বতর্মান সময়ের বাঙলাদেশের প্রেক্ষাপটা সম্পুন্ন ভিন্ন ধাঁচের। রাজনৈতিক দলগুলোর মাঝে (জামাতী ইসলামী ব্যতীত) পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ, সমঝোতা নেই বললেই চলে। জামাতী ইসলামীকে বাদ দিলাম অবশ্য কারণ বশতই। কারণ হল, এই দলটা জন্মলগ্ন থেকেই ভিন্নধর্মী রাজনীতি করে। দলটির মূল লক্ষ্য হচ্ছে ইসলাম প্রতিষ্ঠার নাম করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল। মানুষ মেরে বেহেশতে যাবার স্বপ্ন দেখিয়ে দেশের একদল যুব সমাজকে নিজেদের দলে টেনে, রাজপথে নামিয়ে দেশের সাধারণ মানুষের শান্তি বিনষ্ট করা। ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতির অর্থ এই নয় যা জামাতী ইসলামী করছে। ধর্মে পরস্পরের ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ, সহাবস্থান, দেশের প্রচলিত আইনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ সবই আছে। কিন্তু এই দলটি কিন্তু এই সবের কোন কিছুই মানছে না।
দেশের অন্যতম প্রধান দল বি.এন.পিও এখন ঢুকে পড়েছে জামায়াতের খোঁয়াড়ে। যার ফলে দলটির প্রতি মানুষের আস্থা কমে আসছে। দেশের সরকার যদি নিজেদের ক্ষমতাকে স্থায়ী করতে, নিজেদের শুধু শাসক ভাবার স্বপ্ন না দেখে একটি সুষ্ঠু ও শান্তিময় নির্বাচনী ব্যবস্থা গ্রহণ করে আর প্রধান বিরোধীদল সহ অন্যন্য দল গুলো সেটা মেনে নেয় তাহলে কিন্তু হত্যা, ধ্বংশযজ্ঞ থেকে বেড়িয়ে আসবে বাঙলাদেশ। ঐযে আগেই বললাম না পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধের অভাব। আজকে যারা হরতাল, অবরোধের বিরোধীতা করছে সেই দলও কিন্তু একসময় হরতাল করেছিল, অবরোধও করেছিল। বাঙলাদেশের বিরোধী দল মানেই যেন সংসদে না গিয়ে রাস্তায় আন্দোলন করার দল। বিরোধী দল মানেই হরতাল ঢাকতে হবে, গাড়ী ভাঙ্গতে হবে।
স্বাধীনতার 41 বছর সময়ে বাঙলাদেশ কতটুকু স্বাধীন? অনেক বড় একটা প্রশ্ন খেলা করে মনের মাঝে।
রুদ্র মোহাম্মদ শহীদুল্লার কবিতার লাইনটি মনে হয় ভয়াংকর সত্য-
“জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে পুরোনো শকুন” কিংবা “আজও আমি বাতাসে লাসের গন্ধ পাই; আজও আমি মাটিতে মৃত্যুর নগ্ন নৃত্য দেখি”। আজও বাঙলাদেশে প্রতিনিয়ত পরধীন দেশের নাগরিকের মত মরে যাচ্ছে অসংখ্য মানুষ। পরাধীন নাগরিকের মত অনেকে সব বুঝেও ভয়ে মুখ ফুটে কিছু বলতে পারছে না। বিজয়ের আনন্দটা সত্যিই আজ পুরোপুরি করতে পারছি না। কারণ পারিপার্শ্বিক অবস্থা দেখে মনে হয়, শহীদ বীরেরা মনে হয় আজ গভীর ক্রন্দনরত। কারণ তাঁরাতো এই স্বাধীনতার জন্য মায়ের বুক থেকে ছুটে নিশ্চিত মৃত্যুর দিকে ঝাপিয়ে পড়েনি। তাঁরাতো এই সহিংসার রাজনীতি কায়েমের জন্য যুদ্ধ করেনি। তাই আমি সেদিনেই বিজয়ের আনন্দ সম্পুর্ন রুপে পালন করব যেদিন শহীদ বীরেরা আর কাঁদবে না, তাঁরা আর ধীক্কার জানাবে না জীবিতদের।
16 ডিসেম্বর সকালে জাতীয় সংগীত গেয়ে, পতাকা উত্তোলন করে, গাড়িতে কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পতাকা উড়িয়ে, ব্লগ ফেসবুকে স্বাধীনতা-বিজয় দিবস বিষয়ক ষ্টাটাস দেওয়ার মাঝে, লাল-সবুজের পোশক পড়ার মাঝেই দেশ প্রেম সীমাবদ্ধ নয়। সেদিনেই বাঙলাদেশ সত্যিই বিজয়ের পূর্ণাঙ্গ রুপে পালন করতে পারবে যেদিন বাঙলাদেশ থেকে স্বাধীনতা বিরোধী সকল আবর্জনা দূর করবে, যেদিন ইসলামি শাসন প্রতিষ্ঠার নামে ধর্ম নিয়ে ঘৃনিত রাজনীতি বন্ধ করতে পারবে, যেদিন 71 এর দালালরা গাড়িতে জাতীয় পতাকা উড়ানোর অধিকার চিরতরে হারাবে, যেদিন 71 এ পাকিস্থানের দালালদের বিচার করে শহীদদের আত্মার শান্তি নিশ্চিত করা হবে। সেদিনই বাঙলাদেশ পাবে পুর্ণাঙ্গ স্বাধীনতার স্বাধ।
ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধকরণ, যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসিসহ অন্যান্য যুক্তিনিষ্ট দাবি নিয়ে বাঙলাদেশ সকলমানুষের (গু+লাম আযমের দালালরা বাদে) মুখে অগ্নিকন্ঠে উচ্চারিত হউক “স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিকে নিষিদ্ধ কর, করতে হবে”। লাল সালাম