somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মো: সাকিব হাসান
দৃষ্টি তার সীমাহীন,বিশালতা তার আকাশে।গভীরতা তার সাগরে,সপ্ন তার অন্তরে হাসতে চাই জয় এর হাসি।দেখাতে চাই বেঁচে থাকার সপ্ন,অস্তিত্ব তার শিকরে, তার আপন মনের গহীনে......

মিটিং এর যে ১২ টি টিপস গুরুত্বপূর্ণ

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মিটিং শব্দটির সাথে যেমন অফিস কথাটি চলে আসে, ঠিক তেমনি ছাত্র জীবনেও বিভিন্ন মিটিং এখন নিত্য দিনের ব্যাপার। কয়েকটি ব্যাপারে মনোযোগী হলেই মিটিং এ আপনিও নিজের অবস্থান পোক্ত করে নিতে পারবেন। একজন সেলস পার্সন হিসাবে প্রায়ই মিটিং থাকতে পারে ক্লায়েন্টদের সাথে কিংবা একজন এক্সকিউটিভ হিসেবে আজ্ঞাধীনদের সাথে মিটিং থাকবে প্রায়ই।

যখন যেভাবেই যে মিটিং এ থাকুন না কেন, এই মিটিংই হতে পারে আপনার স্থায়ী মৌলিক প্রতিকৃতি। নিজেকে ছিমছাম ভাবে উপস্থাপন আর সৌজন্যমূলক ব্যবহার আপনাকে করে তুলবে সবার কাছে আরো বেশি আকর্ষণীয় এবং আরো বেশি সম্মানিত। আর সে জন্য খুব বেশি আয়োজন নিয়ে মাঠে নামার কিছু নেই। কিছু সাধারণ বিষয় লক্ষ্য রাখলেই নিজেকে সবার থেকে আলাদাভাবে দাঁড় করাতে পারবেন।

১. পরিপাটি হয়ে অফিসে উপস্থিতি
নিজেকে পরিপাটি করে উপস্থাপনের বিষয়টি সকলের জানা থাকলেও শুধুমাত্র এই বিষয়টির উপর জোর দিয়েই অনেক মিটিং সফলভাবে শেষ হয়েছে। পরিপাটির বিষয়টি শুধুই বাহ্যিক ভাবে সুন্দর হয়েই আসতে হবে তা কিন্তু নয়। মিটিং এর সঠিক এবং সুস্পষ্ট উদ্দেশ্য এবং সে বিষয়ে সঠিক কিছু তথ্য দিয়ে বানিয়ে নিতে পারেন একটি নোট। মিটিং এর বিষয়বস্তু সম্পর্কে সঠিক ধারণা নিয়েই রুমে ঢুকুন। আর যদি আপনার আগে করে রাখা রিসার্চের কোনো বিষয় আলোচনায় আসে, সে বিষয়ের স্পষ্ট ধারণাটি আপনাকে করে তুলবে সবার থেকে আলাদা।

২. সুস্পষ্ট এবং জোরালো ভাবে কথা বলা
এটি সবচেয়ে সহজ পন্থা নিজের অবস্থানকে মৌলিক রাখার। আপনাকে খুব বেশি কথা বলতে হবে না আবার কোনো আদেশ নিষেধ নিয়েও ভাবতে হবে না। কিন্তু যতটুকু কথা বলবেন তা যেন হয় যৌক্তিক এবং চেষ্টা করবেন সর্বোচ্চ সততা দিয়ে আপনার যুক্তিকে উপস্থাপন করবার। অনেকেই আছেন মিটিং চলাকালীন সময়ে তেমন কথা বলেন না। খুব বেশি কথা না বলে যুক্তিযুক্ত কথা বলুন এবং ভীত না হয়ে নিজের মতামতগুলোকে উপস্থাপন করুন।

৩. বিপরীত অবস্থান বুঝে তর্ক
যেকোনো বিষয়ে সহজেই তর্কে জড়াবেন না তবে প্রতিপক্ষকে কোনোভাবেই নাটাই হাতে নেওয়ার সুযোগ দিবেন না। যৌক্তিক তর্ক করবেন আর প্রতিপক্ষীয় দুর্বলতা না জেনেই কিছু বলবেন না। সে জন্য মিটিং শুরুর আগেই প্রতিপক্ষ সম্পর্কে জেনে নিবেন ভালোভাবে।

৪. মন দিয়ে অন্যদের কথা শুনুন
মৌখিক যোগাযোগ ছাড়াও মন দিয়ে অন্যদের কথা শুনাটাও একপ্রকার যোগাযোগ সকলের সাথে। অনেকেই মিটিং এর মাঝে ফোনে কথা বলার জন্য বের হোন বা অজান্তেই সেল ফোনের দিকে মনোযোগী হয়ে পড়েন। এই বিষয়টি অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে আপনার কোনো আচরণ যেন আপনার সম্মানহানির কারণ না হয়। মেরুদণ্ড সোজা হয়ে মিটিং চলাকালীন বসে থাকার ব্যাপারটিও আপনার স্বচ্ছ ব্যক্তিত্বের পরিচায়ক।

৫. তথ্যবহুল চিরকুট
মিটিং এর বিষয় বস্তুর উপর ছোট ছোট নোট প্রমাণ করবে আপনি মিটিং এর বিষয়বস্তু নিয়ে কতটুক মনোযোগী এবং সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য আপনি কতটুকু অংগীকারবদ্ধ। শুধুমাত্র অতিরিক্ত কিছু সময় আপনি মিটিং এর জন্য দিচ্ছেন যাতে পরবর্তীতে যে বিষয়গুলি নিয়ে আপনি আলোচনা করতে চান তা যেন কোনোভাবেই বাদ না পড়ে যায় এমন কি গুরুত্বপূর্ণ আইডিয়াগুলোও আলাদাভাবে লিখে রাখতে পারেন। এই ব্যাপারটি মিটিং এ সবার মাঝে আলাদা একটি অবস্থান দিতে পারে।

৬. যৌক্তিক প্রশ্ন করুন
অবশ্যই খেয়াল রাখবেন, আপনি যেন একজন যৌক্তিক প্রশ্নকর্তা হন। অহেতুক প্রশ্ন করে নয়, বরং যে বিষয়গুলোর বিশদ আলোচনা হতে পারে সমাধানের পথ, চেষ্টা করবেন সে ধরণেরর প্রশ্নগুলোই তুলে ধরার। অংশগ্রহণমূলক ভাবে হলেও প্রশ্ন করার ব্যাপারটি আপনি যে মিটিং এর প্রতি মনোযোগী ছিলেন সে বিষয়টির প্রমাণ করে।

৭. নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করবেন
মনোযোগের সাথে মিটিং এর প্রতিটি বিষয়ে শুনবেন। আর যে বিষয়টিতে আপনি নিজস্ব মতামত দিতে চাইবেন সে বিষয়ে জিজ্ঞেস করে নিবেন আপনি আপনার মতামত দিতে পারবেন কিনা আর অবশ্যই আপনার সহকর্মী তার নিজস্ব মতামতের জন্য সাধুবাদ জানাবেন। সহকর্মীকে তার অবস্থানের ভুল প্রমাণ করে নয় বরং সাধুবাদের সাথে নিজের মতামত উপস্থাপন করুন।

৮. নিজের আর্দশের কাউকে নিয়ে ভাবুন
মিটিং এর শুরুতে আপনার জীবনে যাকে আর্দশ মনে করবেন তাকে নিয়ে কিছু বিষয় ভাববেন যা আপনাকে সর্বোপরি উৎসাহ জুগিয়েছে। শুধু এই ভাবনাটি আপনাকে একজন পজিটিভ বৈশিষ্ট্যের মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। শুধু মিটিং নয় জীবনের যেকোনো বড় চ্যালেঞ্জ নিতে উৎসাহ যোগদানকারী ব্যক্তিটি হতে পারে আপনার সাফল্যর একটি বড় খুঁটি।

৯. সঠিক সময়ে উপস্থিত হবেন
মিটিং এ সবসময় সঠিক সময়ে উপস্থিত থাকার চেষ্টা করবেন। সম্ভব হলে আগেই উপস্থিত থাকবেন। সঠিক সময়ের উপস্থিতি আপনাকে একজন সময় সচেতন ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচায়ক হবে।

১০. অপরিচিতদের সাথে পরিচিতি বাড়ান
মিটিং এ যাদের চিনবেন না তাদের সাথে পরিচিত হোন। নিজের পরিচয় দেয়া এবং তাদের পরিচয় জানার চেষ্টা করুন। অপরিচিতদের সাথে নিজের থেকে পরিচয় হওয়ার গুণটি সামাজিকভাবে আপনার অবস্থানকে করবে গতিশীল।

১১. অপরের আইডিয়াগুলো লিখে ফেলুন
মিটিং এ সবার আইডিয়াগুলো লিখে রাখবেন এবং নিজের আইডিয়া নিয়ে কথা বলার সময় অপরের আইডিয়াগুলোও আলোচনা করবেন। অপর পক্ষের প্রতিটি আইডিয়ার ব্যাপারে মনোযোগী হোন।

১২. শুভেচ্ছা জানিয়ে শেষ করুন
মিটিং এ আপনার বক্তব্য শেষ হলে নিজের ডেস্কে ফিরে আসাটাই আপনার শেষ কাজ নয়। উচ্চপদস্থ এবং অধীনস্থ সকলকেই ধন্যবাদ জানাবেন একটি ফলপ্রসূ মিটিং এর ব্যবস্থা করার জন্য সেই সাথে এই মিটিং থেকে কী কী বিষয়ে আপনি অবগত হলেন সেটাও জানাবেন। এতে সহজেই উচ্চপদস্থদের দৃষ্টি আর্কষণ করা সম্ভব।

মিটিং এ কেমন ব্যবহার করবেন সেটা আপনার ক্যারিয়ারের ভালো মন্দ নির্ধারণ করবে অনেক ক্ষেত্রেই। অভিমত আপনার হাতেই, সম্মানের সাথে সঠিক সুযোগ অর্জনের জন্য মিটিং চলাকালীন সময়ে তাই নিজেকে প্রমাণ করতে হবে। নিজেকে শুধু সুদর্শন হিসেবে নয়। বরং আত্নবিশ্বাসী হওয়ার উদ্দীপকগুলো আপনার মাঝে নতুন আদর্শ তৈরি করবে। প্রতিটি মিটিং এ নিজেকে প্রমাণ করতে পারবেন একজন আদর্শ কর্মী হিসেবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:১৭
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×