somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পুলিশের প্রতি আমাদের দায়িত্ব

২৭ শে জুন, ২০১৮ রাত ১০:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সাধারণত প্রত্যেক সরকারি বা বেসরকারি কর্মচারিদের শ্রমঘন্টা বা কর্মঘন্টা ৮ ঘন্টা নির্ধারিত থাকলেও শুধুমাত্র বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর ক্ষেত্রেই এই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটে । অথচ দিনের প্রায় ১৬ থেকে ১৮ ঘন্টা জনগণের সেবায় সর্বদা একনিষ্ঠতার সাথে দায়িত্ব পালন করলেও তারা সমালোচনার শীর্ষে । আর এই সমালোচনার ধরনও বহুমাত্রিক । বলতে গেলে পুলিশ সরকারি সকল বিভাগের মধ্যে অবহেলিত একটি নাম । প্রায় প্রত্যেকটি সরকারই পুলিশ বাহিনীকে তাদের ক্ষমতা টিকে রাখার অন্যতম প্রধান অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে । কিন্তু তার বিপরীতে বাহিনীর আধুনিকায়ন ও সদস্যদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে দেখিয়েছে কার্পন্য । যা বাহিনীর সদস্যদের মনোবল বৃদ্ধি,রুচিশীলতা তৈরিতে কোন ভূমিকা রাখতে পারেনি । ফলে বাহিনীর সদস্যদের নানামূখী কর্মকান্ডে পুরো বাহিনীই সাধারনের কাছে সমালোচনার পাত্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে । কিন্তু আমরা কি কখনো একটু গভীরে গিয়ে চিন্তা করেছি ?
যে বাহিনীর সদস্যরা জনগনের সেবায় খাওয়া আর ঘুম বাদে সার্বক্ষনিক নিয়োজিত তারা কি কারনে বা কোন নিয়ামকের ভিত্তিতে সেবা প্রাপ্ত জনগন দ্বারাই সমালোচিত হচ্ছে ? নানা ধরনের প্রশ্নবানে জর্জরিত হচ্ছে নিত্যদিন ?
জানি এই প্রশ্নের উত্তর দিতে অনেকেই কুন্ঠাবোধ করবেন । কারন আমাদের কার্পণ্যতা ,উদাসীনতা, অ-সুস্থচিন্তাশীলতাই এর অন্যতম প্রধান কারন । যখন এই বিশাল বাহিনীর সদস্যরা তাদের দিনের নির্ধারিত দায়িত্ব পালনের সময় অতিক্রম করে বিশ্রামের জন্য প্রস্তুতি নেয় তখন তারা যে, কি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বিশ্রাম নেন তা স্ব-চোক্ষে না দেখলে বোঝার উপায় নেই । স্বাভাবিকভাবেই আপনার বসবাসের জায়গা মানে আপনি যেখানে খাবেন,ঘুমাবেন,অবসর সময় ব্যয় করবেন সেই জায়গা যদি নোংড়া অস্বাস্থ্যকর হয় তবে আপনি এমনিতেই অসুস্থ হয়ে পড়বেন । কখনোই আপনার মানসিক প্রশান্তি আসবে না । অর্থ্যাত আপনি মানসিকভাবে অসুস্থ থাকবেন , এটাই স্বাভাবিক ।
একজন মানুষের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য সুন্দর পরিবেশের দরকার পড়ে । কিন্তু আমাদের সরকার বা রাষ্ট্র পুলিশ বাহিনীর জন্য সেই স্বাস্থ্যকর পরিবেশ কি নিশ্চিত করতে পেরেছে ? না পারেনি ।বরং রাষ্ট্রযন্ত্র শুধু তাদের উপর হুকুমের ছড়ি ঘুরিয়েছে । আরো একটি প্রশ্ন থাকে ? পুলিশ জনগণের সার্বক্ষনিক নিরাপত্তা বিধান করে, কিন্তু এই বাহিনীর সদস্যদের নিরাপত্তা,তাদের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার বিষয়টিতে আমরা কি কখনো গুরুত্ব দিয়েছি ? না দেইনি । আমরা ভাবি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের আবার কিসের নিরাপত্তা দরকার ! কিন্তু পরিবেশ পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা বাহিনীরও নিরাপত্তার দরকার আছে এবং নিরাপত্তা লাগে ।
কখনো কি ভেবে দেখেছি পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের জন্য যে খাবার বরাদ্দ রাখা হয় তা কতোটা মানসম্মত ! একজন মানুষকে সুস্থ থাকার জন্য অবশ্যই উন্নত মান সম্মত খাবার খাওয়া দরকার । কিন্তু আমাদের দেশের পুলিশ বাহিনীর দূর্ভাগ্য এতোটাই যে , সাধারনের জন্য বাজারে বিক্রিত খাবারের মানদন্ড নিয়ন্ত্রনে নিজেরা কাজ করলেও নিজে যা খায় বা খাচ্ছে তার মান নিয়ে ভাবার মতো বিন্দুমাত্র সময় অন্তত কোন সরকারই তাদের জন্য বরাদ্দ রাখেনি ।
সেখানে তাদের কাছে উন্নত আরো উন্নত সেবা আমরা কিভাবে আশা করতে পারি ! পুলিশের টাকায়, পুলিশ পরিবারের জন্য বরাদ্দ চাল-ডাল-গম-আটা খেয়ে বড় হয়েছি । তাই তাদের গভীরের ব্যাথা আমি বুঝি এবং খুব ভালো করেই অনুধাবন করি । তাদের ব্যাথায় আমিও ব্যাথিত হই । বুদ্ধির বয়স থেকেই পুলিশের পোশাক,গায়ের গন্ধ,মেসের খাবার ,সেলুন,ডাক্তার সব কিছুর সাথে একটু সখ্যতা ও বেশিই জানাশোনা ।
পুলিশের ব্যারাক মানে ১৬ থেকে ১৮ ঘন্টা দায়িত্ব পালন শেষে যখন একটু শান্তির খোজে গা এলিয়ে দেয়ার প্রয়োজন পড়ে সেই অতি গুরুত্বপূর্ণ বসবাসের জায়গা যদি সাধারন একটু দেখতো তবে মনে হয় না এই বাহিনির দায়িত্ব পালনের বিষয়ে সমালোচনায় মুখর থাকতো । আপনি আমি ৫ হাত দৈর্ঘ্যর বিছানায় দুজনের বেশি থাকতে অসস্তি বোধ করলেও ১০০ বর্গফুটের ব্যারাক ঘরে অন্তত ১০০/১২০ জন সদস্যকে একসাথে বিছানার সাথে বিছানা লাগিয়ে বাস করতে হয় । চেয়ার-টেবিল, বিনোদন, অবসাদ বলতে ঐ চৌকির আয়তনের জায়গাটুকু একজন সদস্যর জন্য বরাদ্দ থাকে । বড় বড় আয়তনের ঘরগুলোতে এক প্রকার ঘিঞ্জির মতো পরিবেশ । নেই স্বাস্থসম্মত টয়লেটের ব্যাবস্থা ,বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ । তাহলে যেখানে আমরা তাদের সুস্থ থাকার সকল নিয়ামকের বিষয়ে উদাসীন, সেখানে কি করে তাদের কাছ থেকে সঠিক ও উন্নত সেবা আশা করতে পারি ?
আমরা যদি তাদের কাছে সত্যিই সেবা এবং প্রকৃত অর্থে সেবা পেতে চাই তবে অবশ্যই তাদের উন্নত পরিবেশ দিতে হবে । তাদের জন্য বাজেট বাড়ানোর পাশাপাশি উন্নত মানসম্মত খাবার, ও অবসর সহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার দ্বার খুলতে হবে । যতোদিন পর্যন্ত না আমরা এই বাহিনীর আধুনিকায়নের মধ্যে দিয়ে উন্নত পরিবেশ উপহার দিতে পারছি ততোদিন পর্যন্ত এই বাহিনীর দ্বারা কখনোই উন্নত সেবা আশা করতে পারি না ।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুন, ২০১৮ রাত ১০:৪২
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×