এইসব অঁঙ্গনে অবাধ যৌনাচার, চলার পথে উত্যাক্ত করা, অপহরণ, ধ্বর্ষণ গনধ্বর্ষন সহ নানা ভাবে নারী নির্যাতনের কথা যাহা মিডিয়ায় প্রকাশ পেয়েছে তার আলোকেই নারীর উজ্জত আব্রু রক্ষায় তার ঈমানী দায়ীত্ব পালন করেছেন। মিডিয়ার যেই সমস্ত লোক হযরতের বাক্য নিয়ে ঝাড় তোলছেন তাদের কাছে বিনিত জিজ্ঞাসা; আপনার উপযুক্ত মেয়ে যদি কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে জ্ঞান অর্জন করতে গিয়ে তার ইজ্জত আব্রু নিলাম করে দেয় সেটি আপনি মেনে নিবেন কি? যদি মেনে না নেন তাহলে আল্লামা শাহ আহমদ সফি (দাঃ বাঃ) বক্তব্যে আপনাদের এতো জ্বলন কেন? আপনারা কি চান যে, আপনাদের মেয়ে সহ আমাদের মেয়েরা কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে জ্ঞান অর্জন করার সাথে সাথে অবাধ যৌনাচারের শিক্ষায় শিক্ষিত হউক। ভাই, আপনি চাইতে পারেন কিন্তু আমরা আমাদের মেয়ের ইজ্জত আব্রু রক্ষায় সজাগ স্বচেতন রাষ্ট্র এবং শাসক যতদিন পর্যন্ত নারীর ইজ্জত আব্রু রাক্ষায় এগিয়ে আসবে না ততদিন আল্লামা শাহ আহমদ সফি (দাঃ বাঃ) যাহা বলছেন তাহাই আমাদের জন্য শিরধার্য্য। ধন্যবাদ
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৩৮