দেশে হাজার রকমের সমস্যা৷ সীমাহীন ঘুষ-দুর্নীতি চলছে- আপত্তি নেই! বলাৎকার-ধর্ষণ চলছে- আপত্তি নেই! মাদক-সন্ত্রাস চলছে আপত্তি নেই! ভোট-অধিকার ডাকাতি চলছে- আপত্তি নেই! মোল্লাতন্ত্র এসব অনৈসলামিক কর্মকাণ্ড নিয়ে কথা বলে না৷ এসব বিষয় দেশকে মারাত্মক ক্ষতি করছে একই সাথে এদেশে মুসলিমদেরও ক্ষতি করছে৷ অথচ এ সবের বিরুদ্ধে ইসলামপন্থী দলগুলো কথা বলতে চায় না৷ ঘুষ থেকে মাদক অনেক দিক থেকেই অনেকের সুবিধা আসে তাই আপত্তি নেই৷
সৌন্দর্য বর্ধন ও ইতিহাস-ঐতিহ্য-ব্যক্তিত্বকে তুলে ধরতে ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়৷ সেই ভাস্কর্য কি করে প্রধান সমস্যা হয়ে উঠে? যখন গার্মেন্টস শ্রমিকরা পৃথিবীর সর্বনিম্ন বেতন পাচ্ছে, জীবনের নিরাপত্তা নেই, হাজারো নারী নিপীড়নের শিকার হচ্ছে, ক্রস-ফায়ারে খুন হচ্ছে গুম হচ্ছে, শিক্ষার মান ডুবে যাচ্ছে, বাক স্বাধীনতা সীমিত হয়ে যাচ্ছে৷ মুসলিমদের মাথা উঁচু রাখতে হলে এসব কথা বলতে হবে৷ গবেষণার সুযোগের কথা বলতে হবে, চাঁদাবাজি বন্ধের কথা বলতে হবে, চাকরি পেতে ঘুষ বন্ধের কথা বলতে হবে, মেধা ও অর্থ পাচার বন্ধের কথা বলতে হবে৷
অথচ আজ মনে হচ্ছে ভাস্কর্যই ইসলামের একমাত্র শত্রু! ভাস্কর্য বন্ধ হলেই মুসলিমরা শনৈ শনৈ উন্নতি করবে! সত্যি সেলুকাস! বিচিত্র এ দেশ! আমাদের অসচেতনতার সুযোগ নিয়ে ধর্ম ব্যবসায়ীরা আমাদের আরো ভুল পথে নিতে চাচ্ছে৷ তাইতো দেখি বিভিন্ন দেশে ছাগলের ভাস্কর্য থাকলেও ছাগুদের ভাস্কর্য নেই৷ ভাস্কর্যকে সামনে নিয়ে আসা যতটা ধর্মীয় তার চেয়ে বেশি রাজনৈতিক সেটাই বুঝতে হবে৷ মূল সমস্যাগুলো থেকে নাগরিকদের দৃষ্টি সরিয়ে ভাস্কর্যকে প্রধান ইস্যু বানানো হয় মূর্খতা না হয় গভীর ষড়যন্ত্র৷ সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুকে সরিয়ে দিয়ে- ভাস্কর্য হঠাওকে সামনে নিয়ে আসার মানে কি? দৃষ্টি সরিয়ে দেয়া? মুসলিমদের প্রধান সমস্যা হিসেবে ভাস্কর্যকে চিহ্নিত করারই বা মানে কি?
স্বাধীনতার মাসে ভাস্কর্য ভাঙ্গার নামে কি ওরা আমাদের স্মৃতিসৌধ ভাঙ্গতে চায়? শহীদ মিনার? শহীদ মিনারেতো একজন মা আর তার সন্তানদেরই প্রতিকৃতি! তাহলে! আমাদের মসজিদের মিনারের বা গম্বুজের উপরে চাঁদ-তারার ভাস্কর্য কি ভাঙ্গার তালিকায় রেখেছে তারা? ওরা কি বুঝে ওরা সব ভাস্কর্য ভাঙ্গতে চাইলে ওটাও তার মধ্যেই পড়ে।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৪২